প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ‘আদানি বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করবে- এমন কোনো চিঠি আমরা পাইনি। এমন কিছু হলে, আমরা সেটার কনডেম [নিন্দা] করি।
রোববার (৩ নভেম্বর) ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
এ দিন ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পাওনা পরিশোধ না হওয়ায় বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধের সময় বেঁধে দিয়েছে ভারতের আদানি পাওয়ার।
প্রতিবেদনটিতে দাবি করা হয়েছে, আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ এ বিষয়ে পরিষ্কারভাবে তাদের সিদ্ধান্ত না জানালে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করবে আদানি।
এদিকে শফিকুল আলম বলেছেন, আদানির বকেয়া বর্তমান সরকারের নয়, আগের সরকারের লেগেসি [ধারাবাহিকতা]।
‘গত আগস্টে আদানিকে ৯১ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হয়েছে, যা আগের মাসের তুলনায় দ্বিগুণ। বকেয়া পরিশোধ প্রক্রিয়া আরও ত্বরান্বিত করার চেষ্টা চলছে,’ বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আদানির ৭০০ মিলিয়ন ডলার বকেয়া রয়েছে, এবং আমাদের তা পরিশোধের সক্ষমতা রয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব বকেয়া পরিশোধে কাজ করছি আমরা।’
এর আগে বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) রাতে আদানি পাওয়ার তাদের ঝাড়খণ্ড পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকে কমিয়ে দেয়।
পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশ-এর আমদানির তথ্য অনুযায়ী, সরকারের কাছে আদানির বড় অঙ্কের বিল বকেয়া রয়েছে।
গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (পিডিবি) কাছে আদানি পাওয়ারের আট–নয় মাসের বিদ্যুৎ বিলের ৮০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি পাওনা রয়েছে।
আগস্টের শেষ দিকে আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি অন্তর্বর্তী সরকারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে এ দায় পরিশোধে হস্তক্ষেপ চেয়ে অনুরোধ করেন।
২৭ আগস্ট এক চিঠিতে আদানি উল্লেখ করেন, ‘বাংলাদেশের প্রতি আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করছি। কিন্তু ঋণদাতারা এখন আমাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে। আমি বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কাছে বকেয়া ৮০০ মিলিয়ন ডলারের প্রাথমিক পরিশোধ নিশ্চিত করতে আপনার সহায়তা কামনা করছি।’
এছাড়া, আদানি পাওয়ার আগস্টের শেষের দিকে পিডিবিকেও বকেয়া বিল পরিশোধের জন্য একটি চিঠি দেয়।
পিডিবি-সূত্রে জানা গেছে, বকেয়া পরিশোধ করতে পিডিবি ৩০ অক্টোবরের মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে ১৭০ মিলিয়ন ডলারের একটি ঋণপত্র (এলসি) খোলার পরিকল্পনা করেছিল। তবে ওই এলসি না খুলতে পারায় পিডিবি অর্থ পরিশোধের জন্য আরও সময় চায়।
যদিও বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ফারজানা মমতাজ গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, বিষয়টির সমাধান হয়েছে।
‘আমরা আদানির সঙ্গে কথা বলেছি। একটি এলসি খোলা হয়েছে। এখনও প্রয়োজন অনুযায়ী বিদ্যুৎ পাচ্ছি না, তবে আমদানি বা বকেয়া পরিশোধ নিয়ে আর কোনো সমস্যা নেই,’ বলেন তিনি।
পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশের (পিজিবি) ওয়েবসাইটে শুক্রবার (১ নভেম্বর) প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ঝাড়খন্ডের গড্ডা প্ল্যান্ট এক হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিপরীতে বাংলাদেশে ৭২৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে।
এফএস