
সাইফুল ইসলাম মুকুল, রংপুর- নছিমন বেগম, ভিক্ষা করেই চলে তার জীবন-জীবিকা। স্বামী লেকচার মিয়া ৩ বছর আগে মারা গেছেন। নিজের থাকার মত জমি বা বসত ঘর ছিলো না। সারাদিন ভিক্ষা করে সরকারি খাস জমিতে ঝুপড়ি ঘরে থাকতে হতো বাক প্রতিবন্ধী ছেলে নজরুল ইসলাম কে সাথে নিয়ে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টি.আর-কাবিটা কর্মসূচির আওতায় দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মাণের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে সবার জন্য বাসস্থান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ‘জমি আছে ঘর নাই’ প্রকল্পের পাকা ঘর পেয়ে খুবই খুশি নছিমন বেগম। তার বাড়ি রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের আদর্শপাড়া গ্রামে।
জানা গেছে, উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের ২০১৯-২০ অর্থ বছরের টি.আর কাবিটা কর্মসূচীর আওতায় বিশেষ বরাদ্দ হতে জমি আছে ঘর নেই গৃহহীনদের জন্য দূর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মাণের জন্য ১,৪০,৯৩,৪২০/- টাকা বিপরীত ৪৭ টি বাড়ি নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেয় দূর্যোগ মন্ত্রণালয়। প্রতিটি বাড়ীর জন্য বরাদ্দ ছিল ২,৯৯,৮৬০/- টাকা। দুই শতক জমির উপর আধাপাকা টিন শেড বাড়িগুলোতে ২টি বেড রুম, ১টি রান্না ঘর, ১টি বাথরুম, কড়িডোর ও বারান্দা রয়েছে। মেঝে পাকা করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ঘরে রয়েছে ৩টি করে দরজা ও চারটি করে লোহার জানালা। সুন্দর ডিজাইনের পাকা ঘরে রঙিন টিন ও ওয়াল রং করে দেয়া হয়েছে। যা দূর থেকে নজর কাড়ে সবার। তৈরিকৃত বাড়িগুলো হচ্ছে আলমপুর ইউনিয়নে ৯টি, কুর্শা ইউনিয়নে ১০টি, ইকরচালী ইউপিতে ৯টি, হাড়িয়ারকুটি ইউপিতে ১০টি ও সয়ার ইউনিয়নে ৯টিসহ মোট ৪৭টি বাড়ি।
ভিক্ষুক নছিমন বেগম এ জানান, আজ শান্তিতে ঘুম যাবার পাইছোল। শেখের বেটিকে ধন্যবাদ দেও। হামার মতন নিঃস্ব মানুষগুলোর পাশত দাঁড়াবার জন্যে। ঘর পাইতে কাকো কোনো টাকা পয়সা দেওয়া নাগেনি। অনেকে হামাক সাহায্য দিছে, কিন্তুক টাকা পয়সা ছাড়া ঘর পামো এমন আশা কখনও করিনি। আল্লাহ শেখ হাসিনাকে দীর্ঘজীবি করুক।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বায়স্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল মমিন জানান, গুণগত মান বজায় রেখে, সুন্দরভাবে সকল নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ৪৭টি পরিবারকে পাকা ঘর নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। এতে করে গ্রামের পিছিয়ে পড়া মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ও জীবনযাত্রার পরিবর্তন হবে।
তারাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমিনুল ইসলাম বলেন, এ উপজেলার অসচ্ছল, দুঃস্থ, বিধবা ও প্রতিবন্ধী নারী-পুরুষ গৃহহীন পরিবারগুলোর জন্য মাথা গোঁজার ঠাঁই হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মাণ প্রকল্পের মাধ্যমে আধাপাকা বাড়ি তৈরির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। বাস্তবায়িত বাড়িগুলো নিয়ম মোতাবেক শত ভাগ গুনগত মান রক্ষা করে, ডিজাইন অনুযায়ী নির্মাণ করা হয়েছে।