এইমাত্র
  • দক্ষ জনশক্তি দেশ গঠনের মূল ভিত্তি: প্রধান উপদেষ্টা
  • বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে সেনা ঘাঁটি ও সেনা স্টেশন করলো ভারত
  • জামায়াতে ইসলামী প্রতিশোধ নিলে দেশ বধ্যভূমি হতো: শফিকুর রহমান
  • ৬৬ দেশি নির্বাচক পর্যবেক্ষক চূড়ান্ত নিবন্ধন পেল
  • ৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ
  • যৌন হেনস্তার ঘটনায় মুখ খুললেন মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট
  • মালয়েশিয়ায় ‘বাংলাদেশিসহ’ নথিবিহীন ১৮৪ জন আটক
  • এবার কান্নায় ভেঙে পড়লেন ডিসি সারওয়ার
  • আল-আকসা মসজিদ কম্পাউন্ডে ঢুকে পড়েছে ৯০০ ইসরায়েলি
  • এবার লেবাননের চার শহরে ইসরায়েলের হামলা
  • আজ শুক্রবার, ২৩ কার্তিক, ১৪৩২ | ৭ নভেম্বর, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    অর্থের অভাবে মৃত্যুর যন্ত্রণায় বিছানায় কাতরাচ্ছে রাজিয়া

    আরিফ হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট (বরিশাল) প্রকাশ: ৮ অক্টোবর ২০২৫, ১২:১৩ পিএম
    আরিফ হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট (বরিশাল) প্রকাশ: ৮ অক্টোবর ২০২৫, ১২:১৩ পিএম

    অর্থের অভাবে মৃত্যুর যন্ত্রণায় বিছানায় কাতরাচ্ছে রাজিয়া

    আরিফ হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট (বরিশাল) প্রকাশ: ৮ অক্টোবর ২০২৫, ১২:১৩ পিএম

    ১৮ বছর বয়সী রাজিয়া কখনো বসে, কখনো শুয়ে কাটছে তার অসুস্থ জীবন। 'কী করব, ফুসফুসে পানি জমে গেছে। অপারেশন করা খুবই জরুরী। তবে কিভাবে করবো? আমার কাছে কোন টাকা নেই। আল্লাহ তালা যে কয়দিন বাঁচিয়ে রাখে। তবে অসুস্থতার কষ্টে মাঝে মাঝে মনে হয় মরে চাই। তখন ইচ্ছে হয় এই রোগ থেকে নিজেই মুক্তি নেই।' চোখে পানি নিয়ে কথাগুলো বলেছিলেন বরিশাল নগরীর ১০ নং ওয়ার্ডের ভাটার খাল (বস্তি) বাসিন্দা ও দিনমজুর আবদুল রাজ্জাক ফকিরের মেয়ে রাজিয়া।

    রাজিয়া বলেন, 'গত পাঁচ মাস পূর্বে হঠাৎ প্রচণ্ড জ্বর, এর সঙ্গে কাশিও হচ্ছিল। ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে খাওয়ালে জ্বর ভালো হয়ে যায়, কিন্তু কাশি কিছুতেই কমে না। অবশেষে ডাক্তারের কাছে গেলে পরীক্ষা করে জানান যক্ষ্মার কথা। এরপর চিকিৎসা শুরু করতে করতে ফুসফুসে পানি জমে গেছে। পরে বক্ষব্যাধি হাসপাতালে গিয়ে ডাক্তার দেখালে বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে তারা যক্ষ্মা রোগ ধরতে পারেন।'

    তবে উন্নত চিকিৎসা করাতে বলেছে চিকিৎসকরা। কিন্তু অর্থের অভাবে চিকিৎসা করা সম্ভব হচ্ছে না। 'তাহলে কি আর করবো? বিছানায়ই শুয়ে থাকতে হচ্ছে।'

    রাজিয়ার বাবা রাজ্জাকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, 'প্রায় ৫ মাস পূর্বে স্বামীর ঘরে বসে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। ডাক্তার দেখালে টিবি (যক্ষ্মা) রোগ ধরা পড়েন। তবে যক্ষ্মার হয়েছে শুনে তার স্বামী সাব্বির ৩ বছরের সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে যায়। এবং কোন খোঁজ খবর নিচ্ছে তার স্ত্রী রাজিয়ার।'

    কান্না জড়িত কন্ঠে রাজিয়ার বাবা রাজ্জাক সময়ের কণ্ঠস্বরকে বলেন, 'স্বামী পালিয়ে গেলেও আমি তো আর পালাতে পারছিনা। কারণ, ওতো আমার জন্মের সন্তান। আমি আগে ভ্যান গাড়ী চালিয়ে যে টাকা আয় হতো, তা দিয়ে সংসার চালাতাম। বয়সের ভারে শারীরিক অবস্থা ভালো না থাকার কারণে কোন কাজ করতে পারছিনা। বর্তমানে আমার নিজেরই সংসার চলে না খেয়ে। তার মধ্যে মেয়ে রাজিয়ার যে যক্ষ্মা রোগ হয়েছে, তার চিকিৎসা করাবো কীভাবে?'

    তিনি আরো বলেন, 'আমি বেঁচে থাকতে আমার চোখে সামনে মেয়েটি অসুস্থ অবস্থায় বিছানায় পড়ে আছে দেখে আমার মনে হয় আমি বাঁচতে থাকার চেয়ে মরে গেলেই ভালো হয়।'

    এদিকে যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত রাজিয়া সময়ের কণ্ঠস্বরকে বলেন, 'আমার রোগীর কথা শুনে আমার স্বামী আমার গর্ভের সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে গেছে। আজ ৪ মাসের বেশি সময় ধরে তিনি কোন খোঁজ খবর নেয়নি। তবে আমি অসুস্থ অবস্থায় আমার নিজের মেয়েটাকে একবার চোখে দেখতে পারছি না। এর চেয়ে বড় আর কোন কষ্ট থাকে না একটা মায়ের।'

    চিকিৎসকরা জানান, 'ফুসফুসের যক্ষ্মার হার সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়া অনেকের মস্তিষ্কে সংক্রমণ, মেরুদণ্ডে সমস্যা হয়েছে। এই রোগে দীর্ঘমেয়াদি ওষুধ খেতে হয়। সেটা ছয় থেকে ৯ মাস পর্যন্ত। নিয়মিত ওষুধ সেবনে রোগটি সেরে যায়। তবে এতে খরচ একটু বেশি।'

    স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাজ্জাকের অভাবের সংসার থাকায় ১৪ বছর বয়সে রাজিয়াকে বিয়ে দেন। স্বামীর শারীরিক নির্যাতনের পর সেই মেয়ে এখন টিবি রোগে আক্রান্ত। অন্যদিকে টিবি রোগের কথা শুনে পালিয়েছে স্বামী। অর্থের অভাবে বিনা চিকিৎসায় বাবার সামনে ভুগছেন মেয়েটি। মেয়েকে বাঁচাতে মানুষের দ্বারে ছুটে যাচ্ছে। চাচ্ছেন সহযোগিতা। 'বাবা এই আকুতি দেখে আমাদের খুব খারাপ লাগছে। তবে আমাদেরও কিছু করার নেই। কারণ, আমরাও দিন আনি দিন খাই।'

    অসহায় বাবার কষ্টের কিছু কথা

    ঘরে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে আছিয়া! অভাবের সংসারে ১৪ বছর বয়সেই এক তথাকথিত 'প্রেমিক' ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করেছিল তাকে। তারপর শুরু, নির্যাতনের নতুন অধ্যায়! প্রতিদিনের মারধর, গালিগালাজ, অপমান! একদিন মেয়েটি টিবি রোগে আক্রান্ত হতেই, স্বামী নামের সেই কাপুরুষ পালালো! রোগের ভয় পেয়ে ভালোবাসার মুখোশ খুলে দিলো! এখন আছিয়া পড়ে আছে বাবার ঘরে, এক টুকরো প্রাণ, ধুঁকছে মৃত্যুর মুখে! অসহায় বাবা আকুতি জানাচ্ছেন, 'আমি গরিব মানুষ... আমার মেয়েটাকে বাঁচান!'

    আসুন, আমরা সবাই রাজিয়াকে বাঁচাতে তার পাশে দাঁড়াই। সহযোগিতার হাত বাড়াই। রাজিয়ার চিকিৎসার জন্য অর্থিক সহযোগিতা পাঠাতে বাবা রাজ্জাকের মুঠোফোনে ০১৭৬২-৫৫২৮৭৯ যোগাযোগ করুন।

    এসআর

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…