মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়া , সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে ১২বছরের শিশুকন্যাকে ধর্ষন ও নির্যাতনের মূল্য দেওয়া হয়েছে ১লক্ষ ৩০ হাজার টাকা। সোমবার দুপুর ১২টায় গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে শিশুকন্যার ইজ্জতের মূল্য দিয়ে জোরপূর্বক সালিশে সমাধান দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে ধর্ষনকারী রফিক মিয়ার স্ত্রী মুক্তা বেগম সময়ের কণ্ঠস্বরকে আগেই বলেছিলেন,আমাদের হাত অনেক লম্বা,এসপি,ডিসি,ইউএনও,চেয়ারম্যান আমাদের কথায় উঠে বসে,আমরা তাদেরকে জন্ম দেই,আমাদের বিরুদ্ধে পত্রিকায় লেখালেখি করলেও কেউ কিছুই করতে পারবেনা,উল্টো ৭দিনের ভিতরে মামলা দিয়ে আমার ভাই ফাঁসিয়ে দেবে। আগের সংবাদ এই লিংকে
অন্যদিকে, তাহিরপুর থানার ওসি মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ সময়ের কণ্ঠস্বরকে বলেছিলেন,ঘটনাটি জানতে পেরেছি,এব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ নিয়ে এলাকায় আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় বইছে। ধর্ষিতা ও নির্যাতিত শিশুকন্যার নাম জুয়েনা আক্তার(১২)। সে উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের মানিগাঁও গ্রামের মৃত জলিল মিয়ার মেয়ে।
আর লম্পট ধর্ষক ও নির্যাতনকারীর নাম রফিক মিয়া (৩৮)। সে উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের বাদাঘাট বাজারের বাসিন্দা ও উত্তর বড়দল ইউনিয়নের মাহারাম গ্রামের ইউনুছ আলীর ছেলে।
এব্যাপারে ধর্ষিতার পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়,লম্পট রফিক মিয়া বাদাঘাট বাজারে কাপড়পট্টিতে অবস্থিত তার নিজ বাসায় কাজ করার কথা বলে সুন্দরী শিশুকন্যা জুয়েনা আক্তারকে নিয়ে জোরপূর্বক শারীরিক মেলামেশা করে। লম্পট রফিক মিয়ার খারাপ প্রস্তাবে রাজি না হলে তাকে করতো অমানুসিক নির্যাতন।
আর এই ঘটনার প্রেক্ষিতে অসহায় শিশুকন্যা জুয়েনা আক্তার গত রোববার সকাল ১০টায় থানায় মামলা করতে গেলে বাঁধা দেয় প্রভাবশালী ধর্ষক ও নির্যানকারী রফিক মিয়াসহ তার লোকজন। এবং এদিন রাত ৮টায় ধর্ষিতার বাড়িতে স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যানসহ এলাকাবাসীকে নিয়ে সালিশ বসায়।
সালিশে প্রথমে ৯০হাজার টাকা পরবর্তীতে ১লক্ষ ৩০হাজার টাকা পর্যন্ত নির্ধারণ করে ধর্ষিতার ইজ্জতের মূল্য। কিন্তু টাকার বিনিময়ে এই ঘটনাটি সমাধান দিতে রাজি না হওয়া ধর্ষিতা শিশুকন্যাকে হত্যা করাসহ তার পরিবারের লোকজনকে মামলা দিয়ে হয়রানী করার অব্যাহত হুমকি দিতে থাকে ধর্ষক ও তার লোকজন।
শিশুটির পরিবারের অভিযোগ ” অবশেষে আইন শৃংঙ্খলা বাহিনীর কোন সহযোগীতা না পেয়ে অসহায় ধর্ষিতা ও নির্যাতিত শিশুকন্যা জুয়েনা আক্তার ও তার পরিবার প্রভাবশালী ধর্ষনকারীর প্রস্তাব মেনে নিতে বাধ্য হয়।”
এঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে উত্তর বড়দল ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবুল কাসেম বলেন, ধর্ষিতার বাড়িতে বসে দুই দফা সালিশের মাধ্যমে ১লক্ষ ৩০হাজার টাকার বিনিময়ে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে।
ধর্ষনকারী রফিক মিয়ার স্ত্রী মুক্তার বেগম বিচারের পরে আবারো চিতকার করে বলেন, ” আমি আগেই বলেছিলাম আমাদের হাত অনেক লম্বা,এসপি,ডিসি,ইউএনও,চেয়ারম্যান আমাদের কথায় উঠে বসে,আমরা তাদেরকে জন্ম দেই,আমাদের বিরুদ্ধে পত্রিকায় লেখালেখি করলেও কেউ কিছুই করতে পারবেনা।”