এইমাত্র
  • গ্রাহক পিটিয়ে ক্ষমা চাইল স্টার কাবাব কর্তৃপক্ষ
  • দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে ঢাকায় কোনো থ্রেট নেই : ডিএমপি কমিশনার
  • দুর্গাপূজা উপলক্ষে ছুটি একদিন বাড়ল
  • মহাকাশ থেকেই মার্কিন নির্বাচনে ভোট দিবেন নভোচারী
  • সুন্দরবনে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যা বেড়ে এখন ১২৫
  • নড়াইলে প্রাইভেট পড়ে ফেরার পথে এসএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু
  • ফের রিমান্ডে পলক, সালমানসহ আ. লীগ নেতা ও পুলিশ কর্মকর্তারা
  • ৯৬ টাকা দরে ১০ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল কিনছে সরকার
  • জম্মু-কাশ্মীর ও হরিয়ানায় ফল ঘোষণা আজ
  • আলবেনিয়ায় চলছে সরকারবিরোধী আন্দোলন
  • আজ মঙ্গলবার, ২৩ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৮ অক্টোবর, ২০২৪
    দেশজুড়ে

    বেপরোয়া রামু থানার ওসি, অবৈধ গরুর বৈধতা দিচ্ছেন ২ হাজার টাকায়!

    শাহীন মাহমুদ রাসেল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, কক্সবাজার প্রকাশ: ৯ জুন ২০২৩, ০৬:২৯ পিএম
    শাহীন মাহমুদ রাসেল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, কক্সবাজার প্রকাশ: ৯ জুন ২০২৩, ০৬:২৯ পিএম

    বেপরোয়া রামু থানার ওসি, অবৈধ গরুর বৈধতা দিচ্ছেন ২ হাজার টাকায়!

    শাহীন মাহমুদ রাসেল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, কক্সবাজার প্রকাশ: ৯ জুন ২০২৩, ০৬:২৯ পিএম

    কক্সবাজারের রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ারুল হুসাইন। জায়গা-জমির বিচার, জিডি থেকে শুরু করে পারিবারিক সালিশ, সবকিছুতেই হস্তক্ষেপ থাকে তার। গ্রেপ্তার বাণিজ্যসহ সবকিছু থেকেই তার ঘুষ নেয়া এখন ওপেন সিক্রেট। যে কোন মামলা নথিভুক্ত করতে গেলেই ভুক্তভোগীকে গুনতে হয় হাজার হাজার টাকা।

    এসব বিষয়ে একের পর এক অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পাচ্ছেন না এলাকাবাসী। ওসির ঘুষ বানিজ্যসহ নানা অনিয়ম দুর্নীতির সংবাদ বিভিন্ন গণ্যমাধ্যমে প্রকাশ পেলেও কোনো পরিবর্তন আসেনি। সবশেষ চোরাই পথে মায়ানমার থেকে আসা অবৈধ গরু যেন তার ঘুষের বাজার আরও জমজমাট করে তুলেছে। অভিযোগ রয়েছে।

    অভিযোগ আছে, রামু থানার ওসি এক ডিআইজির আত্মীয় দাবি করে নিজেকে জমিদার মনে করেন, সাধারণ মানুষসহ সেবাপ্রার্থীদের সাথে জমিদারের মতো আচরণ করেন।

    ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, টাকা না পেলে কোন মামলা নথিভুক্ত করেনা রামু থানা পুলিশ। যেকোন জায়গা-জমির বিষয়ে নিজেরাই বিচার বসায় থানার সামনের গোলঘরে। সমঝোতার নামে দু'পক্ষ থেকেই দালালের মাধ্যমে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

    শুধু তাই নয়, নানা কারণে নাগরিকদের থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার প্রয়োজন পড়ে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ‘চা-পানি’র ব্যবস্থা অর্থাৎ টাকা ছাড়া জিডি করা সম্ভব হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে সাধারণ মানুষ নিতান্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া শুধু জিডি করতে থানায় যেতে চান না।

    খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বান্দরবানের নাইক্ষংছড়ি হয়ে কক্সবাজার রামু উপজেলার বিভিন্ন বাজারে প্রতিদিন প্রবেশ করে কয়েকশো অবৈধ গরু। এসব অবৈধ গরু বিক্রির বৈধতা দিয়ে ক্রয় রশিদে বিশেষ সীলের মাধ্যমে গরু প্রতি দুই হাজার টাকা করে প্রতিদিন কয়েক লাখ টাকা চাঁদা আদায় করার অভিযোগ উঠেছে গর্জনিয়া পুলিশ ফাড়ির বিরুদ্ধে।

    কয়েকজন গরু ব্যাবসায়ীর অভিযোগ, রামুর বিভিন্ন বাজার থেকে অবৈধ গরুগুলো ক্রয় করতে ইজরাদার, ইউপি চেয়ারম্যান ও পুলিশকে টাকা দিয়ে ক্রয় রশিদে সীল নিতে হয়। রশিদে দুই হাজার টাকা দিয়ে পুলিশের বিশেষ সীল নেওয়া না হলে বিভিন্ন সময় গরু আটক করে নিলামে তোলেন রামু থানার ওসি।

    যদিও ক্রয় রশিদে বিশেষ সীলের মাধ্যমে টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মাসুদ রানা ও রামু থানার ওসি মো. আনোয়ারুল হুসাইন।

    জানা যায়, বান্দরবানের নাইক্ষংছড়ি হয়ে কক্সবাজার রামুর কয়েকটি বাজারে প্রতিদিন শত শত গরু জড়ো করা হয়। এসব অবৈধ গরু গুলোকে বৈধতা দিয়ে রশিদ, বিশেষ সীল ও টোকেনের মাধ্যমে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে জনপ্রতিনিধি, ইজারাদার ও রামু থানা পুলিশ। বাজার থেকে গরু ক্রয় করে ইজারাদারের রশিদে পুলিশকে দুই হাজার টাকা দিয়ে বিশেষ সীল না নিলে আটক করা হয় ক্রয়কৃত গরু। এরপর দেওয়া হয় নিলাম। এভাবে টাকার জন্য রামু থানা পুলিশ গরু ব্যাবসায়ীদের জিম্মি করে রেখেছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন একাধিক গরু ব্যাবসায়ী।

    আব্দুর রহিম নামের এক গরু ব্যাবসায়ীর দাবী, তিনি প্রতি গর্জনিয়া বাজার থেকে দুই থেকে তিনটি গরু ক্রয় করে বাইরে বিক্রি করেন। গর্জনিয়া বাজার থেকে ক্রয় রশিদের মাধ্যমে প্রতিবারেই পুলিশকে দুই হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় রশিদে বিশেষ সীল মেরে গরুগুলো বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয় বা বাইরে বিক্রি করা হয়। তবে এইবারে তিনটি গরু নিয়ে যাওয়ার সময় টাকা বাচাতে পুলিশের সীল মারা হয়নি। তাই পুলিশ টাকা না পেয়ে তার গরুগুলো আটক করে রামু থানায় নিয়ে যায়। এবং নিলামে বিক্রি করে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

    গর্জনিয়া বাজারের দেলোয়ার হোসেন নামের এক গরু ব্যাবসায়ী জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে গর্জনিয়া বাজার থেকে গরু কিনে বাইরে বিক্রি করেন। সর্বশেষ তিনটি গরু কিনে বাজারের ইজারাদারের কাছ থেকে ক্রয় রশিদ সংগ্রহ করে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়িকে ২ হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় রশিদের উপর একটি বিশেষ সীল নিতে হয়। সেই সীল না নেওয়ায় তার তিনটি গরু আটকিয়ে রামু থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এবং পরবর্তীতে তাদের কষ্টের টাকায় ক্রয় করা গরু গুলোর ক্রয় রশিদ থাকলেও পুলিশ নিলামে তুলছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

    এসকল অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রামু গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মাসুদ রানা অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে মোবাইলে কথা বলতে রাজি হননি। এবং বক্তব্য নিতে হলে গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে দেখা করতে হবে বলে জানান প্রতিবেদককে।

    এ বিষয়ে জানতে চাইলে রামু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.আনোয়ারুল হোসাইন জানান, অবৈধ গরু পাচারের সংবাদে বিভিন্ন সময় অবৈধ গরু আটক করা হয়। সর্বশেষ ৭টি গরু আটক করে এবং সেগুলো যথাযথ নিয়মে নিলামের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুলিশ ফাঁড়ির বিশেষ সীলের মাধ্যমে টাকা না পাওয়ায় গরু আটকের বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, চোরাকারবারিরা সবসময় পুলিশের বিরুদ্ধে বলবে এটাই স্বাভিক।

    পিএম

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    Loading…