ড্রোন-রকেট হামলা ও বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় কয়েকজনের প্রাণহানির পর ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ড্রোন ব্যবহার করে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বোমা হামলা চালানোর ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনের মাঝে চরম উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় রোববার রাজ্যজুড়ে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে অ্যান্টি ড্রোন ব্যবস্থাও।
মণিপুরের স্থানীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ড্রোন-বিরোধী ব্যবস্থা মোতায়েন করা হয়েছে। সেখানকার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলেও বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে দাবি করেছেন তারা।
রাজ্য সরকারের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, রাজ্যে রোববার এখন পর্যন্ত সহিংসতার কোনও ঘটনা ঘটেনি। রাজ্যের বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে সমন্বয় করে পরিস্থিতি অনবরত পর্যবেক্ষণ করে চলছেন।
তিনি বলেন, রাজধানী ইম্ফল উপত্যকার প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেকোনও ধরনের দুর্বৃত্ত ড্রোনের হামলার চেষ্টা নস্যাৎ করে দিতে অ্যান্টি-ড্রোন ব্যবস্থা মোতায়েন করেছে আসাম রাইফেলস। এছাড়া রাজ্য পুলিশের কাছে একটি অ্যান্টি-ড্রোন ব্যবস্থা হস্তান্তর করেছে কেন্দ্রীয় আধা-সামরিক বাহিনী (সিআরপিএফ)।
গত বছরের মে মাসে মণিপুরের সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতে সম্প্রদায় এবং কুকি-জো উপজাতিদের মধ্যে সহিংসতা শুরু হয়। ওই সহিংসতায় দুই শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ও প্রায় ৫০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। এরপর রাজ্যজুড়ে থেমে থেমে সহিংসতা চললেও এই প্রথমবারের মতো চলমান জাতিগত সংঘাতে ড্রোন ও রকেট ব্যবহার করে হামলা চালানো হয়েছে।
এরআগে গতকাল ভিন্ন দুটি ঘটনায় মণিপুরে অন্তত ৬ জন নিহত হয়েছেন। একটি ঘটনায় নজিরবিহীনভাবে রকেট হামলা চালানো হয়েছে বলে এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে।
পুলিশ বলছে, শনিবার সকালে রাজ্যের রাজধানী ইম্ফল থেকে ২২৯ কিলোমিটার দূরে জেলার নুংচাপ্পি গ্রামে সন্দেহভাজন কুকি বিদ্রোহী হামলায় ইউরেম্বাম কুলেন্দ্র সিংহ নামে ৬৩ বছর বয়সী এক ব্যক্তি নিহত হন। অন্যদিকে মেইতি সশস্ত্র গোষ্ঠী ও পাহাড়ি কুকি উপজাতিদের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে পাঁচজন নিহত হন।
জিরিবাম পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট (এসপি) জানান, মণিপুরের মইরাং শহরে কুকি বিদ্রোহীরা যখন রকেট চালিত বোমা হামলা চালায় প্রার্থনায় রত মেইতি সম্প্রদায়ের এক বৃদ্ধ নিহত হওয়ার একদিন পর আবার হামলার ঘটনাটি ঘটল।