

মঈনুল হাসান রতন, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি: হবিগঞ্জে অনুষ্ঠিত হলো গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী হারিয়ে যাওয়া লাঠি খেলা। এ সময় কাঁসা আর ঢুলের শব্দে চারপাশে যেন এক উৎসব মুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। বাদ্যের তালে তালে নেচে নেচে লাঠি খেলে অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করেন লাঠিয়ালরা। খেলোয়াড়রা একে অপরের সঙ্গে লাঠি যুদ্ধে লিপ্ত হন। এ সময় লাঠি দিয়ে অন্যের আক্রমণ ঠেকাতে থাকেন। আর এরই মধ্যে নিজের চেয়ে বড় লাঠি নিয়ে অদ্ভূত সব কসরত দেখিয়ে উপস্থিত সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন লাঠিয়ালরা।
আর লাঠিয়াল দলের ক্ষুদে দুই লাঠিয়ালের কসরত দেখে মুগ্ধ হন প্রবীণ লাঠিয়ালসহ উপস্থিত দর্শকরা। প্রথমেই দল বেঁধে আগত দর্শকদের সালাম বিনিময় করেন লাঠিয়ালবাহিনী। এসব দৃশ্য দেখে আগত দর্শকরাও করতালির মাধ্যমে খেলোয়াড়দের উৎসাহ দেন। কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাওয়া এ লাঠি খেলা দেখতে শনিবার বিকেলে হবিগঞ্জ শহরের জালাল স্টেডিয়ামে জড়ো হন শত শত নারী পুরুষ ও বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা। ইট-পাথরের টুংটাং আওয়াজকে হার মানিয়ে কিছুটা হলেও পুরোনো দিনের গ্রামীণ চিত্ত বিনোদনের সুযোগ পান তারা হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই খেলায় জেলার চুনারুঘাট উপজেলার মিরাশী ইউনিয়নের জলিলপুর গ্রামের মমতাজ উদ্দিনের নেতৃত্বে ২২ জনের একটি দল মনোমুগ্ধকর লাটি খেলার প্রদর্শন করে।
এতে মুগ্ধ করে শত শত দর্শনার্থীদের। লাটি খেলায় অংশ নেন আব্দুল করিম এর মতো প্রবীণ খেলোয়াড়। আবার ১২ বছরের রুবেলও প্রদর্শন করে দক্ষতা। বেশ কয়েকজন যুবকের আকর্ষণীয় লড়াই ছিল উপভোগ্য। একসঙ্গে তিন প্রজন্মের খেলোয়াড়ের অংশগ্রহণে প্রমাণ হয়েছে খেলাটি এখনো বিলুপ্ত হয়নি।খেলা শেষে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পুরস্কার বিতরণ করেন, হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক মিন্টু চৌধুরী, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক বদরুল আলম, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট শাহ ফখরুজ্জামান, হবিগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি চৌধুরী মোহাম্মদ ফরিয়াদ। খেলা শেষে জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এই খেলাটি নিয়মিত আয়োজনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।