
খাদেমুল ইসলাম মামুন,ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সাগরদিঘী প্রাণীসম্পদ কল্যান কেন্দ্রের অবকাঠামো এবং চিকিৎসা ব্যবস্থা চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। দীর্ঘদিন ধরে এই সাব প্রাণীসম্পদ অফিসের বেহাল দশা থাকায় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে পাহাড়ি এলাকার হাজার হাজার হাস মুরগী ও গবাদিপশু। জড়াজীর্ণ অবকাঠামো, প্রয়োজনীয় উপকরণ, ঔষধ ও জনবল সংকটের কারনেই দিন দিন নিমজ্জিত হয়ে পড়ছে সরকারি এই প্রাণী সম্পদ কল্যান কেন্দ্র অফিসটি।
প্রাণী সম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, ১১ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত ঘাটাইল উপজেলা গঠিত। এই উপজেলায় তালিকাভুক্ত গরুর খামার রয়েছে ১৮টি। এছাড়া ব্যক্তিগত ভাবে আরো ছোট-বড় প্রায় ৬০টি খামার রয়েছে। রয়েছে হাঁস, ছাগল ও গারলের খামার। তবে গবাদিপশুর সংখ্যা প্রায় ৮৫ হাজার হবে। বর্তমান সরকার যখন দেশকে দারিদ্র্য মুক্ত করতে বিভিন্ন উপায়ে যেমন, ছাগল পালন, হাঁস- মুরগীর খামার, গবাদী পশু পালনে মানুষদের আগ্রহী করছেন প্রশিক্ষন দিচ্ছেন, ঠিক সেই সময়ে সরকারি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অসচেতনা ও অবহেলায় যেমন আগ্রহ হারাতে বসেছে পশু পালনকারীরা, তেমনি নষ্ট হচ্ছে সাব-প্রাণিসম্পদ কল্যান কেন্দ্রের জরাজির্ণ ভবন ও সরঞ্জামাদি। কারন প্রয়োজনীয় জনবলের ও দেখভালের অভাবে উপজেলার এই প্রাণী সম্পদ কল্যান কেন্দ্রটির কার্যক্রম ধীরে ধীরে স্থবির হয়ে পড়েছে।
উপ সহকারী কর্মকর্তা এম.এম মহিবুর রহমান জানান, বর্ষার প্রায় তিন চার মাস বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে থাকে এর আঙিনা। এই প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনার জন্য নেই ভালো কোন ভবন, বিদ্যুৎ সংযোগ, নেই সেবা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরাঞ্চাম। যার ফলে, সাধারণ মানুষ ছুটে চলছে হাতুড়ে ডাক্তারদের কাছে এবং হরহামেশা প্রতারিত হচ্ছে।
জানা যায়, এখানে এক সময় প্রতিদিন গড়ে ১০০ থেকে ১৫০ জন বিভিন্ন সেবা যেমন কৃত্তিম প্রজনন, ছাগলের ঠান্ডা কাশিসহ ভ্যাক্সিন দিতে আসতো। বর্তমানে যথাযত চিকিৎসা না পেয়ে গ্রামের হাতুড়ে ডাক্তারদের শরণাপন্ন হতে হচ্ছে খামারিদের। সরকারী সেবার এই দৈন্যদশার সুযোগে পশু ডাক্তারের নামে হাতুড়ে ডাক্তারের ছড়াছড়ি। আর এদের হাতে গলাকাটা সেবার শিকার হচ্ছে সাধারন মানুষ।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান বলেন, উপজেলার এই কল্যান কেন্দ্রটি পাহাড়ি এলাকার অধিকাংশ মানুষের তাদের পশু পাখির চিকিৎসার এক মাত্র ভরসা। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, এখানে উন্নয়নের ছোঁয়া দূরের কথা, দাঁড়াবার পরিবেশও নেই। এর উন্নয়নে আমাদের কাছে কোন বরাদ্ধ নেই।