

বিনোদন প্রতিবেদক, সময়ের কণ্ঠস্বর- গতকাল ২৫ এপ্রিল মঙ্লবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) এর জহির রায়হান ভিআইপি প্রজেকশন হলে হয়ে গেল সুভাষ দত্ত’র কালজয়ী ছবি “সুতরাং” সংক্রান্ত স্মারকগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন এবং (১৯৬৪) ছবির প্রদর্শনী।
এই অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেন সুভাষ দত্ত স্মৃতি পরিষদ এবং বাংলাদেশ ফ্লিম আর্কাইভ। ড.আব্দুল মজিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তিনি উপস্থিত হননি।
অনান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন, চিত্র নায়িকা সারাহ বেগম কবরী, তথ্য মন্ত্রণালয়ের মাননীয় সচিব মরতুজা আহমদ, বিএফডিসির ব্যাবস্থাপনা পরিচালক তপন কুমার ঘোষ, বাংলাদেশ ফ্লিম আর্কাইভের মহাপরিচালক শচীন্দ্রনাথ হালদার, চলচ্চিত্র গবেষক ও শিক্ষক অনুপম হায়াৎ, মুশফিকুর রহমান গুলজার,খোরশেদ আলম খসরু, ওমর সানী, সাইমন সাদিক ছাড়াও চলচ্চিত্র অঙ্গনের বিভিন্ন লোকজন।
এ সময় অনুষ্ঠানে অথিতিরা এবং “সুতরাং” চলচ্চিত্রের কলাকুশলীরা সুভাষ দত্তের জীবনের স্মৃতি চারন করেন এবং (সুভাষ দত্ত এবং সুতরাং) নামের একটি স্নারকগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।সবশেষে সুতরাং ছবিটি প্রদর্শিত হয়।স্নারকগ্রন্থটি উৎসর্গ করা হয় “সুতরাং ” চলচ্চিত্রে কাজ করা কলাকুশলীদের জন্য।
সুভাষ দত্তের “সুতরাং” সিনেমাটি ১৯৬৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতাপূর্ব একটি পাকিস্তানী বাংলা ভাষার চলচ্চিত্র। ছবিটি পরিচালনা করেছেন সুভাষ দত্ত এবং তিনি এই ছবিতে একটি গ্রামের ছেলের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। সুভাষ দত্ত ছাড়াও ছবির প্রধান প্রধান চরিত্র গুলোতে অভিনয় করেছেন কবরী, রানী সরকার,বেবী জাসমীন, বেবী জামাল, মেছবাহ, আকবর, মঞ্জুর, ইনাম, সিরাজ ,মেহেদী, খান জইনুলসহ আরো অনেকে।
এটি কবরী অভিনিত প্রথম চলচ্চিত্র। এবং এটি বাংলাদেশের প্রথন চলচ্চিত্র হিসেবে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র সম্মাননা লাভ করেছিল। ১৯৬৫ সালে ফ্রাংকফুর্ট চলচ্চিত্র উৎসবে দ্বিতীয় শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হিসেবে পুরস্কার লাভ করে।সুতরাং ছবির সংগীত পরিচালনা করেন বাংলাদেশের বিখ্যাত সংগীত পরিচালক সত্য সাহা।সেসময় ছবিটি প্রযোজনা করেছিলেন এম এ খায়ের এবং সি আর চৌধুরী (ইস্টার্ন ফিল্মস)।
সুভাষ দত্ত জন্ম গ্রহন করেন ৯ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩০ এবং মৃত্যুবরন ১৬ নভেম্বর, ২০১২ সালে। একজন বাংলাদেশী বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা, সিনেমা চিত্রশিল্পী ও অভিনেতা ছিলেন সুভাষ দত্ত। তিনি ষাটের দশক থেকে বাংলা চলচ্চিত্রের পরিচিত মুখ। তাঁর কর্মজীবনের শুরু হয়েছিল সিনেমার পোস্টার এঁকে। এ দেশের প্রথম সবাক চলচ্চিত্র মুখ ও মুখোশ-এর পোস্টার ডিজাইনার হিসেবে কাজ করেন তিনি। মাটির পাহাড় চলচ্চিত্রে আর্ট ডিরেকশনের মধ্য দিয়ে তাঁর পরিচালনা জীবন শুরু হয়। এরপরে তিনি এহতেশাম পরিচালিত এ দেশ তোমার আমার ছবিতে প্রথম অভিনয়ের সুযোগ পান। তাঁর পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র সুতরাং (১৯৬৪)। এবং সর্বশেষ চলচ্চিত্র ও আমার ছেলে ২০০৮ সালে মুক্তি লাভ করে।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পে তাঁর সুদীর্ঘ কর্ম জীবনে অসামান্য অবদানের সীকৃতি স্বরূপ বাংলাদেশ সরকার তাঁকে ১৯৭৭ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-এ শ্রেষ্ঠ প্রযোজক-পরিচালকের পুরস্কারে ভুষিত করে। এবং ১৯৯৯ সালে একুশে পদক প্রদান করে। এছড়াও তিনি দেশি-বিদেশি অসংখ্য সম্মাননা লাভ করেছিলেন।