
আন্তর্জাতিক ফিচার ডেস্ক-সময়ের কণ্ঠস্বর –
সন্তানের সবচেয়ে নিরাপদ স্থান তার বাবা-মা। তবে কিছু সময়ে সেই নিরাপত্তা ছাড়িয়ে সবচেয়ে বেশি অনিরাপদ হবার ঘটনাও চমকে দেয় আমাদের। এবার এক তরুনী মায়ের লাথিতে চার বছর বয়সী এক শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে । হত্যাকারী ঐ মা’কে নিয়ে বিশ্বগণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হবার পর তা নিয়ে আলোচনা আর বিস্ময়ের ঝড় উঠে। বেরিয়ে আসে ঠান্ডা মাথায় শিশুটিকে খুনের সময় ঐ তরুনী মায়ের ভয়াবহ নৃশংসতার কথা ।
যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের গেইদার্সবার্গ শহরে নোহেরি আলেকজান্দ্রা মার্টিনেজ হার্নান্দেজ নামে ওই শিশুটির অপরাধ ছিলো ‘ব্রাশ না করা’ । বারবার মায়ের ডাকে কথা না শুনে খেলায় মগ্ন ছিলো ছোট্ট শিশুটি, এতেই ক্ষেপে যান মা ! সজোড়ে লাথি মারেন শিশুটিকে। এতে দেয়ালে আঘাত লেগে মৃত্যু হয় ঐ শিশুর।
গত ২৬ জানুয়ারী বুধবার এই ঘটনা ঘটলেও আন্তর্জাতিক গনমাধ্যমে তা প্রকাশ পায় বেশ কদিন পর ।
বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, ঐ শিশুটির মা কৌশলে শিশুটির লাশ বাথটাবে ফেলে রেখে ঘটনাকে অন্যখাতে প্রবাহিত করার চেস্টাও করেছিলো। তদন্ত সুত্র বলছে ঘটনার পর ইচ্ছে করলেই শিশুটির আঘাতের চিকিৎসা করে তাকে বাচানো যেত, কিন্তু ঐ পাষণ্ড মা কয়েকঘন্টা শিশুটিকে নির্মম যন্ত্রনার মুখে হত্যা করেছেন তার অপরাধ লুকাতে! ‘
পুলিশ জানিয়েছে, শিশুটিকে সকাল ৮ টা থেকে ৯ টার মধ্যে লাথি দিয়ে আঘাত করলেও ঐ পাষণ্ড মা পুলিশের ইমার্জেন্সিতে ফোন দিয়েছিলেন এদিন সাড়ে ১২ টায়।
পুলিশের কাছে আটকের পর আত্মপক্ষ সমর্থনে ঐ মা আইরিস হার্নান্দেজ রিভাস (২০) জানিয়েছিলেন, ‘তাঁর মেয়ে গোসল করতে বাথরুমে গিয়েছিল। ১৫ মিনিট পর তিনি দেখতে পান, আইরিস বাথটবের মধ্যে উপুড় হয়ে পড়ে আছে। তার পরপরই তিনি পুলিশকে বিষয়টি জানান। কিন্তু তখনো তিনি দেরি করে ফেলেছেন এক ঘণ্টা।’

হত্যাকারী ঐ মা’কে নিয়ে বিশ্বগণমাধ্যমে সংবাদ
এদিকে পুলিশ বলছেন, ঘটনার পর অবস্থা সংকটজনক হলে তাকে ওয়াশিংটন ডিসির চিলড্রেনস ন্যাশনাল মেডিকেল সেন্টারে নেওয়া হয় শিশুটিকে সেখানেই মারা যায় শিশুটি। স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তার গায়ে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান। প্রাথমিক তদন্তের বরাত দিয়ে পুলিশ আরও জানায় , মানসিকভাবেও অসুস্থ ছিল সে ঐ তরুনী মা ।
পুলিশ জানিয়েছে, পরবর্তিতে নোহেরিকে লাথি মারার বিষয়টি স্বীকার করেছেন তার মা। দাঁত মাজতে না চাওয়ায় তাকে লাথি মারা হয়েছিল। আর লাথির আঘাতে পেছনের দেয়ালে ওপর পড়ে যায় সে।
শিশুটির বাবা পুলিশকে জানিয়েছেন, কয়েক দিন আগেই শিশুটিকে বেল্ট দিয়ে পিটিয়েছিলেনঐ নারী। এতে তার গায়ে কালসিটে দাগ পড়ে যায়। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, লাথির আঘাতের পর প্রাথমিক চিকিৎসা দতে চিকিৎসকের কাছে শিশুটিকে নিয়ে গেলে হয়তো বেঁচে যেত শিশুটি। একজন মা কি করে এমন নির্মম মৃত্যু যন্ত্রনা দিয়ে তারই গর্ভজাত সন্তানকে হত্যা করলো তা জেনেই বিস্ময় প্রকাশ করছেন সবাই।
বর্তমানে ঐ তরুনী মা আইরিসের বিরুদ্ধে শিশু নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগে তাকে আটক করেছে পুলিশ।