এইমাত্র
  • সাবেক সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম তালুকদার মারা গেছেন
  • মুন্সিগঞ্জে পুলিশের সামনে ছাত্রলীগ-যুবলীগের মিছিল, এসআই ক্লোজড
  • আজ রাতে ভারত-বাংলাদেশ ধ্রুপদী লড়াই
  • ১০ মাসে ঢাকায় ১৯৮ হত্যাকাণ্ড: ডিএমপি
  • রাজবাড়ীতে বিএনপি নেতা বহিষ্কার
  • লক্ষীপুরে প্রধান শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ
  • ৬৭৮ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড মালিকের বিরুদ্ধে মামলা
  • চেয়ারম্যান অসুস্থ, আজ পাঠানো হচ্ছে না হাসিনা-কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের কপি
  • সাগরে ফের লঘুচাপের আভাস
  • হিলিতে ট্রান্সফরমার চুরি, বিপাকে কৃষকরা
  • আজ মঙ্গলবার, ৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ | ১৮ নভেম্বর, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    ভাঙনে হারিয়ে যাচ্ছে আশ্রায়ণের ঘর, মালামাল গোপনে বিক্রির অভিযোগ

    মিয়া রাকিবুল, আলফাডাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি প্রকাশ: ৪ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৩২ এএম
    মিয়া রাকিবুল, আলফাডাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি প্রকাশ: ৪ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৩২ এএম

    ভাঙনে হারিয়ে যাচ্ছে আশ্রায়ণের ঘর, মালামাল গোপনে বিক্রির অভিযোগ

    মিয়া রাকিবুল, আলফাডাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি প্রকাশ: ৪ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৩২ এএম

    এক যুগেরও বেশি সময় আগে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার চাপুলিয়া গ্রামে ভূমি ও গৃহহীনদের জন্য সরকারি খাস জমিতে নির্মাণ করা হয়েছিল আশ্রায়ণ প্রকল্পের ১৩০টি ঘর। তখন প্রকল্পের ঘরগুলি থেকে মধুমতি নদীর দূরত্ব ছিল নূন্যতম এক কিলোমিটার। চার বছর আগে ২০২১ সালে ওই এলাকায় মধুমতি নদীর তীব্র ভাঙন শুরু হয়।

    ভাঙনের কারণে গত ২০২৪ সাল পর্যন্ত তিন বছরে ওই আশ্রায়ণ প্রকল্পের কমপক্ষে একশোটি ঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। অবশিষ্ট ছিল একটি অফিসকক্ষসহ ৩০টি ঘর। চলতি বছর ভাঙনের কবলে পড়ে অফিস কক্ষসহ চারটি ঘর। এ অবস্থায় প্রকল্পের একটি চক্রের বিরুদ্ধে রাতের আঁধারে নামমাত্র মূল্যে সরকারি ওই ঘরগুলোর বিভিন্ন মালামাল ভাঙারির দোকানে বিক্রি করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

    খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১১-২০১২ অর্থ বছরে আলফাডাঙ্গা উপজেলার টগরবন্ধ ইউনিয়নের চাপুলিয়া গ্রামে মধুমতি নদীর তীর ঘেঁষে ১৩০টি পরিবারের আবাসনের জন্য নির্মাণ করা হয় আশ্রায়ণ। বসবাসের কয়েক বছরের মাথায় নদীভাঙনের কবলে পড়ে আশ্রয়ণ প্রকল্প। তবে ২০২১ সাল থেকে ভাঙনের তীব্রতা বাড়তে থাকে। চলতি বছর ভাঙন ঝুঁকিতে প্রকল্পের চারটি পরিবার অন্যত্র চলে যায়। এই সুযোগে সেসব ঘরের ঢেউটিন, লোহার এঙ্গেল ও ইট খুলে নিয়ে রাতের আঁধারে ভ্যান ভর্তি করে নামমাত্র মূল্যে ভাঙারির দোকানে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে ওই প্রকল্পের বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে।

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চাপুলিয়া গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, 'আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা ইমরুল শেখ ইমুল, আরিফুল শেখ ও মুকুল শেখ রাতের আঁধারে ভ্যান ভর্তি করে কয়েকটি ঘরের ঢেউটিন ও লোহার এঙ্গেল পাশ্ববর্তী বোয়ালমারী উপজেলার সহস্রাইল বাজারের বিভিন্ন ভাঙারির দোকানে বিক্রি করেছে। এখনো ওইসব ঘরের কিছু মালামাল তাদের বাড়ির সামনে জমা আছে। যেকোন সময় চক্রটি ওইসব মালামালও বিক্রি করে দিতে পারে।'

    সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গত ১০ দিনের ব্যবধানে মধুমতি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে প্রকল্পের কমপক্ষে চারটি ঘর ও একটি অফিস ঘর। প্রকল্পের বাসিন্দা ইমরুল শেখ ওরফে ইমুল ও আরিফুল শেখের ঘরের সামনে বেশকিছু লোহার এঙ্গেল ও ইটের স্তুপ দেখা গেছে।

    এসময় জানতে চাইলে ইমরুল শেখ ওরফে ইমুল বলেন, 'নদীতে প্রকল্পের অফিস ঘর ভেঙে যাচ্ছিল। তাই অফিস ঘরের মালামাল খুলে এনে আমার ঘরের সামনে রাখা হয়েছে। এসব দিয়ে নতুন করে আবার ঘর করা হবে।' তবে ভাঙারির দোকানে মালামাল বিক্রির অভিযোগটি অস্বীকার করে ইমুল বলেন, 'কয়েক বছর আগে একবার ১০ মণ লোহার মালামাল বিক্রি করেছিলাম। পরে ইউএনও অফিস থেকে জানতে পেরে আমাকে গ্রেপ্তার করে। এরপর সেই মালামাল ফেরত দিয়ে আমি মুক্তি পাই। সেই থেকে আমি আর কোন সরকারি মালামাল বিক্রি করিনি। আমি ভালো হয়ে গেছি।'

    আরিফুল শেখের স্ত্রী মর্জিনা বেগম বলেন, 'নদীতে আমার দেবরের ঘর ভেঙে যাচ্ছিল। তারা ঘর ছেড়ে অন্য জায়গা চলে গেছে। তাই তার ঘরের মালামাল খুলে নিয়ে আসছি। এগুলো বিক্রি করবো না। এসব মালামাল দিয়ে নতুন আরেকটি ঘর করা হবে।'

    চাপুলিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকার সভাপতি আকুব্বর শেখ বলেন, 'আমরা যখন এখানে আসি তখন ১৩০ পরিবারের বসবাস ছিল। প্রতিবছর নদীতে ভাঙতে ভাঙতে এখন আমরা মাত্র ৩০ পরিবার বসবাস করি। প্রকল্পের ঘরগুলোর মালামাল গোপনে বিক্রি হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এসব আমার জানা নেই।'

    তবে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবুল কালাম কালু বলেন, 'বেশ কয়েক বছর ধরে মধুমতি নদীতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর ভেঙে যাচ্ছে। এই সুযোগে ওখানের কিছু লোকজন সরকারি মালামাল নিয়ে বিক্রি করে দিচ্ছে।' তিনি বলেন, ঘরগুলি যখন নির্মাণ করা হয় তখন নদী অন্তত এক কিলোমিটার দূরে ছিল। এরপর থেকে নদী ক্রমশ ভাঙতে ভাঙতে এ আশ্রয়ণ প্রকল্পের দিকে এগিয়ে আসে। তিনি বলেন, তবে গত ২০২১ সাল থেকে নদী যে রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছে তা ভয়াবহ।

    জানতে চাইলে আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসেল ইকবাল সময়ের কন্ঠস্বরকে বলেন, 'আমি জানি ওই আশ্রয়ণ প্রকল্পের অবশিষ্ট ঘরগুলি ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।' তিনি বলেন, 'এ ঘরগুলি সরকারি সম্পত্তি। সরকারি মালামাল গোপনে বিক্রি করা দণ্ডনীয় অপরাধ। মালামাল গোপনে বিক্রির বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে এ ব্যাপারে জড়িতদের শনাক্ত করে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।'

    এনআই

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    চলতি সপ্তাহে সর্বাধিক পঠিত

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…