

সময়ের কণ্ঠস্বর ডেস্ক : ভোলার লবণাক্ত জমিতে চাষ হচ্ছে ব্রি ধান ৬৭, বিনা ধান ১০। ভু্ট্টা, মুগ, সয়াবিন, সূর্যমুখী, শশার আবাদ দিন দিন বাড়ছে। এছাড়া, পেঁয়াজ, বার্লি, পুঁইশাকসহ বিভিন্ন সবজি ফসল চাষ খুবই সম্ভাবনাময়। সরকারের প্রণোদনা পুনর্বাসন কার্যক্রমের ফলে এসবের আবাদ দিন দিন বাড়ছে।
এসব ফসলের আবাদ ও সম্ভাবনা সরেজমিনে দেখতে আজ ভোলার সদর উপজেলার চর মনশা গ্রামে সমন্বিত ফল বাগান, বারোমাসি আম, সূর্যমুখী, চিনাবাদামসহ তেল জাতীয় ফসল ও পেঁয়াজের মাঠ পরিদর্শন করেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক।
এসময় মন্ত্রী বলেন, বছরে ৮-১০ লাখ টন পেঁয়াজ দেশে আমদানি করতে হয়। আমাদের প্রয়োজনের সময় ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়, দেশে দাম বেড়ে যায়। আমরা পেঁয়াজে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে চাই। ভোলায় বারি উদ্ভাবিত বারি-৪ পেঁয়াজের ফলন ভালো, সুস্বাদু। এটিকে সারা দেশে ছড়িয়ে দেবো। পেঁয়াজে শুধু স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন নয়, ২-৩ বছর পরে পেঁয়াজ রপ্তানিও করতে পারব।
পরিদর্শনকালে কৃষিসচিব মো: সায়েদুল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বেনজীর আলম, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) মহাপরিচালক মো: শাহজাহান কবীর, ভোলার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, কৃষি সম্প্রসারণের উপপরিচালক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, ভোলার মাটি উর্বর। এখানে বিজ্ঞানীরা ধান, পেঁয়াজ, ঢেঁড়স, বেগুন, আম, লিচুসহ বেশ কিছু ফসলের নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন করেছেন। এসব জাতের ফলন বেশি। কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। দেশে কৃষি উৎপাদন বাড়বে, পাশাপাশি বিদেশ থেকে আমদানি করতে হবে না।
মন্ত্রী এ সময় মাঠে কর্মরত কিছু কৃষি শ্রমিকের সাথে মতবিনিময় করেন। তাদের কাছে মজুরি, চালের দাম ও কোন অভাব আছে কি না জানতে চান মন্ত্রী। শ্রমিকেরা জানান, তারা সকাল ৭টা থেকে বিকাল ৬ পর্যন্ত কাজ করে দিনে ৫০০-৫৫০ টাকা মজুরি পান, মোটা চালের দাম ৪০-৪৫ টাকা আর খাদ্যের কোন অভাব নেই।
এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, আগে এক দিনের মজুরি দিয়ে শ্রমিকেরা ২-৩ কেজি চাল কিনতে পারতো, আর এখন কিনতে পারে কমপক্ষে ১০ কেজি চাল। করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বে এই মুহূর্তে খাদ্যপণ্যের দাম রেকর্ড পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর প্রভাবে দেশে কিছু কিছু নিত্যপণ্যের দাম কিছুটা বেড়েছে। এতে মানুষের কষ্ট হচ্ছে, সেটা আমরা স্বীকার করি। কিন্তু দেশে কোনো খাদ্য সংকট নেই, কোনো মানুষ না খেয়ে নেই। অথচ কিছু অর্থনীতিবিদ, সুশীলসমাজ ও বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবরা সারা দিন ভাঙা রেকর্ড বাজাচ্ছেন দেশ ডুইবা গেল, মানুষ না খাইয়া মরতেছে। মনে হয় যেন একটা দুর্ভিক্ষ চলতেছে।
ড. আব্দুর রাজ্জাক আরো বলেন, কৃষিতে সরকারের লক্ষ্য হলো কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা ও কৃষককে লাভবান করা। কিন্তু মুনাফাখোর, পাইকার-আড়তদার, মধ্যস্বত্বভোগী, সামাজিক সমস্যা, চাঁদাবাজি প্রভৃতির কারণে কৃষকেরা ন্যায্যমূল্য পায় না। কৃষকেরা তো সরাসরি কাওরান বাজারে পণ্য বিক্রি করতে পারবে না, কাউকে না কাউকে মাঝখানে দায়িত্ব নিতে হবে। কিন্তু মধ্যস্বত্বভোগী যাতে কৃষক এবং ভোক্তাকে শোষণ ও ঠকাতে না পারে, তা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। এটি নিশ্চিত করতে সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা করছে।