

জাকির হোসেন পিংকু, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে ডায়ারিয়ার মাত্রা বেড়েই চলেছে। দু’দিনে আবারও ভোলাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়ারিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে তাদের বিছানা ছেড়ে মেঝেতে জায়গা নিতে হয়েছে। ডায়ারিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ হিসেবে প্রধানত: সাধারণ মানুষের অসচেতনতাকেই দায়ী করা হচ্ছে। দুই সপ্তাহ পূর্বেও একবার উপজেলাতে ডায়ারিয়া প্রকোপ বেড়েছিল।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার গোহালবাড়ী ইউনিয়নের গোহালবাড়ী গ্রাম ও খানে আলমপুর এলাকার বেশী রোগী আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ ছাড়াও উপজেলার জামবাড়ীয়া ইউনিয়নের খাসপাড়া, গোহালবাড়ী ইউনিয়নের বজরাটেক, বীরেশ্বরপুর, ইমামনগর, ভোলাহাট সদর ইউনিয়নের তেলীপাড়া, বাহাদুরগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকতে ডায়ারিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর সকাল পর্যন্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন ১৯ জন রোগী। কিছু রোগী চিকিৎসা নিয়ে চলে যাচ্ছেন আবার কেউ কেউ বেসরকারী ক্লিনিকে ও বাড়ীতে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন। গোহালবাড়ী ও খানেআলমপুর গ্রামে এ দু’গ্রামে ডায়ারিয়ার প্রকোপ বেশী বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ হিসেবে প্রধানত: গ্রামবাসীর অসচেতনতাকেই দায়ী করা হচ্ছে।
তারা এলাকার অস্বাস্থ্যকর পুকুরের পানি প্রাত্যহিক বিভিন্ন কাজে বেশী ব্যবহার করে। ঐ পানিতেই তারা গোসল, বাসন, কাপড় পরিস্কার করলেও ঐ পুকুরেই আবার গবাদিপশু ধোয়া, গরুর ভুড়ি ও পোল্ট্রি মাংস ধোয়া এবং বিভিন্ন বর্জ্য ও আবর্জনা ফেলে থাকে। এ দুই গ্রামের মানুষ অনিরাপদ কুয়ার (কুপ) পানি পান করে। এটিও ডায়ারিয়ায় আক্রান্ত হবার অন্যতম কারণ।
উল্লেখ্য, চার বছর ধরে এ দুই গ্রামে ডায়ারিয়া বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয় ও উচ্চ পর্যায়ের বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী বিশেষজ্ঞ টিম গ্রামগুলো পরিদর্শন করে জনসাধারনকে বিভিন্ন ভাবে সচেতন করেছেন। কিন্তু এতেও সাধারণ মানুষের বোধোদয় হয়নি। মাঝে মাঝেই এ গ্রাম দুটির ডায়ারিয়ার প্রকোপে পুরো এলাকাতেই আতংক ছড়িয়ে পড়ছে। ভোলাহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক মেহফুজ আহমেদ জানান, এলাকার মানুষ সচেতন না হলে পানি বাহিত ডায়ারিয়ার প্রকোপ আরো বেড়ে যেতে পারে। তবে আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় রোটা ভাইরাস জনিত ডায়ারিয়া আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে বলে জানান তিনি। এদের মধ্যে শিশুরাও রয়েছে।
তিনি বলেন, এ প্রকোপ ঠেকাতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে সব ধরণের চিকিৎসা সেবা ও সচেতনতা বৃদ্ধির ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিভিল সার্জন প্রধান আবুল কালাম আজাদ আজ শনিবার বিকেলে সময়ের কণ্ঠস্বরকে বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। ভোলাহাটে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ইনচার্জ ডা: এনামুলকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। গত সপ্তাহেই সেখানে দুই জন অতিরিক্ত চিকিৎসকও নিযুক্ত করা হয়েছে। এলাকার জনপ্রতিনিধিদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে বলেই জানান তিনি।