
মোঃ ইউনুস আলী, লালমনিরহাট প্রতিনিধি: ঢাকা গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার নওগা গ্রামে সতীশ চন্দ্রের পরিবারে জন্ম পপি রানীর। মোবাইল ফোনে পরিচয় ঘটে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার উঃ বালাপাড়া গ্রামের নবীর হোসেনের পুত্র আব্দুর রহিমের সাথে।
পরিচয় থেকে প্রেম, ভালবাসা। উভয়ের মাঝে দেখাদেখি। প্রেমের টানে ৩ বছর আগে ঘর ছাড়ে পপি। পালিয়ে আসে রহিমের বাড়ীতে। লালমনিরহাট নোটারী পাবলিক ক্লাবে এফিডেভিটের মাধ্যমে ধর্মান্তরিত হয়ে নাম রাখে নাছিমা বেগম। হয় তাদের কোর্ট ম্যারেজ। বছর খানেক তাদের সংসার ভালই চলে। কোলজুড়ে আসে এক কন্যা সন্তান। নাম রাখে মাছুয়া খাতুন।
এরই মধ্যে তাদের সম্পর্কে ছির ধরে। কথায় কথায় নাছিমার উপর শুরু হয় অত্যাচার নির্যাতন, মারধোর । এক বছর আগে নির্যাতনের এক পর্যায়ে নাছিমার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয় স্বামী। এতে তার কোমড়ের উপর অংশ পুড়ে যায়। মারাত্মক আহত অবস্থায় দীর্ঘদিন গ্রাম্য কবিরাজী চিকিৎসার পর সুস্থ্য হলেও তার একটি স্তন নষ্ট হয়ে যায়। কন্যা মাছুয়ার বয়স তখন ৭/৮ মাস। তারপরও নাছিমা চেষ্টা করেছে স্বামীর সংসারে টিকে থাকার। কারন, তার ফিরে যাওয়ার পথ ছিলনা। তারপরও শেষ রক্ষা হলোনা।
গত ২৮ জানুয়ারি বাড়ীর পাশের রাস্তার উপরে ফেলে দিনদূপুরে নাছিমাকে নির্মম ভাবে মারধোর করে রহিম। সামনের মাঠে কাজ করছিল প্রত্যক্ষদর্শী তোফাজ্জল, চানমিয়া, আমিনুল ইসলামসহ অনেকে। তাদের কাছে বিচার দিয়েছিল নাছিমা। এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে রহিম। চুলের মুঠি ধরে তাকে টেনে হেচড়ে বাড়ীর ভিতর নিয়ে বেধম মারধোর করতে থাকে। এক পর্যায়ে নাছিমা মাটিতে ঢলে পরে যায়। রাস্তার ধারেই সে মারা যায় বলে জানালেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
শশুড় নবীর থানায় খবর দেয় বউ নাছিমা আত্মহত্যা করেছে। খবর পেয়ে রাতেই কালীগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য লালমনিরহাট হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করেন। তাৎক্ষনিক ভাবে রহিমের বাবা নবীর হোসেনকে আটকের কথা জানিয়েছেন এস.আই নুরুল হক সরকার।
কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মকবুল হোসেন ঘটনার সত্যতা নিঃশ্চিত করে জানান, এ ব্যাপারে থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু করা হয়েছে। একজনকে আটক করা হয়েছে।