
আবদুল লতিফ লায়ন, জামালপুর প্রতিনিধি- জামালপুরের সর্বত্রই রোপা আমন ধান কাটা ও মাড়াইয়ের ধুম পড়েছে।
কিষাণ-কিষাণী-শ্রমিকের মাঝে বইছে উৎসবের আমেজ। তারা সোনালী ধান ঘরে তোলার কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। মজুদদার-ফঁড়িয়ারাও বসে নেই। তারা নতুন ধান কিনতে কৃষকের বাড়ী বাড়ী ঘুরছেন। বৈরী আবহাওয়ার মাঝেও ধানের ফলনে কৃষকেরা খুশি।
জানা যায়, জামালপুর সদর উপজেলার শরিফপুর, পিঙ্গল হাটি, গোদাশিমলা, কম্পপুর ও মেলান্দহ উপজেলার মালঞ্চ, বালুআটা, মহিরামকুল, ভাঙ্গুনীডাঙ্গা ও রাঁন্ধুনীগাছা ছোট বড় প্রত্যেক গৃহস্থ-চাষি পরিবারেই এখন নতুন ফসল ঘরে তোলার কর্মব্যস্ততা। ধান কেটে আটি বেঁধে মাথায় বয়ে কিম্বা গরু মহিষের গাড়ীতে করে নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে।
গ্রামগঞ্জের রাস্তা ঘাট, বাড়ির উঠান, খোলা মাঠ-ময়দানে মাড়াই করা ধান ও খড় শুকানোর কাজে সময় কাটাচ্ছেন। বৈরী আবহাওয়ার মাঝেও লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি ফলন হয়েছে।
কথা হয় জেলার মেলান্দহের বালু আটা গ্রামের ধান মাড়াইরত কৃষক রেজাউল ইসলামের সাথে। তিনি হাসিখুশি মুখে জানান, প্রতি বিঘা আমন আবাদে ৭ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আমি ৩ বিঘা আমনের আবাদ করেছি। আবাদ ভালই হয়েছে।
মহিরামকুলের কৃষক নুরুল ইসলাম ঘরে ধান তুলতে পেরে বেজায় খুশি। তিনি জানান, আড়াই বিঘা জমিতে আমন লাগিয়েছিলাম। ১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কামলা খরচ বেশী থাকায় ধান চাষে কামলার সাথে আমি নিজে ও পরিবারের লোকজন পরিশ্রম করায় অন্যের চাইতে খরচ কিছুটা কম হয়েছে। লাভের মুখ ভালই দেখবো বলে এক গাল হেসে চলে গেলেন ধান কাটার কাজে যোগ দিতে।
ভাঙ্গুনী পাড়ার কৃষক রহিম, মহিরামকুলের আলমগীর নবাব আলী, জামালপুর পাথালিয়া গ্রামের আলমাস, পিঙ্গল হাটির আব্দুল করিম, গোদাশিমলার কৃষক সুরুজ আলীরও একই মন্তব্য।
মেলান্দহের মালঞ্চ ব্লকে দায়িত্বরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল আলম জানান, এ ব্লকে প্রতি হেক্টরে রোপা আমন ব্রি-৪৯ ৫ মেট্রিকটন, হরি সাড়ে ৪ মেট্রিকটন, বিনা-৭ সোয়া ৪ মেট্রিকটন ও পায়জাম সাড়ে ৪ মেট্রিকটন কাটা হয়েছে। স্থানীয় জাত এখনো কাটা শুরু হয়নি।
জামালপুর কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপপরিচালক আমিনুল ইসলাম জানান, এবার সারা জেলায় ১ লাখ ৫৪ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল কৃষি বিভাগের। সেখানে ১ লাখ ২শ ৮০ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের চাষ হয়েছে। বৈরী আবহাওয়া না থাকলে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেত।
সময়ের কণ্ঠস্বর/রবি