কর্ম কমিশনে পিওনের চাকরি করেও যিনি কোটিপতি নেত্রকোনার মো. হুমায়ুন কবির। তিনি জেলা সদরের যোগাটি গ্রামের আনোয়ারা বেগমের দ্বিতীয় স্বামী মো. আরজ আলী খানের বড় ছেলে। কর্ম কমিশনে চতুর্থ শ্রেনির কর্মচারী হিসেবে ২০০৭ সনে চাকুরিতে যোগদানের পর গত ১৫ থেকে ১৬ বছরেই তিনি কোটিপতি বনে যান।
নিজে চাকরি নেন মুক্তিযোদ্ধা কোটায়। এরপর করেন চাকরি দেওয়ার ব্যবসা। হাতিয়ে নেন এলাকাবাসীর কাছ থেকে নগদ অর্থসহ জমি। এমন নানা অভিযোগ স্থানীয় লোকজনের।
পুলিশ রিপোর্ট খুঁজে পাওয়া গেছে হুমায়ুন ২০১২ সনে জুয়া আইনের মামলার (এফআরআই নং ০৫ জিআর নং ২০৭, ৫ মে ২০১২) আসামিও। বিভিন্ন এলাকায় গড়ে তুলেছেন আলিসান বাড়িসহ মিল। চাকরির জন্যে যারা টাকা দিয়েছিলেন অনেকে চাকরি না পেলেও ফিরে পাননি টাকা। দরবার করতে গেলে হুমকির অভিযোগ ওঠে। গত এক থেকে দুই বছর ধরে এলাকায় কেউই পাচ্ছেননা হুমায়ূনের দেখা। আত্মগোপনে থাকার কথা জানান অনেকেই।
চাকরিতে গিয়ে নামে বেনামে করেছেন বেশ কয়েকটি বাড়ি। কোনটায় ভাই কোনটায় থাকেন বোন। আবার দিয়ে রেখেছেন ভাড়া। নেত্রকোনা পৌর শহরের সাতপাই কেডিসির বাসায় ভাড়া থাকে ১৬টি পরিবার। এদিকে গ্রামের ফিশারির পাশে আধুনিক মিল নির্মাণ করছেন, সাথেই রয়েছে তিনতলা ভবন।
ওই গ্রামে তার নির্মাণাধীন অটো রাইস মিলের কেয়ারটেকার আব্দুল বারেক বলেন, ফিশারির পাশে নান্দনিক বাড়িতে কর্মচারীরা থাকেন। তারা এখানে থেকে কাজ করে। মালিকের জায়গা কতখানি তা তিনি বলতে পারেন না। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। তৈরী করছেন মিলসহ নানা স্থাপনা।
স্থানীয় আব্দুল গণি, আমির হোসেন, বীরেন্দ্র পাল সহ অনেকের অভিযোগ পিওনের চাকরি করেই একযুগে অনেক টাকার মালিক হয়েছেন বলে তারা প্রত্যক্ষ করেছেন। তারা বলেন আরজ আলী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সনদপ্রাপ্ত হওয়ায় কোটায় চাকরি পায় অষ্টম শ্রেনি পাস হুমায়ুন। ডিয়ারিং থাকায় বাবার সাথে ভালো সম্পর্ক ছিলো না। কিন্তু নিজের চাকরির পর অনেকেকে টাকা নিয়ে চাকরি দিয়েছেন।
আবার চাকরি না পাওয়া অনেককে টাকা ফেরত দেয়ার কথা বলেও ঘুরিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
ভুক্তভোগী বীরেন্দ্র পাল বলেন, তার ভাই দীরেন্দ্র পালের চাকরির জন্য ৫ কাঠা জায়গা ও ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা নগদ দিয়েছিলেন। যার কোনটাই ফেরত পাননি। হিন্দু পরিবার বলে পাচ্ছেন না সঠিক বিচার।
অন্যদিকে সাতপাই কেডিসি এলাকার মো. ইয়াহিয়া ও রাসেল আহমেদ জানায় যোগাটি গ্রামে মিল কারখানা, বাড়ি সহ নেত্রকোনা কেডিসি এলাকায় বাসা, কাটলিতে জায়গা ঢাকার বনানিতে বাড়ি সহ বিভিন্ন স্থানে নানা স্থাপনা গড়ে তোলেন। পাওনা টাকা আদায়ে লোকজন আসলে তাদেরকে হুমকি দেন হুময়ায়ুন। বিচার দিলে কোন দিনই পাবে না টাকা।
এদিকে খোঁজ নিয়ে এবং হুমায়ুনের খোঁজে কেডিসির পিছনের অপর একটি বাসায় থাকা একমাত্র বোন শরীফা আক্তারের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানায় তার ভাইয়ের সাথে কোন যোগাযোগ নেই।
মা আনোয়ারা বেগম বলেন, তিনি ছেলের বনানির বাসায় ছিলেন কিছুদিন। অধিক অর্থসহ এসকল তথ্য মিথ্যাও বলেও দাবী করেন মা। তিনি বলেন আগে থেকেই ছিলো।
এআই