
চিত্র বিচিত্র ডেস্ক- পুতুল কে না ভালবাসে! শিশুদের কথা বাদ দিলে, বড়রাও আকৃষ্ট হন সুন্দর পুতুলে। কিন্তু ওই পুতুলকেই যদি ‘চাইল্ড’স প্লে’, ‘অ্যানাবেল’ বা ‘ডেড সাইলেন্স’-এর মতো ছবিতে দেখা যায়, তবে আত্মারাম ভয়ে খাঁচাছাড়া হওয়ার উপক্রম হয়। মনোবিদ্যায় পুতুল থেকে জাত ভয়কে ‘পেডিওফোবিয়া’ নামে ডাকা হয়। এই ফোবিয়ায় আক্রান্তরা সাধারণত উপরোক্ত সিনেমাগুলি এড়িয়ে চলেন। কিন্তু তাঁদের যদি কোনও কারণে গিয়ে পড়তে হয় মেক্সিকোর জোচিমিলকো নামের দ্বীপটিতে, তা হলে তাঁদের কী হাল হবে তা বিধাতাই জানেন।
জোচিমিলকো একটি কৃত্রিম দ্বীপ, প্রাকৃতিক সোন্দর্যের জন্য তার খ্যাতিও রয়েছে। কিন্তু অন্যান্য মেক্সিক্যান দ্বীপগুলির সঙ্গে তার পার্থক্য এখানেই যে, দ্বীপটির খানিকটা ‘ভৌতিক’ বদনাম রয়েছে। দ্বীপের আদি বাসিন্দারা বিভিন্ন ভৌতিক উপদ্রবকে ঠেকাতে এমন এক উপায় অবলম্বন করে এসেছেন এখানে, তা দ্বীপটিকে আরও ‘ভুতুড়ে’ করে তুলেছে। স্থানীয় বিশ্বাস অনুসারে, বছর পঞ্চাশেক আগে এই দ্বীপে জলে ডুবে এক বালিকার মৃত্যু হয়। তার আত্মাই নাকি বিভিন্ন বিচিত্র উপদ্রব ঘটাতে থাকে। এই আত্মাকে তুষ্ট করতেই দ্বীপবাসীরা দ্বীপের গাছে গাছে পুতুল ঝোলাতে শুরু করেন। গোটা দ্বীপটিতেই আজ অসংখ্য পুতুল।
পুতুল ঝোলানোর এই রীতি শুরু হয় ২০০১ সালে। গত দেড় দশকে অসংখ্য পুতুল গাছে ঝুলেছে। রোদে-জলে তাদের চেহারাই হয়ে দাঁড়িয়েছে হলিউডি হরর ছবির ভুতুড়ে পুতুলের মতো। এই সব পুতুলকে ঘিরেও স্থানীয়রা কিংবদন্তি তৈরি করেছেন। রাতের অন্ধকারে নাকি পুতুলরা জীবন্ত হয়ে ওঠে, তারা ফিস ফিস করে কথা বলে নিজেদের মধ্যে।
কিংবন্তি মোতাবেক, জুলিয়ান সান্তা বারেরা নামের জনৈক ব্যক্তিই প্রথম সেই মেয়েটির মৃতদেহ দেখতে পান। তিনি এ-ও দেখেন, সেই মেয়েটির খেলার একটি পুতুলও সেখানে জলে ভাসছে। এই ঘটনা থেকেই এহেন রীতির জন্ম। সেই অকালপ্রয়াতা বালিকাটির জন্য বেদনা আর ঝুলন্ত পুতুলের ভৌতিকতা— এই দুইয়ের স্বাদ পেতে প্রচুর পর্যটক সমাগম ঘটে এই দ্বীপে। ছবি-তুলিয়েদের কাছেও জোচিমিলকো আজ এক উল্লেখযোগ্য আকর্ষণ।