এইমাত্র
  • কপালে ব্যান্ডেজ নিয়ে ইফতার পার্টিতে মমতা
  • কুড়িগ্রামের খাবার খেয়ে খুশি ভুটানের রাজা
  • বিশ্ববাজারে সোনার দামে রেকর্ড
  • নিরস্ত্র ২ ফিলিস্তিনিকে হত্যার পর বালিচাপা দিল ইসরায়েলি সেনারা
  • ভারত থেকে পেঁয়াজ আসছে শুক্রবার!
  • দিনে ৭৮ কোটির বেশি মানুষ অভুক্ত, অথচ নষ্ট হয় ১০০ কোটির খাবার: জাতিসংঘ
  • বিএনপি স্বাধীনতার মর্মার্থকে অকার্যকর করতে চায়: কাদের
  • প্রথম বাংলাদেশি আম্পায়ার হিসেবে আইসিসির এলিট প্যানেলে সৈকত
  • কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা
  • ‘বিএনপির নেতাদের স্ত্রীরা ভারতীয় শাড়ি কিনেন না’
  • আজ শুক্রবার, ১৪ চৈত্র, ১৪৩০ | ২৯ মার্চ, ২০২৪

    গ্রিসে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মৃত্যু বাড়ছে

    সময়েরকণ্ঠস্বর প্রকাশ: ৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:৫২ পিএম
    সময়েরকণ্ঠস্বর প্রকাশ: ৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:৫২ পিএম

    গ্রিসে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মৃত্যু বাড়ছে

    সময়েরকণ্ঠস্বর প্রকাশ: ৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:৫২ পিএম


    মতিউর রহমান মুন্না, এথেন্স (গ্রিস) থেকে: প্রবাসে স্ট্রোকে বাংলাদেশিদের মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এসব মৃত্যু যেন অনেকটাই নিয়তিতে পরিণত হয়েছে। অভিবাসন বিশ্লেষকদের মতে, দীর্ঘদিন স্বজনবিচ্ছিন্ন থাকা এবং নানা কারণে মানসিক চাপে হতাশায় স্ট্রোক করেন এসব প্রবাসী। ইউরোপের দেশ গ্রিসেও বেড়েই চলেছে বাংলাদেশি রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের অপ্রত্যাশিত মৃত্যুর সংখ্যা।

    গ্রিসে দীর্ঘদিন ধরে অনিয়মিত অবস্থায় অমানবিক জীবনযাপন করেছেন কয়েক হাজার বাংলাদেশি। কেউ কেউ সাত থেকে আট বছর বসবাসের পরও বৈধ হতে পারছেন না। অনেকের কাছে নেই পাসপোর্টই। হাতের লেখা পাসপোর্টের যুগে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে গ্রিসে প্রবেশ করা এসব বাংলাদেশি এখন পাসপোর্ট করার সুযোগ পাচ্ছেন না। অনিয়মিত বাংলাদেশিদের নিয়মিত অভিযান করে ধরছে পুলিশ। আবার অনেককেই বিতাড়িত করছে।

    গেল এক বছরে অর্ধশতাধিক বাংলাদেশিকে ঢাকায় ফেরত পাঠিয়েছে গ্রিস সরকার। হাজারো বাংলাদেশি আটক রয়েছেন গ্রিসের বিভিন্ন ক্যাম্পে। যারাই অনিয়মিত আছেন তাদের দিনরাত কাটে নানা আতঙ্ক আর হতাশায়। এই বিভিন্ন কারণে বেড়ে চলেছে মৃত্যুর সংখ্যা। এথেন্সে বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, গ্রিসে ২০১৫ থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত মোট ১০৯ জন বাংলাদেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। ২০২০ সালের জুন থেকে গত বছরের ১২ আগস্ট পর্যন্ত ৮৬ জন বাংলাদেশি মারা গেছেন। ২০২২ সাল থেকে ২০২৩ সালের ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত গত এক বছরে অর্ধশতাধিক বাংলাদেশি মারা গেছেন বিভিন্নভাবে। এদের বেশির ভাগেরই স্ট্রোকে মৃত্যু হয়েছে।

    বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন গ্রিসের সহযোগিতায় এবং বাংলাদেশ দূতাবাস এথেন্সের তত্ত্বাবধানে মরদেহ দেশে পাঠানো হয়েছে। করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী কয়েকজনের মরদেহ গ্রিসেই দাফন করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) বিশ্বজিত কুমার পাল বলেন, ?মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হওয়ায় বেশির ভাগ ব্যক্তি মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে ও হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।?

    তিনি আরও বলেন, ?পর্যালোচনায় দেখা গেছে, কেউ জমি বিক্রি করে, কেউ ঋণ করে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে গ্রিসে এসেছেন। বৈশ্বিক করোনা মহামারির মন্দা পরিস্থিতিতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে গ্রিসে আসার পর কর্মহীন প্রবাসীরা ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে মানসিক চাপে ভোগেন। বেশির ভাগ প্রবাসীই মারা গেছেন হার্ট অ্যাটাক ও ব্রেন স্ট্রোকে। তাদের অনেকের বয়সই ৩০-৪০ বছর। এমন মৃত্যু পরিবারের কাছেও অপ্রত্যাশিত।?

    বর্তমানে গ্রিসে বৈধভাবে আসার সুযোগ তৈরি হয়েছে। তাই অবৈধভাবে কেউ যেন কাজের ক্ষেত্র নিশ্চিত না হয়ে বিদেশে পাড়ি না জমান, এজন্য অনুরোধ করেছেন দূতাবাসের এই কর্মকর্তা। অনেকেই মনে করেন, ঋণ নিয়ে বিদেশে গিয়ে টাকা শোধ করার চাপের কারণে অতিরিক্ত কাজ করার প্রবণতা রয়েছে অনেক প্রবাসীর মধ্যে। অবৈধভাবে থাকা অনেকেই কোনো কাজ করার সুযোগ না পেয়ে বেকার অবস্থায় থাকেন। থাকা ও খাবারের টাকা দেশ থেকে নিয়ে পরিশোধ করেন। ১২ থেকে ১৮ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করার কারণে নিয়মিত ঘুমানোর সুযোগ পান না প্রবাসীরা। এসব কারণে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।

    গ্রিসপ্রবাসী অভিবাসন বিশ্লেষক কামরুজ্জামান ভূইয়া ডালিম বলেন, ?করোনার কারণে অনেকের কাজ ছিল না, অর্থনৈতিক সংকট ছিল। আবার অনেকে গ্রিসের পারমিট নবায়ন করতে পারেননি। তাই দেশেও পরিবার-পরিজনের কাছে যেতে পারেননি। এর পরই এবার রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে দেখা দিয়েছে অর্থনৈতিক মন্দা। সবকিছুর দাম বেড়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। এসব কারণে হতাশায় প্রবাসীদের মধ্যে স্ট্রোকের হার বাড়ে, অনেকে মৃত্যুবরণ করেন। যেটা অনাকাক্সিক্ষত।?

    গ্রিসে অবৈধ হয়ে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিয়মিত বা বৈধকরণের কার্যক্রম শিগগিরই শুরু হবে বলে জানা গেছে। বাংলাদেশ-গ্রিসের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা চুক্তির অধীনে ১৫ হাজারের বেশি বাংলাদেশি বৈধ হওয়ার সুযোগ পাবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। এ কর্মসূচি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশিদের বড় অংশের দুশ্চিন্তা অনেকাংশে কমে যাবে বলে বিশ্বাস কমিউনিটি নেতাদের।

    এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন গ্রিসের সভাপতি আবদুুল কুদ্দুছ বলেন, ?বৈধতা পেলে অনেকেই উপকৃত হবেন। তবে সবকিছু নির্ভর করছে কর্মসূচির সফলতার ওপর। এ ক্ষেত্রে অনিয়মিত প্রবাসীদের পাসপোর্টসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের সমস্যা নিরসনে দূতাবাস ও বাংলাদেশ সরকারের সহায়তা ও প্রচেষ্টা অত্যন্ত জরুরি।?

    ট্যাগ :

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    চলতি সপ্তাহে সর্বাধিক পঠিত

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…