ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে সরকার পতনের পর ১৫ আগস্ট পদত্যাগ করেন ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ আবদুর রশীদ। পরদিন ১৬ আগস্ট থেকে অফিসে আসেন না উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ। সবশেষ ২২ আগস্ট থেকে অনুপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়টির কোষাধ্যক্ষ এস এম এহসান কবীরও।
ভিসির পদত্যাগ, প্রো-ভিসি ও কোষাধ্যক্ষ লাপাত্তা হওয়ায় কার্যত অচল হয়ে পড়েছে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন দেশের প্রায় ১৫০০ মাদরাসা। এসব মাদরাসার বিভিন্ন কার্যক্রমে অনেকে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ঢাকার বসিলায় অবস্থিত ক্যাম্পাসে এসেও ফিরে যাচ্ছেন।
এমন পরিস্থিতিতে প্রশাসনিক শূন্যতা নিরসনে পদক্ষেপ নিতে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষ থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন রেজিস্ট্রার ড. মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম। সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) এ চিঠি পাঠানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত প্রায় ১৫০০ মাদরাসার প্রশাসনিক, অ্যাকাডেমিক ও আর্থিক কাজে স্থবিরতা বিরাজ করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ প্রশাসনিক ও আর্থিক কার্যক্রমও পরিচালনা করা যাচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ অনুপস্থিত। ডিন, বিভাগীয় চেয়ারম্যান ও কোনো অধ্যাপকও নেই। ফলে ‘জ্যেষ্ঠ অধ্যাপককে সাময়িকভাবে আর্থিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব’ সংক্রান্ত মন্ত্রণালয়ের দেওয়া নির্দেশনা বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না।
এতে আরও বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ২০১৩ ধারা ১১(৩) অনুযায়ী জরুরি প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্বসহ অন্যান্য কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে পরিচালনার জন্য শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পক্ষ থেকে বারবার উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে অনুরোধ করা হলেও তারা আসেননি। মন্ত্রণালয়ের পত্র অনুযায়ী দায়িত্ব গ্রহণের জন্য বলা হলেও তারা দায়িত্ব গ্রহণ করেননি।
এ অবস্থায় ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক, অ্যাকাডেমিক ও আর্থিক কার্যক্রম এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত মাদরাসা পরিচালনার জন্য উপাচার্য নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চিঠিতে অনুরোধ করা হয়।
রেজিস্ট্রার ড. মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম বলেন, ‘উপাচার্য পদত্যাগ করেছেন। উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ পদত্যাগ না করলেও অফিসে আসেন না। ফলে কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করা যাচ্ছে না। প্রতিদিন বহু শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা নানান কাজে ঢাকা এসেও ফিরে যান। এভাবে কতদিন ফেরানো যায়। এজন্য শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।’
বিষয়টি নিয়ে জানতে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও কোষাধ্যক্ষ এস এম এহসান কবীরের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি। উপ-উপাচার্যের নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। কোষাধ্যক্ষের নম্বরে কল ঢুকলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. শেখ আব্দুর রশিদ বলেন, ‘এমন পরিস্থিতি বেশ কয়েকটা বিশ্ববিদ্যালয়ের। সেখানে জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকও নেই। যেগুলোতে এমন পরিস্থিতি রয়েছে, সেখানে দ্রুত ভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’