ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে প্রতিনিয়ত কোটি কোটি টাকার স্বর্ণ পাচার হচ্ছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মহেশপুর বিজিবি জব্দ করেছে ৪৯ কেজি ৫৮২ গ্রাম স্বর্ণ, যার বাজারমূল্য শতকোটি টাকার বেশি। এ সময়ে ৪১ জন পাচারকারীকে আটক করা হয়।
বিজিবির তথ্যমতে, সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক অভিযানে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়েছে। ২৭ সেপ্টেম্বর কাকিলাদাঁড়ি বাজার থেকে ২ কেজি ৩৩১ গ্রাম স্বর্ণসহ দুই যুবককে আটক করা হয়, যে স্বর্ণের মূল্য প্রায় ৩ কোটি ৬৯ লাখ ৮৪ হাজার ৭৭৬ টাকা। ৬ সেপ্টেম্বর সীমান্তবর্তী গ্রাম পলিয়ানপুর থেকে ৩৪৯ গ্রাম স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়, যার বাজার মূল্য ৫০ লাখ ৫২ হাজার ৮৯৪ টাকা। ১৩ আগস্ট একই এলাকা থেকে পরিত্যক্ত পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় ১ কেজি ৮০০ গ্রাম স্বর্ণ (মূল্য ২ কোটি ৫০ লাখ ৩১ হাজার ১৭৭ টাকা) জব্দ করা হয়। ২৬ জুলাই সীমান্তবর্তী গ্রাম কুমিল্লাপাড়া থেকে ৪ কেজি ২০৩ গ্রাম স্বর্ণ (মূল্য ৫ কোটি ৮৩ লাখ ৩ হাজার ৬১৮ টাকা) এবং ৩০ মে পলিয়ানপুর থেকে ১ কেজি ১৭৭ গ্রাম স্বর্ণ (মূল্য ১ কোটি ৬৮ লাখ ৭৬ হাজার ৬০০ টাকা) উদ্ধার করে বিজিবি। এর আগে ৫ মে জীবননগর গ্রাম থেকে ২ কেজি ৪৪৫ গ্রাম স্বর্ণের বারসহ (বাজার মূল্য ৩ কোটি ১৬ লাখ ১৮ হাজার ৩২৬ টাকা) রাজ রকি নামে এক পাচারকারী আটক হয়।
১৭ জানুয়ারি মাটিলা সীমান্ত থেকে ৪০টি স্বর্ণের বারসহ রিমন হোসেন নামক এক পথচারীকে আটক করা হয়, যে স্বর্ণের বাজার মূল্য ৪ কোটি ৫ লাখ ৯৯ হাজার ৪৭১ টাকা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, স্বর্ণ পাচার বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকলেও সম্প্রতি নজরদারির অভাবে তা আবারও বেড়ে গেছে। সীমান্ত পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে পাচারকারীরা প্রতিটি স্বর্ণের বার সীমান্ত পার করতে ৫ থেকে ১২ হাজার টাকা পান। অভিযোগ রয়েছে, প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তাদের সাহায্যে পাচারকারীরা সক্রিয় থাকতে পারছে।
মহেশপুরের মানবাধিকার কর্মী আব্দুর রহমান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই মহেশপুর সীমান্ত স্বর্ণ পাচারের নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। পাচারকারীরা ধরা পড়লেও মূল হোতারা ধরা পড়ছে না। কঠোর নজরদারি ছাড়া এ সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়।’
মহেশপুর ৫৮ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল রফিকুল আলম বলেন, ‘স্বর্ণ পাচার রোধে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে। সীমান্তে কঠোর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। শিগগিরই পাচার কমে আসবে বলে আশা করছি।’
এসআর