
সময়ের কণ্ঠস্বর: ফোক গানের কিংবদন্তি গায়ক নেত্রকোনার কৃতি সন্তান বারী সিদ্দিকীর মৃত্যুতে নেত্রকোনা জেলায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। তার মৃত্যুতে পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা ও শোক জানিয়েছেন, ভারতীয় উপ-মহাদেশের যাত্রা জগতের বিবেক সম্রাট নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের শ্রী গৌরাঙ্গ আদিত্য, নেত্রকোনার বাউল সম্রাট সিরাজ উদ্দিন খান পাঠান (অন্ধ সিরাজ), উদীয়মান বাউল শিল্পী গোলাম মৌলা, ফোক শিল্পী ও সাংবাদিক ইউরো আনিসসহ সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ।
বারী সিদ্দিকী নেত্রকোনা সদর উপজেলার মৌগাতি ইউনিয়নের ফাইছকা গ্রামের এক সংগীত পরিবারের জন্মগ্রহণ করেন। তার বড়ভাই মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাসেম ছিলেন একজন যাত্রাভিনেতা, মা ছিলেন গীত সংগীতের জন্য এলাকায় সুপরিচিত। পরবর্তীতে বারী সিদ্দিকী বংশীবাদক হিসেবে সংগীত জগতে প্রবেশ করেন। এরপর থেকে শুরু হয় বাংলা ফোক গানের কিংবদন্তি গায়কের সংগীতচর্চা।
বারী সিদ্দিকী প্রথমে ওস্তাদ গোপাল দত্ত, রফিক মাহমুদ, দুলাল পত্ররবীশসহ বিভিন্ন সঙ্গীতজ্ঞের কাছ থেকে সংগীতের তালিম নিয়ে শুরু করেন ফোক গানের চর্চা। তিনি বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও চলচিত্র নির্মাতা হুমায়ুন আহমেদের শ্রাবণ মেঘের দিনের চলচিত্রের মাধ্যমে গান গেয়ে তিনি চলচ্চিত্রে পা রাখেন। তখন থেকে তিনি ফোক গানের জন্য দেশের বিদেশে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছেন।
স্থানীয় বাউলরা জানান, তিনি সঙ্গীত চর্চাকে বিশ্বের দরবারের পৌঁছে দেয়ার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। বারী সিদ্দিকীর এই কর্মময় জীবনে অসংখ্য গেয়েছেন এবং তিনি নিজেও গান রচনা করেছেন।
গত ১৭ নভেম্বর রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হন বারী সিদ্দিকী। এরপর যখন তাকে দ্রুত স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়, তখন তিনি অচেতন ছিলেন। তখন তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, তার দুটি কিডনি অকার্যকর ছিল। তিনি বহুমূত্র রোগেও ভুগছিলেন। বারী সিদ্দিকীর ছেলে সাব্বির সিদ্দিকী বলেন, বছর দুয়েক যাবৎ বাবা কিডনির সমস্যায় ভুগছেন। গত বছর থেকে সপ্তাহে তিন দিন কিডনির ডায়ালাইসিস করছেন তিনি। এরপর লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় গত রাত ২ টার দিকে তিনি মারা যান।