বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশ ছাড়েন ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর। দীর্ঘ ১৬ বছর সপরিবারে যুক্তরাজ্যে নির্বাসিত জীবন কাটাচ্ছেন তিনি।
তখন দেশ ছাড়ার আগে-পরে তার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দেওয়া হয়। যেখানে যাবজ্জীবনসহ চার মামলায় তাকে বিভিন্ন সাজাও দেওয়া হয়। এছাড়া তখন দেশের কোনো গণমাধ্যমে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারেও নিষেধাজ্ঞা দেন উচ্চ আদালত।
তবে গত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর ওইদিনই দেশের সব গণমাধ্যম তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচার করা হয়। বিএনপির সিনিয়র নেতারাও জানান, খুব শিগগিরই দেশে ফিরবেন তারেক রহমান। কিন্তু ৪৫ দিন পার হলেও তারেক রহমানকে দেশে ফেরানোর আইনি বাধা কাটেনি।
এবার তারেক রহমানের সম্মতি পেলে তার সাজা স্থগিত চেয়ে সরকারের কাছে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন দলটির আইনজীবী নেতা অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। অবশ্য তার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল জানান, আইনি প্রক্রিয়ায় দেশে ফিরবেন তিনি। কবে নাগাদ ফিরবেন সে সিদ্ধান্তও তিনি নেবেন।
দলটির আইনজীবী ফোরামের সভাপতি জয়নুল আবেদীন বলেন, তারেক রহমানের সম্মতির অপেক্ষায় রয়েছেন তারা। সম্মতি পেলেই ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা প্রয়োগ করে তারেক রহমানের সাজা স্থগিতের আবেদন করা হবে সরকারের কাছে। এ ধারা প্রয়োগ করেই বেগম খালেদা জিয়াকে সাময়িক মুক্তি দিয়েছিলো আওয়ামী লীগ সরকার।
তবে বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘আইনি পথে ছাড়া অন্য কোন পথে ফিরবেন না তারেক রহমান। তিনি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। যে কারণে ওনার বিরুদ্ধে যেসব মামলার রায় হয়েছে, সেগুলো তিনি আইনগতভাবে মোকাবিলা করবেন। আর যেগুলোর রায় হয়নি, সেগুলোর বিষয়ে আইনগতভাবে আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি।’
আর ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ এস এম শাহজাহান বললেন, তারেক রহমানের উচিত দেশে ফিরে মামলা বাতিলের আবেদন করা।
তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অর্ধশতাধিক মামলা রয়েছে। ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এসব মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত তিনি। এছাড়া আরও ৫টি মামলার বিচার শেষে সাজা ঘোষণা করা হয়েছে। আর কিছু মামলা স্থগিত রয়েছে। তবে কোনো মামলাতেই তিনি সাজা ভোগ করেননি। তাকে পলাতক দেখিয়ে বিচার হয়েছে এসব মামলার।
এবি