
এম শিমুল খান, গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জ জেলা শহরের স্বনামধন্য দু’টি বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি করিয়ে দিতে শতাধিক কোচিং সেন্টার রমরমা ব্যবসা পেতেছে। বিদ্যালয় দুটিতে ভর্তির শত ভাগ নিশ্চয়তার নামে মাত্র তিন সপ্তাহের জন্য কোনো কোচিং সেন্টার ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত দাবি করছে।
প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে কোচিং সেন্টারে পাঠদান। অভিভাবকরাও তাদের সন্তানদের নিয়ে রাত-দিন ছুঁটছেন ওই সকল কোচিং সেন্টারের দিকে। সকাল, বিকাল কিংবা রাত ভাঙা ঘরের মধ্যে সন্তানরা কোচিংয়ে ব্যস্ত। আর বাইরে অভিভাবকরা বসে বা দাঁড়িয়ে থাকেন।
কোচিং সেন্টারের পড়া শেষ হলে সন্তানদের সাথে করে ঘরে ফিরেন অভিবাবকরা। আগামী ২০ ডিসেম্বর গোপালগঞ্জ জেলা শহরের দু’টি বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ডাবল শিফটে এ দুটি বিদ্যালয়ের ৪৮০ সিটের বিপরীতে লড়বে জেলার কয়েক হাজার মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী। যে করেই হোক স্বপ্ন পূরণে শিক্ষার্থীদের সাথে সাথে লড়াইতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন অভিভাবকরাও।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার হরিদামপুর গ্রামের অভিভাবক নিপা মন্ডল, শহরের মিয়াপাড়া এলাকার মনিরুজ্জামান, ব্যাংক পাড়ার বাসিন্দা রুমি বেগমের মতে গোপালগঞ্জ শহরে মান সম্মত উচ্চ বিদ্যালয় বলতে এস এম মডেল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় ও বীনাপানি সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। আর জেলা শহরের এ দুটি বিদ্যালয়ের দিকেই অভিভাবকদের নজর বেশি।
যে করেই হোক তাদের সন্তানদের ওই দুটি বিদ্যালয়ে ভর্তি করাতে হবে। তাদের বিশ্বাস একবার এখানে ভর্তি করাতে পারলেই সন্তানদের ভবিষৎ উজ্জল হবে। আর এই বিশ্বাসকে পুঁজি করে জেলার অধিকাংশ অভিভাবক তাদের সন্তানদের ওই দুটি স্কুলে ভর্তি করানোর জন্য ছুটছেন কোচিং সেন্টারে। এ কারণে শহরে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে শতাধিক কোচিং সেন্টার।
ওই সকল কোচিং সেন্টারের মালিকেরা শিক্ষার্থীদের স্কুলে ভর্তির নিশ্চয়তা দিয়ে শিক্ষার্থীদের এ সব কোচিং সেন্টারে পড়তে উৎসাহিত করে আসছেন। আর কোচিং সেন্টার গুলো তিন সপ্তাহের জন্য হাতিয়ে নিচ্ছেন মাথা পিছু ২ হাজার টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোকলেসুর রহমান সরকার অভিভাবকেরা যাতে অশুভ ফাঁদে পা না দেন সে আহবান জানিয়ে বলেন, সম্পূর্ণ মেধার ভিত্তিতেই ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। এখানে অন্য কোন সুযোগ নাই বলেও জানান তিনি।
জেলার অধিকাংশ শিক্ষার্থী হয়ে পড়ছে কোচিং নির্ভর। এতে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ সাধনে পরোক্ষ ভাবে সৃষ্টি করা হচ্ছে প্রতিবন্ধকতা। এ অবস্থা থেকে আশু উত্তোরণ প্রয়োজন বলে মনে করছেন জেলার সচেতন মহল।
গোপালগঞ্জে পেয়াজ ও কাঁচা মরিচের দামের উর্দ্ধ গতিতে সাধারন ক্রেতারা বিপাকে
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জে পেয়াজ ও কাঁচা মরিচের দাম এখন লাগামহীন। যার প্রভাব পড়ছে সাধারন ক্রেতাদের ওপর। গোপালগঞ্জের খুচরা বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকায়। ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ ৮৫ থেকে ৯০ টাকায়। অথচ এক থেকে দেড় মাস আগেও দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে মাত্র ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়।
আমদানি করা পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৩৮ টাকায়। এছাড়াও কাঁচা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা। সে হিসাবে গত এক মাসের ব্যবধানে কেজিতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রায় ৪০/৫০ টাকা। এর মধ্যে এক সপ্তাহের ব্যবধানে তিন দফায় দাম বেড়েছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা। এ ভাবে দফায় দফায় পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারনে সাধারন ক্রেতাদের পরিস্থিতি হতাশা জনক।
গোপালগঞ্জ বাজারের পুরাতন পাইকারী পেয়াজ ও কাঁচা মরিচ ব্যবসায়ী মো: আব্দুল মালেক জানান, ইন্ডিয়া থেকে আমদানি করা পেয়াজের শুল্ক বাড়ানোর কারনে এই মূল্য বৃদ্ধি বলে তার ধারনা। একই বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী মো: গোলাম হোসেন বলেন, পেয়াজের দাম বাড়ার কারনে চাহিদা কমে গেছে, যার কারনে বিক্রিও কম হচ্ছে।
গোপালগঞ্জের সাধারন ক্রেতা মনির মোল্লা তার হতাশার কথা বলতে গিয়ে বলেন, মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষেরই যত সমস্যা, এত টাকা দিয়ে পেয়াজ কিনতে হলে আমরা বাঁচবো কী করে ? খুব তাড়াতাড়ি পেয়াজের দাম কমানোর দাবি সাধারন ক্রেতাদের।
এদিকে সরেজমিন গোপালগঞ্জের পুরাতন ও নতুন বাজার ঘুরে দেশি ও আমদানি করা কাঁচা মরিচ ও পেঁয়াজের কোনো সংকট দেখা যায়নি। সাধারন মানুষের অনুরোধ সরকার যেন দ্রুত কাঁচা মরিচ ও পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রনে এনে সাধারন মানুষের ক্রয় ক্ষমতার ভেতরে রাখে।