চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার বিভিন্ন স্থানে মাটি কাটার মহোৎসব চলছে। মাটি কেটে তা ইটভাটায় বিক্রি করছে একাধিক চক্র। কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন দলের পরিচয় ব্যবহার করে এসব অবৈধ মাটিবাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ।
স্থানীয় ইটভাটায় এসব মাটির চাহিদা থাকায় তা চড়া দামে বিক্রি করে তারা হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, মাছ চাষের কথা বলে পুকুর খনন ও মৎস্য খামার স্থাপনের কথা বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ওসি বরাবরে আবেদন করে মাটি কেটে বিভিন্ন ইটভাটা ও স্থাপনা নির্মাণকারীদের কাছে বিক্রি করছে মাটি বিক্রেতা সিন্ডিকেট। মাটি আনা-নেয়ার ফলে অধিকাংশ গ্রামীণ কাঁচাপাকা সড়কের বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। স্থানীয়দের দাবি, মূলত প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এসব মাটিখেকো তাদের অবৈধ মাটি বিক্রির কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রতিদিন সন্ধ্যা নামতেই মাটি কাটার তৎপরতা শুরু হয়। রাত গভীর হলেই স্কেভেটর দিয়ে শুরু হয় মাটি কাটা। ব্যক্তিমালিকানাধীন জমির পুকুর খনন ও পুকুরের পার বাঁধার নামে মাটি কেটে তা ইটভাটায় পাচার করা হচ্ছে।
একাধিক সূত্র জানিয়েছে, উপজেলা পরিষদ, ভূমি অফিস, থানা যাতায়াতের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মাটি কারবারিরা সোর্স লাগিয়ে রেখেছে। তাদের কাজ হচ্ছে প্রশাসনের গতিবিধির ওপর নজরদারির মাধ্যমে অভিযানের আগাম তথ্য জানিয়ে দেওয়া।
জানা যায়, উপজেলার সবচেয়ে বেশি ইটভাটা গড়ে উঠেছে উত্তর ঢেমশা, দক্ষিণ ঢেমশা, তেমুহনী, রসুলাবাদ ও দক্ষিণ ছদাহা এলাকায়। সাতকানিয়ার পশ্চিমে বাঁশখালী সীমান্ত এলাকায় পাহাড় ঘেঁষে এওচিয়া ছুড়ামনি ও ছনখোলা এলাকায় পাহাড়ের পাশে রয়েছে ১০-১২টি ইটভাটা। প্রতিদিন রাতের অন্ধকারে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাটি কেটে এসব ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের নির্মাণাধীন রেললাইন ঘেঁষে উত্তর ঢেমশা ও তেমুহনী মৌজায় আওয়ামী শাসনামলে তাদের দলীয় লোকজন গত কয়েক বছর ধরে শত শত হেক্টর ফসলি জমির মাটি কেটে নেয়ার ফলে এক সময়ের ফসলি জমি এখন বিশাল লেকে পরিণত হয়েছে।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিল্টন বিশ্বাস বলেন, ‘মাটি কেটে বিক্রয়ের কোনো অনুমতি নেই। পুকুর সংস্কার করতে যে মাটি উঠবে তা দিয়ে পুকুরের পার বাঁধতে পারবে। বিক্রি করতে পারবে না।’
আরইউ