
এস আই মুকুল, নিজস্ব প্রতিবেদক : মুজিবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ভোলার মনপুরায় ২শত ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য নির্মিত হচ্ছে আধা-পাকা ঘর। প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় সরকারী খাস জমিতে এসব ঘর নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে।
প্রতিদিন এসব নির্মানাধীন ঘরগুলো সরজমিনে পরিদর্শন করছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শামীম মিঞা। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঘরগুলো হস্তান্তর করার জন্য রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছেন উপজেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। বরাদ্ধ প্রাপ্ত গৃহহীণ ও ভূমিহীনদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে।
আগামী ২৩ জানুয়ারী সারাদেশে একযোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক উদ্ভোধনের পরপরেই ঘরগুলো গৃহহীন ও ভূমিহীনদের মধ্যে হস্তান্তর করা হবে জানান উপজেলা নির্বাহী অফিসার।
মুজিববর্ষে “আশ্রয়নের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার” এ শ্লোগান বাস্তবায়নের লক্ষে উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে খাস জমিতে ভূমিহীন ও গৃহহীণ ২শত পরিবারকে আধা-পাকা ঘর তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে।
বরাদ্ধপ্রাপ্ত তালিকায় নাম উঠায় খুব খুশি রহিমা বেগম (২৫)। মা, বাবা ও স্মামী নেই রহিমা বেগমের। এক কন্যা সন্তানকে নিয়ে থাকেন অন্যের বাড়ীতে ঝুপড়ি ঘর উঠিয়ে। সাবরেজিঃ অফিসে দীর্ঘদিন ধরে বুয়ার কাজ করেন। ঘর বরাদ্ধের তালিকায় নাম উঠায় চোখে মুখে খুশির ঝিলিক দেখা যায়। বলেন বুয়ার কাজ করে জীবনটা কাটিয়ে দিচ্ছি ঝুপড়ি ঘরের মধ্যে। টাকা পয়সার অভাবে ঘর করতে পারিনি। বর্ষা ও শীতে অনেক কষ্ট হয়েছে। এখন প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘরে থাকব আর কষ্ট হবেনা।
একই কথা বলেন, উপজেলার হাজির হাট বাধের বাজার পাশে বেড়ীর ডালে বসবাসরত পিয়ারা বেগম(৩৫)। তার স্মামী ও বাবা নেই। এক ছেলে ও মাকে নিয়ে দীর্ঘ ২০ বছর যাবত বেড়ীর ডালে কোন মতে ঘর উঠিয়ে থাকেন। বরাদ্ধকৃত তালিকায় নাম উঠায় খুব খুশি তিনি। বলেন এখন মাকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘরে থাকব। আর আমাদের কষ্ট হবেনা।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ ইলিয়াছ মিয়া জানান, প্রতিটি পরিবারের জন্য দুই শতাংশ খাস জমি বরাদ্ধ দিয়ে ঘর তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। বাথরুম, গোসলখানা, বারান্দাসহ ২ কক্ষ বিশিষ্ট প্রতিটি আধা-পাকা ঘরের নির্মাণ ব্যয় ১ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা। উপজেলার ১নং মনপুরা ইউনিয়নে ৫৩ টি, হাজিরহাট ইউনিয়নে ৬৪ টি, উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নে ৪১ টি ও দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নে ৪২ টি ঘর নির্মাণের কাজ চলছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শামীম মিঞা বলেন, ঘর নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে গত ১৩ ডিসেম্বর বরাদ্ধ পেয়েছি। দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছি। প্রতি পরিবারের জন্য ২ শতাংশ খাস জমি কবুলত রেজিঃ করে দেওয়া হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উপকারভোগীদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘরগুলো হস্তান্তর করা হবে।