এইমাত্র
  • গোপনে দেশ ছেড়েছেন আ.লীগের যেসব নেতা
  • সাড়ে ২০ লাখ খরচেই চালু হচ্ছে কাজীপাড়া মেট্রো স্টেশন
  • শাহ আমানতে ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকার বিদেশি মুদ্রাসহ যাত্রী আটক
  • স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্য বিমল আর নেই
  • মানিক মিয়ার বাড়িতে ১০৫ পিস ইয়াবা ও মাদক বিক্রির টাকা উদ্ধার
  • গণপিটুনিতে জড়িত শিক্ষার্থীদের বহিস্কার ও গ্রেফতার করা হবে: ঢাবি প্রক্টর
  • পরকীয়ার জেরে স্বামীকে হত্যা, স্ত্রী ও প্রেমিকের মৃত্যুদণ্ড
  • মেট্রোরেলের ভায়াডাক্টের বিয়ারিং খুলে পড়ার কারণ জানা গেল
  • সিলেবাস ছোট করার দাবিতে শিক্ষার্থীদের সায়েন্সল্যাব অবরোধ
  • সিন্ধু নদ চুক্তি : পাকিস্তানকে নোটিশ দিলো ভারত
  • আজ বৃহস্পতিবার, ৪ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
    দেশজুড়ে

    এসএসসি পরীক্ষার্থীদের গলার কাঁটা ‘কোচিং ফি’ বিক্রি করছে গরু ছাগল

    রাইসুল ইসলাম লিটন, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি প্রকাশ: ২০ নভেম্বর ২০২৩, ০৯:১২ পিএম
    রাইসুল ইসলাম লিটন, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি প্রকাশ: ২০ নভেম্বর ২০২৩, ০৯:১২ পিএম

    এসএসসি পরীক্ষার্থীদের গলার কাঁটা ‘কোচিং ফি’ বিক্রি করছে গরু ছাগল

    রাইসুল ইসলাম লিটন, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি প্রকাশ: ২০ নভেম্বর ২০২৩, ০৯:১২ পিএম

    টাঙ্গাইলের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তিন মাসের ‘কোচিং ফি’ হিসেবে মাথাপিছু আড়াই থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা আদায় করছে। ওই কোচিং ফি’র টাকা যোগার করতে অভিভাবকরা হিমশিম খাচ্ছে। কেউ কেউ গরু-ছাগল বিক্রি করে টাকার যোগান দিচ্ছে। অনেকে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের সুপারিশ নিয়ে প্রধান শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠানের সভাপতির দ্বারস্থ হচ্ছেন।

    জানা গেছে, টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলায় মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৬৫টি, দাখিল মাদ্রাসা ১৭৭ টি এবং স্কুল অ্যান্ড কলেজ রয়েছে ২৪টি। এর মধ্যে বাসাইল উপজেলায় ২৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৭টি দাখিল মাদ্রাসা; ভূঞাপুরে ২৯টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২০টি দাখিল মাদ্রাসা ও একটি স্কুল অ্যান্ড কলেজ; দেলদুয়ার উপজেলায় ২৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও পাঁচটি দাখিল মাদ্রাসা; ধনবাড়ীতে ৩০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ১৩টি দাখিল মাদ্রাসা; ঘাটাইল উপজেলায় ৫৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২৭টি দাখিল মাদ্রাসা ও তিনটি স্কুল অ্যান্ড কলেজ; গোপালপুরে ৪২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১৫টি দাখিল মাদ্রাসা ও তিনটি স্কুল অ্যান্ড কলেজ; কালিহাতীতে ৪৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১৬টি দাখিল মাদ্রাসা ও দুইটি স্কুল অ্যান্ড কলেজ; মধুপুরে ২৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১২টি দাখিল মাদ্রাসা ও দুইটি স্কুল অ্যান্ড কলেজ; মির্জাপুরে ৪৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১৩টি দাখিল মাদ্রাসা ও চারটি স্কুল অ্যান্ড কলেজ; নাগরপুরে ৩৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১৫টি দাখিল মাদ্রাসা ও দুইটি স্কুল অ্যান্ড কলেজ; সখীপুরে ৪৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২১টি দাখিল মাদ্রাসা ও দুইটি স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় ৫১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১৩টি দাখিল মাদ্রাসা ও পাঁচটি স্কুল অ্যান্ড কলেজ রয়েছে।

    মাউশি ঢাকাবোর্ডের প্রজ্ঞাপন সূত্রে জানা যায়, স্কুলগুলো চলতি বছরের ৮ নভেম্বর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বেতন ও সেশন চার্জের টাকা নিতে পারবে। তবে নবম ও দশম শ্রেণির মোট ২৪ মাসের বেশি বেতন ও সেশন চার্জ নিতে পারবেনা। এ বোর্ডে ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষার ফি হিসেবে মানবিক বিভাগে ২০২৪ টাকা, বাণিজ্য ২০২৪ টাকা, বিজ্ঞান বিভাগে ২১৪০ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।

    এছাড়া শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পত্রপ্রতি ১১০ টাকা, ব্যবহারিকের ফি বাবদ পত্র প্রতি ৩০ টাকা, একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্টের ফি বাবদ পরীক্ষার্থী প্রতি ৩৫ টাকা, মূল সনদ বাবদ শিক্ষার্থী প্রতি ১০০ টাকা, বয়েজ স্কাউট ও গার্লস গাইড ফি বাবদ ১৫ টাকা এবং জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ফি বাবদ পরীক্ষার্থী প্রতি ৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে কোচিং ফি নেওয়ার কোন নিয়ম রাখা হয়নি। অথচ প্রত্যেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোচিং ফি হিসেবে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হচ্ছে।

    সরেজমিনে বিভিন্ন মাদ্রাসা ও বিদ্যালয়ে দেখা যায়, এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার আগে তিন মাস কোচিং করানোর জন্য প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে বাধ্যতামূলকভাবে আড়াই হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা করে নেওয়া হচ্ছে।দ্রব্যমূলের উর্ধগতির এ সময়ে ওই টাকার যোগান দিতে অভিভাবকরা হিমশিম খাচ্ছে। কেউ কেউ ছাগল, গরু, হাঁস-মুরগী বিক্রি করে টাকা যোগার করছেন।

    শিক্ষার্থীরা জানায়, তিন মাসের কোচিং ফি নেওয়া হলেও এক বা দেড় মাস কোচিং করানো হয়। কোন কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১৫ দিন বা এক মাস কোচিং করিয়েই কোর্স সম্পন্ন হয়েছে বলে শেষ করা হয়।

    পরীক্ষার্থী সানজিদা আক্তার, শামীমা আক্তার রত্না, রাশিদুল হাসান, হৃদয় হাসান, আজিুল হাকিম সহ অনেকেই জানান, এসএসসি পরীক্ষার আগে তিন মাস কোচিংয়ের জন্য প্রায় সব প্রতিষ্ঠানই কোচিং ফি নিয়ে থাকে। কিন্তু সে অনুযায়ী পরীক্ষার্থীদের পাঠদান করা হয়না।

    অভিভাবকরা জানায়, এসএসসি পরীক্ষার আগে প্রতিষ্ঠানের সব ধরণের পাওনা পরিশোধ করতেই তাদের হিমশিম খেতে হয়। তার উপর কোচিং ফি’র বোঝা বহন করা অত্যন্ত কষ্টের।

    অভিভাবক রাজন বিশ্বাস, আলী আজগর, হাসমত আলী, রাশেদুর রহমান, পারুল আক্তার, হাসনা বেওয়া সহ অনেকেই জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নানা রকম ফি’সহ বোর্ড নির্ধারিত টাকা দেওয়ার পরও কেন্দ্র ফি’ এবং কোচিং ফি দেওয়া তাদের জন্য বাড়তি চাপ। তারপরও পরীক্ষার্থীর ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে নানাভাবে টাকা যোগর করে তারা কোচিং ফি পরিশোধ করেছেন।

    কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান জানান, শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফল করার জন্য বাড়তি পড়ালেখা করানোর জন্যই তিন মাস কোচিংয়ের ব্যবস্থা। প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির সভায় রেজুলেশন করে কোচিং ফি নির্ধারণ করা হয়। এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের টেস্ট পেপারের আলোকে সম্ভাব্য প্রশ্নাবলীর সমাধান

    করাই কোচিংয়ের উদ্দেশ- যাতে তারা পরীক্ষার হলে বিব্রত না হয়ে সাবলীলভাবে লিখতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে কোচিং ফি নেওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। তাছাড়া কোচিং ফি হিসেবে যে অল্প পরিমান টাকা নেওয়া হয়- তা শিক্ষকদের হাতখরচেই চলে যায়। টাকার বিনিময়ে কোচিং করানো হয়- বিষয়টা এভাবে মূল্যায়ন করাটা সঠিক নয়।

    বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পরিষদের সভাপতি জানান, পরীক্ষার্থীদের ফলাফল ভালো করার জন্য সর্বশেষ প্রস্তুতি হিসেবে কোচিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়। সভায় রেজুলেশন করে কোচিং ফি নির্ধারণ করা হয়।

    জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রেবেকা সুলতানা জানান, জেলায় এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এখনও সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয়। বোর্ড নির্ধারিত ফি’র বাইরে অভিভাবকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করার কোন

    সুযোগ নেই। কোন প্রতিষ্ঠান অতিরিক্ত টাকা আদায় করলে অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

    এমআর

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    Loading…