জাতীয়
সব দেখুনসর্বশেষ প্রকাশিত
রাজনীতি
সব দেখুনচলতি সপ্তাহে সর্বাধিক পঠিত
বৈশাখের শুরুর থেকেই গ্রীষ্মের রুদ্ররূপ দেখছে রাজধানীসহ সারাদেশ। তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে রাজধানীর বুড়িগঙ্গা নদীর মাঝিরা। সারাদিন নৌকা চালিয়ে কতই বা আসে, তিন’শ থেকে চারশো টাকা। আর এ আয় টক্কর দিতে না পারে নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে। আবার সেখানে তীব্র গরমে মাঝিদের দিনযাপন এখন জটিল। তবুও জীবিকার তাগিদে সাদেক ও ইমন মাঝিরা টিকে থাকার লড়াই বুড়িগঙ্গা নদীর বিভিন্ন ঘাটে নৌকা বাইছেন।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সরেজমিন বুড়িগঙ্গা নদীর সদরঘাটের লালকুঠি, ওয়াইজ, বাদামতলী, শ্যামপুর, সোয়ারী তৈলঘাট ও জিনজিরা ঘাট ঘুরে দেখা যায়, তীব্র গরমে বহু নৌকা বেকার পড়ে থাকতে দেখা যায়। বিভিন্ন ঘাটে নৌকা চালিয়ে জীবিকা চালান প্রায় পাঁচ হাজার মাঝি। অনেকে পেশা ছেড়ে কুলি কিংবা ক্ষুদ্র ব্যবসা করছেন। অন্যরা যারা ‘মায়ায়’ পড়ে আছেন, আর কুলিয়ে উঠতে পারছেন না। সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন বলে জানান আগানগর ঘাটের মাঝি দিদার হোসেন। তিনি বলেন, রোদের তাপে চোখ মিলে তাকানোই যেন দায়। মোবাইল ম্যাপে ৩২ ডিগ্রি দেখালেও তাপ প্রবাহ যেনো ৪০ সমান। তবুও জীবিকার তাগিদে নৌকা হাতে বেরিয়েছি।
বাদামতলি ঘাটের মাঝি আরফত আলী বলেন, নৌকা টানতে গিয়ে কায়িক শ্রমে অনেকটা সয়ে যাওয়া শরীরও কাহিল হয়ে পড়ছে তার। ঝরে পড়া ঘামের স্রোত যেন জানান দেয় আর সইছে না এই তাপ। এমনি চিত্র দেখা যায় বুড়িগঙ্গার বিভিন্ন ঘাটে মাঝিদের। হাঁসফাঁস করা গরমে কাহিল হওয়া শরীর চাঙা করতে শুধু পানি আর ঘাটের টঙের শরবত দিয়েই বারবার শুষ্ক গলা ভিজিয়ে নেওয়া চেষ্টা তাদের। এ সময় রোগ-শোকে আক্রান্ত হলে তা প্রতিরোধে পুষ্টিকর খাবার কিংবা ওষুধ কিনতে যে পরিমাণ আর্থিক স্বচ্ছলতা প্রয়োজন তা অধিকাংশ মাঝির নেই।
তৈলঘাট এলাকায় মাঝি শামসুল আলম বলেন, আগে সারাদিন কাজ করছি। এখন বেশি কাজ করতে পারছি না। এই গরমে আমাদের খুব কষ্ট হয়। আর যেটুকু পারি সেটুকু আয়ে দুবেলা ভাত খাই, ভালো খাবার কোথায় পাবো? এঘাটের শফিফুল মাঝি বলেন, জীবিকার তাগিদে সকালবেলা নৌকা নিয়ে বের হয়েছেন।
ততক্ষণে বাড়তে শুরু করেছে রোদের তীব্রতা। এ তীব্র রোদে আর এগোতে পারছেন না, তাই ক্লান্তি ভরা শরীর নিয়ে নৌকায় বসে ঝিমাচ্ছেন। গরমে কেমন আছেন জানতে চাইলে বলেন, গরমে মাথা ঘুরাচ্ছে। একটা ভাড়া টানলেই শরীর একদম ক্লান্ত হয়ে যায়। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে নিয়ে নৌকা চালাই। বড় কোনো ভাড়া টানতে পারি না। ৩০ থেকে ৬০ টাকার ভাড়া টানি। গরম না থাকলে নৌকায় আটজন নিয়েও চলতাম। এখন দুই জন যাত্রী নিয়ে চালাতে কষ্ট। বেশির ভাগ সময় এক জন নিয়ে চালাই। আগে দিনে ১২ থেকে ১৪টা ভাড়া টানতাম এখন সাত থেকে আটটার বেশি পারিনা।
এক ঘণ্টা নৌকা চালালে আবার এক ঘণ্টা রেস্ট নিতে হয়। এই মাঝি আরও বলেন, গত এক সপ্তাহ থেকে দূরের কোনো ভাড়া কিংবা চার জনের বেশি যাত্রী টানতে পারছেন না তিনি। গরমে বেশি ভাড়া টানতে না পারায় আগের চেয়ে আয়-রোজগার কমেছে, অন্যদিকে খরচও বেড়েছে নিত্যদিনের। জিনজিরা-কামরাঙিরচর ঘাটের ষাটোর্ধ্ব হারুন মোল্লা মাঝি বলেন, সকালবেলা রোদ ওঠার আগে ভাড়া টানা যায়। বেলা গড়িয়ে রোদ বাড়ার পর আর পারি না। খুব কষ্ট হয়। যতক্ষণ চালাই, মাথায় গামছা বেঁধে চালাই। এদিকে, গরমে মানুষও বের হচ্ছে কম। যারাই আছে, ভাড়া আছে ভালো। কিন্তু গরমে শরীর আর হাত চলে না। এসময় সদরঘাট এলাকার আবুল শেখ মাঝি জানান, এখন আর আগের দিন নেই। নৌকা আর ঘাট বেড়েছে। আগের মত যাত্রী বা মালামাল পাওয়া যায়না। আজ থেকে ১০ বছর আগেই যেখানে দৈনিক আয় হতো ৮০০-৯০০ টাকা সেই পরিমাণ এখন অর্ধেকে নেমে এসেছে।
ঘাট ভাড়া, সিরিয়াল, নৌকার রক্ষণাবেক্ষণ’সহ বিভিন্ন বাবদ প্রতিদিন গড়ে প্রায় দুইশো ৫০ টাকা খরচ হয়। এই খরচটা আরও কম হলে আমাদের পোষাত কিছুটা। ৩০ বছর ধরে নৌকা চালাই। এটা আর ছাড়া সম্ভব না এখন। এগরমে যতটুকুই আয় রোজগার হয় সেটা দিয়েই চলতে অনেক কষ্ট হয়।
তীব্র এই গরমে অনিয়ন্ত্রিত পরিশ্রমের ফলে একজন মানুষের শরীরে পানিশূন্যতা, মানসিক স্বাস্থ্যের ঝুঁকি, হিট স্ট্রোক, চর্মরোগ, ডায়রিয়া বা বদহজম, টাইফয়েড ও হেপাটাইসিস, সর্দি-কাশিসহ নানাবিধ রোগ দেখা দিতে পারে। এবিষয়ে পুষ্টিবিদ সাফাতুন্নেসা বলেন, এই সময়ে রোগ প্রতিরোধে শরীরের জন্য দরকার বাড়তি যত্ন। পাশাপাশি স্বাস্থ্যসম্মত খাবার প্রয়োজন। এর কমতি হলে মানসিক, শারীরিক ক্ষতির পাশাপাশির মৃত্যুর ঝুঁকি রয়েছে। শুধু স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিই না তীব্র গরম শ্রম অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলে। কমে যায় মানুষের স্বাভাবিক কর্মক্ষমতাও। অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক এমএম আকাশ বলেন, শ্রমজীবী মানুষদের স্বল্প আয় দিয়ে নিজের কিংবা পরিবারের
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী জানান, তীব্র গরমে মানুষজন অসুস্থ হয়ে পড়ছে। কেউ কেউ মারা যাচ্ছে। এই অবস্থায় নৌকার মাঝিদের জন্য পরামর্শ হচ্ছে— দীর্ঘমেয়াদি রোগে যারা ভুগছেন তারা যেন নেহাত বাসা থেকে না বের না হয়। অন্যদিকে নৌকা নিয়ে বের হওয়ার সময় বোতলে যেন বিশুদ্ধ পানি নিয়ে যায়। কেননা তীব্র গরমে শরীর থেকে পানি ও লবণ বেরিয়ে যায়। এ সময় পানি না খেলে, পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। এ কারণে পানি এবং ওরস্যালাইন প্রয়োজন মতো পান করতে হবে। গরমে আঁটসাঁট জামা কাপড় না পরে সুতির ঢিলেঢালা পোশাক পরতে হবে। ঘর থেকে বের হলে অবশ্যই ছাতা ব্যবহার করতে হবে। গরমে মানুষ অবসন্ন বোধ করে। পানিশূন্যতার কারণে প্রস্রাবের রং হলুদ হয়ে যায়, মাথা ঘোরে, বমি বমি লাগে, চোখে ঝাপসা দেখে। অনেকে অসংলগ্ন কথা বলে। তিনি বলেন, তীব্র গরমে অনেক মানুষ পথে শরবত কিনে খায়। এটা খেতে আমরা একেবারেই মানা করি কারণ শরবতে ব্যবহৃত পানি নিরাপদ বা সুপেয় পানি না। এতে নানা ধরনের জীবাণু থাকে।
যে বরফ ব্যবহার করা হয়, তা মানুষের খাওয়ার জন্য বানানো হয়নি। সেটাও পানিবাহিত রোগের কারণ হতে পারে। অস্বাস্থ্যকর পানীয়তে পানিবাহিত রোগ ডায়রিয়া, ডিসেন্ট্রি, হেপাটাইটিস, টাইফয়েড, ফুড পয়জনিং হতে পারে।
এআইরাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে বইছে তীব্র তাপদাহ। প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। ঘরে-বাইরে কোথাও স্বস্তি নেই। তীব্র তাপদাহের এই সময়ে অতিরিক্ত গরম থেকে বাঁচতে রাজধানীর পুরান ঢাকার ইসলামপুরের গোল তালাব পুকুর দিচ্ছে সব বয়সের মানুষের গোসল করার স্বস্তি।
সোমবার (২৩ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে সরজমিনে ঘুরে দেখা যায় ২০০ বছরের এই পুরনো পুকুরে গরম থেকে বাঁচতে শুধু শিশু-কিশোর নয় সব বয়সের মানুষ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তালা পুকুরে।
স্থানীয়ভাবে এই পুকুরকে নবাব বাড়ির পুকুর নামে পরিচিত। ১৮৩০ সালে নবাব খাজা আলিমুল্লাহ পুকুরটি খনন করেন। পারসহ ৮ বিঘা জমির পুকুরটির ঐতিহ্য এখনো জানান দেয়। প্রায় ২০০ বছর পরও এই পুকুরের পানির স্বচ্ছতা ও সৌন্দর্য অন্য যেকোনো পুকুরের থেকে আলাদা। মাত্র পাঁচ টাকার বিনিময়ে যতক্ষণ খুশি ততক্ষণ আপনি এ পুকুরে করতে পারবেন গোসল।
পুকুরে গোসল করতে আসা মো.আবদুল হামিদ (৭০) বলেন, আমি গ্রামের মানুষ, গ্রাম থেকে এসেছি। ঢাকাতে তো তেমন একটা পুকুর বা নদী নেই। ৫ টাকার বিনিময়ে এখানে গোসল করতে পেরে গরমে শান্তি পাচ্ছি।
মারুফ (১৮) বলেন, আমরা এখানের স্থানীয় বাসিন্দা। ছোটবেলা থেকেই এই পুকুরে সাঁতার শিখেছি। মাঝেমধ্যেই এখানে গোসল করতে আসা হয়। এখন প্রচন্ড গরম। পানি থেকে উঠতেই মন চায় না। তাই প্রতিদিন ২-১ ঘন্টায় এসে এখানে গোসল করি সাঁতার কাটি।
তবে পুকুর কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে জানান, এই পুকুর ব্যবহারে রয়েছে বেশ কিছু শর্ত। পুকুরের পানিতে ব্যবহার করা যাবে না সাবান শ্যাম্পু। সাবান ব্যবহারের জন্য পাশেই রয়েছে গোসলখানা এবং পোশাক পরিবর্তনের স্থান। সাঁতার জানা না থাকলে নামা যাবে না পুকুরে। পুকুরে গোসল করতে আসা অতিথিদের সেবা দেওয়ার জন্য সবসময় প্রস্তুত নবাব বাড়ির বংশধরেরা। নিরাপত্তার জন্য পুকুরের ভিতরে রাখা আছে নৌকা এবং জীবন্তরি।
তবে শত বছরের এই পুরাতন পুকুরেও রয়েছে সৌন্দর্য হারানোর ভয়। ভূমি খেকো দের নজর পড়ে এই পুকুরের উপর। জাল দলিল তৈরি করে পুকুর দখলের চলছে অপচেষ্টা। নবাব বংশধরদের আশা রাজধানী বা সারাদেশের মানুষের কাছে এই পুকুরের পরিচিতি পৌঁছালে টিকিয়ে রাখানো সম্ভব শত শত বছরের ঐতিহ্য। তাই তারা সকলকে এখানে ঘুরতে আসার আহ্বান জানান।
এআই
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্ট অস্বাভাবিক তাপদাহে রাজধানীর জনজীবন দূর্বিষহ হয়ে পড়েছে। আগুন ঝরা বাতাসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন নারী-শিশু-সাধারণ কর্মজীবী মানুষসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ। এরইমাঝে একদিকে নতুন করে আরো ৭২ ঘন্টার হিট এ্যালার্ট জারির খবরে শঙ্কিত রাজধানীসহ গোটা দেশবাসী।
অপরদিকে, কাঠফাটা উত্তপ্ত রোদ, ভ্যাপসা গরম ও অসহনীয় তাপমাত্রাকে পায়ে ঠেলে ইউনিফর্ম পরে পিচঢালা উত্তপ্ত সড়কে দাঁড়িয়ে নিজেদের উপর অর্পিত দায়িত্ব একাগ্রচিত্তে পালন করছেন ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা।
সোমবার (২২ এপ্রিল) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর গাবতলী, মিরপুর, কল্যানপুর, শ্যামলীসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, তীব্র অসহনীয় গরমে খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ও নগরবাসীর স্বাভাবিক চলাচল নির্বিঘ্ন রাখতে দায়িত্ব পালন করছেন ডিএমপির ট্রাফিক পুলিশ বিভাগের সদস্যরা।
বেলা আনুমানিক ১.৩০ মিনিট। নগরীর অন্যতম ব্যস্ততম সড়ক মিরপুর-১ নম্বর গোল চত্বরে দেখা গেল কাঠফাঁটা রোদে একটি পানির বোতল হাতে সড়কের মাঝখানে দাঁড়িয়ে ট্রাফিক সামলানোর দায়িত্ব পালনকালে প্রচন্ড গরমে ঘেমে জবুথবু হয়ে পড়েছেন একজন সার্জেন্ট। নাম তাঁর মো. সাইদুর রহমান টিপু। মুখ-মন্ডল বেয়ে ঝড়ছে ঘাম। মুখ-মণ্ডলজুড়ে ক্লান্তির ছাপ সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। ব্যস্ততম কয়েকমুখী সড়কের এই চত্বরে যানবাহনের চাপ বেশি থাকায় কয়েক মিনিটের জন্যেও বিশ্রাম নেয়ার জোঁ নেই। পাশেই ছাতা মাথায় আরো কয়েকজন পুলিশ সদস্য দাঁড়িয়ে ট্রাফিক সামলানোর দায়িত্ব পালন করছেন।
তবে এর ফাঁকেই হাতের বোতল থেকে দু'এক ঢোক পানি গিলছেন সার্জেন্ট টিপু। অসহনীয় তাপমাত্রায় সামান্য স্বস্তির লক্ষ্যে সড়কে দাঁড়িয়েই হাতেের বোতল থেকে চোখে-মুখে কয়েক দফা পানি ছিটিয়ে ধুয়ে নিচ্ছিলেন। ঠিক সেসময়ই দৃশ্যটি ধরা পড়ে সময়ের কণ্ঠস্বরের ক্যামেরায়।
এসময় এগিয়ে গিয়ে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে "অস্বস্তিকর দূর্বিষহ গরম ও কাঠফাটা রোদে খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে নিরবচ্ছিন্ন দায়িত্ব পালন করছেন; একটু বিশ্রাম নিয়ে নিলেও তো পারেন" এমন প্রশ্নের উত্তরে নিমিষেই সকল ক্লান্তি পায়ে ঠেলে একগাল হেসে বললেন, আমরা ট্রাফিক পুলিশে চাকরি করি। দায়িত্ব পালনকালে এই অস্বাভাবিক তাপমাত্রা তো স্বাভাবিক ব্যাপার। এর থেকে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হলেও তা নিয়ে ভাববার সুযোগ আমাদের নেই। মানুষকে সেবা দেয়াই পুলিশের কাজ। মহানগরবাসী তথা মানুষকে প্রয়োজনীয় সেবা প্রদান করাই আমাদের মূল কাজ। সেলক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি। বলেই অপর প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাফিক পুলিশ সদস্যের উদ্দেশ্যে হাত উঁচিয়ে সিগনাল ছাড়তে ইশারা দিতে দিতে ফের সড়কে দাঁড়িয়ে গেলেন তিনি।
এদিকে, দূর্বিষহ তাপদাহ ও অসহনীয় ভ্যাপসা গরমে দায়িত্ব পালনকালে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যদের নানা সুবিধা-অসুবিধার বিষয়ে ভাবনার কমতি নেই পুলিশের উর্ধতন মহলেও।
এসময় ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের মনোবল বাড়াতে আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনার নানা ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। এ ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে একদিকে ফোসের্র মনোবল যেমন চাঙা হচ্ছে, অপরদিকে দাবদাহের মধ্যেও ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে নগরবাসী পাচ্ছেন সর্বোত্তম সেবা।
এ বিষয়গুলোকে বিশেষ বিবেচনায় রেখেই গত বৃহস্পতিবার ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান ডিএমপির আটটি ট্রাফিক বিভাগের সকল পুলিশ সদস্যদের মাঝে বিশুদ্ধ খাবার পানি ও খাবার স্যালাইন সরবরাহের উদ্যোগ নেন। এই তীব্রে তাপদাহ যতদিন থাকবে ততদিন পুলিশের এই কার্যক্রম চলবে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে ডিএমপির ট্রাফিক পুলিশের যুগ্ম-কমিশনার মুনিবুর রহমান জানান, এই অসহনীয় গরমে রাস্তায় ডিউটি করা সত্যিই কষ্টকর। এই উপলব্ধি থেকেই ট্রাফিকের সকল পুলিশ সদস্যদের জন্য নিয়মিত বিশুদ্ধ পানি ও খাবার স্যালাইনের সর্বরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এই উদ্যোগ ট্রাফিক পুলিশের সকল সদস্যদের এই তীব্র গরমের মাঝেও দায়িত্ব পালনে আরও উদ্বুদ্ধ করবে বলে যোগ করেন ট্রাফিক পুলিশের এই কর্মকর্তা।
এমআর
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে পৃথক জায়গা থেকে দুই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাদের নাম পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। তবে দুজনে ভবঘুরে ও মাদকাসক্ত। হিট স্ট্রোক অথবা অন্য কোনো অসুস্থতার কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।
রবিবার (২১ এপ্রিল) রাতে পৃথক স্থান থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করে যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়।
যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তাপস মণ্ডল সুরতহাল প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, অজ্ঞাত ব্যক্তির বয়স আনুমানিক ৩০ বছর। যাত্রাবাড়ী দক্ষিণ শেখদি ৫ নম্বর রোড থেকে রাতে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই ব্যক্তি ভবঘুরে ও মাদকাসক্ত ছিল। রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় মাথা ঘুরে হিট স্ট্রোক বা অন্য কোনো অসুস্থতার কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
এদিকে, যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহমুদা রহমান জানান, রাতে যাত্রাবাড়ী জনপদ মোড়ের পশ্চিম খাজা হোটেলের সামনের ফুটপাত থেকে উদ্ধার করা হয় অজ্ঞাত আরেক ব্যক্তির মরদেহ। তাঁর বয়স হবে আনুমানিক (৩০) বছর। তিনিও ভাবঘুরে ও মাদকাসক্ত ছিল। অসুস্থতার কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের পরিচয় শনাক্তের জন্য ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংগ্রহ করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পরেই মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।
এআই
রাজধানীর গুলিস্থানের গোলাপ শাহ মাজার সংলগ্ন রাস্তা থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। যার বয়স আনুমানিক ৪০ বছর।
শনিবার (২০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ওই মরদেহ উদ্ধার করে শাহবাগ থানা-পুলিশ। পরে তা ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়।
শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আরিফ নেওয়াজ জানান, সকালে খবর পেয়ে গোলাপ শাহ মাজার সংলগ্ন রাস্তা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। ওই ব্যক্তির কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি।
মাজার সংশ্লিষ্টদের বরাত দিয়ে এসআই আরও জানান, ওই ব্যক্তি ভবঘুরে মাদকসেবী ছিল। মাজার এলাকাতেই থাকত। ধারণা করা হচ্ছে, অসুস্থ অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে। আঙুলের ছাপের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্তে সিআইডি ক্রাইম সিন ইউনিটকে খবর দেওয়া হয়েছে।
এআই
ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে মোবাইল ফোন কিনে না দেওয়ায় বাবা-মায়ের উপর অভিমান করে অহিদুজ্জামান অপু (১৮) নামের এক যুবক আত্মহত্যা করেছে। সে উপজেলার জোড়াদহ ইউনিয়নের ভেড়াখালী গ্রামের বান্টু মালিতার ছেলে। অপু পেশায় একজন কলেজছাত্র।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) অপু তার বাবা-মায়ের নিকট একটি মোবাইল ফোন চান। ‘দিনে আয় দিনে ব্যয়’ এর মতো সংসার তাদের, এমতাবস্থায় বাবা-মা ফোন কিনে দিতে না পারায় সে বৃহস্পতিবার রাতে নিজ ঘরে কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করে।
নিহত অপুর চাচা বেল্টু মালিতা বলেন, অপু কিছুদিন পূর্বে তার বাবা-মায়ের কাছে মোবাইল ফোন চান। সংসারে অভাব-অনটন থাকায় তাকে ঈদের পর কিনে দেওয়ার প্রস্তুতি দেন তার বাবা-মা। কিছুদিন পর ফোন কিনে দেওয়ার জন্য বাড়িতে আবারো চাপ দিতে শুরু করে অপু। মোবাইল ফোন কিনে না দেওয়ার রাগে ও ক্ষোভে নিজ ঘরের কক্ষে কীটনাশক মার্শাল খেয়ে তার চাচাকে জানান অপু। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য-কমপ্লেক্স হাসপাতালে নিয়ে যায়। এসময় কর্তব্যরত ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
হরিণাকুণ্ডু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউর রহমান জানায়, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঝিনাইদহ মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে নিহতের পক্ষ থেকে থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছেন।
এআই
ঝিনাইদহের মহেশপুরে স্ত্রী রেহেনা খাতুন হত্যার দায়ে স্বামী রাশেদুল ইসলামকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে অতিরিক্ত দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো. আব্দুল মতিন এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাশেদুল ইসলাম মহেশপুর উপজেলার জুলুলী গ্রামের আনিচ উদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২১ বছর আগে রাশেদুলের সঙ্গে রেহেনা খাতুনের বিয়ে হয়। রাশেদুল দ্বিতীয় বিয়ের পর তার প্রথম স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। এরপর ২০১৮ সালের ২৩ জুলাই বাড়ির পাশের কোদলা নদীতে ডুবিয়ে রেহেনাকে হত্যা করে। এ ঘটনায় তার পিতা মতলেব আলী বাদী হয়ে মহেশপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে।
পুলিশ আসামিকে গ্রেফতার করলে সে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়। মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। এরপর দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আদালত আসামি রাশেদুলকে যাবজ্জীবন কারদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
এ বিষয়ে পিপি বজলুর রশীদ জানান, আমরা এ রায়ে খুশি। বিচারক যে রায় প্রদান করেছেন তাতে সামজে থেকে এমন ঘটনা কমে আসবে বা নারী নির্যাতন কমবে।
এআই
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল জেলা শহর যশোরে বইছে ৪২ বা তদূর্ধ্ব ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। তীব্র গরমের রেশ পড়েছে জেলার ব্যস্ততম বন্দর নগরী বেনাপোলে। অতি তীব্র তাপপ্রবাহে জনশূন্য হয়ে পড়েছে বন্দরসহ বেনাপোল এবং শার্শার রাস্তাঘাট। তীব্র তাপদাহের কারণে জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। মানুষ একটু স্বস্তির জন্যে হাহাকার করছেন।
রাস্তাঘাটে অতিপ্রয়োজন ছাড়া কোনো মানুষ বের হচ্ছেন না। শ্রমজীবী মানুষের অবস্থা খুবই করুণ। রাস্তায় রিকশা-ইজিবাইক, ঠেলাগাড়ি, ভ্যানরিকশা নিয়ে যারা বের হয়েছেন, তারা ঘেমেনেয়ে একাকার হয়ে উঠেছেন। রাস্তার তাপে যেনো পুড়ে যাচ্ছেন ফুটপাথের ব্যবসায়ীরা। সামান্য পরিশ্রমের পরই বিশ্রাম নিতে বাধ্য হচ্ছেন এসব পেশার মানুষ। এতে তাদের রোজগারও যাচ্ছে কমে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বেলা ১২টার দিকে বেনাপোল-যশোর মহাসড়কের বেনাপোল ও শার্শায় এ দৃশ্য চোখে পড়ে। যশোর বিমানবন্দর মতিউর রহমান ঘাঁটিস্থ আবহাওয়া অফিস সূত্র জানা গেছে, গত কয়েকদিনে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ থেকে ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে বলে আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে।
শুক্র ও শনিবার ব্যতীত প্রতিদিনই তীব্র যানজট লেগে থাকে বেনাপোল বন্দরসহ বেনাপোল শহরজুড়ে। অথচ তীব্র তাপদাহের কারনে জনশূন্য হয়ে পড়েছে রাস্তাঘাট। আন্তর্জাতিক এ সড়ক দিয়ে মানুষজন বিভিন্ন অফিস-আদালত, হাসপাতাল ও স্কুল-কলেজে যাতায়াত করে। ফলে মানুষের উপস্থিতি এবং যানবাহনের চলাচল সব থেকে বেশি থাকে সড়কটিতে।
এদিকে, গত এক সপ্তাহ যাবৎ বেনাপোলে প্রখর রোদ ও গরম অনুভূত হচ্ছে। এ অবস্থায় কাজে বেরিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। তীব্র তাপদাহে জনশূন্য হয়ে পড়েছে পুরো সড়কটি। মানুষের উপস্থিতি যেমন কম, তেমনি যানবাহনের উপস্থিতিও নগণ্য। সড়কে নেই যানবাহনের উপস্থিতি। দু-একটা ইজিবাইক দেখা গেলেও যাত্রীর অপেক্ষায় মোড়ে মোড়ে বসে থাকতে দেখা গেছে চালকদেরকে।
বেনাপোল সোনালী ব্যাংক মোড়, রেলস্টেশন মোড়, চেকপোস্ট সাদীপুর মোড়, চালপট্রি মোড়ের রাস্তার পাশে যাত্রীর অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা ইজিবাইক চালকরা জানান, সকালে ২/১টি ভাড়া পাওয়া গেলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে বেনাপোল শহর পুরো ফাঁকা হয়ে গেছে। এতো গরমে মানুষ বের হবে কী করে ? পেটের দায়ে বের হয়ে যাত্রী পাচ্ছি না। ভাড়ায় ইজিবাইক চালাই, মহাজনকে দেওয়ার মতো টাকা এখনও ওঠেনি। নিজের জন্যে তো দূরের কথা, পরিবারের জন্য খাদ্য-খাবার কেনার টাকা এখনও জোগাড় হয়নি।
বেনাপোলের ইসলামী ব্যাংকের নীচে পথচারী ইকবাল হোসেন বলেন, বাসায় অসুস্থ রোগী আছে, তার জন্য ওষুধ কিনতে বের হয়েছি। রাস্তায় মোটরসাইকেল রেখে দুই মিনিটের জন্য ফার্মেসিতে এসেছি। এখন মোটরসাইকেলের ওপর বসা যাচ্ছে না। রোদে আগুন হয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার বেনাপোলের চেকপোস্টের সড়কের একটি গাছের নীচে দাঁড়িয়ে ছিলেন ভ্যান চালক আলতাফ হোসেন। এদিন সকাল আটটায় তিনি বাড়ি থেকে ভ্যান নিয়ে বের হন। কিন্তু গরমে চালাতে পারছেন না। তিনি বলেন, রোদের দাপটে বন্দর এলাকার লোকজন বাইরে কম বের হচ্ছে। তাই আয় রোজগার কমেছে। প্রতিদিন ভ্যান মালিককে দেড়শ‘ টাকা, নিজের দুপুরের খাবার, চা নাশতার খরচ মিলিয়ে আগে ৩৫০ টাকা আয় করতে হবে। এরপর সংসার খরচের হিসাব। এই গরমে না পেরে ভ্যান নিয়ে ছায়ায় বসে আছি।
বাজারের কাঁচাবাজারেও ক্রেতাদের উপস্থিতি অনেক কম দেখা গেছে। ভবারবেড় গ্রামের বাসিন্দা রেজাউল ইসলাম বলেন, বাজার করতে হবে এজন্য বের হয়েছি। অন্যথায় এই গরমে বাড়ি থেকে বের হতাম না। রোদে শরীর যেন পুড়ে যাচ্ছে।
শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক লঙ্কীন্দার কুমার দে বলেন, তীব্র তাপপ্রবাহে হিট স্ট্রোক এড়াতে সবাইকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ সময়ে ডায়রিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জা, সর্দি-কাশি, পক্স, হিটস্ট্রোক, স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক ইত্যাদি হতে পারে। প্রচন্ড গরম থেকে মুক্তি পেতে কেউ যেন ডিপ ফ্রিজের পানি পান না করেন। এ সময় প্রচুর পানি, ডাবের পানি, দেশি ফলমূল খাওয়া প্রয়োজন। খুব প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হতে বলা হচ্ছে। এ ছাড়া বেশি, বেশি খাবার পানি পান ও পাতলা সুতি কাপর পরার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
পিএম
জন্ম থেকে দুটি হাত না থাকলেও জীবন সংগ্রামে থেমে নেই ঝিনাইদহের শিশু হাসান আলী (৯)। পা দিয়েই দৈনন্দিন জীবনের প্রায় সব কাজ করে সে। তবে তার ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত হাসানের পরিবারের সদস্যরা।
জানা গেছে, জেলার হরিণাকুণ্ডু পৌরসভার কাচারি পাড়ার সরকারি জায়গায় একটি জরাজীর্ণ বাড়িতে থাকে হাসান আলীর বাবা সোহেল রানাসহ তার পরিবার। জন্ম থেকে শিশু হাসানের দুই হাত নেই। তারপরও দমে যায়নি সে। অন্যান্য শিশুদের মতোই রয়েছে তার চঞ্চলতা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির পাশেই শিশু হাসান তার বন্ধু ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে খেলা করছে। হাত না থাকলেও খেলতে পারে গাদন, ফুটবল, হাডুডুসহ বিভিন্ন খেলা। লেখাপড়ায়ও পিছিয়ে নেই সে। স্থানীয় একটি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে হাসান। এমনকি প্রতিবন্ধী শিশু হাসানের মধ্যে রয়েছে শৈশবের সব দুরন্তপনা। অনেক কাজ নিজে করতে না পারলেও চেষ্টার কোনো কমতি রাখেন না। আর যে কাজগুলো পারে না সেই কাজে বেশিরভাগ সহযোগিতা করে তার মা। নিজে নিজেই পা দিয়ে করতে পারে গোসল, খেতে পারে ভাত। দুটি পা তার সব ধরনের কাজের সঙ্গী। তবে এই শিশুটির এমন কাজ দেখে বিস্মিত হওয়ার পাশাপাশি যে কারও হৃদয়ে নাড়া দেয়।
একটি ঘর দাবি করে প্রতিবেশী ও স্বজনরা জানান, হাসানের বাবা একজন দিনমজুর, ভাড়ায়চালিত অটোভ্যান চালিয়ে সংসার চলে তার। নেই থাকার তেমন কোনো ঘর। নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মতো অবস্থা তার।
হাসান আলী জানান, আমার দুটো হাত নেই, আমি পা দিয়ে ভাত খাই। গোসল করতে পারি, লেখাপড়া করতে পারি। সব ধরনের খেলা করতে পারি, আমি বড় হয়ে স্যার হতে চাই।
হাসানের মা খালেদা খাতুন জানান, আমার সংসারে রয়েছে দুই ছেলে, এক মেয়ে, তার মধ্যে হাসানের দুই হাত নেই। আমরা ভূমিহীন, আমাদের কোনো ঘরবাড়ি নেই, পরের জায়গায় থাকি, শীতের সময় কুয়াশার কারণে অনেক কষ্ট হয়। আবার গরম আসলে রোদ বৃষ্টিতে ভিজে-পুড়ে বসবাস করতে হয়। আমার হাসান প্রতিবন্ধী স্কুলে পড়ে। প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণিতে সে ১ম। সমাজে অনেক বৃত্তবান লোক আছে কেউ যদি আমাদের একটা ঘর করে দিতেন তাহলে ভালো হতো!।
হরিণাকুণ্ডু পৌরসভার মেয়র ফারুক হোসেন জানান, আমার পৌরসভার ভেতরে তাদের বসবাস। তারা খুবই মানবিক জীবন যাপন করে। তারা দুস্থ অসহায় মানুষ, হাসানের বাবাও একজন প্রতিবন্ধী মানুষ। পৌরসভা থেকে প্রতিবন্ধী ভাতা, চিকিৎসাসহ পরিবারকে সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
এআইবৃষ্টির আশায় সারাদেশে নামাজ, দোয়া হচ্ছে। অসহনীয় গরমে সারাদেশে জনজীবন অতিষ্ঠ। গরমের তীব্রতা কমাতে দেশব্যাপী বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তি উদ্যোগে চলছে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি। তবে এর মধ্যেই কুষ্টিয়ায় প্রায় ৩ হাজার গাছ কাটার প্রক্রিয়া শুরু করেছে বন বিভাগ।
ইতিমেধ্য টেন্ডার (দরপত্র) উন্মুক্তকরণসহ গাছে গাছে করা হয়েছে নাম্বারিং। বিধি মোতাবেক গাছ কাটার আয়োজন চলছে বলে বন বিভাগের কর্মকর্তরা দাবি করলেও এতে স্থানীয়দের রয়েছে জোর আপত্তি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুষ্টিয়ার কুমারখালীর লাহিনীপাড়া থেকে সান্দিয়ারা পর্যন্ত পাউবোর জিকে খাল ঘেঁষে প্রায় ২০ কিলোমিটার পাকা সড়ক রয়েছে। ১০ বছর আগে সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির আওতায় সমিতির মাধ্যমে কয়েক হাজার ফলজ ও বনজ গাছের চারা রোপণ করে বনবিভাগ।
এসব গাছের দশ বছর পূর্ণ হওয়ায় প্রায় ৩ হাজার গাছ কাটার জন্য উপজেলা পরিবেশ উন্নয়ন কমিটির সুপারিশ ও জেলা পরিবেশ উন্নয়ন কমিটির অনুমোদনক্রমে গত ৩ এপ্রিল দরপত্র আহ্বান করে বনবিভাগ। দরপত্রে ২১৭টি লটের মধ্যে ১৪৫টি সরকার নির্ধারিত রেটে আওতায় পড়েছে। প্রতিটি লটে গাছ রয়েছে ১৫০/২০০টি। বাকি লটগুলো নির্ধারিত রেটের নিচে দর দেওয়ায় সেগুলো পুনঃদরপত্র আহ্বান করা হবে।
এর আগে ২০২৩ সালে যদুবয়রা থেকে সান্দিয়ারা পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার সড়কের আনুমানিক প্রায় ১০ হাজার গাছ কাটা হয়েছে। চলতি বছরেও ওই সড়কের লাহিনীপাড়া থেকে বাঁধবাজার পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার সড়কের প্রায় ৩ হাজার গাছ কাটা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, জিকে খালের লাহিনীপাড়া এলাকায় সড়কের ধারে আর সবুজের নয়নাভিরাম দৃশ্য আর নেই। কাটা গাছগুলোর গোড়া ও কিছু অংশবিশেষ পড়ে আছে। চাঁপড়া বোর্ড অফিস এলাকার খালের পাকা ও কাঁচা সড়কের দুপাশে মেহগনি, বাবলা, কড়ইসহ নানান জাতের কয়েক হাজার বড় বড় গাছ রয়েছে। সেগুলোর গায়ে নম্বর বসানো।
এদিকে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও সড়কের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য গাছগুলো না কেটে রক্ষার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় জনগণ, জনপ্রতিনিধি ও পথচারীরা। তাদের দাবি, নির্বিচারে গাছ কাটার কারণেই প্রকৃতিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। গাছপালা কমে যাওয়ার কারণেই বৃষ্টিপাত হচ্ছে না, তীব্র তাপদাহ চলছে। তিন মাস আগেও সড়কের ধারে গাছগুলো ছিল চোখের সৌন্দর্য। বড় পুকুরের ওখানে ছায়াতলে মানুষ বিশ্রাম নিত। আরামে চলাচল করত পথচারীরা। এখন সেখানে ধু-ধু মরুভূমি, তীব্র দাবদাহ। অল্প কিছু টাকার জন্য সরকার যেন আর গাছ না কাটে।
এ বিষয়ে স্থানীয় চাপড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনামুল হক মঞ্জু বলেন, আমি গাছ কাটার সম্পূর্ণ বিপক্ষে। তবে যথাযথ বিধিমালা অনুসরণ করেই গাছ কাটার আয়োজন চলছে বলে বন কর্মকর্তারা জানিয়েছে।
লালন একাডেমির সাবেক নির্বাচিত সদস্য ও সামাজিক সংগঠনের নেতা মো. আলতাফ হোসেন মোল্লা জানান, প্রচণ্ড তাপদাহের সংকটময় এই মূহুর্তে গাছ কাটা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাসহ বিশুদ্ধ বাতাস-সুশীতল ছায়া দানকারি গাছগুলো এই মুহুর্তে না কাটতে তিনি জোর দাবি জানান।
কুষ্টিয়া সামাজিক বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা কাশ্যপী বিকাশ চন্দ জানান, সরাকারি বিধমালা অনুসরণ করেই টেন্ডারের মাধ্যমে গাছ কাটার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। এতে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি বলে বলে তার দাবি। এছাড়া সরকারি রাজস্ব আদায়ে টার্গেটের ১৭৫ কোটির টাকার মধ্যে ৯০ কোটি সামাজিক বন বিভাগের আওতায় গাছ বিক্রিত টাকায় অর্জিত হয়েছে বলে তিনি জানান।
এফএস
তীব্র গরমে হাঁসফাঁস লক্ষ্মীপুরের জনজীবন। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে নিন্ম আয়ের সাধারণ মানুষ। অতি গরমে হাসপাতাল গুলোতে বেড়েছে রোগীর সংখ্যা। সর্দি-জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে ধারণ ক্ষমতার চেয়েও দ্বিগুণ রোগি। যেন তিল ধারণের ঠাঁই নেই। শয্যা সংকটের কারণে হাসপতালের মেঝেতে ও বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছে রোগীরা। তার ওপর নানান অব্যবস্থাপনায় বেড়েছে ভোগান্তি।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) জেলা সদর হাসপাতালে ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। বিভিন্ন রোগ নিয়ে আসা রোগীরা হাসপাতালে এসেও দুর্ভোগের শেষ নেই। রোগীর তুলনায় চিকিৎসকের অভাব। হাসপাতালের সব জায়গায় নেই ফ্যানের ব্যবস্থা। এতে করে আরো বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে রোগীদের।
লক্ষ্মীপুর পৌর ১১নং ওয়ার্ড থেকে জ্বর, ঠান্ডা নিয়ে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা যুবক সাইফুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিনের গরমের কারনে জ্বর -ঠান্ডায় অসুস্থ হয়ে পড়ি। সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছি। আগের থেকেও এখন কিছুটা ভালোর আছি। পৌর ২নং ওয়ার্ড থেকে সন্তানকে নিয়ে আসা কাশেম বলেন, হাসপাতালে রোগির চাপ বেশি। ঠান্ডা জনিত সমস্যাই বেশিরভাগ রোগির।
সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ অরুপ পাল জানান, প্রতিদিনই জ্বর-ঠান্ডা, ডায়রিয়া রোগি ভর্তি হচ্ছে। প্রতিদিন শিশু ওয়ার্ডে ৪০-৫০ জন, মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে ৪৫-৫০ জন ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ৪০-৫০ জন চিকিৎসা নিচ্ছে। সপ্তাহে গড়ে ১০০০ জন সর্দি-জ্বর, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আমাদের ১০০ শয্যা হাসপাতাল। প্রতিদিন রোগি ভর্তি থাকে ৩৫০-৪০০জন। অপর্যাপ্ত লোকবল নিয়ে আমাদের চিকিৎসা সেবা দিতে বেগ পেতে হয়। তারপরও আমরা চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি।
তীব্র গরমে রোগ থেকে বাঁচতে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়ে বলেন, রোদে না যাওয়া, বাইরে ঘুরাফেরা না করা, প্রচুর পরিমাণ পানি পান করা ও প্রস্রাবের পরিমাণ কমে গেলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। বয়স্করা শিশু, হার্টের রোগী, ডায়বেটিসের রোগীদের গরমে বাইরে যাওয়া একেবারেই নিষেধ কারণ হিটস্ট্রোক যেন না হয়। বাইরের খাবার যেন আমরা না খাই। হটাৎ বৃষ্টি এলে ভিজবো এরকমটা যেন না হয় এতে জ্বর চলে আসে। চেষ্টা করবো ছায়াযুক্ত স্থানে থাকতে, পানি বেশি খেতে। বাইরে যেতেই হলে ছাতা নিয়ে যাব অথবা মাথার উপরে একটা সুতি জামা কাপড় রাখবো।
সিভিল সার্জন ডা: আহমেদ কবির বলেন, হিটস্ট্রোক জনিত রোগির জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি। এছাড়া গরমের কারনে অসুস্থ হওয়া রোগিদেরও চিকিৎসা চলছে। আমাদের পর্যাপ্ত স্যালাইন ও ঔষুধ পত্র রয়েছে। বেড সংখ্যা কম হলেও আমরা অতিরিক্ত রোগিদের ফ্লোরে রেখে চিকিৎসা দিচ্ছি।
এআইকুমিল্লায় মেসার্স ড্রিংকব্লু বেভারেজকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বুধবার (২৪ এপ্রিল) কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার বিসিক শিল্পনগরীতে বিএসটিআই ও কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে অভিযান চালিয়ে এ জরিমানা করা হয়।
বিএসটিআই কুমিল্লার উপপরিচালক (সিএম) কে এম হানিফ বলেন, বিসিক শিল্পনগরীর মেসার্স ড্রিংকব্লু বেভারেজ নিবন্ধন সনদ ছাড়া ‘ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক’ পণ্য বানিয়ে বাজারজাত করছিল। যা অপরাধ। যে কারণে তাদের ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জনস্বার্থে এই ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সিনিয়র সহকারী কমিশনার ফারহানা নাসরিনের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হয়।
প্রসিকিউটর হিসেবে ছিলেন, বিএসটিআইয়ের পরিদর্শক (মেট্রোলজি) আরিফ উদ্দিন প্রিয় এবং ফিল্ড অফিসার (সিএম) ইকবাল আহাম্মদ।
এআইলক্ষ্মীপুরের রায়পুরে পৌর মেয়র গিয়াস উদ্দিন রুবেল ভাটের বিরুদ্ধে ডাক্তার মঞ্জুরুল আলম নামে এক মুক্তিযোদ্ধা চাঁদাবাজির মামলার প্রতিবাদে ঝাড়ু মিছিল করেছে তার অনুসারীরা।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে রায়পুর শহরে আমরা পৌরবাসীর ব্যানারে এ ঝাড়ু মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিল শেষে মঞ্জুরুল আলমের কুশপুত্তলিকা দাহ করে তারা।
মিছিলটি রায়পুর পৌর শহরের মুড়িহাটা থেকে শুরু করে রায়পুর আলিয়া মাদ্রাসা সড়ক, রায়পুর সিনেমা হল সড়ক হয়ে রায়পুর থানার পূর্বপাশ্বে প্রাইম ব্যাংকের সামনে এসে জড়ো হয়। এরপর মঞ্জুরুল আলমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে তার কুশপুত্তলিকায় আগুন জ্বালিয়ে দেয় মেয়রের অনুসারীরা।
পরে পুড়তে থাকা কুশপুত্তলিকার সামনে দাঁড়িয়ে মেয়র গিয়াসউদ্দিন রুবেল ভাটের পক্ষে বক্তব্য দেন পৌরসভার লাইসেন্স পরিদর্শক পীরজাদা আরমান হোসেন, রায়পুর পৌরসভার কর্মচারী মহিউদ্দিন বিপু, রায়পুর উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা তানভীর হায়দার চৌধুরী রিংকু। এসময় উপস্থিত ছিলেন পৌর কাউন্সিলর রুবেল প্রধানিয়াসহ পৌরসভার কর্মচারী ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীবৃন্দ।
উল্লেখ্য, গত রোববার (২১ এপ্রিল) মেয়র গিয়াসউদ্দিন রুবেল ভাটকে প্রধান আসামি করে ৫ জন পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীর নামে চাঁদা দাবির অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন মুক্তিযোদ্ধা মঞ্জরুল আলম।
মিয়ানমারে চলমান অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সদস্যসহ ২৮৮ জনকে ফেরত পাঠিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ভোর ৬টার দিকে কক্সবাজারে বিআইডাব্লিউটিএ ঘাট থেকে তাদের ফেরত পাঠানো হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম।
বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী বিজিপি সদস্য, চারজন সেনা সদস্য, ইমিগ্রেশন সদস্যসহ মোট ২৮৮ জনকে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করেছে বিজিবি।
শরীফুল ইসলাম বলেন, আজ ভোরে বিজিপি সদস্যদের হস্তান্তর উপলক্ষ্যে কক্সবাজারে বিআইডাব্লিউটিএ ঘাট কাছে বিজিবির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের প্রতিনিধি দলের বৈঠক হয়। পরে কোস্টগার্ডদের একটি জাহাজ মিয়ানমারের জাহাজ চিন ডুইনের উদ্দেশ্যে কক্সবাজারে বিআইডাব্লিউটিএ ঘাট ত্যাগ করে।
এর আগে জাহাজে করে আগত মিয়ানমারের প্রতিনিধিরা বিজিবির নাইক্ষ্যংছড়ি ক্যাম্পে অবস্থানরত বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের বিজিপি ও অন্যান্য সদস্যদের দ্রুত শনাক্তকরণ ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টেশন সম্পন্ন করে। সেখানে বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমার দূতাবাস ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে জাহাজে করে আগত বিজিপি সদস্যদের কাছে আশ্রয় প্রাপ্তদের হস্তান্তর করা হয়।
এমআর
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার কাজিরগাঁও রেলপথে চট্টগ্রামগামী সাগরিকা ট্রেনের নিচে শিশুকে নিয়ে ঝাঁপ দিয়ে মায়ের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিকালে ফেসবুকে পোস্ট দেয়ার ২০ মিনিটের মধ্যে আত্মহত্যার খবর পান স্বজনরা। রেলওয়ে থানা পুলিশের ইনচার্জ মাসুদ আলম ঘটনাস্থল থেকে মা ও সন্তানের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
নিহত তাহমিনা আক্তার হাজীগঞ্জের ধড্ডা গ্রামের দেওয়ানজি বাড়ির মো. রফিকুল ইসলামের মেয়ে। ২০১৯ সালে একই উপজেলার সন্না গ্রামের নুরুল ইসলাম হাওলাদারের ছেলে মো. মাসুদুজ্জামান হাওলাদারের সঙ্গে তাহমিনার সামাজিকভাবে বিয়ে হয়। সম্প্রতি পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাঁদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। তাহমিনার সঙ্গে মারা যাওয়া শিশুসন্তানের নাম আবদুর রহমান।তাহমিনার মুনতাহা নামে পাঁচ বছর বয়সী আরেকটি মেয়ে আছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেওয়ার আগে নিজের ফেসবুক টাইমলাইনে একটি পোস্ট করেন তাহমিনা। পোস্টে তিনি তাঁর মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নন ও মেয়েকে দেখে রাখার অনুরোধ করে গেছেন। এর আগে গত ২৮ মার্চ স্বামী ও তাঁর স্বজনদের বিরুদ্ধে হাজীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন তাহমিনা।
লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে উঠিয়ে না নেওয়ায় বাবার বাড়িতে থাকতেন তাহমিনা। পরে বাবার কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা ধার নিয়ে স্বামী মাসুদুজ্জামানকে কুয়েতে পাঠান। স্বামী প্রবাসে থাকতে পারিবারিক বিষয় নিয়ে মুঠোফোনে তাহমিনার বাগ্বিতণ্ডা হয়। তখন তাঁর স্বামী তাঁকে বাবার বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র থাকতে বলেন। স্বামীর কথামতো তিনি হাজীগঞ্জের মকিবাদ চৌধুরীপাড়া এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে দুই সন্তানকে নিয়ে বসবাস শুরু করেন। তখন স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন মুঠোফোনে তাঁকে নানা অপবাদ দিয়ে গালমন্দ করেন এবং স্বামী ভরণপোষণ দিতে অস্বীকৃতি জানান। একপর্যায়ে প্রবাসে থাকা অবস্থায় স্বামীর সঙ্গে তাহমিনার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।
সূত্র জানায়, ছাড়াছাড়ির পর গত ২৮ মার্চ হাজীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন তাহমিনা। এর মধ্যে ১৮ এপ্রিল তাহমিনার সাবেক স্বামী মাসুদুজ্জামান হাওলাদার দেশে ফিরে আসেন। তিনি অভিযোগ তুলে নিতে মুঠোফোনে তাহমিনাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন এবং আবার স্বামীর সংসারে ফিরে যেতে বলেন। অন্যথায় স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন।
থানায় অভিযোগ থাকায় প্রবাস থেকে ফেরার পথে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন অভিযুক্ত মাসুদুজ্জামান হাওলাদার। অভিযোগের ব্যাপারে তাঁর মুঠোফোন নম্বরে ফোন করে বন্ধ পাওয়া যায়।
পুলিশ জানায়, বিষয়টি সুরাহার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যসহ অভিযুক্ত মাসুদুজ্জামানের পরিবারের সঙ্গে বসার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাঁরা রাজি হননি। এক সপ্তাহ আগে ওই ব্যক্তি দেশে আসেন। কিন্তু বাড়িতে না থেকে তিনি বিভিন্ন জায়গায় পালিয়ে বেড়ান। পরে জানতে পেরেছেন, ওই ব্যক্তি আবার প্রবাসে চলে গেছেন।
মাদারীপুরের শিবচরে হত দরিদ্রদের মাঝে বিনামূল্যে গাভী বিতরন ও গাভী পালন প্রশিক্ষন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে স্থানীয় ভিলেজ ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (ভিডিএস) এর উদ্যোগে বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে উপজেলার বাঁশকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সে একর্মসূচী পালন করা হয়।
ভিডিএস এর পরিচালক এবিএম মাহবুব হোসেন বাদলের পরিচালনায় ও বাঁশকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান খোকনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের ভেটেরিনারি সার্জন ডা: গোলাম মোস্তফা।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, শিবচর উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো: বেল্লাল হোসেন, শিবচর উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা শাহ আলম ও বাঁশকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নুর মোহাম্মদ মল্লিক।
জানা যায়, ভিলেজ ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (ভিডি এস) একটি স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। বিগত ১৯৮৫ সন থেকে মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে স্বাস্থ্য সেবা, স্যানিটেশন, নারীর ক্ষমতায়নসহ আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচী নিয়ে সফলতার সাথে কাজ কওে আসছে।তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে বাঁশকান্দি ইউনিয়নের ৫টি হতদরিদ্র পরিবারেরমধ্যে ৫টি গাভীবিতরন ও উপকার ভোগীদেও গাভী পালন প্রশিক্ষন অনুষ্ঠিত দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, বাঁশকান্দি ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড সদস্য মো: গোলাম রাসেল, ভিডিএস এর নির্বাহী কমিটির সদস্য আলমগীর হাওলাদার, শাহীন শাহ,মো: মহিউদ্দিন সহ স্থানীয় হাস মুরগীর খামারী, কৃষক ও অনন্যরা।
এআই
শরীয়তপুরে বৃষ্টির জন্য সালাতুল ইসতিসকার নামাজ আদায় করেন ডামুড্যা উপজের শত শত মুসল্লী। দেশে চলমান প্রচন্ড তাপদাহ থেকে বাঁচতে রহমতের বৃষ্টির জন্য এ সালাত আদায় করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকাল ১০টায় সরকারি ডামুড্যা মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এই নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
নামাজে ইমামতি করেন খলিলুর রহমান ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার সাবেক ভাইসপ্রিন্সিপাল ও বিশিষ্ট ইসলামি আলোচক মাওলানা আব্দুল বাতেন শরীয়তপুরী।
বৈশাখের তীব্র গরমকে মাথায় নিয়ে শত শত মুসল্লিরা এ নামজে অংশগ্রহন করেন। নামাজ শেষে মহান আল্লাহর কাছে দু'হাত তুলে প্রার্থনা করে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন মুসল্লিগন।
ডামুড্যা হামিদিয়া কামিল মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলান জহিরুল ইসলাম বলেন, আমরা এই তাপদাহ থেকে মুক্তি পেতে এলাকার সকল মুসল্লিদের সাথে নিয়ে মহান আল্লাহর কাছে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করে এই নামাজ আদায় করেছি।
দেশ জুড়ে কয়েক দিনের প্রচন্ড তাপদহনে পুড়ছে মানুষসহ সকল জীব। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সেই সাথে জারি করা হয়েছে হিটএলার্ট। দেশের বিভিন্ন স্থান সহ শরীয়তপুরেও হিটস্ট্রোকে মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। তাই এ তাপদাহ থেকে মুক্তি পেতে একটু বৃষ্টির জন্য আল্লাহর নিকট বিশেষ নামাজ আদায় করা হয়।
নামাজ শেষে অনাবৃষ্টি ও গরম থেকে মুক্তির জন্য মহান আল্লাহর রহমত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
এআই
তীব্র দাবদাহ ও কাঠ ফাটা রোদে রাস্তার মোড়ে মাথায় হাত দিয়ে বসা এক রিকশা চালক। শরিল থেকে টপটপ করে ঘাম পড়ছে। বার বার মাথার ঘাম গামছা দিয়ে মুছবার চেষ্টা করছেন।৷ গরমের কারণে রাস্তায় নেই তেমন মানুষ। কিন্তু রিকশার চালক গোলাপের মাথায় চিন্তার ভাজ। একদিকে রিকশার ভাড়ার চাপ আরেকদিকে সংসার চালানো। সবকিছু চিন্তা তাকে ঘিরে ধরেছে। দিনটা পার হলেই রিকশার ভাড়া দিতে হবে তিনশো টাকা৷ সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে দুপুর একটা পর্যন্ত তার উপার্জন মোট আশি টাকা। রাতে রিকশার মহাজনকে যেভাবেই হউক টাকা দিতেই হবে। চাই ইনকাম হউক বা নাই হউক। এ প্রতিবেদকের সাথে কথা বলতে গিয়ে বার বার কেঁদে ফেলেন তিনি।
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার পৌর বাজারে দেখা মিলেছে এমনি এক অসহায় দরিদ্র রিকশার চালকের। তার নাম গোলাপ মিয়া (৪০)। পাশ্ববর্তী নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার কৃষ্বপুর ইউপির পূর্ব বীরগাঁও গ্রামের মাঝি বাড়ির বাসিন্দা তিনি।
এলাকাবাসী ও রিকশার চালকের সাথে কথা বলে জানা যায়, স্ত্রী দুই মেয়ে ও দুই ছেলেকে নিয়ে ছয় সদস্যের সংসার গোলাপ মিয়ার। মেয়ে এবার এইচএসসি পরিক্ষার্থী। বাকিরাও স্কুলে লেখাপড়া করছে। ছেলে মেয়েরা সবাই মেধাবী। লেখাপড়া করতে তারা খুবই আগ্রহী। তীব্র অভাব অনটনে মানবেতর জীবনযাপন করছেন৷
এলাকাবাসী জানান, গোলাপ খুবই সহজ সরল ও পরিশ্রমী মানুষ। নিয়মিত নামাজ পড়েন। নিজস্ব থাকার কোন যায়গা নাই। আরেকজনের যায়গায় থাকে পরিবার নিয়ে। এলাকাবাসী মাঝে মধ্যে তাদের সহযোগিতা করেন। তাদের ছেলে মেয়েরা ভালো পড়াশোনায়৷ কিন্তু অভাবের কারণে খাবার জোটানো কঠিন। আবার লেখা পড়ার খরচ তাদের জন্য যুদ্ধ করার মতো কষ্ট হচ্ছে। তাঁর নিজস্ব একটা গাড়ি হলে পরিবার নিয়ে উপার্জন করে চলতে পারতো।
রিকশা চালক গোলাপ মিয়া বলেন, সংসার নিয়ে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করছ।৷ ভাত জোটানো যেখানে দায় সেখানে লেখাপড়া কিভাবে করাবো বলেন। তবুও সন্তানের মুখের দিকে তাকালে মনডা মানে না আর৷ তাদের আবদার রাখতে পারিনা ।
তিনি আরো জানান, একটা আনলে আরেকটা বাকি থাকে। আমার নিজস্ব একটা রিকশা ছিলো পায়ে চালানোর। ২৬ বছর আগে চিকিৎসার খরচ আর তীব্র অভাবে বিক্রি করেছিলাম। পরে আর কিনার সাধ্য হয়নি। একটি অটোরিকশা হলে সংসারটা চালাতে পারতাম। বাড়িটাও ঝুপড়ি ঘর, বৃষ্টি আসলেই ভিজতে হয়। এভাবেই চলছি।
পিএম
শরীয়তপুরে তাপমাত্রা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) শরীয়তপুরের তাপমাত্রা প্রায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁই ছুঁই। তীব্র তাপপ্রবাহ ও কম বৃষ্টিপাতের কারণে গ্রীষ্মকাল দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে। ফলে বছরের বেশিরভাগ সময়ই এই জেলায় বিপজ্জনক মাত্রায় উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে।
বৃষ্টিপাত কম হওয়ার ফলে এই মৌসুমেও স্বাভাবিক হচ্ছে না শরীয়তপুরের তাপমাত্রা। একসময় এখানে ছিল পর্যাপ্ত গাছপালা ও ঝোপঝাড়। এগুলো এখন প্রায় নিঃশেষ। এতে প্রভাব পড়েছে জনজীবনে।
অতিরিক্ত গরমে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে শরীয়তপুরের জনজীবন। মানুষ স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারছে না। পেটের তাগিদে কাজের ও ব্যবসার জন্য মানুষ বাইরে বের হচ্ছেন। কিন্তু বেশিরভাগ সময়ই বসে থাকছেন ঘরেই। স্থবিরতা নেমে এসেছে প্রতিটি শ্রেণী পেশার মানুষের মাঝে।
আর এই তাপদাহের ফলে বেশ বিপাকে পড়েছেন শরীয়তপুরের বোরো ধান চাষীরা। অতিরিক্ত গরমে দিনের বেলা পারছেন না পাকা ধান কাটতে। তাই বাধ্য হয়ে ধান কাটার সময় হিসেবে রাতের বেলা বেছে নিয়েছেন জেলার অনেক চাষী।
স্থানীয় কৃষকরা জানায়, তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে শরীয়তপুরে কৃষিশ্রমিকের সংকট চরমে পৌঁছেছে। গত কয়েক দিন ধরে বোরো জাতের ধান পাক ধরায় কৃষকরা কাটা শুরু করেছেন। গরমের কারণে কৃষি শ্রমিকের অভাবে তারা ধান তুলতে পারছেন না।
ইতিমধ্যেই ধানের পাক ধরেছে। কিন্তু কৃষিশ্রমিকের সংকটের কারণে ধান কেটে ঘরে আনতে পারছেন না। আগে যেখানে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় শ্রমিক পাওয়া যেত এখন তীব্র গরমের কারণে এখন ৮০০ টাকা মজুরি দিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না। সময়মতো ধান ঘরে তুলতে না পারলে ফলন কম হবে।
তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে কৃষকরা মাঠে বেশি সময় কাজ করতে পারেন না। ধান ক্ষেত এমনিতে গরম থাকে আর অতিরিক্ত গরমের কারণে কৃষকরা বেশি সময় ধরে কাজ করতে পারেন না। অনেক সময় কাজ করতে গিয়ে অতিরিক্ত ঘাম বের হয়ে যাওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। অতিরিক্ত কষ্টের কারণে তারা এখন আর মাঠে কাজ করতে চান না। শ্রমিকের অভাবে তাই চরম সংকটে পড়েছেন চাষিরা। এই জন্য বিকল্প পথ বেছে নিয়েছে স্থানীয় চাষিররা। তারা এখন দিনে বাড়িতে থাকবে রাতে চাদের আলোতে ধান কাটবে বলে জানিয়েছে শরীয়তপুরে স্থানীয় কৃষকরা।
শরীয়তপুর জেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে জেলার ছয়টি উপজেলায় ২৫ হাজার ৫২৬ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। এরমধ্যে সদর উপজেলায় ৫ হাজার ৫৮৫ হেক্টর, নড়িয়া উপজেলায় ৫ হাজার ৪২০ হেক্টর, জাজিরা উপজেলায় ১ হাজার ১৫১ হেক্টর, ভেদরগঞ্জ উপজেলার ৪ হাজার ৬৫০ হেক্টর, ডামুড্যা উপজেলায় ৩ হাজার ৮২১ হেক্টর ও গোসাইরহাট উপজেলায় ৪ হাজার ৮৯৮ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। গত বছর জেলায় আবাদ করা হয়েছিলো ২৫ হাজার ১৯০ হেক্টর জমিতে। আর উৎপাদন হয়েছিলো ১ লক্ষ ১৫ হাজার ৯০৬ মেট্রিক টন। গত বছরের তুলনায় এ বছর উৎপাদন বেড়েছে ৩৩৬ হেক্টর জমিতে। চলতি মৌসুমে জেলায় বোরোধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লক্ষ ১৭ হাজার ৬২৭ মেট্রিক টন। তবে একটানা চলা প্রচন্ড তাপদাহে ধানের উৎপাদনে কিছুটা ব্যঘাত ঘটবে বলে ধারণা করছে কৃষিবিভাগ।
সদর উপজেলার চর কাশাভোগ এলাকার চাষি মিজান শিকদার জানান, ভোরে মাঠে গিয়ে ধানের জমিতে কাজ শুরু করতেই সূর্য উঠছে। সূর্যের তাপে গরমে শরীর ঘেমে যাচ্ছে। বেশি সময় মাঠে থাকা সম্ভব হচ্ছে না। অতিরিক্ত তাপের কারণে ধান গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলন বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। জমিতে পানি জমিয়ে রাখলেও শুকিয়ে যাচ্ছে। তাই ৪ জন কৃষাণ নিয়ে চাঁদের আলোকে সঙ্গী করে ধান কাটা শুরু করেন। রাত ৯টা থেকে শুরু হয়ে ভোর ৫টা পর্যন্ত চলে এ ধান কাটা। এতে অনেকটাই স্বস্তি মিলেছে তার।
আংগারিয়া এলাকার ধানচাষী আজিজুল ইসলাম বলেন, আমি রাতের বেলায় কৃষান নিয়ে ৪০ শতাংশ জমির ধান কাটার কাজ শুরু করেছি। মূলত দিনের বেলা হিটস্ট্রোকের ভয়ে অনেকেই ধান কেটে দিতে রাজি হয়নি। পরে রাতের বেলা ধান কাটা শুরু করি। রাতের বেলা জমিতে যেমন বাতাস থাকে তেমনি ঠান্ডাও থাকে। আমি মনে করি এই সময়ে রাতেই ধান কাটার উপযুক্ত সময়।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্যান) মোহাম্মদ রিয়াজুর রহমান বলেন, প্রচণ্ড তাপদাহে আমাদের কৃষকদের দিনের বেলা ধান কাটা খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ অতিরিক্ত গরমে কাজ করলে তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে। তাই যারা এই গরমে মাঠে কাজ করবেন তাদের প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করার পাশাপাশি গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিতে হবে।
এআইগাজীপুর মহানগরের তেলিপাড়া এলাকায় একটি তুলার গুদামে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। প্রায় এ ঘণ্টা চেষ্টার পর ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টায় মহানগরের তেলিপাড়ায় মো. ইয়াসিনের মালিকানাধীন তুলার গুদামে আগুনের এ ঘটনা ঘটে। আগুনে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। খবর পেয়ে গাজীপুর চৌরাস্তা মডার্ন ফায়ার স্টেশনের চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে।
গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ্ আল আরেফিন জানান, প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টার পর রাত ১টা ৪০ মিনিটের সময় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে মজুদ করা বিভিন্ন ধরনের তুলা, ঝুট মালামাল, বিভিন্ন ধরনের মেশিনারীজ পুড়ে গেছে। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তাৎক্ষণিকভাবে আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তদন্ত সাপেক্ষে জানা যাবে।
এমআর
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে যথতত্র পড়ে আছে ডাবের খোসা, প্লাষ্টিকের বোতল, চিপসের প্যাকেট, সিগারেটের প্যাকেট ও খাবারের পঁচা অবশিষ্টাংশ সহ অসংখ্য আবর্জনা। আর ডাষ্টবিনগুলোর চারপাশ ময়লায় সয়লাব।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে সারজমিনে গিয়ে দেখা যায় সৈকতের এক কিলোমিটার এলাকা এখন পরিনত হয়েছে ময়লা ভাগাড়ে। সৈকতের এসব ময়লা আবর্জনার দুর্ঘন্ধে একটু প্রশান্তি পেতে ছুটে আসা পর্যটকরা ফিরছেন তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে। সৈকতের সৌন্দর্য ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার দাবি পর্যটন ব্যবসায়ী সহ পর্যটকদের।
ফরিদপুরের নগরকান্দা থেকে আসা জনি আহম্মেদ জানান , সৈকতের পশ্চিম এবং পূর্ব দিকে যতদূর চোখ যায় শুধু ময়লা আবর্জনা। অনেক স্থানে খাবারের পঁচা অবশিষ্টাংশ পড়ে আছে। এসব খাবার থেকে দুর্ঘন্ধ ভেসে আসছে। তিন দিনে কুয়াকাটায় আছি। এই তিন দিনে কোন পরিচ্ছন্নতা কর্মী চোখে পড়েনি।
ঢাকার উত্তরা থেকে আসা আজাদ-শিরিনা দম্পতি জানান, সৈকতের চারদিকে নোংরা আবর্জনা। বিশেষ করে পূর্ব পাশের বেঞ্চির পিছনে ডাষ্টবিনগুলো অবস্থা একেবারে খাবার। চারপাশ ময়লায় সয়লাব। দুর্ঘন্ধে বেঞ্চে বসা দায় হয়ে পড়েছে। এর আগে এতো অপিরচ্ছন্ন ছিলোনা। আমরা অন্ততপক্ষে কুয়াকাটা সৈকতটুকু সব সময় পরিচ্ছন্ন রাখার দাবি জানাচ্ছি।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম জানান, আমরা অচিরেই বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির পক্ষ থেকে কিছু পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োগ দেবো। বর্তমানে কুয়াকাটা পৌরসভার পরিচ্ছন্নকর্মীরা বীচের পরিচ্ছন্নতার কাজ করছে। বিষয়টি মেয়রকে অবহিত করা হবে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে বীচ পরিচ্ছন্ন করা হবে।
এফএস
তীব্র তাপদহে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীর জনজীবন। আজ জেলার কলাপাড়ায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে। নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া ও কর্মজীবি মানুষ। একটু স্বস্তির আশায় অনেকেই আশ্রয় নিচ্ছেন গাছতলায়। ছুটছেন নদী তীরে। বেড়েছে ডাব, আখের রস, শরবত ও কাঁচা তালের চাহিদা।
প্রচন্ড খড়তাপে লোকসানে পড়েছেন বোরো ধান চাষী ও সবজি চাষীরা। আবাদির জমির অভ্যান্তরীন ছোটখাল-ডোবা-পুকুর শুকিয়ে মাটি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। ফলে মৌসুমী সবজি চাষীদের খেতে দেখা পানি সংকট। পানির অভাবে আর রোড়ের তীব্রতায় গাছ মরে যাচ্ছে। এতে লোকসানের শংকায় পড়েছেন সবজি চাষীরা।
এদিকে সবজি খেতের এমন বেহাল দশায় বাজারে আমদানী কমেছে সবজির। ফলে বাজারে বেড়ে গেছে সবজির দাম।
কলাপড়ার নীলগজ্ঞের কৃষক জাকির বলেন, তীব্র রোদের তেজ থেকে আবাদি জমির ফসল রক্ষা করা এখন দরকার। এর উপড় দেখা দিয়েছে তীব্র পানির সংকট। নিরূপায় কৃষক। পুড়ে যাচ্ছে গাছ। ফলন কমে গেছে।
তীব্র তাপদহকে দু:সহনীয় করে তুলেছে বিদ্যুতের সীমাহীন লোডশেডিং। দিনে-রাতে বারবার বিদ্যুতের আসা-যাওয়া ও দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সকল বয়সী মানুষকে। পর্যটন নগরী কুয়াকাটায় উল্ল্যেখযোগ্য সংখ্যক পর্যটক উপস্থিত থাকলেও তীব্রতাপদহে এসব পর্যটক হয়ে পড়েছেন হোটেল বন্দী। দর্শনীয় স্থানগুলোর কার্যত পর্যটক শূন্য।
মাদারীপুর থেকে পরিবার নিয়ে কুয়াকাটায় আসা পর্যটক সাবের আহমেদ জানান, তীব্র গরমে সী-বীচ বেশ উপ্তত্ত হয়ে আছে। জুতা পায়েও বীচে হাটা কস্টদায়ক। স্বন্ধ্যার পড়েও একই অবস্থা। তাই পরিবার নিয়ে হোটেলে অবস্থান করছি। হোটেল ফেন্ডস পার্ক ইনের ব্যবস্থাপক আল-আমিন বলেন, মোটামুটি ভাল পর্যটের উপস্থিতি রয়েছে। কিন্তু এসব পর্যটক হোটেল থেকে বের হয়ে দ্রুতই হোটেলে ফিরে আসছেন। গরমে তারা বাহিরে টিকতে পারছেননা।
জেলার সকল হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে ডায়রিয়াসহ গরম জনিত রোগীর সংখ্যা। গত (বুধবার) ২৪ ঘন্টায় জেলার ৮ উপজেলায় ১১০ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। গত এক সপ্তাহে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ৭৭৯ জন রোগী। কলাপাড়ায় জেলার বাউফল ও কলাপাড়া হাসপাতালে স্যালইনের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। (২১ এপ্রিল) জেলার কলাপাড়া উপজেলায় সত্তার ফারাজী নামে একজন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হয়েছে। রবিবার সন্ধ্যায় কলাপাড়া হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে তার মৃত্যু হয়। মৃত সত্তার ফরাজী উপজেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নের চর বালিয়াতলী গ্রামের বাসিন্দা।
কলাপাড়া হাসপাতালের চিকিৎসক তানজিলা হাসির তৃষা জানান, সত্তার ফরাজীকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি ডায়রিয়া আক্রান্ত ছিলেন এবং তার কিডনি ড্যামেজ ছিলো। ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় এই চিকিৎসক সকলকে তেল জাতীয় খাবার পরিহার, প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাহির না হওয়া, বেশি বেশি পানি পান করা এবং পানি জাতীয় খাবার গ্রহনের পরামর্শ দিয়েছেন। পটুয়াখালীর বাউফলে হিটস্ট্রোকে মোহাম্মদ শাহ-আলম (৫০) খান নামের এক পুলিশ সদস্যের মৃত্যু হয়েছে।
২২শে এপ্রিল রাতে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। তিনি পুলিশের ঢাকা গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) পুলিশ কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিলেন। মৃত শহআলম বাউফল পৌর শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছিলেন। শনিবার তিনি ছুটিতে গ্রামের বাড়ি বাউফলে আসেন।
গতকাল রাত নয়টার দিকে হঠাৎ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে অসুস্থ অবস্থায় তাকে বাউফল হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বরিশাল সেবাচিম হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। আবহাওয়া আফিস সূত্র জানিয়ে, আপতত বৃস্টির কোন সম্ভাবনা নেই। এই তাপদাহ আরো কিছদিন অব্যাহত থাকবে।
এমআর
পটুয়াখালীর মহিপুরে পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকার অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে। পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকার অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যুতে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন পটুয়াখালী জেলা সিভিল সার্জন।
ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়- উপজেলার মহিপুর থানার ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের মিরপুর গ্রামের শাহ আলমের মেয়ে শারমিন বেগমের গত ২১ এপ্রিল (রবিবার) রাতে সন্তান প্রসব বেদনা শুরু হলে পরিবারের লোকজন ওই প্রসূতিকে তাৎক্ষনিক নিকটস্থ মহিপুর কেয়ার মডেল হাসপাতালে নিয়ে যায়, এবং সেখানে গাইনী বিভাগে ডাঃ ফারহানা রহমান সুমী'র স্বরণাপন্ন হন, তিনি রোগীকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তার ও তার গর্ভের সন্তানের অবস্থা সংকটপন্ন দেখে তাকে কলাপাড়া উপজেলা কমপ্লেক্সে রেফার করেন, এবং সেখানে ভর্তি থেকে রোগীকে সিজারের পরামর্শ দেন।
স্বজন সূত্রে আরও জানা যায়, পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকা নূরজাহান বেগম প্রসূতি শারমিনের বাচ্চা নরমালে প্রসবের কথা বলে ৫ হাজার দর কষলে পরে ৩ হাজার টাকায় রাজি হন। দীর্ঘ ৫ ঘন্টা নরমালে বাচ্চা প্রসবের চেষ্টা করে সে ব্যর্থ হলে প্রসূতির পরিবারের লোকজন প্রসূতিকে সিজারে নিতে চাইলে তিনি প্রসূতি নরমাল ভেলিভারীর জন্য শারমিনকে মারধর করেন বলে ভুক্তভোগীর পরিবারে অভিযোগ রয়েছে। পরবর্তীতে রাত ১২ টার দিকে তাহার ভুল ও অনভিজ্ঞ প্রচেষ্টার কারণে একটি মৃত্যু মেয়ে সন্তান প্রসব হয়। অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণের ফলে প্রসূতি এখন মৃত্যু পথযাত্রী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকা নূরজাহান বেগম একই স্থানে দীর্ঘ ২৮ বছর থেকে বীরত্বের আরও বহু এরকম ঘটনা ঘটিয়েছেন।
এ বিষয়ে পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শকা নুরজাহান বলেন, গর্ভ থেকে মৃত বাচ্চা প্রসব হয়েছে। প্রত্যেকটা প্রসবই আমি একটি ফি নিয়ে থাকি। সেই অনুপাতে তাদের সাথে তিন হাজার টাকা চুক্তিতে কাজ করেছি।
ডাক্তার ফারজানা রহমান সুমি বলেন, গতকাল বিকেলে রোগী আমার কাছে আসলে আমি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ক্রিটিকাল মোমেন্ট দেখতে পাই। আমি তাদের কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে সিজারের পরামর্শ দিয়েছি।
ফ্যামিলি প্লানিং মেডিকেল অফিসার মোঃ মেহেদী হাসান রনি বলেন, রোগী অবস্থা ক্রিটিকাল হলে সে আমাদের অবগত করবে, সে যেটা করেছে এটা চরম অপরাধ, বিষয়টি খতিয়ে দেখে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এমআর
পিরোজপুরের প্রতিপক্ষের হামলায় সৈয়দ রাসেল (২৪) নামর এক কলেজ ছাত্র নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১২টার দিকে খুলনায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় ।
নিহত রাসেল পিরোজপুর পৌরসভার মুক্তারকাঠী গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে ও পিরোজপুর সরকারী সোহরাওয়ার্দী কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। এর আগে ওই দিন দুপুরে উপজেলার কদমতলা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে বসে তার উপর প্রতিপক্ষ হামলা চালালে তিনি গুরুতর আহত হন।
ওই হত্যার বিচারের দাবীতে বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে তার সহপাঠীরা পিরোজপুর শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেন।
থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি ওই যুবক জেলার সদর উপজেলার কদমতলা গ্রামের রিয়াজুল ইসলামের সাথে মারামারির একটি ঘটান নিয়ে বিরোধ চলছিলো। ওই রিয়াজুলের উপর হামলায় নিহত রাসেল ও তার বন্ধুরা সম্পৃক্ত ছিলো। এনিয়ে বিরোধের জেরে গত মঙ্গলবার দুপুরে রাসেল কদমতলা থেকে পিরোজপুরে যাওয়ার কালে রিয়াজুল তার লোকজন নিয়ে পরিকল্পিতভাবে রাসেলের উপর হামলা করে এতে রাসেল গুরুতর আহত হন তাকে প্রথমে পিরোজপুর সদর হাসপাতাল ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা সিটি হাসপাতালে প্রেরন করা হয় সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহতের স্বজনদের দাবী, নিহত রাসেল ওই দিন দুপুরে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী এসএম বায়েজিদ হোসেনর সাথে দেখা করতে তার বাড়িতে যান। সেখানে থেকে ফেরার পথে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা কিছু যুবক তার উপর হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করে। তিনি খুলনা চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তিনি কখনো কোন অন্যায়ের সাথে জড়িত ছিলো না। তাকে অন্যায় ভাবে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা কার হয়েছে।
পিরোজপুর সদর থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) মো. আশিকুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এআই
বরগুনার তালতলীতে পুকুর খননের সময় হিট স্ট্রোকে মো. নয়া মিয়া ফকির (৫০) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) বপলা ১১টার দিকে উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের খোট্টার চর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শ্রমিক নয়া মো. মিয়া ফকির একই গ্রামের আমির আলী ফকিরের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের খোট্টার চর গ্রামের হাসান মিয়ার বাড়িতে পুকুর খননের কাজ করতে যান মো. নয়া মিয়া ফকির। তিনি পুকুর খননের সময় হিড স্ট্রোক করেন। এ সময় স্থানীয়রা তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।
নিহতের ভাই সোবাহান ফকির বলেন, প্রতিদিনের ন্যায় সকালে পুকুর খননের কাজ করতে গিয়ে হিট স্ট্রোক করেন তিনি। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে হিড স্ট্রোকে মারা গেছেন বলে জানান কর্তব্যরত চিকিৎসক।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুমন কুমার পোদ্দার বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, অতিরিক্ত গরমে হিটস্ট্রোকে তার মৃত্যু হয়েছে।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার বরগুনার আমতলীতে অজিতুন নেছা (৬০) নামে এক নারীর হিট স্ট্রোকে মৃত্যু হয়েছে।
এআই
জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শোয়েব আল হাসান সজলকে দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সংগঠনের শৃঙ্খলা ও নীতি আদর্শ পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে সাময়িক অব্যাহতি প্রদান করেছে জেলা ছাত্রলীগ। সেই সাথে কেনো তার বিরুদ্ধে চুড়ান্ত শাস্তিমুলক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে না তার উপযুক্ত কারণসহ আগামী তিনদিনের মধ্যে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে স্বহস্তে লিখিত জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি খাবীরুল ইসলাম খান ও সাধারণ সম্পাদক নাফিউল করিম রাব্বি স্বাক্ষরিত পত্রে তাকে অব্যহতি দেয়া হয়। এই নিয়ে ২য় বারের মত অব্যাহতি পেলেন শোয়েব আল হাসান সজল।
জানা যায়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ২০২৩ সালে ১৬ আগস্ট শোয়েব আল হাসান সজলকে প্রথমবার সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হয়। এরপর লিখিত জবাবের প্রেক্ষিতে ৩ ডিসেম্বর তার অব্যাহতি প্রত্যাহার করে নেয় জেলা ছাত্রলীগ। প্রত্যাহার পত্রে ভবিষ্যতে দলীয় শৃঙ্খলা কঠোরভাবে মেনে চলার জন্য সতর্ক করা হয় তাকে। এই নিয়ে দুইবার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পেলেন উপজেলা ছাত্রলীগের এই নেতা।
শোয়েব আল হাসান সজলের ভাষ্য, তিনি দলীয় শৃঙ্খলা বা দলের নীতি আদর্শ পরিপন্থী কোন কাজে জড়িত না। কি কারনে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে তা জানেননা তিনি। এরপরেও জেলা ছাত্রলীগের সিদ্ধান্ত মেনে লিখিত ভাবে জবাব দিবেন বলে জানান তিনি।
এব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি খাবীরুল ইসলাম খান বলেন, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তিন দিনের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে। সন্তোষজনক জবাব দিতে না পারলে সাংগঠনিকভাবে তার বিরুদ্ধে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এআই
তীব্র তাপপ্রবাহ থেকে রক্ষায় বৃষ্টি চেয়ে নেত্রকোনায় ইসতিসকার নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকালে জেলার পৌর শহরের ঐতিহাতিক মোক্তারপাড়া ঈদ গা মাঠে এ নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। নামাজের আয়োজন করেন সর্বস্তরের স্থানীয় মুসল্লিরা।
নামাজের ইমামতি করেন মুফতি তাহের কাছেমি। পরে তিনি আরবিতে খুতবা দেন এবং খুতবা শেষে দোয়া করেন। দোয়ার মধ্যে তীব্র গরমের কথা উল্লেখ করে আল্লাহর কাছে বৃষ্টির প্রার্থনা করা হয়। আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মুসল্লিরা নামাজে অংশ নেন। এ সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে মুক্তিসহ দেশ ও জাতির কল্যাণে প্রার্থনা করা হয়।
নামাজ আদায় শেষে আলহুদা মডেল মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা আহমুদ বিন আব্দুল খালেক বলেন, কোরআন-হাসিদের আলোকে যতটুকু জানা গেছে, তা হলো মানুষের সৃষ্ট পাপের কারণেই মহান আল্লাহ এমন অনাবৃষ্টি ও খরা দেন। বৃষ্টিপাত না হলে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সাহাবিদের নিয়ে খোলা ময়দানে ইসতিসকার নামাজ আদায় করতেন। সে জন্য তারা মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে পাপের জন্য তওবা করে এবং ক্ষমা চেয়ে দুই রাকাত নামাজ আদায় করে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করেছেন।
এছাড়া উপস্থিত স্থানীয় মুসল্লিরা জানান, ইসতিসকার নামাজ আমাদের বিশ্ব নবীর সুন্নত। তীব্র গরমে বৃষ্টির আশায় আমরা নেত্রকোনাবাসী বিশ্ব নবীর সুন্নত দুই রাকাত ইসতিসকার নামাজ আদায় করেছি। এই নামাজে বৃদ্ধ থেকে শুরু করে ছোট বাচ্চারাও এসে উপস্থিত হয়েছে। সবাই আল্লাহর কাছে দোয়া প্রার্থনা করেছে যেন সারা দেশে আল্লাহর রহমতে বৃষ্টি হয়। যে বৃষ্টি মানুষ পশুপাখি গাছপালাসহ সকলের জন্য উপকার হবে।
পিএম
নেত্রকোনার দুর্গাপুরে নাশকতার মামলায় বিএনপির দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ঐদিন সন্ধ্যায় আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দুগার্পুর থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও দুর্গাপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব ইমাম হাসান আবুচানঁ ও দুর্গাপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হাজ্বী জামাল উদ্দিন মাস্টার। তারা সম্পর্কে বাবা-ছেলে।
জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুরে পৌরশহরের কাচারী মোড় এলাকা থেকে হাজ্বী জামাল উদ্দিন মাস্টারকে গ্রেফতার করা হয়। অপরদিকে ওইদিন বিকেলে উপজেলার চন্ডিগড় ইউনিয়নের মাঝিয়াইল মোড় থেকে আলহাজ্ব ইমাম হাসান আবুচানঁকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ। পরবর্তিতে আদালত জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে।
এব্যাপারে দুর্গাপুর থানার ওসি তদন্ত মাহফুজ আলম জানান, ২০২৩ সালে নাশকতার মামলায় তাদের দুই জনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে।
এআই
নেত্রকোনার দুর্গাপুরে গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় আব্দুস ছালাম তালুকদার (৬৫) নামে এক বৃদ্ধের মরদহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরিবারের দাবি জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে হত্যা করে মরদেহ গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে উপজেলার বাকলজোড়া ইউনিয়নের উত্তর চারিগাঁও পাড়া গ্রামে একটি গাছ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত আব্দুস ছালাম পাশ্ববর্তী উপজেলা পূর্বধলার জারিয়া গ্রামের মৃত ওহয়ােদ আলী তালুকদারের ছেলে। তবে তিনি বাকলজোড়া ইউনিয়নের উত্তর চারিগাঁও পাড়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।
স্থানীয় লোকজন ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, পার্শ্ববর্তী প্রতিবেশীদের সঙ্গে বাড়ির জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। ওই বিরোধের জের ধরে গত কয়েকদিন আগেও দুইপক্ষের মাঝে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এরই মধ্যে গতকাল প্রতিপক্ষের লোকজন ছালামের বিভিন্ন গাছ কেটে ফেলে ও তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এরপর আজ ভোরে নামাজ পড়ে বাসায় আর ফিরেনি ছালাম। পরিবারের লোকজন খোঁজাখোঁজি করে একপর্যায়ে সকালে বাড়ির পাশেই জংগলের একটি গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় তাঁরা। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহত বৃদ্ধের ছেলে মোশারফ মিয়া বলেন, কাল থেকে আমার আব্বা ঘরো বন্দি। হাকিম, মাওলা, আইনল, কালাম, সাকিবরা মাইরা ফেলবো ভয়ে নামাজে যেতে পারে না আব্বা। কাইল রাতে আরেক বাড়িত রইছে। সকালে নামাজ পইরা আইছে না আব্বা। আব্বারে খুঁইজা পাইনা পরে গিয়ে দেহি আব্বা ঝুইলা আছে গাছে। মাইরা ফালছে ওরা আমার আব্বারে।"
এব্যাপারে দুর্গাপুর সার্কেলের এএসপি মোঃ আক্কাস আলী স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, ওই বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলেই মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
এআইনেত্রকোনায় পরিবেশ অধিদপ্তর ও বেসরকারী গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিকের আয়োজনে আন্তর্জাতিক শব্দসচেতনতা দিবস উপলক্ষে র্যালি, আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি র্যালি বের হয়। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক জনাব শাহেদ পারভেজ, নেত্রকোনা জেলা সহকারী পুলিশ সুপার জনাব শিবলি সাদিক,পৌর মেয়র বীরমুক্তিযোদ্ধা জনাব নজরুল ইসলাম খান, পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক জনাব আবু সাঈদ, রাজুরবাজার কলেজিয়েট স্কুলের অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা, শ্রমিক ইউনিয়নের সহসভাপতি জনাব বজলুর রহমান, ট্রাফিক ইন্সপেকটর জহিরুল ইসলাম, বীরমুক্তিযোদ্ধা নূরুল আমিন, জেলা সিভিল সার্জন, বেসরকারী গবেষণা প্রতিষ্ঠানের বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী জনাব মো.অহিদুর রহমান, অক্সিজেন যুবসংগঠনের প্রতিনিধি, সাংবাদিক ও অটো সিএনজি মালিক সমিতির প্রতিনিধিসহ ১০০ শতাধিক লোকজন ।
প্রতিবছর এপ্রিল মাসের শেষ বুধবার আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস পালন করা হয়। এ বছরের প্রতিপাদ্য: উচ্চস্বরে শব্দ ও সঙ্গীত শ্রবণশক্তি হ্রাসের বিপদ সংকেত। শব্দদূষণ নীরব ঘাতক নয়, শব্দদূষণ মানুষের জন্য সরব ঘাতক ও শব্দসন্ত্রান।
আন্তর্জাতিকভাবে ১৯৯৬ সাল থেকে এ দিবসটি উদযাপন শুরু হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গুরুত্বের সাথে দিবসটি পালন করা হয়। আমাদের দেশে ২০০৩ সাল থেকে এ দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। শব্দদূষণের ফলে মানুষের বহুমাত্রিক স্বাস্থ্য ঝুঁকিসমূহ হলো- মাথাব্যাথা, অনিদ্রা, কানে কম শোনা এবং আংশিক বা পুরোপুরি বধিরতা, কানের ভিতর ঝিঁঝিঁ শব্দ, শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার মনোযোগ কমে যাওয়া, মেজাজ খিটখিটে, মানসিক চাপ, হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপ, ক্ষুধামান্দ্য, গ্যাস্টি্রক এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর জন্ম হওয়া।
আলোচনায় ট্রাফিক ইন্সপেকটর জহিরুল ইসলাম বলেন, ''আমরা সারাদিন শব্দের মাঝেই থাকি, আমাদের রাস্তার শব্দ দূষণে আামদের জীবনে শেষ''।
প্রধান অতিথির জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজ বলেন, আমরা যারা যানবাহন ব্যবহার করি,আতশবাজি করি, সারাশহরে মাইক ব্যবহার করে অনুষ্ঠান করি এগুলো প্রত্যেকেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে সচেতন হবে। আমরা মানুষ, আমার শব্দের কারণে অন্যের ক্ষতিহবে তা হতে পারেনা। আমাদের সচেতনতায় এগুলো কমিয়ে আনতে পারি। আগামী প্রজন্মকে আমাদের রক্ষা করতে হবে। আসুন সকলে শব্দ দূষণ সম্পর্কে সচেতন হই, পরস্পরর্কে সচেতন করি, নিজেদের কানকে সুরক্ষা করি এবং নিজেদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা করি। মানুষসহ সকল প্রাণের জন্য নিরাপদ আবাস গড়ে তোলার কাজে একজন অংশিদার হই।
এআইকুড়িগ্রামের ফু্লবাড়ীতে হিট স্ট্রোকে ফাতেমা বেগম (৫৭) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) রাতে ১১টায় রংপর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে বলে পরিবার ও স্থানী সুত্রে জানা গেছে। এর আগে বুধবার দুপুরে উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের গোরকমন্ডল কৃষ্ণানন্দবকসী গ্রামে নিজ বাড়ীতে হঠাৎ অসুস্থ্য হয়ে পড়লে পরিবারের লোকজন তাকে দ্রুত রংপর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। নিহত নারী ওই ওয়ার্ডের কপুর উদ্দিনের স্ত্রী।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোরকমন্ডল ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শ্যামল চন্দ্র মন্ডল ও নিহতের স্বজন জাহের আলী।
ইউপি সদস্য শ্যামল চন্দ্র মন্ডল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নিহত ওই নারী দীর্ঘদিন ধরে হাইপার টেনশনে ভুকছেন। প্রচন্ড তাপদাহে তিনি হিট স্ট্রোক করেছেন। পরে পরিবারের লোকজন তাকে রংপর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে বুধবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
এআই
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে বৃষ্টির জন্য ইস্তেসখার নামাজ আদায় করা হয়েছে।পুরো বাংলাদেশে প্রচন্ড তাপদাহ ও অনবৃষ্টিতে জনজীবন অতিষ্ঠ জীবজন্তু সহ কষ্ট পাচ্ছে দেশবাসী। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদেশ মোতাবেক বৃষ্টি প্রার্থনা করে নামাজ আদায় করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকাল ১০টার ফুলবাড়ী সরকারি কলেজ মাঠে ফুলবাড়ীর মুসল্লিবৃন্দ একত্রিত হয়ে এই নামাজ আদায় করে। এসময় ইমামতি করেন ইউসুফ হজ্জ কাফেলার পরিচালক মাওলানা ইউসুফ।
নামাজ শেষে বৃষ্টি কামনা করে মোনাজাত করেন মুসল্লি বৃন্দরা বৃষ্টির কামনায় কান্নায় ভেঙে পড়েন উপস্থিত সকলে।
এআইঠাকুরগাঁওয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ থেকে মুক্তি পেতে বৃষ্টির প্রার্থনায় সালাতুল ইস্তিস্কার নামাজ আদায় করা হয়েছে।
বুধবার (২৫ এপ্রিল) সকালে পৌরশহরের মাদরাসা পাড়া ঈদগাহ মাঠে এ নামাজ অনুষ্ঠিত হয়৷
নামাজে ইমামতি ও খুৎবা প্রদান করেন সালান্দর ইসলামিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ আবুল কালাম ত্ব-হা। নামাজ শেষে মোনাজাত করেন মাদরাসটির সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা রফিকুল ইসলাম।
শীতপ্রবণ জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। তীব্র থেকে তীব্রতর তাপমাত্রার মুখোমুখি হতে হচ্ছে জেলার মানুষকে। তাপপ্রবাহের কারনে দৈনন্দিন কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। মাঠে কাজ করা দূর্বিষহ হয়ে পড়েছে কৃষকদের। হাসপাতালে বেড়েছে শিশু-বৃদ্ধ রোগীর সংখ্যা৷ এমন পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে বৃষ্টির আশায় নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা।
নামাজ আদায় করতে আসা ব্যবসায়ি রফিকুল ইসলাম বলেন, কাজের জন্য বাইরে বের হওয়া কঠি হয়ে দাড়িয়েছে। রোদে দুই মিনিট থাকা যায়না। শরীর ঝলসে যাওয়ার মতন অবস্থা। আমাদের নাভিশ্বাস অবস্থা হয়ে গিয়েছে। বৃষ্টির আশায় নামাজ আদায় করলাম। যদি আল্লাহ আমাদের প্রতি রহম করেন তবে স্বস্তি ফিরবে।
সালান্দর ইসলামিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ আবুল কালাম ত্ব-হা বলেন, সারাদেশে দাবদাহে জনজীবনে বিপর্যয় ঘটেছে। আমাদের জেলায়ও অস্বস্তি পর্যায়ে চলে গিয়েছে। আমাদের গুনাহর ফসল এসব। আমরা বৃষ্টির আশায় সালাতুল ইস্তিস্কা নামাজ আদায় করলাম। আল্লাহ আমাদের প্রতি রহম করবেন।
এআই
টানা দাবদাহে মাঠ ফেঁটে যখন চৌচির তখন বৃষ্টির জন্য দু’হাত তুলে মহান সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি লাভের আশায় কাঁদলেন মুসল্লীরা।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টায় উপজেলার মিয়াপাড়া নাজিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এলাকার তিন শতাধিক মুসল্লী বৃষ্টির জন্য দু'রাকাত সালাতুল এসতেস্কা নামাজ আদায়ের পর বিশেষ মোনাজাত করেন।
মোনাজাত পরিচালনা করেন কাঁছারী মাঠের জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আব্দুল মালেক। এ সময় তিনি সকল বালা মুসিবত দূর করে ধরিত্রিতে বৃষ্টির ফল্গুধারা বইয়ে দেয়ার জন্য মহান সৃষ্টিকর্তার দরবারে আকূল আবেদন জানান। তার মোনাজাতে মুসল্লীরা কান্নায় ভেঙ্গে পরেন। তারা তাপদাহ দূর করে বৃষ্টির জন্য দু'হাত তুলে আল্লাহর কাছে দোয়া প্রার্থণা করেন।
এ দিকে একই সময়ে উপজেলার ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের রাবাইতারী ঈদ গাঁ মাঠ ও কাশিপুর ইউনিয়নের গংগাহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে নামাজ ও মোনাজাত পরিচালনা করা হয়।
নামাজে অংশ নেওয়া মুসল্লী রফিকুল ইসলাম মাস্টার ও আব্দুর রাজ্জাক জানান, এ রকম তাপদাহ প্রবাহ আজ থেকে ২৫ বছর আগে দেখেছি। সেই ২৫ বছর পর আবারও সেই প্রচন্ড তাপদাহ দেখলাম। প্রচন্ড রোদে জীবিকার তাগিদে শ্রমজীবী মানুষরা কাজ করছে। বৃষ্টি না হওয়ায় ফসল পুড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়েছে। সেই সাথে ক্ষেতে পাকা বোরো ধান নিয়ে আশংকায় রয়েছেন চাষীরা। এজন্য আল্লাহর দরবারে বৃষ্টির জন্য সবাই মিলে দোয়া করেছি। যাতে আল্লাহপাক সদয় হন। আমাদের দোয়া মঞ্জুর করেন।
উপজেলা কাঁছারী মাঠের জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আব্দুল মালেক জানান, আজ বৃষ্টির জন্য দু'রাকাত সালাতুল এসতেস্কা নামাজ আদায়ের পর মোনাজাত করা হয়েছে। এটি একটি সুন্নতি আমল। প্রচন্ড খরা থেকে ফসল ও মানুষের সুবিধার জন্য আল্লাহর দরবারে ক্ষমা চেয়ে বৃষ্টির জন্য দোয়া কামনা করা হয়।
প্রচন্ড তাপদাহের বিষয়ে কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, ফুলবাড়ীসহ কুড়িগ্রাম জেলা জুড়ে এক সপ্তাহ ধরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রি থেকে ৩৭ ডিগ্রী সেলসিয়াসে ওঠা-নামা করছে। তবে আপাতত তাপমাত্রা কমার কোন সম্ভাবনা নেই বলে জানান এ কর্মকর্তা।
এআই
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে হিট স্ট্রোকে নজির হোসেন (৭১) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালের দিকে উপজেলার রমনা ইউনিয়নের রমনা ব্যাপারীপাড়া গ্রামে নিজ বাড়িতে অসুস্থ্য হয়ে তিনি মারা যান।
বুধবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রমনা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান গোলাম আশেক।
স্থানীয় ইউপি সদস্য (মেম্বার) রোকোনুজ্জামান সরকার জানান, রমনা ব্যাপারীপাড়া গ্রামের মৃত: আছুরুল্ল্যাহ ব্যাপারীর ছেলে নজির হোসেন পারিবারিক একটি বিষয় নিয়ে দুঃশ্চিতায় ছিলেন। এছাড়াও সকাল থেকে প্রচন্ড দাবদাহের কারণে তিনি বারবার পানি খাচ্ছিলেন। এসময় হঠাৎ তিনি অচেতন হয়ে পরে যান। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। ধারনা করা হচ্ছে হিট স্ট্রোকে তার মৃত্যু হয়েছে।
রমনা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান গোলাম আশেক জানান, ওই বৃদ্ধের মরদেহ পারিবারিক কবর স্থানে দাফন করা হয়েছে।
এফএস
চাকুরীর দায়িত্ব পালন করতে যান বাবা। আর বাড়ির মেইন গেটে তালা দিয়ে বাইরে যান মা। সে সময় বাড়িতে একা থাকায় রিয়া এবং তার ভাই গ্যাসলাইট জ্বালিয়ে উঠানে খেলছিল।
খেলার এক পর্যায়ে রিয়া মাটির পুতুল পোড়াতে গিয়ে জামায় আগুন লেগে যায়। বাড়ির মেইন গেট তালাবদ্ধ থাকায় প্রতিবেশীরাও বাড়িতে প্রবেশ করতে পারেনি। আগুনে শিশু রিয়ার শরীর পুরোটাই পুড়ে যায়। পরে হাসপাতালে ভর্তি করার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় রিয়া।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে এমনই এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে পাবনার ঈশ্বরদীতে। গত রাত ১২টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় রিয়া।
মৃত রিয়া খাতুন (১0) উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের মানিকনগর পাঠশালা মোড়ের পিন্টু বিশ্বাসের মেয়ে এবং দিয়াড় সাহাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিল। রিয়া খাতুনের ফুফাতো ভাই সৌরভ হোসেন মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, রিয়া খাতুনের বাবা পিন্টু বিশ্বাস রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে চাকরি করেন। তিনি সেখানে ডিউটি করতে যান। তার স্ত্রী বাড়ির মেইন গেটে তালা দিয়ে বাইরে যান। সেসময় রিয়া এবং তার ৫ বছর বয়সী ভাই গ্যাসলাইট জ্বালিয়ে উঠানে খেলছিল। খেলার এক পর্যায়ে রিয়া মাটির পুতুল পোড়াতে গিয়ে জামায় আগুন লেগে যায়। আগুন লাগার সময় শুধু রিয়া এবং তার ছোট ভাই বাড়িতে ছিল। বাড়ির মেইন গেট তালাবদ্ধ থাকায় প্রতিবেশীরাও বাড়িতে প্রবেশ করতে পারেনি। আগুনে শিশু রিয়ার শরীর পুরোটাই পুড়ে যায়।
তাকে দ্রুত ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় রিয়া।
ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক সাবরিনা রহমান বলেন, আগুনে শিশু রিয়ার মুখমণ্ডলসহ শরীরের বেশিরভাগই পুড়ে গেছে। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল৷
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, আগুন লাগার বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।
পিএম
অনৈতিক লেনদেনের অভিযোগে আটক পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) দুই উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে তারা আদালতে জামিন আবেদন করলেও বিচারক নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আটক দুইজন হলেন, মাসুদ রানা (২৯) ও মোশাররফ হোসেন (৪২)। এদের মধ্যে মাসুদ রানার বাড়ি পাবনা সদর উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়নের বড় দিকশাইল গ্রামে। তিনি ভারপ্রাপ্ত উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী। আর অপরজন মোশারফ হোসেনের বাড়ি কুমিল্লার মেঘনা থানার শিবনগর এলাকায়। তিনি একই কার্যালয়ের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন আলী বলেন, স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর তাদের নিজ কার্যালয় থেকে আটক করা হয়। ওই সময় ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।
পরে এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে সদর থানায় ফৌজদারি কার্যবিধির আইনের ৫৪ ধারায় একটি জিডি দায়ের করা হয়। জিডি নাম্বার ১৯১৮। এরপর ৫৪ ধারায় আটক দুইজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বুধবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ।
পাবনার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. মোরশেদুল আলম তাদের জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
ওসি রওশন আরো জানান, ঘটনাটি দুদকের সিডিউল ভিত্তিক অপরাধ হওয়ায় তারা মামলা দায়ের করবে। সে বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সেইসাথে ঘটনাটি আরো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এ বিষয়ে দুদক পাবনা আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. খাইরুল হক জানান, 'তাদের বিরুদ্ধে জিডি সম্পর্কিত কাগজপত্র হাতে পাওয়ার পর পরবর্তী করণীয় বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
পাউবো পাবনা'র নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, 'বিষয়টি প্রধান কার্যালয়কে জানানো হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করা হবে। তদন্তে দু’প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সকালে ঠিকাদার ও কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পেয়ে পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডে অনুসন্ধানের কাজে যান কয়েকজন সাংবাদিক। সেখানে প্রকৌশলী মাসুদ রানার কক্ষে দুই ঠিকাদার রাজিব ও কনকসহ আরেক প্রকৌশলীকে দেখতে পান তারা। এ সময় টেবিলে বিপুল পরিমাণ টাকার বান্ডিল ছিল।
বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় পুলিশকে জানান ওই সাংবাদিকরা। পুলিশ পৌঁছানোর আগেই সেখান থেকে পালিয়ে যান দুই ঠিকাদার রাজিব ও কনক। পরে পুলিশ এসে দুই প্রকৌশলীকে আটক করে এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কে খবর দেয়। জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের কাছ থেকে নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে দুদক ও পুলিশ। সন্ধ্যার পর তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
এদিকে সচেতন মহলের প্রশ্ন, ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে যদি দুই প্রকৌশলী দোষী হন, তাহলে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে দুই ঠিকাদার রাজিব ও কনকও দোষী। তাদের গ্রেপ্তার করে ঘটনার আসল কারণ উদঘাটনের দাবি সচেতন মানুষের।
ঘটনার পর থেকে গণমাধ্যমকর্মীদের এড়িয়ে চলছেন দুই ঠিকাদার। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়েই কল কেটে দিচ্ছেন।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয় ঠিকাদার আরিফুজ্জামান রাজিবের সাথে। কেন তিনি প্রকৌশলীকে টাকা দিতে গিয়েছিলেন, আর পালালেন কেন জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। এরপর প্রশ্ন করার সুযোগ না দিয়ে ফোনের লাইন কেটে দেন তিনি।
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার বারুহাস বৈশাখী মেলায় জাদু খেলার নাম করে অশ্লীল নৃত্য পরিবেশনকালে ৫ জনকে আটক করেছে তাড়াশ থানা পুলিশ।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) রাতে তাড়াশ থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. নূরে আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে মঙ্গলবার গভীর রাতে মেলা থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন- পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলার কাটাখালী গ্রামের মো. সালামের ছেলে সাব্বির হোসেন (২৩), তার স্ত্রী মৌসুমী খাতুন (১৯), বগুড়া জেলার গাবতলী উপজেলার দূর্গাহাটা গ্রামের আবদুল লতিফের ছেলে মো. মিনারুল (২৪), শেরপুর উপজেলার হাটগাড়ী গ্রামের করিম হাসানের স্ত্রী মোছা. লাবলী আক্তার (২৩) ও শিবগঞ্জ উপজেলার জামুরহাট দক্ষিণবেলাই গ্রামের মো. সোলেমানের মেয়ে মোছা. শিমু আকতার (১৯)।
স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রতি বছরের ন্যায় এবারেও বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে বাৎসরিক গ্রামীণ বৈশাখী মেলাটি শুরু হয়। আর মেলার শুরু থেকে সেখানে জাদু খেলার নামে অশ্লীল নৃত্যর আয়োজন করা হয়। স্থানীয়রা বারবার প্রতিবাদ করলেও অশ্লীল নৃত্য বন্ধ হয়নি। এতে সামাজিক পরিবেশ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হলে স্থানীয়রা প্রশাসনকে অবহিত করেন। পরে তাড়াশ থানা পুলিশ গিয়ে ওই পাঁচজনকে আটক করে নিয়ে আসেন।
তাড়াশ থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. নূরে আলম গণমাধ্যমকে বলেন, আটককৃত ওই পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি এ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত আছে কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এআই
সারাদেশের মতো জয়পুরহাটেও অব্যাহত রয়েছে তীব্র তাপপ্রবাহ। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। এদিকে গরম থেকে রক্ষা পেতে বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায় করেছেন স্থানীয়রা।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকাল ৯টার দিকে সদর উপজেলার কড়ই নূরুল হুদা কামিল মাদ্রাসার মাঠে এই নামাজ আদায় করা হয়।
নামাজে ইমামতি করেন কড়ই নূরুল হুদা কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. আব্দুর রহমান সরকার। নামাজের পর খুৎবা পাঠ শেষে দোয়া পরিচালনা করেন তিনি। মহান আল্লাহর কাছে দীর্ঘ মোনাজাতে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করেন মুসল্লিরা।
এআই
ভারতে পাচারের সময় জয়পুরহাটের পাঁচবিবির পশ্চিম উচনা সীমান্ত থেকে ১ কেজি ৬৫০ গ্রাম ওজনের ১৬টি স্বর্ণের বারসহ মিনহাজুল ইসলাম নামে এক চোরাকারবারিকে আটক করেছে বিজিবি।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। জব্দকৃত স্বর্ণের বর্তমান বাজার মূল্য ১ কোটি ৯০ লাখ ৩৮ হাজার ৮২৫ টাকা বলে জানিয়েছে বিজিবি।
আটককৃত মিনহাজুল ইসলাম পাঁচবিবি উপজেলার পশ্চিম উচনা গ্রামের বাসিন্দা।
জয়পুরহাট-২০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মোহাম্মদ তানজিলুর রহমান ভূঁইয়া জানান, বুধবার বেলা ১২টার দিকে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার উচনা সীমান্ত এলাকা দিয়ে চোরাকারবারিরা ভারতে স্বর্ণ পাচার করছে এমন গোপন সংবাদ আসে বিজিবির কাছে। এমন সংবাদে বিজিবি সেখানে অভিযান পরিচালনা করে। এসময় ১ কেজি ৬৫০ গ্রাম ওজনের (১৫৯ ভরি ৩ আনা) ১৬টি স্বর্ণের বারসহ মিনহাজুল ইসলাম নামে এক চোরাকারবারিকে আটক করা হয়।
এ ঘটনায় পাঁচবিবি থানায় মামলা দায়েরর প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।
এআই
শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় দেড় হাজার কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে রাসায়নিক সার ও বীজ বিতরণ করেছেন টানা চতুর্থবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহির।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে স্থানীয় সার গুদাম মাঠে উপজেলার প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি এই প্রণোদনা বিতরণ করেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা আক্তার মিতা এতে সভাপতিত্ব করেন।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মশিউর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ তালুকদার ইকবাল, পৌরসভার মেয়র ফরিদ আহমেদ অলি প্রমুখ।
উপকারভোগী কৃষকদের মাঝে শায়েস্তাগঞ্জ ইউনিয়নে ৫৫০, নুরপুর ইউনিয়নে ৩৫০ জন, ব্রাহ্মনডুরা ইউনিয়নের ৪০০ জন ও শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার বাসিন্দা আরও ২০০ জন। তাঁদের প্রত্যেককে ১০ কেজি আউশ ধানের বীজ ও ২০ কেজি করে রাসায়নিক সার প্রদান করা হয়।
এআই
মৌলভীবাজারের রাজনগর সরকারি কলেজে অধ্যক্ষের কক্ষ ভাঙচুর করেছে কতিপয় শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় অধ্যক্ষ মো: মনছুর আলমগীর রাজনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন। গত ২১ এপ্রিল দুপুরে এই ঘটনা ঘটে।
জিডি ও স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, ২১ এপ্রিল দুপুরে ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণ চলাকালিন সময়ে কতিপয় যুবক ফরম পূরণের সময় কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে বেতন কমানোর দাবি তোলেন। কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের দাবি না মানায় কলেজের সম্পদ ভাঙচুর করে।
অধ্যক্ষ মো: মনছুর আলমগীর বলেন, এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী আমার কাছে বেতন কমানোর দাবি জানান। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলার জন্য কলেজের পক্ষ থেকে একটি কমিটি ঘটন করা হয়। গত ১৮ এপ্রিল দুপুর ২টায় ওই কমিটির সদস্যরা এসব শিক্ষার্থীদের সাথে বসার কথা ছিল। অনেক্ষণ অপেক্ষার পরও শিক্ষার্থীরা না আসায় ওই দিন বসা হয়নি।
পরবর্তীতে ঘটনার দিন বসার আগেই কতিপয় যুবক আমার কক্ষে হামলা করে গ্লাস, চেয়ার, বোর্ড সহ আসবাবপত্র ভাঙচুর করে।
এমআর
সুনামগঞ্জের পৌর শহরের হাছননগর এলাকার বুবির পয়েন্টে মাহিন্দ্র ট্রাক ও সিএনজি অটো রিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে সুরেশ রবি দাস (৪০)নামে একজন নিহত হয়েছেন। তিনি সিএনজি অটো রিকশার যাত্রী ছিলেন ও ওয়েজখালী এলাকার বাসিন্দা।
সোমবার (২২ এপ্রিল) রাত ৯ টার দিকে হাছননগর এলাকার ভুবির পয়েন্টে দুর্ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন,শহরের হাছননগর এলাকার সিএনজি চালক জীবন মিয়া(২০) ও ইব্রাহীমপুরের কৃষ্ণ রবি দাস (৩২)।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান,ভবন নির্মাণের সাটারিংয়ের মালপত্র নিয়ে মাহিন্দ্র ট্যাকটি বুড়ির স্থল এলাকার দিকে যাচ্ছিল, একেই সময় বুড়িস্থল থেকে একটি সিএনজি যাত্রী নিয়ে শহরের দিকে আসার পথে ভুবির পয়েন্টে মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই সুরেশ রবি দাস (৪০) মারা যায়। গুরুত্বর আহত সিএনজি চালক ও অপর যাত্রীকে উদ্ধার করে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ খালেদ চৌধুরী বলেন,ঘটনাস্থল গিয়ে লাশ উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এমআর
সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় পুকুরের পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
রবিবার (২১ এপ্রিল) বিকেল ৫টার দিকে উপজেলা সদরে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত দুই শিশু হলেন- পশ্চিম চান্দশীরকাপন গ্রামের সিরাজ মিয়ার ছেলে রিহান আত্তার ইয়াছিন (১০) ও নেত্রকাণার বারহাট্রা থানার নৈহাটি গ্রামের ইউসুফ রুহান (১১)। সম্পর্কে তারা ফুফাতো ও মামাতো ভাই।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্বনাথ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জয়ন্ত সরকার।
ইয়াছিন ও রুহান দুজনেই বিশ্বনাথ আলিয়া মাদ্রাসার ৩য় শ্রেণির ছাত্র। ইউসুফ রুহানের পরিবার দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বনাথ পুরান বাজারের ময়নুলের বাসায় বসবাস করে আসছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রবিবার বিকেল পাঁচটার দিকে উপজেলা সদরের তাদের বাড়ির পাশে পুকুরে পানিতে ইয়াছিন ও রুহান পড়ে যায়। এরপর তাদের পরিবারের সদস্যরা দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুজি শুরু করেন। পরে তাদের মরদেহ পুকুরের পানিতে ভেসে ওঠলে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানকার জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাদের দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন।
বিশ্বনাথ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জয়ন্ত সরকার বলেন, রবিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় ওসি রমা প্রসাদ চক্রবর্তীর নেতৃত্বে একদল পুলিশ দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে। এ বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলমান আছে।
এআই
সিলেটের দক্ষিণ সুরমা এলাকায় তীব্র দাবদাহে হিট স্ট্রোক করে এক রিকশাচালকের মৃত্যু হয়েছে। রোববার (২১ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে দক্ষিণ সুরমা পুলিশ বক্সের সামনে এ ঘটনা ঘটেছে।
মৃত রিকশাচালক হানিফ মিয়া (৩৪) হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার শিবপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং সিলেট শহরে অস্থায়ীভাবে বসবাস করে রিকশা চালাতেন।
দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি ইয়ারদৌস হাসান গণমাধ্যমকে জানান, দুপুর ১২টার দিকে এক রিকশাচালক দক্ষিণ সুরমা পুলিশ বক্সের সামনে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও জানান, নিহত রিকশাচালকের মরদেহ ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।