বরিশারের গৌরনদীতে সাবেক শ্বশুরের বসত ঘরে অগ্নিসংযোগ করে নিজের গাঁয়ে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে সবুজ হাওলাদার (৩৫) নামে এক সাবেক স্বামী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। সাবেক স্বামীর সঙ্গে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী যেতে রাজি না হওযায় রবিবার (২০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার বার্থী গ্রামে সাবেক শ্বশুর মজিবর কাজীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
অগ্নিদগ্ধ সবুজ হাওলাদার পার্শ্ববর্তী আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের উত্তর শিহিপাশা গ্রামের মৃত আয়নাল হাওলাদারের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী মুন্নীর স্বজনরা জানায়, গত ১৩ বছর পূর্বে গৌরনদীর বার্থী গ্রামের মজিবর কাজীর মেয়ে মুন্নী খানমের সঙ্গে আগৈলঝাড়া উপজেলার উত্তর শিহিপাশা গ্রামের মৃত আয়নাল হাওলাদারের ছেলে সবুজ হাওলাদারের সামাজিক ভাবে বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের সংসারে ২টি ছেলে সন্তানের জম্ম হয়। দাম্পত্য কলহের জেরধরে স্বামী সবুজ গত ৬ বছর পূর্বে মুন্নীকে তালাক দেয়। এর ৫ মাস পর সাবেক স্বামী সবুজ বার্থী গ্রামের সাবেক শ্বশুর বাড়িতে এসে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী মুন্নীকে বেধড়ক মারপিট করে ডান হাত ভেঙ্গে ফেলে।
এসময় প্রতিবেশীরা সবুজকে আটক করে গৌরনদী থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছিল। এ ঘটনায় নির্যাতিতা মুন্নী খানম বাদি হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে গৌরনদী থানায় একটি মামলা দায়ের করে। বর্তমানে ওই মামলাটি বরিশাল আাদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
সবুজ জামিনে বের হয়ে বাক্প্রতিবন্ধী এক নারীকে ২য় বিয়ে করলে ওই সংসারে ২টি সন্তান জন্ম হয়। গত ২ বছর পূর্বে মুন্নী সৌদি প্রবাসে গিয়ে গত দেড়মাস পূর্বে দেশে ফিরে আসেন। সাবেক স্বামী সবুজ হাওলাদার ও তার (সবুজের) মা শিরিয়া বেগম রোববার সকাল সোয়া ১০টার দিকে বার্থী গ্রামে সাবেক শ্বশুর মজিবর কাজীর বাড়িতে এসে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী সৌদি প্রবাসী মুন্নীসহ ২ ছেলেকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। সাবেক স্বামীর সঙ্গে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী যেতে রাজি না হলে সাবেক স্বামী সবুজ ক্ষিপ্ত হয়ে সাবেক শ্বশুরের বসত ঘরে ও নিজের গাঁয়ে পেট্রল ঢেলে প্রথমে ঘরে অগ্নিসংযোগ করে । এরপর নিজের গায়ে আগুন দিয়ে সবুজ আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
এসময় সবুজের মা ও সাবেক শ্বশুর-শাশুড়ির ডাকচিৎকারে গ্রামবাসী ছুটে এসে ঘরের ও সবুজের গাঁয়ের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। সবুজকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অগ্নিদগ্ধ সবুজের মা শিরিয়া বেগম বলেন, তালাকপ্রাপ্ত পুত্রবধু মুন্নী খানম আমার ছেলে সবুজের সঙ্গে আমাদের বাড়িতে আসতে রাজি না হলে সবুজ অভিমান করে। তখন ক্ষিপ্ত হয়ে মুন্নীর বাবার ঘরে ও সবুজ নিজের গাঁয়ে পেট্রল ঢেলে প্রথমে ঘরে অহ্নিসংযোগ করে। এরপর নিজের গাঁয়ে আগুন দিয়ে সবুজ আত্মহত্যার চেষ্টা করে। গুরুতর অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় সবুজকে বরিশাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গৌরনদী থানার ওসি মো. ইউনুস মিয়া ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে অগ্নিদগ্ধ সবুজ হাওলাদার (৩৫)কে উদ্ধার করে রোববার বেলা ১১টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়।
এরপর স্বজনরা উন্নত চিকিৎসার জন্য শনিাবর দুপুরে অগ্নিদগ্ধ সবুজকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ব্যাপারে কোন পক্ষই থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এনআই