এইমাত্র
  • তিন বাহিনীর প্রধানকে নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করলেন প্রধান উপদেষ্টা
  • আমার বাসস্থানে এসে শপথ পড়ানোর প্রস্তাব দিলেও লাভ নাই: ইশরাক
  • অবশেষে বার্সেলোনার ‘১০ নম্বর’ জার্সি খুঁজে পাচ্ছে ‘নতুন মেসি’কে
  • শেনজেনভুক্ত দেশে ভিসা প্রত্যাখ্যানে শীর্ষ তিনে বাংলাদেশ
  • নকল সাপ্লিমেন্ট প্রচারের অভিযোগে ভিয়েতনামের বিউটি কুইন গ্রেফতার
  • ৭ মাসে ২৫ যুবককে বিয়ে করে সর্বস্ব লুটপাটের অভিযোগে গ্রেফতার নারী
  • দুর্যোগে নিরবচ্ছিন্ন সেবা নিশ্চিতে পল্লী বিদ্যুৎ স্টেশন প্রস্তুত রাখার নির্দেশ
  • স্ত্রীসহ পল্লবী থানার সাবেক ওসি অপূর্ব হাসানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
  • রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক চাপে ভারত, জাতিসংঘের তদন্ত শুরু
  • সৌদি আরবে হাই-টেক ফিল্ম স্টুডিও চালু
  • আজ বুধবার, ৭ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ | ২১ মে, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    অবৈধ তিন চাকার যান দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মহাসড়ক

    মো. জাহেদুল ইসলাম, সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:২০ পিএম
    মো. জাহেদুল ইসলাম, সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:২০ পিএম

    অবৈধ তিন চাকার যান দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মহাসড়ক

    মো. জাহেদুল ইসলাম, সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:২০ পিএম

    চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক বাংলাদেশের অন্যতম ব্যস্ততম ও গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে হাজারো গাড়ি যাতায়াত করে কক্সবাজার, বান্দরবান, টেকনাফসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে। অথচ এই সড়কের সাতকানিয়া অংশে প্রতিনিয়ত চোখে পড়ে এক ভয়াবহ চিত্র—সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে চলছে হাজারো তিন চাকার সিএনজি অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত টমটম ও নসিমন-করিমন।

    ২০১৫ সালে সরকার একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে দেশের ২২টি জাতীয় মহাসড়কে অটোরিকশা, টমটম, নসিমন, করিমনসহ সকল ধরনের তিন চাকার যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে। এরপর বিভিন্ন সময় হাইকোর্টের নির্দেশনা, হাইওয়ে পুলিশের অভিযানের ঘোষণা, এমনকি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিও জারি হয়। কিন্তু সাতকানিয়ার বাস্তবতায় দেখা যায়, এসব কিছুকেই বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলছে অবৈধ যান চলাচল—প্রকাশ্য দিবালোকে।

    চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের সাতকানিয়া অংশের প্রায় প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে মহাসড়কের পাশে দাঁড়ালেই চোখে পড়ে সারি সারি সিএনজি অটোরিকশা ও টমটম। তারা যাত্রী তুলছে, নামাচ্ছে, আবার কখনোবা রাস্তার মাঝেই থেমে যাচ্ছে। ফলে নিয়মিত সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। বড় গাড়িগুলো (যেমন বাস, ট্রাক, কাভার্ডভ্যান) বাধ্য হয়ে হঠাৎ ব্রেক কষছে, আর এতে করে বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি।

    স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এই যানবাহনগুলোর চালকদের অধিকাংশই অপ্রাপ্তবয়স্ক, তাদের নেই বৈধ লাইসেন্স, এমনকি যানবাহনগুলোর অনেকগুলোরই রেজিস্ট্রেশন নেই। তারপরও এরা দিব্যি মহাসড়কে ঘুরে বেড়াচ্ছে। শুধু কেরানীহাট বাজারেই প্রতিদিন প্রায় ৪৫০টি টমটম ও সিএনজি অটোরিকশা মহাসড়কে উঠছে, এমন তথ্য পাওয়া গেছে স্থানীয় এক যানবাহন শ্রমিক ইউনিয়নের অন্দর থেকে।

    সাধারণত দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে সিএনজির সঙ্গে বাস বা ট্রাকের সংঘর্ষ, রাস্তার মাঝে থেমে থাকা টমটমে পেছন থেকে গাড়ি ধাক্কা লাগা, কিংবা অদক্ষ চালকের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছ বা রাস্তার পাশে ছিটকে পড়া অন্যতম।

    অনেকে মনে করেন, এইসব যানবাহন হঠাৎ করে পুরোপুরি বন্ধ করা বাস্তবসম্মত নয়। কারণ, গ্রামের সাধারণ মানুষ স্বল্প দূরত্বে যাতায়াতের জন্য সিএনজি বা ব্যাটারিচালিত রিকশাকে সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী মনে করেন। বিশেষ করে স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থী, বাজারগামী নারীরা এবং বয়স্ক ব্যক্তিরা এই যানগুলোতে নির্ভরশীল।

    এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিকল্প রুট নির্মাণ, স্থানীয় সড়ক উন্নয়ন, এবং মহাসড়ক থেকে তিন চাকার যানবাহন পুরোপুরি সরিয়ে দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট স্টপেজ ও রুট নির্ধারণ করে কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করতে হবে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক শুধু একটি রোড নয়, এটি অর্থনৈতিক, পর্যটন ও আঞ্চলিক সংযোগের প্রধান মাধ্যম। এই মহাসড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে সাতকানিয়ার মতো অংশে অবৈধ যান চলাচল বন্ধে বাস্তবসম্মত, কঠোর এবং টেকসই পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতৃত্ব, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং সড়ক ব্যবহারকারী সবাইকে একসঙ্গে এগিয়ে না আসলে—এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।

    স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “আমার ছোট ভাই সিএনজিতে যাচ্ছিল, ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। মহাসড়কে এইসব যান না থাকলে হয়তো সে আজ বেঁচে থাকত।”

    দোহাজারী হাইওয়ে পুলিশের ওসি শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন, “আমরা অবৈধ তিন চাকার যানের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। বিভিন্ন সময় এসব যান আটক করে মামলা দেওয়া হচ্ছে।”

    তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রায় প্রতিটি স্ট্যান্ডে রয়েছে চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট, যারা সিএনজি ও টমটম থেকে দৈনিক ভিত্তিতে টাকা তুলে দেয় কিছু প্রভাবশালী মহলের হাতে। এ কারণে প্রশাসনের অভিযানও টেকসই হয় না।

    সাতকানিয়া উপজেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আমরা মাঝেমধ্যে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করি, কিন্তু এককভাবে এর সমাধান সম্ভব না। এর জন্য সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।”

    এনআই

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    চলতি সপ্তাহে সর্বাধিক পঠিত

    Loading…