
জামাল জাহেদ, নিজস্ব প্রতিবেদক- কক্সবাজারের তথা দেশের বিভিন্ন অনলাইন মিডিয়ায় দীর্ঘ দুই বছর ধরে উখিয়া-টেকনাফের প্রভাবশালী এমপি আব্দু রহমান বদির সাথে জেলা ছাত্রলীগের কান্ডারী ইশতিয়াক আহমদ জয়ের নানা মুখরোচক খবর প্রতিনিয়ত শহর আলোচিত হতো।
এমনকি সামাজিক যোগাযোগ ফেসবুক পেইজে নানা সময়ে এমপি বদির নানা বিতর্কিত কাজের সঠিক সমালোচনা করতেন বলে জানা যায় কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জয়।
গতকাল ৩০শে জানুয়ারী জেলার একটি অনুষ্ঠানে দুজনের মুখোমুখি বসা আর চা পান করার ছবি কক্সবাজার এলাকায় ভাইরাল হলে মিডিয়ার বিতর্ক বন্ধে বাধ্য হয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিজের ফেসবুক পাতায় স্পষ্ট করে দেন বিষয়টি ।
এমপি বদির সমালোচনা বা বিতর্ক নয়, নিজের কাছে যেটা সঠিক মনে হয়েছে, সে বিষয়ে সঠিক মন্তব্য করে দেশ ও দশের যাতে ক্ষতিকর কিছু প্রশ্রয় না পায় সেটাই বলতেন বলে জানান জয়। কক্সবাজার শহর যেনো মাদক থেকে মুক্ত হতে পারে, ছাত্র সমাজ যেনো মাদক লোভে ধ্বংস না হয় সে রকম মন্তব্য করতেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
আজ ৩১ শে জানুয়ারী দুপুর ১টায় জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ইশতিয়াক আহমদ জয় নিজের ফেসবুক পাতায় সব বিতর্কের সুকৌশল জবাবে মিডিয়াকে স্পষ্ট করেছেন। পাঠকের প্রয়োজনে তা ফেসবুক পাতা থেকে হুবহু তুলে দিলাম।
“গতকাল রাত থেকেই বিভিন্ন প্রিন্ট এবং অনলাইন-সংবাদ মাধ্যমে এরকম নিউজ আসছে। এই সকল নিউজের প্রেক্ষিতে আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি, এমপি বদির সাথে আমার কোন ভুল বুঝাবুঝি ছিলো না, এখনো নাই। তাঁর যেসব কর্মকাণ্ড দেশ ও দশের জন্য ক্ষতিকর তা নিয়ে আমি প্রতিবাদ করেছি এবং ভবিষ্যতেও করবো। এটাকে ভুল বুঝাবুঝি না বলে “সঠিক বুঝাবুঝি” বলে আখ্যায়িত করা উচিৎ বলে আমি মনে করি।
গতকাল কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অনেকটা কাকতালীয়ভাবে এমপি বদির সাথে আমার দেখা হয়ে যায়। ওইসময় জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সর্বজন শ্রদ্ধেয় এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা মামা ও সাধারণ সম্পাদক আমার অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় প্রিয়নেতা মুজিব ভাই (মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যান) সেখানে উপস্থিত ছিলেন। নানা কথাবার্তার এক পর্যায়ে আমাকে জিজ্ঞেস করা হয়, এমপি বদির সাথে আমার কি সমস্যা? তোমাদের মধ্যে সমস্যা থেকে থাকলে মিটমাট করে ফেলাটাই শ্রেয়।
উত্তরে আমি উনাদের বলি-“কোন সমস্যা নাই আমার উনার সাথে। তবে তাঁর কিছু কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে আমাদের সমস্যা আছে।” পাশেই চেয়ারে বসে থাকা এমপি বদি এরপর যে কথাগুলো বলেন তা আমার ভাল্লাগে, কথাগুলো অফ দ্য রেকর্ড ও একান্ত হওয়ায় তা প্রকাশ না করাটাই ভালো। তবে তাঁর মূল কথা-“অতীতের ভুলগুলো নিয়ে পারস্পারিক অসহযোগিতাপূর্ণ আচরণ অব্যাহত থাকলে তা মূলত দল ও কক্সবাজারের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।”
আমি স্পষ্টভাবে উনাকে বলি-” আপনি চাইলে ইয়াবা ও রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান খুব সহজেই হবে। শুধুমাত্র মৌখিক প্রতিশ্রুতি দিয়ে লাভ নাই, দরকার আপনার সদিচ্ছা। “ওই সময় আমার কথা শুনতে শুনতে এমপি মহোদয় রং চায়ের কাপে বিস্কুট ভিজিয়ে নিচ্ছিলেন আর মাথা নাড়াচ্ছিলেন।
এক পর্যায়ে এমপি বদি আমার কথার প্রত্যুত্তরে বলেন- “ছাত্রলীগ আমাকে সহযোগীতা না করলে আমার একার পক্ষে সম্ভব না। তুমি আমার ভালো কাজের সহযোগীতা করো, আমি তোমার বড় ভাই, আমি তোমার প্রত্যাশা পূর্ণ করবো এবং আমার নিজের অবস্থান সুদৃঢ় ও স্পষ্ট করবো।”
আমি একমত হই এবং জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুরোধে এমপি বদির সাথে হ্যান্ডশেখ করি। তারপর উপস্থিত সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমার সাথে আসা ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতা কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে দলীয় কার্য্যালয় হইতে বের হয়ে পড়ি ।
এই ব্যাপারটাকে যারা অন্যভাবে দেখছেন এবং এমপি বদির সাথে মোটা কিছুর বিনিময়ে রফাদফা বা দ্বন্দের অবসান হয়েছে বলে অপপ্রচার চালাচ্ছেন তাদের প্রতি একটা কথাই আমি বলতে চাইঃ “টাকা বা কোন কিছুর বিনিময় দিয়ে আমাকে কেনা কখনোই সম্ভব না কারণ আমার লালন করা স্বপ্ন ও আদর্শ টাকার চেয়ে অনেক অনেক অনেক বড়।”
অপপ্রচারকারীদের জীবন সুন্দর হোক। তাহাদের মস্তিষ্কে যেন শুভবুদ্ধির উদয় হয় মহান আল্লাহর কাছে আজকের দিনে এইটাই আমার প্রত্যাশা। বদি ভাই সহ সকলের জন্য ভালবাসা নিরন্তর “”
এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির সাথে আমাদের প্রতিবেদকের কথা হলে তিনি জানান, কিছু মিডিয়া তিলকে তাল করে সত্য প্রকাশে লুকিয়ে যায়, তাদের এমন দায়িত্ব না বুঝা খবর প্রচারে বিরত থাকার আহ্বান জানান তিনি। এমনকি সকলকে মাদককে না বলার ও অনুরোধ জানান।