
রবিউল ইসলাম (রবি), সময়ের কণ্ঠস্বর- সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে আলোচিত অভিনেত্রী অপু বিশ্বাসকে ডিভোর্সই দিলেন শাকিব খান। এরই মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ৯ বছরের সংসার জীবনের ইতি টানলেন তারা।
২০০৬ সালে ‘কোটি টাকার কাবিন’ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে ঢাকাই ছবির জনপ্রিয় তারকা শাকিব-অপুর জুটি গড়ে ওঠে। চলচ্চিত্র জগৎ থেকে দীর্ঘদিন আড়ালে থাকার পর চলতি বছরের ১০ এপ্রিল আকস্মিক শিশু সন্তান আব্রামকে নিয়ে টেলিভিশন লাইভ অনুষ্ঠানে সবার সামনে আসেন অপু বিশ্বাস। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে ঢাকাই ছবির ‘সুপারস্টার’ শাকিব খানকে বিয়ে করেছেন বলে অপু দর্শকদের জানান।
অপু ইসলাম জানিয়েছিলেন, গুলশানে শাকিবের বাসায় ২০০৮ সালের ১৮ এপ্রিল ইসলাম ধর্মমতে বিয়ে হয় তাদের। ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে শাকিবের আনা কাজি তাদের বিয়ের রেজিস্ট্রি করান। স্ত্রী হিসেবে নিজের ও সন্তানের স্বীকৃতি দাবি করেন তিনি।
এরপর সন্তানকে শাকিব স্বীকার করলেও স্ত্রী হিসেবে অপুকে মানবেন না বলে জানান। অবশ্য পরের দিন এক সাক্ষাৎকারে অপু ও তাদের সন্তানকে স্বীকৃতি দেন শাকিব খান। তবে অপু সন্তান নিয়ে টেলিভিশনে হাজির হওয়ার পর শাকিব বেশ সমালোচিত হন। এরপর একদিনের জন্যও এক ছাদের নিচে থাকেননি তারা।
এদিকে ২৭ সেপ্টেম্বর ছিল জয়ের প্রথম জন্মদিন। জন্মদিনের দাওয়াতপত্রে অপু বিশ্বাস ও জয়ের ছবি থাকলেও শাকিব খানের কোন ছবি ছিল না। তখনও দুই তারকার টানাপোড়নের বিষয়টি আলোচনায় আসে। পুত্রের জন্মদিনের অনুষ্ঠানেও যাননি শাকিব! যদিও তিনি ছেলের সঙ্গে দিনের বড় একটি অংশ কাটিয়েছেন। এরপর থেকেই তাদের সম্পর্কের টানাপোড়েন দিনকে দিন বাড়ছিল।
সবশেষ অপু অসুস্থ হয়ে ছেলেকে বাসার গৃহকর্মীর কাছে তালাবন্দি করে রেখে কলকাতায় যাওয়ায় তুমুল চটে যান শাকিব। যার পরিণতি চূড়ান্ত বিচ্ছেদের পথেই হাঁটলো।
শাকিবের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় মাসখানেক আগেই শাকিব খান ডিভোর্সের চিঠি তৈরি করে রেখেছিলেন। ভারতে শুটিংয়ে যাওয়ার মুহূর্তে সেই চিঠি শেখ আইনজীবী আইনজীবী শেখ সিরাজুল ইসলামের মাধ্যমে অপুর কাছে পাঠিয়েছেন তিনি।
তারকা দম্পতির ডিভোর্সের বিষয়ে জানতে কথা হয় আইনজীবী শেখ সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, শাকিব খান ভারতে যাওয়ার কদিন আগে আমার চেম্বারে আসেন তিনি। অপুকে তালাক দেওয়ার ব্যাপারে আমার কাছে আইনগত সহায়তা চান।
এরপর শাকিব খানের পক্ষ থেকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন মেয়র কার্যালয়, অপু বিশ্বাসের ঢাকার নিকেতনের বাসা এবং বগুড়ার ঠিকানায় এই তালাকের নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, ইতিমধ্যে শালিসি পরিষদের বৈঠকের জন্যও নোটিশ পাঠানো হয়েছে। ৯০ দিনের মধ্যে শালিসি বৈঠকে শাকিব খান এবং অপুর সমঝোতা না হলে পরবর্তীতে ডিভোর্সের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে।
তালাকের কারণ হিসেবে নোটিশে শাকিব উল্লেখ করেছেন, অপু তাঁর পছন্দের সীমার মধ্যে থাকেননি। সম্প্রতি তাঁদের সন্তানকে গৃহপরিচারিকার কাছে রেখে দেশের বাইরে যান অপু। এ ব্যাপারে অপুর কাছ থেকে তিনি কোনো সন্তোষজনক জবাব পাননি। এরপর শাকিব ধরে নিয়েছেন, অপু তাঁর সঙ্গে সংসার করতে চান না।
আরও জানা যায়, বিয়ের দেনমোহর বাবদ সাত লাখ টাকা অপুকে পরিশোধ করবেন শাকিব খান। এ ছাড়া তিনি একমাত্র সন্তান আব্রাম খান জয়ের ভরণপোষণ করবেন।
শাকিব খান বর্তমানে ‘নোলক’ ছবির শ্যুটিংয়ের কাজে ভারতে রয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে শাকিব সময়ের কণ্ঠস্বরকে বলেন, ঘটনা সত্য। আমি ভারতে আসার আগে ডিভোর্স পেপারে সাক্ষর করেছি। এর বেশি কিছু বলতে চাই না।
তবে বিষয়টি নিয়ে সময়ের কণ্ঠস্বর থেকে অপুর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
শেষ পর্যন্ত গুঞ্জনই সত্যি হলো, অপুকে তালাকনামা পাঠালেন শাকিব!
সময়ের কণ্ঠস্বর/রবি