বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য আগামী ৮ নভেম্বর লন্ডন যাচ্ছেন। তার সঙ্গে যাচ্ছেন মেডিকেল বোর্ডের ৭ চিকিৎসক। গতকাল মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) এ তথ্য নিশ্চিত করেন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
ডা. জাহিদ জানান, মেডিকেল বোর্ডের সদস্য হিসেবে তিনি নিজে, হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদার, ডা. শামসুল আরেফিন, হেপাটোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নুরউদ্দিন আহমেদ, প্রফেসর ডা. ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ সিদ্দিকী (এফএম), ডা. আবু জাফর, ডা. মো. আল মামুন খালেদা জিয়ার সঙ্গে যাচ্ছেন।
তিনি আরও জানান, উন্নত চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে প্রথমে লং ডিসট্যান্স স্পেশালাইজড এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে লন্ডন নিয়ে যাওয়া হবে। এরপর সেখানে থেকে তৃতীয় কোনো একটি দেশে মাল্টি ডিসিপ্ল্যানারি মেডিকেল সেন্টারে নেওয়া হবে। এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে কাজ করছে বিএনপি ও চিকিৎসা-সংশ্লিষ্টরা।
অধ্যাপক জাহিদ বলেন, ‘ম্যাডামের শারীরিক সুস্থতার ওপর নির্ভর করে কাজ করছি। অতি দ্রুত উনাকে বিদেশে মাল্টি ডিসিপ্ল্যানারি হাসপাতালে নিয়ে যেতে আমরা প্রক্রিয়া শুরু করেছি। এর অংশ হিসেবে আমরা লং ডিসট্যান্স স্পেশালাইজড এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করার চেষ্টা করছি। প্রথমে ম্যাডামকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে স্টেওভার করে, পরে মাল্টি ডিসিপ্ল্যানারি মেডিকেল সেন্টারে (তৃতীয় কোনো দেশে) নিয়ে যাওয়া হবে। আমরা আশা করছি, সব কাজ সম্পন্ন করে অতিদ্রুতই ম্যাডাম বিদেশে যেতে পারবেন।’
জাহিদ বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, ম্যাডাম গুলশানের বাসায় আগের মতোই মেডিকেল বোর্ডের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধায়নে আছেন। বলতে পারেন তার অবস্থা স্থিতিশীল।’ তিনি জানান, খালেদা জিয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিদেশে চিকিৎসার জন্য যাবেন। ইতিমধ্যে সে বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কারণ ম্যাডামের সঙ্গে চিকিৎসক-নার্সসহ, আত্মীয়স্বজনরাও যাবেন।
৭৯ বছর বয়সী সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, আর্থ্রাইটিস, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। এভারকেয়ার হাসপাতালে বিভিন্ন সময়ে আইসিইউতে রেখে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ডের মাধ্যমে তাকে দীর্ঘ সময়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৬ আগস্ট তাকে নির্বাহী আদেশে মুক্তি দেওয়া হয়। সর্বশেষ ২১ আগস্ট এভারকেয়ার হাসপাতালে এক মাস চিকিৎসাধীন থেকে বাসায় ফেরেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুর্নীতির দুই মামলায় খালেদা জিয়াকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। তখন দুই বছরের বেশি সময় তিনি কারাবন্দি ছিলেন। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দেয়। এরপর ৬ মাস পরপর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছিল সরকার।
এইচএ