

বরগুনা প্রতিনিধি ।। কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতের আদলে বরগুনায় তৈরী করা হবে সমুদ্র সৈকত লালদিয়া সি-বিচ। ইতোমধ্যে লালদিয়া সংরক্ষিত বনাঞ্চলকে ঘিরে গড়ে উঠছে পর্যটনকেন্দ্র হরিণবাড়িয়া।
বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা শহর থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে সদর ইউনিয়নের হরিণঘাটায় বিষখালী নদীর তীরে লালদিয়া সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও হরিণবাড়িয়া পর্যটন কেন্দ্রের অবস্থান। বিষখালীর অদূরে বঙ্গোপসাগরের পাড়ে হচ্ছে লালদিয়া সি-বিচ। এ পর্যটন কেন্দ্রটির বিস্তৃতি হবে বিষখালী নদীপাড় থেকে বঙ্গোপসাগরের উপকূল পর্যন্ত ।
জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে পটুয়াখালী উপকূলীয় বন বিভাগ সাড়ে চার কোটি টাকার এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
৫ হাজার ৬ শ’ একরের হরিণবাড়িয়া বন কেন্দ্রটিতে পর্যটকদের আনাগোনা ক্রমশঃ বাড়ছে। দর্শনার্থীদের কাছ থেকে বছরে দেড় লাখ টাকার বেশী রাজস্ব পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ফরেস্ট গার্ড মতিয়ার রহমান।
পর্যটকদের জন্য ইতোমধ্যেই বনের ভেতরে তৈরি করা হয়েছে ৪টি ওয়াচ টাওয়ার, ১০টি বেঞ্চ, ঘাটলা ও ইটের রাস্তা। মিঠা পানির জন্য খনন করা হয়েছে পুকুর। গড়ে উঠছে ম্যানগ্রোভ ও কেওড়া, সুন্দরী, পশুর, রেইনট্রি বনও। বর্তমানে বনে আছে নানা প্রজাতির পশু-পাখি।
লালদিয়া সি বিচের পাড়ে গড়ে তোলা হচ্ছে ঝাউবন। হরিণবাড়িয়া বনে নির্মিত ৯৫০ মিটার দীর্ঘ ফুটট্রেল (পায়ে হাঁটার কাঠের ব্রিজ) সম্প্রসারিত করে লালদিয়া সি-বিচ পর্যন্ত নেয়া হবে বলে বন বিভাগ সূত্র জানিয়েছে। সাগর পাড়ে আটতলা ওয়াচ টাওয়ার তৈরী করা হবে।
পাথরঘাটা বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা সোলায়মান হাওলাদার জানিয়েছেন, প্রকল্পের কাজ শেষ হলে এ পর্যটন কেন্দ্রে বন্যপ্রাণীদের স্বাচ্ছন্দ্য বিচরণ এবং সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত উপভোগ করতে পারবেন ভ্রমণ পিয়াসুরা।
দু’টি জেলায় রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং ট্যাঙ্ক স্থাপন চলছে
এম এ সাইদ খোকন, বরগুনা প্রতিনিধি ।। উপকূলীয় বরগুনা ও পটুয়াখালী জেলায় বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের লক্ষ্যে রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং ট্যাঙ্ক স্থাপন কাজ চলছে।
বাংলাদেশ কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে ইন্টিগ্রেটেড এগ্রিকালচার প্রোডাক্টিভিটি প্রজেক্টের আওতায় বরগুনা ও পটুয়াখালীতে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হচ্ছে। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) মাঠ পর্যায়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন কাজ করছে।
বিএডিসি সূত্র জানিয়েছে, গ্রাম পর্যায়ে প্রায় ৭শ’টি রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং ট্যাঙ্ক স্থাপন করা হচ্ছে। এর মধ্যে বরগুনায় ৩২৬টি রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং ট্যাঙ্ক স্থাপন কাজ চলছে।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) বরগুনার সহকারী প্রকৌশলী জগন্নাথ বিশ্বাস জানান, এ অঞ্চলের অনেক জায়গাতে বিশেষ করে পাথরঘাটার অধিকাংশ ও বরগুনা সদরের অনেক স্থানে প্রাকৃতিক প্রতিবন্ধকতার কারণে নলকূপ বসানো যায় না। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষকে পুকুরের পানি এনে ব্যবহার করতে হয়। বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করে তা সারা বছর ধরে পান করতে হয়।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কে কে এন্টারপ্রাইজ ও ব্রাদার্স ট্রেডিং সূত্র জানিয়েছে, রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং ট্যাঙ্ক স্থাপনে প্রাক্কলন অনুযায়ী ২০ ফুট ৬ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যে ও ১৫ ফুট ৬ ইঞ্চি প্রস্থের টিনের চালার ঘরে একটি ট্যাংক থাকবে। চালা থেকে বৃষ্টির পানিতে ট্যাংকটি পরিপূর্ণ হবে।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) বরগুনা ও পটুয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাজ্জাদ হোসেন জানিয়েছেন, মাঠ পর্যায়ে কাজ এগিয়ে চলছে। কাজ শেষ হলে এই এলাকার সুপেয় পানির অভাবে কাউকে কষ্ট করতে হবে না।