
সময়ের কণ্ঠস্বর ডেস্ক – রাজধানীর গুলশানের স্প্যানিশ রেস্তোঁরা হলি আটিজানে জঙ্গিদের হামলার ঘটনায় নিহত হন ভারতীয় তরুণী তারুশি জৈন। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার এই ছাত্রীকে হত্যার আগে নিষ্ঠুরভাবে নির্যাতন চালায় সন্ত্রাসীরা। উনিশ বছর বয়সী উচ্ছল এই তরুণীর লাশের ময়না তদন্তে শরীরে প্রায় ৪০ টির মত আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। হলি আর্টিসান বেকারিতে নিহত ২০ জনের মধ্যে তাকেই সবচেয়ে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে জঙ্গিরা।
ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক প্যানেলের প্রধান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তারুশির মাথার একপাশে কোপানো হয়েছে। দু’হাতেও রয়েছে ধারালো অস্ত্রের আঘাত। বুকে ও পেটে পাওয়া গেছে ক্ষতচিহ্ন। আঘাতের সংখ্যা ও ধরন দেখে ধারণা করা হচ্ছে, মৃত্যুর আগে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে জখম করা হয়েছে তাকে।
ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, ” গুলশানের ঘটনায় নিহত ১০ নারীর ওপরই অপেক্ষাকৃত বেশি বর্বর হামলা চালায় জঙ্গিরা।এদের মধ্যে তারুশির শরীরেই ছিলো সবচেয়ে বেশি আঘাত। আলামত দেখে মনে হয়, কোনো কারণে নারীদের ওপর বেশি ক্ষুব্ধ ছিল তারা।”
তিনি আরো জানান, হলি আর্টিজানে নিহত নারীদের মরদেহের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তারা কেউ ধর্ষণের শিকার হননি। আরও নিশ্চিত হতে ভিসেরা পরীক্ষার জন্য নমুনা মহাখালীর রাসায়নিক পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে।
জৈন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বার্কলে’র অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী তারুশি জৈন গ্রীষ্মের ছুটিতে ঢাকায় এসেছিলেন। তার বাড়ি ভারতের উত্তর প্রদেশের ফিরোজাবাদে। তারুশীর বাবা সঞ্জীব জৈন ২০ বছর ধরে ঢাকায় পোশাক ব্যবসা করছেন। স্ত্রী তুলিকা জৈনকে নিয়ে তিনি ঢাকায় বসবাস করেন। তারুশির শৈশবের দীর্ঘসময় কেটেছে ঢাকাতেই। ঢাকার আমেরিকান ইন্টারন্যাশানাল স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। সামার ভেকেশনে ঢাকায় অবস্থানকালে ইস্টার্ন ব্যাংকে ইন্টার্নশিপ শুরু করেছিলেন। গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে গত ১ জুলাই রাতে দুইবন্ধু যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টার ইমোরি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারাজ আইয়াজ হোসেন ও অবিন্তা কবিরের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। পুলিশের দেয়া তথ্যমতে তিন বন্ধুকেই নির্মমভাবে হত্যা করে জঙ্গিরা।