যশোরের শার্শা-বেনাপোলে চলতি মৌসুমে পাট খড়ি শুকাচ্ছে, দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় লাভবান হচ্ছে কৃষকেরা। এবারে সোনালী আঁশ পাটের ভালো ফলন হয়েছে। ইতিমধ্যে পাট ধোয়ার পাশাপাশি নতুন পাট হাট-বাজারে বিক্রি শুরু হয়েছে। পাটের সঙ্গে এ মৌসুমে পাট খড়ির বেশ কদরও বেড়েছে। পাট চাষিদের বাড়ি থেকে পাটখড়ি কিনে নিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। বাজারে ব্যাপক চাহিদা ও দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকটাই খুশি বলে জানান কৃষকেরা।
কৃষি বিভাগ থেকে জানা যায়, পাট খড়িকে আজও জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে গ্রাম বাংলার দরিদ্র মানুষেরা। এ জ্বালানি বারো মাস চলে। শীতকাল ও বর্ষাকালে বেশি ব্যবহার হয়। সোনালী আশ পাটের পাশাপাশি পাট খড়ি (শোলা) জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার ছাড়াও পার্টিক্যাল বোর্ড ও পাট খড়ি পুড়ে এর ছাই কম্পিউটরের কালি হিসাবে ব্যবহার হয়। ফলে এই উপজেলায় পাটের পাশাপাশি পাট খড়ির দাম ও এবার ভাল। যে কারণে কৃষকেরা পাট খড়ি বিক্রি করে বেশ লাভবান হচ্ছেন।
শার্শার শ্যামলাগাছি গ্রামের পাটচাষি জাহান আলী জানান, এবার তিনি ৫ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলেন। জমির পাট থেকে যে পাট খড়ি পেয়েছেন তা ভাল ভাবে শুকিয়ে বিক্রি করতে পারলে তা থেকে ২০-২৫ হাজার টাকা বাড়তি আয় হবে তার।
লক্ষণপুরের মান্দারতলা গ্রামের কৃষক আলী আজগর বলেন, এবার পাটের দামও ভালো পাশাপাশি প্রতি আঁটি (হাতা) পাট খড়ি আকার ভেদে ১০ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি করি। আর পাইকারি ১০০ আঁটি পাটখড়ি ৯০০ থেকে ১৯০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে কৃষকেরা জ্বালানী চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি অর্থ ঘরে তুলতে পারছেন। গত বছরের চেয়ে এবার পাট খড়ি দ্বিগুন দামে বিক্রি হচ্ছে।
বেনাপোলের বারোপোতা এলাকার ব্যবসায়ী নুর ইসলাম ও করিম গাজী জানায়, আমরা প্রতিটি গ্রামের কৃষকের বাড়ি বাড়ি থেকে পাট খড়ি কিনে শহরে বিক্রি করি। এ পাট খড়ির গ্রামাঞ্চলসহ শহরে বেশ চাহিদা রয়েছে। পাট খড়ি দিয়ে বাড়ি ঘরে বেড়া, সবজি খেতের বেড়া, মাচায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তাছাড়াও অনেক কৃষক পাট খড়ি পুড়িয়ে সার হিসেবে ছাই ব্যবহার করে ফসলী মাঠে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমার সাহা জানান, এবার এ উপজেলা সবচেয়ে বেশি পাট চাষ হয়েছে। এর মধ্যে তোষা, দেশি, মেছতা, কেনাফ জাতের পাট। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ৫ হাজার ৪৬৫ হেক্টর জমিতে পাট আবাদ হয়। যা গত বছরের চেয়ে পাঁচ হেক্টর বেশি। গত ২০২২-২৩ অর্থ বছরে শার্শা উপজেলায় ৫ হাজার ৪৬০ হেক্টর জমিতে পাট আবাদ করা হয়। ইতিমধ্যেই পাট বিক্রি শুরু হয়েছে। প্রতি মন পাট জাত ভেদে দুই হাজার ৫ শত থেকে তিন হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাটের পাশাপাশি পাট খড়ি বিক্রি করেও বাড়তি উপার্জন করছে কৃষকেরা।
এআই