

নয়ন দাস, স্টাফ রিপোর্টার, শরীয়তপুর: শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিকন্দী ইউনিয়নে ১৫ বছরের এক কিশোরীর সাথে বিয়ের নাটক সাজিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সোমবার (৩০ মার্চ) রাতে চিকন্দী ইউনিয়নের মাদবর কান্দি গ্রাম থেকে ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় ওই কিশোরীর মা পালং মডেল থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন।
গ্রেফতারকৃত যুবক ওই এলাকার রহিম মাদবরের ছেলে ইমরান মাদবর (২৪)। সে শরীয়তপুর সরকারি কলেজের অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্র।
এরআগে গত ১২ মার্চ ওই কিশোরী পালং মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও গত ২৬ মার্চ শুক্রবার বিষয়টি নিয়ে চিকন্দী পুলিশ ফাঁড়িতে স্থানীয় মাতুব্বরদের মাধ্যমে দুই পক্ষের উপস্থিতিতেই রফাদফার চেষ্টা করা হয়। সেখানে ক্ষতিপূরন বাবদ কিশোরীকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দিলেও তা প্রত্যাখ্যান করেছে ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরী ও তার পরিবার। এ নিয়ে ১৭ দিনের থানায় মামলা না হওয়ায় বিষয়টি স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের জানানোর পর গতকাল আসামিকে গ্রেফতার করে ভিকটিমকে উদ্ধার করা করে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্র ও ওই কিশোরীর পরিবার জানায়, সদর উপজেলার চিকন্দী ইউনিয়নের মাদবর কান্দি গ্রামের রহিম মাদবরের ছেলে ইমরান মাদবর (২৪) সাথে একই এলাকার ১৫ বছরের এক কিশোরীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক শেষে বিয়ে করতে অস্বীকার করে ইমরান। পরবর্তীতে ওই কিশোরী বিষপানে আত্মহত্যা চেষ্টা করলে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিন দিন হাসপাতালে ভর্তি থেকে সুস্থ্য হওয়ার পরে বিয়ের নাটক সাজিয়ে ওই কিশোরীকে নিয়ে ঘর সংসার করতে থাকে ইমরান। পরে ওই কিশোরী দেড় মাসের গর্ভবতী হয়ে পড়লে ইমরান গর্ভের বাচ্চা নষ্ট করে ঢাকায় ফেলে চলে আসে। এ ঘটনায় কয়েকদিন পরে ওই কিশোরী বাড়িতে ফিরলে বিয়ের কথা অস্বীকার করে ইমরান ও তার পরিবার।
এনিয়ে গত ১২ মার্চ ওই কিশোরী পালং মডেল থানায় ইমরানের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করে। পুলিশ মামলা না নিয়ে গত ২৬ মার্চ শুক্রবার বিষয়টি নিয়ে চিকন্দী পুলিশ ফাঁড়িতে স্থানীয় মাতুব্বরদের মাধ্যস্ততায় দুই পক্ষের উপস্থিতিতেই ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকায় রফাদফার চেষ্টা করা হয়। যদিও সালিশি বৈঠকে মিমাংসার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে অভিযুক্ত যুবকের বিচার দাবি করেছে ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরী।
পরে গতকাল সোমবার (২৯ মার্চ) স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের জানানোর পরে বিষয়টি জেলা পুলিশ সুপারকে অবগত করা হলে রাতেই আসামিকে গ্রেফতার করে ভিকটিমকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
চিকন্দী পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) বিশ্বজিৎ টেনিংয়ে থাকায় মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে বলেন, ওই কিশোর মারধরের অভিযোগের ভিত্তিতে দুই পক্ষকে নিয়ে বসা হয়েছিল। সেখানে মিমাংসার কোন কথা হয়নি। ওই কিশোরীকে মারধর করবে না বলে দু্ই পক্ষ মিমাংসা হওয়ায় মামলা দায়ের করেনি।
চিকন্দী পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আজিজুর হক হাওলাদার বলেন, মিমাংসার কোন ঘটনা আমার ফাঁড়িতে হয়েছে বলে জানা নেই। তবে কিশোরীর অভিযোগের ভিত্তিতে গতকাল রাতে আসামি ইমরানকে গ্রেফতার করা হয়েছে ও ভিকটিমকে মেডিকেল পরীক্ষা জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে আসামি পালং থানায় রয়েছে। এছাড়া মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানায় ওই পুলিশ কর্মকর্তা।