
সময়ের কণ্ঠস্বর ডেস্কঃ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে মোট ৫০ জনের প্রাণহানি হয়েছে। দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১২৩১ জন। দেশে করোনা আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে চিকিৎসকরা আক্রান্ত হচ্ছেন ও মারা যাওয়া ঘটনাও ঘটেছে।
এদিকে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একজন নারী চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। করোনা শনাক্ত হওয়ার পর নিজেকে না লুকিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সাহসী স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি, যা ইতোমধ্যে ভাইরাল।
বর্তমানে স্বামীর সাথে ময়মনসিংহে ভাড়া বাসায় হোম কোয়ান্টাইনে থাকা ওই নারী চিকিৎসক তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন ‘এখন যদি মরেও যাই, আমার আফসোস থাকবে না’।
ওই নারী বর্তমানে যেখানে আছেন সেখানকার মানুষের আচরণ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ফেসবুক আবেগঘন স্ট্যাটাস দেন। ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, সবাই বলছে কাউকে বলো না। কেনো বলব না? আমি তো কোনো দোষ করি নাই। আমি আপনাদের সেবা করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছি। লকডাউনে যখন আপনারা বাড়িতে বসে সময় কীভাবে কাটাবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ছিলেন তখন আমি হয়তো কোনো কভিড-১৯ পজিটিভ ব্যক্তির পাশে দাঁড়িয়ে।
তিনি আরো লেখেন, হ্যাঁ আমি কভিড-১৯ পজিটিভ। এতে আমার কোনো লজ্জা বা ভয় বা আফসোস নাই। বরং আমি খুব গর্বিত। কারণ আমি শেষদিন পর্যন্ত কাজ করে এসেছি। এখন যদি মরেও যাই আমার আফসোস থাকবে না। কারণ আমি ডাক্তার হিসেবে যে শপথ নিয়েছিলাম তা পালন করে এসেছি। আমি যতদিন পেরেছি আপনাদের জন্য হাসপাতালে এবং মাঠে কাজ করেছি। যেদিন আমার মনে হল আমার নিজেরই স্যাম্পল পাঠানো দরকার, আমি সাথে সাথে স্যাম্পল পাঠিয়ে নিজেকে কোয়ারান্টাইনড করেছি। আমার পক্ষে যতদূর সম্ভব মানুষ এড়িয়ে চলেছি। নিজের বাড়িতেও ফিরিনি, যেহেতু আমারো পরিবার আছে, বাড়িতে বৃদ্ধ শ্বশুর-শ্বাশুড়ি আছেন। তারপরও আজ আমার এলাকার মানুষের কাছে (যে এলাকায় ভাড়া থাকি) যে ব্যবহার পেয়েছি আমি ও আমার স্বামী তা কোনোদিন ভুলব না। একটা কথা বলে যাই, নগর পুড়লে কি দেবালয় এড়ায়?
আগামী বছর বেঁচে থাকলে এই স্মৃতিটা ভেসে উঠবে ফেবুর পাতায়।
শুভ নববর্ষ, ১৪২৭! সবার মঙ্গল হোক।”