জাতীয়
সব দেখুনসর্বশেষ প্রকাশিত
রাজনীতি
সব দেখুনচলতি সপ্তাহে সর্বাধিক পঠিত
দেশের অন্যতম রিটেইল চেইন শপ ‘স্বপ্ন’ মিরপুর ১-এর মনিপুর ৬০ ফিটের বারেক মোল্লার মোড়ে নতুন আউটলেট চালু করেছে।
বুধবার (২৭ মার্চ) সকাল ১১টায় স্বপ্ন’র নতুন এই আউটলেট উদ্বোধন করা হয়। স্বপ্নের নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির বলেন, “আমার বিশ্বাস, নতুন এ আউটলেটে আমাদের সেবার পরিসর আরো বিস্তৃত হবে।”
স্বপ্নের পরিচালক (অপারেশনস) আবু নাছের বলেন, “উদ্বোধন উপলক্ষে গ্রাহকদের জন্য রয়েছে মাসব্যাপী আকর্ষণীয় সব অফার। বাই ওয়ান গেট ওয়ান ফ্রি ছাড়াও থাকছে নগদ মূল্যছাড়।”
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইনভেস্টর রুবেল আহম্মেদ, স্বপ্নের হেড অব বিজনেস এক্সপ্যানশন মো. শামছুজ্জামান, স্বপ্ন'র রিজিওনাল হেড অফ অপারেশন সাকের নুর, এরিয়া সেলস অপারেশন ম্যানেজার আলী আকবরসহ অনেকে।
পিএম
ঢাকার হাতিরঝিলের মধুবাগের একটি বাসায় অভাবের সংসারে চিকিৎসার জন্য ওষুধ কিনতে না পেরে জয়নাল আবেদীন (৪৫) নামে এক ব্যক্তি নিজের পেটে ছুরি ঢুকিয়ে আত্মহত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত ওই ব্যক্তি পেশায় রিকশাচালক ছিলেন।
মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত পৌনে ৯টায় মারা যান তিনি।
জয়নাল আবেদীন রংপুরের পীরগঞ্জ থানার হাসানপুর গ্রামের মৃত মোজামিয়ার ছেলে। বর্তমানে মগবাজার মধুবাগের ৩ নম্বর গলির বাসায় ভাড়া থাকতেন।
নিহতের স্ত্রী মঞ্জিলা বেগম জানান, আমার স্বামী রিকশা চালাতেন। চার বছর আগে হার্টের রোগ ধরা পড়ে তার। আমি বাসা বাড়িতে কাজ করি। আমার এক মেয়ে এক ছেলে। মেয়েটি একটি গার্মেন্টসে চাকরি করে। ছেলেটির বয়স পাঁচ বছর। আমরা গরিব মানুষ। হার্টের রোগের চিকিৎসা করাতে অনেক টাকা পয়সা লাগে। আমার স্বামী এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে কোনো কাজই করতে পারত না। আমাদের মা-মেয়ের সামান্য এই টাকায় সংসার চলত। অভাবের সংসারে খুব কষ্ট করে দিন চলে আমাদের। স্বামীর হার্টের রোগের চিকিৎসার জন্য এত টাকা পয়সা আমাদের নেই। তাই কখনো আমরা তার জন্য ওষুধ কিনে দিতে পারতাম, আবার অনেক সময় পারতাম না।
তিনি আরও জানান, আজ সন্ধ্যার পর শরীরের ব্যথায় আমার স্বামী কাতর হয়ে পড়ছিলেন। কিন্তু টাকা না থাকায় তার জন্য ওষুধ আনতে পারিনি। এই কষ্টে আমার স্বামী নিজের পেটে চাকু চালিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। পরে আমরা এই অবস্থা দেখে তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসি। পরে এখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ রাতের দিকে মারা যায়।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া চিকিৎসকের বরাত দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, হাতিরঝিল থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মরদেহটি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। আমরা বিষয়টি হাতিরঝিল থানাকে জানিয়েছি। ঘটনাটি তারাই তদন্ত করছে।
এফএস
রাজধানীর বনানী এলাকার কড়াইল বস্তিতে আগুন লেগেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের সাত ইউনিট ঘটনাস্থলে যাচ্ছে। একটি ইউনিট কাজ করছে।
রবিবার (২৪ মার্চ) বিকাল ৪টা ৫ মিনিটে আগুন লাগার খবর পাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেল কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম।
তিনি জানান, খবর পেয়ে একটি গিয়ে কাজ শুরু করেছে। আরও সাত ইউনিট পথে আছে।
এআই
রাজধানীর চকবাজারের ইসলামবাগ এলাকায় কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
শনিবার (২৩ মার্চ) রাত সাড়ে তিনটার দিকে লাগা আগুন ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিটের আড়াই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
আগুন লাগার বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার রাশেদ বিন খালিদ বলেন, চকবাজারের ইসলামবাগে একটি কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন লাগার খবর আসে রাত সাড়ে ৩টায়। খবর পেয়ে ৫ মিনিটের মধ্যে প্রথম ইউনিট পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিস। আগুনের মাত্রা বেশি হওয়ায় এরপর একে একে আটটি ইউনিট পাঠানো হয়।
তিনি আরও জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয়েছে পানির স্বল্পতায়। অগ্নিকাণ্ডে ভবনের সামনে ও পেছনে লাগোয়া অনেকগুলো ভবন থাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়ারও একটা শঙ্কা ছিল। সর্বশেষ আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে সকাল ৬টায়। আগুনের পাশাপাশি প্রচন্ড ধোয়ার কারণে প্রথমে ভেতরে প্রবেশ করতে বেগ পেতে হয় দমকলকর্মীদের।
আগুনের কারণ বা ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে আগুনের কারণ জানা যায়নি। ঘটনাস্থলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ গেছেন। তারা পরিদর্শন করবেন, তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। এরপরে জানা যাবে আগুনের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ।
প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ, ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের কোনো খবর জানাতে পারেননি ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা।
এআই
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আগামী ৬ এপ্রিল থেকে যাত্রী পরিবহনের জন্য সারাদেশের বিভিন্ন নৌপথে নিয়মিত লঞ্চের পাশাপাশি বিশেষ লঞ্চ চলাচল শুরু হবে। সেই সঙ্গে অগ্রিম টিকিট বিক্রির সিদ্ধান্তে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগ।
বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা গেছে, ঈদের চার-পাঁচ দিন আগে আগামী ৬ এপ্রিল ঢাকার সদরঘাট নৌ-টার্মিনাল থেকে বিশেষ লঞ্চ চলাচল শুরু করবে। এ জন্য ইতোমধ্যে ১৩০টি লঞ্চ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের ৪১টি রুটে এসব লঞ্চ চলাচল করবে।
বিআইডব্লিউটিএ-এর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক ইসমাইল হোসেন বলেন, আগামী ৬ এপ্রিল সদরঘাট টার্মিনাল থেকে বিশেষ লঞ্চ চলাচল শুরু হবে। ইতিমধ্যে ১৩০টি লঞ্চ প্রস্তুত করা হয়েছে। ঈদে নদীপথে ঘরমুখী মানুষের নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিতে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে। অগ্রিম টিকিট বিক্রি বিষয়ও সভায় আলোচনা হয়েছে কিন্তু দিনতারিখ এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এক সপ্তাহ বা পাঁচ-ছয়দিন আগেই জানানো হবে।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, দক্ষিণাঞ্চলগামী বেশ কয়েকজন যাত্রী সদরঘাট টার্মিনালে এসে লঞ্চের কেবিনের অগ্রিম টিকিটের জন্য ঘুরছেন। তারা টার্মিনালের পন্টুনে ভেড়ানো লঞ্চগুলোতে গিয়ে অগ্রিম টিকিটের খোঁজ করেন। ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে লঞ্চের কেবিনের অগ্রিম টিকিট কাটতে আসা সদরঘাট টার্মিনালে সাইফুল আকবর। তিনি বলেন, ৮ এপ্রিল গলাচিপায় গ্রামের বাড়ি যাব। তাই ভিড় এড়াতে আগে থেকেই লঞ্চের অগ্রিম টিকিট বুকিং দিতে এসেছি। এসে শুনলাম, এখনো লঞ্চের কেবিনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়নি। শিগগিরই অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হবে। এ কথা শুনে সেখান থেকে ফিরে আসি। ভাবছি, দুই থেকে তিন দিন পর আবার সদরঘাট আসব।
আরেক যাত্রী মিরপুর এলাকা থেকে আসা ফেরদৌসী জাহান বলেন, ঈদে প্রতিবছর পরিবার নিয়ে গ্রামের বাড়িতে একসঙ্গে ঈদ উদযাপন করি। লঞ্চের অগ্রিম টিকিট বিক্রির ঘোষণার পর টিকিট নিতে এলে অনেক ভিড় থাকে। আবার প্রায় সময় টিকিটও পাওয়া যায় না। সেই কথা ভেবে আগেভাগে টিকিট নিতে এসেছি। চর ফ্যাশনগামী এমভি টিপু লঞ্চে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, কিছুদিন পর অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হবে। তখন এসে টিকিট সংগ্রহ করব।
এমভি টিপু লঞ্চের কর্মচারী দিদার হোসেন বলেন, এখনো লঞ্চের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা শুরু হয়নি। কবে থেকে বিক্রি হবে, সে ব্যাপারে মালিকপক্ষ জানে।
এদিকে লঞ্চমালিকপক্ষের ভাষ্য, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কেবিনের যাত্রীর চাপ কম। যারা লঞ্চে নিয়মিত যাতায়াত করেন, সাধারণত তারাই অগ্রিম টিকিট সংগ্রহ করে থাকেন। অগ্রিম টিকিট ছাড়ার ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া আসেনি।
অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল সংস্থার ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক ও এমভি অভিযান-১০ লঞ্চের মালিক হামজা লাল জানান, যাত্রীদের ওপর নির্ভর করে বিশেষ লঞ্চের ব্যবস্থা করা হবে। সরকার নির্ধারিত ভাড়া যাত্রীদের কাছ থেকে নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে যাত্রীরা লঞ্চের অগ্রিম টিকিটের জন্য আসছেন। তবে অগ্রিম টিকিট বিক্রির বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
বিআইডব্লিউটিএ’র পিআরও মোবারক হোসেন মজুমদার জানান, আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে অভ্যন্তরীণ নদীপথে যাত্রীবাহী নৌযানের নিরাপদ ও দুর্ঘটনামুক্ত চলাচল নিশ্চিত করা এবং যাত্রী সাধারণের জানমালের নিরাপত্তায় যাবতীয় কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে করার লক্ষ্যে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মোবারক আরও জানান, ঈদের পাঁচ দিন আগে ও পাঁচ দিন পর পর্যন্ত টার্মিনালে লঞ্চের মাধ্যমে কোনও মোটরসাইকেল যাতায়াত করতে পারবে না। এসময় নদীতে কোনও বাল্কহেড চলতে পারবে না। যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল করা সব নৌপথে ৬ এপ্রিল থেকে বিশেষ লঞ্চ চলাচল করবে। চাহিদা অনুযায়ী ঈদের পাঁচ দিন পর পর্যন্ত এ বিশেষ লঞ্চ চলবে।
উল্লেখ্য, আসন্ন ঈদে লঞ্চে যাতায়াতকারীদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেখানো ও সংরক্ষণ করা বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে কেবিনে যাতায়াতকারীদের এনআইডি সংরক্ষণ করতে লঞ্চ মালিক-শ্রমিকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
পিএম
যশোরে পাল্টাপাল্টি হাতুড়ি পেটায় নারীসহ ১০ জন জখম হয়েছে। এক পক্ষ আরেক পক্ষকে লোহার রড ও হাতুড়ি দিয়ে জখম করেছে বলে অভিযোগ।
বৃহস্পতিবার (২৮মার্চ) রাত পৌনে ১২টার দিকে সদর ভায়না ফতেপুরে এ ঘটনাটি ঘটে।
আহতরা হলেন, ভায়না ফতেপুর গ্রামের মৃত আমিন উদ্দিন মোল্যার দুই ছেলে মিকাইল হোসেন (৫২), আজমাই মোল্যা (৪৫), ইসমাইল মোল্যার দুই ছেলে সুমন হোসেন (৩৫), মাহবুব আলম (৩২), বদরুল হায়দারের স্ত্রী রুপা আক্তার (৪০) ও প্রতিপক্ষের একই গ্রামের মৃত হাকিম মোল্যার ছেলে সাইফুল ইসলাম (৪৮), সাইফুল ইসলামের স্ত্রী রেহেনা খাতুন (৪৫), ছেলে শাহিন (২৫), শাকিল (২২) ও মৃত হাকিম মোল্যার ছেলে আব্দুল ওয়াদুদ (৬০)। তাঁরা যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হামলার কারণ হিসেবে দুই পক্ষ ভিন্ন ভিন্ন দাবি করেছেন।
আহত ইসমাইল মোল্যার স্বজনরা জানিয়েছেন, ভায়না ফতেপুর গ্রামে একটি কিশোর গ্যাং গড়ে উঠেছে। তারা ফতের মুদিখানার দোকানের সামনে গভীর রাত পর্যন্ত আসর বসিয়ে প্রকাশ্যে মাদক সেবন করে। এতে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। মাদক সেবনে নিষেধ করায় চক্রের সদস্যরা তাদের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। কিশোর গ্যাংয়ের পক্ষ নেয় স্থানীয় একটি পক্ষ। এরই জের ধরে রাতে তাদের ওপর হামলা চালায় আব্দুল ওয়াদুদ, শাহিন, সাইফুল, শাকিলসহ আরও কয়েকজন। দুর্বৃত্তরা এসময় তাদের ৫ জনকে লোহার রড ও হাতুড়িপেটায় জখম করে। পরে হামলাকারীরদেরও মারপিটে জখম করা হয়।
এদিকে প্রতিপক্ষের আহত শাহিন দাবি করেছেন, মাদক সেবনের প্রতিবাদ করা নিয়ে কোন গোলযোগ হয়নি। আজমাইলের মেয়ের সাথে মুদি দোকানি ফতের ছেলে সোহানের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তারা দুইজন অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি দিয়েছে। এই নিয়ে ফতের পরিবারের সাথে আজমাইলের পরিবার গোলযোগে জড়িয়ে পড়ে। কিন্তু আজমাইলের পরিবার বিনা কারণে আমার (শাহিন) চাচাতো ভাই সাব্বিরকে মারপিট করে। এর কারণ জানতে চাইলে গেলে অন্যদের মারপিট করা হয়৷ যে কারণে আমার পরিবারের লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে তাদেরকে মারপিট করেছে। পরে স্থানীয় লোকজন তাদের হাসপাতালে ভর্তি করেন।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আহত ১০ জনের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন রয়েছে। তাদের অবস্থা গুরুতর।
যশোর সদর উপজেলা উত্তর ললিতাদাহে সরকারি রাস্তার জায়গা দখল করে বসতঘর ও দোকান নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। দখলদার শাহাজাহানের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দাবিতে স্থানীয়রা সোচ্চার হয়েছেন। ইতিমধ্যে তার বিরুদ্ধে সদর সহকারি কমিশনারের (ভূমি) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন সাবেক মেম্বার ইব্রাহিম হোসেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, উত্তর ললিতাদাহ মৌজার ১৩১/১ নম্বর খতিয়নের ৫৪১ নম্বর দাগের সরকারি রাস্তার জমি অবৈধভাবে দখল করে নিয়েছেন ললিতাদাহ গ্রামের নুর মোহাম্মদের ছেলে শাহাজাহান। তিনি ইতিমধ্যে ওই জমিতে বসতঘর গোয়ালঘর ও দোকান নির্মাণ করেছেন। এতে ওই জমি দিয়ে মাঠে চলাচলকারী কৃষকরা দুর্ভোগে পড়ছেন।
এদিকে, প্রভাব খাটিয়ে সরকারি জমি দখলের ঘটনায় স্থানীয়রাও সোচ্চার হয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে উত্তেজনা রয়েছে।
এ ব্যপারে শাহাজাহান আলী জানান, সরকারি রাস্তার জমিতে বসত ঘর ও দোকান নির্মাণ করা হয়েছে এটা সত্য। সরকার চাইলে আমি ছেড়ে দেবো।
হৈবতপুর ইউনিয়ন সহকারি ভূমি কর্মকর্তা আরিফুল আলম জানান, শাহাজাহান সরকারি জমি দখল করে স্থাপনা তৈরি করেছেন। তাকে জমি ছেড়ে দেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, সরকারি জমি দখলের তদন্ত প্রতিবেদন তিনি সদর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তার (এসিল্যান্ড) কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
পিএম
বিশ্ববরেণ্য চিত্র শিল্পী এস এম সুলতানের ৯৯তম জন্ম জয়ন্তী উপলক্ষে ১৫দিন ব্যাপী "এস এম সুলতান মেলা" শুরু হচ্ছে আগামী ১৫ এপ্রিল। জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে এক প্রস্তুতি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
জেলা প্রশাসক ও সুলতান ফাউন্ডেশনের সভাপতি মোহাম্মদ অশফাকুল হক চৌধূরীর সভাপতিত্বে এসময় বক্তব্য রাখেন সুলতান ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব আশিকুর রহমান মিকু, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শাশ্বতী শীল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন প্রমূখ।
শহরের সুলতান মঞ্চে এছাড়া মেলার উদ্বোধন, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, চিত্র প্রদর্শনী, হা ডুডু, লাঠিখেলা, দড়িটানা, ঘৌড়দৌড়, ষাঁড়ের লড়াইসহ বিভিন্ন গ্রামীন খেলাধুলা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিদিন থাকবে আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এসময় সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
এবারের মেলায় থাকছে এস এম সুলতান ও বরেণ্য চিত্রশিল্পীদের আঁকা চিত্র প্রদর্শনী, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, বিভিন্ন গ্রামীণ ক্রীড়া উৎসব- হাডুডু, কুস্তি, ঘোড়ার গাড়ির দৌড়, ষাঁড়ের লড়াই, দড়ি টানাটানি, ভলিবল খেলা,কাবাডি, শরীর গঠন প্রতিযোগিতা, লাঠিখেলা, কলাগাছে ওঠা, বাঁশের লাঠির দৌড়, জাতীয় পর্যায়ের শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আবৃত্তি, নাটক, জারিগান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সুলতান স্বর্ণপদক প্রদান ও সুলতানের জীবন ও দর্শন নিয়ে প্রত্যহ সেমিনার।
উল্লেখ্য, বরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান ১৯২৪ সালের ১০ আগস্ট নড়াইল শহরের মাছিমদিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮২ সালে একুশে পদক, ১৯৯৩ সালে স্বাধীনতা পদক পান। ১৯৮৪ সালে তিনি বাংলাদেশ সরকারের রেসিডেন্ট অব আর্টিস্ট হিসেবে স্বীকৃতি পান এবং ১৯৮৬ সালে চারুশিল্পী সংসদ সম্মাননা পান। ১৯৪৬ সালে ভারতের সিমলায় তার একক চিত্র প্রদর্শনী, লাহোরে ১৯৪৮, করাচিতে ১৯৪৯, লন্ডনে ১৯৫০, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে ১৯৭৬ এবং ঢাকাস্থ জার্মান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে ১৯৮৭ সালে তার চিত্র প্রদর্শিত হয়। এছাড়া দেশ-বিদেশে বহুবার তার ছবি প্রদর্শিত হয়, যা সবার নজর কাড়ে। ১৯৯৪ সালে ১০ অক্টোবর মহান এ শিল্পী দীর্ঘদিন শ্বাসকষ্টে ভোগার পর যশোর সম্মিলিত হাসপাতালে মারা যান। সুলতানের স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য তার নিজ বাড়িতে নির্মিত হয়েছে এস এম সুলতান স্মৃতি সংগ্রহশালা।
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় শেখ ইট ভাটার ইট বোঝাই একটি পাখিভ্যানের (ইঞ্চিন চালিত ভ্যান) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সাথে মেরে চালক মুকরামিন (৩০) মারা গেছে।
আজ বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকাল ১০দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। নিহত মুকরামিন উপজেলার উজিরপুর গ্রামের মোল্লাপাড়ার হামিদুল ইসলামের ছেলে।
দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলমগীর কবির জনান, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে দামুড়হুদার শেখপাড়ায় অবস্থিত বকুল মিয়ার শেখ ইট ভাটার পাখিভ্যান চালক মুকরামিন ইট বোঝাই করে উজিরপুর গ্রামে যাচ্ছিলো। যাওয়ার পথে দর্শনা-চুয়াডাঙ্গা সড়কের দামুড়হুদা মডেল মসজিদের সামনে পাখিভ্যানের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে একটি গাছে ধাক্কা মেরে মারাত্মকভাবে আহত হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল ১০টার দিকে সে মারা যায়।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা. সাদিয়া মুকরামিনের মুত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়া ভারতীয় নাগরিক দীপক কুমারকে (৩৩) পাঁচ বছর পর পরিবারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টায় চুয়াডাঙ্গার দর্শনা এবং ভারতের গেদে বন্দরের শুন্য রেখায় দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী, ইমিগ্রেশন, কাস্টমস ও থানা পুলিশের কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিকভাবে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন।
মানসিক ভারসাম্যহীন দীপক বাংলাদেশের পিরোজপুর জেলা কারাগারে বন্দি ছিল প্রায় ৫ বছর। দীপকের কুমারের বাড়ি ভারতের বিহার রাজ্যের সামস্তীপুর জেলার মনিহারপুর গ্রামে।
বাংলাদেশে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের দায়ে পিরোজপুর জেলা পুলিশের হাতে আটক হয় দীপক। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আদালতের মাধ্যমে তাকে পিরোজপুর জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়। সাজার মেয়াদ শেষ হলে ২০২৩ সালের ১৮ অক্টোবর প্রত্যাবসনের জন্য সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গা কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
পরে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে দর্শনা বন্দরের চেকপোস্ট দিয়ে দীপক কুমারকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা সম্ভব হয়। দর্শনা সীমান্তে হস্তান্তর অনুষ্ঠানে দীপক কুমারের বাবা রাম নরেশ ঠাকুর এবং দুলাভাই গৌরব কুমার উপস্থিত ছিলেন।
হস্তান্তর অনুষ্ঠানের বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন বিজিবির দর্শনা আইসিপি কমান্ডার সুবেদার এনামুল কবির, দর্শনা ইমিগ্রেশন ইনচার্জ এসআই আতিক, কাস্টমস কর্মকর্তা মো. জাহিদুজ্জামান, শরীফ উদ্দিন, দর্শনা থানার এস আই ফাহিম হোসেন, চেকপোস্টের এএসআই মোমিন প্রমুখ।
ভারতের পক্ষে ছিলেন ১৩২ বিএসএফ সীমানগর ব্যাটালিয়নের স্টাফ অফিসার মেজর পি নাগা রঞ্জন, গেঁদে ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার এসি বিতাশী, গেদে ইমিগ্রেশন ইনচার্জ জিসি দে, কাস্টমস কর্মকর্তা রামাতার পি যাদব, কৃষ্ণগঞ্জ থানার এএসআই তন্ময় দাস, ডিআইবি সাধন মন্ডল ও নব কুমার চক্রবর্তী, রেডক্রস প্রতিনিধি চিত্তরঞ্জন ন্থা প্রমুখ।
বড় ভাই মাকে গালাগাল করতো। উচ্ছৃঙ্খল আচরণ ও মাদকসেবনসহ বিভিন্ন অপকর্ম করতো। এর জের ধরে বোন, দুলাভাই ও আপন ছোট ভাই মিলে হত্যা করে বড় ভাইকে। পরদিন সকালে তার মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয়রা। ঘটনাটি কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার শালুকিয়া গ্রামের।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) রাতে তিন জনকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বরুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী এসব তথ্য জানান।
জানা গেছে, বুধবার (২৭ মার্চ) বরুড়া পৌরসভার শালুকিয়া এলাকার নিজ ঘর থেকে শরীফ হোসেন (৩৫) নামের এক যুবকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পর নিহত শরীফ হোসেনের মা রৌশন আরা বেগম বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন।
এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলেন হত্যাকাণ্ডের শিকার শরীফের ছোট ভাই আরিফ হোসেন (২২), দুলাভাই মো. নাছির উদ্দিন (৪৩) ও বোন খুকি আক্তার (৩৫)।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। তারা জানায়, শরীফ উচ্ছৃঙ্খল ছিল। সে মাদক সেবনসহ বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিল। শরীফ তার মাকে প্রায়ই গালিগালাজ ও মারধর করতো। ছোট ভাই আরিফ হোসেনের সঙ্গেও তার ঝগড়াঝাঁটি ছিল। কিছুদিন আগে আরিফের একটি অটোরিকশা শরীফ জোর করে বিক্রি করে। এরপর থেকে দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। তা ছাড়া শরীফ এলাকার লোকজনের বিভিন্ন রকম ক্ষতি করায় লোকজন তার বড় বোন খুকি আক্তারের কাছে বিচার চায়। এ কারণে বড় বোন শরীফকে শাসন করার জন্য বিভিন্ন কথাবার্তা বলতো। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে বড় বোন খুকি আক্তার, স্বামী মো. নাছির উদ্দিন ও ছোট ভাই আরিফ হোসেন তাদের একজন প্রতিবেশীকে নিয়ে পরিকল্পনা করে যে, শরীফ হোসেনকে মারধর করে পঙ্গু করে ঘরে বসিয়ে খাওয়াবে।
এরই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) রাতে স্থানীয় একটি পুকুরপাড়ে শরীফ হোসেনকে একা পেয়ে তারা রড, দা ও টর্চলাইট দিয়ে তার মাথা, হাত-পা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। পরে তার হাত-পা বেঁধে আসামি নাছির উদ্দিন বাড়ির উঠানে নিয়ে যায়। সেখানে আবারও মারধর করে। এতে সে দুর্বল হয়ে গেলে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় শরীফ হোসেনকে তার ঘরে ফেলে আসে। সকালে তাকে মৃত উদ্ধার করা হয়। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা, রড, টর্চলাইট উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বরুড়া থানার ওসি মো. রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী জানান, গ্রেফতারকৃত আসামিদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
এফএস
কক্সবাজার টেকনাফের গহীন পাহাড়ী এলাকায় পুলিশ সদস্যরা সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে অস্ত্রধারী দু'জন অপহরণকারীকে আটক করেছে। এসময় তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক অপহরণকারিদের আস্তানা থেকে বিপুল পরিমাণ দেশীয় তৈরি অস্ত্রসস্ত্র উদ্ধার করতেও সক্ষম হয় পুলিশ।
ধৃত দুই অপহরণকারী হচ্ছে-টেকনাফ উপজেলা হোয়াইক্যং ইউপি ৩নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত রইক্ষ্যং এলাকার বাসিন্দা মৃত রুহুল আমিনের পুত্র মো. নবী সুলতান প্রকাশ নবীন (৩৫) এবং বাহারছড়া ইউপির অন্তর্গত উত্তর শিলখালী এলাকার বাসিন্দা মৃত হোছনের পুত্র মো.ছলিম (২৬)।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) রাত তিনটার দিকে উক্ত অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গনি সময়ের কন্ঠস্বরকে জানান, গত ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে অপহরণ হওয়া ১০ ভিকটিমকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করার জন্য গত বুধবার (২৭ মার্চ) বিকাল থেকে বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) গভীর রাত পর্যন্ত হোয়াইক্যং,বাহারছড়া ইউনিয়নের অন্তর্গত গহীন পাহাড় গুলোতে পুলিশের অভিযানিক দলের সদস্যরা বেশ কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে।
এরপর পুলিশের অভিযান চলাকালীন সময়ে অপহরণকারীরা দিশেহারা হয়ে অপহৃত ১০ জনকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। জিম্মি দশা থেকে ফেরত আসা ভিকটিমদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এই দু'জন অপহরণকারিকে আটক করতে সক্ষম হই। পাশাপাশি ধৃত দুই অপহরণকারীর হেফাজত থাকা ১টি দেশীয় তৈরী ওয়ান শুটার গান (এলজি), ৩টি বড় দা, ৪টি মাথা বাকানো দা,১টি লম্বা দা উদ্ধার করা হয়।
এবিষয়ে হোয়াইক্যং ইউপির ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. শাহজালাল সময়ের কন্ঠস্বরকে জানান, ফেরত আসা অপহৃতরা সবাই মিলে প্রায় দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ফেরত এসেছে। তবে সংঘটিত ঘটনার পর পুলিশ সদস্যরা গহীন পাহাড় গুলোতে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে। একপর্যায়ে পুলিশ সদস্যদের অভিযানে অপহরণকারীরা দিশেহারা সল্প টাকার বিনিময়ে অপহৃত ১০ জনকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে বলেও জানান তিনি।
পিএম
চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে অবৈধভাবে মাটি কাটার সাথে যুক্ত থাকায় ৯টি ড্রাম ট্রাক জব্দ করেছে উপজেলা প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) রাত ১২টা থেকে তিনটা পর্যন্ত উপজেলার ভূজপুর থানার সুয়াবিলে এই অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে সহকারী কমিশনার ( ভূমি) মো. মেজবাহ উদ্দিন।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ভূজপুর থানার সুয়াবিল ইউপির হাজারিখিলে অবৈধভাবে মাটি কেটে ইট ভাটায় মাটি সরবরাহের সময় নয়টি ড্রাম ট্রাক জব্দ করা হয়। এসময় মোবাইল কোর্টের উপস্থিত টের পেয়ে মাটি কাটার সাথে যুক্তরা পালিয়ে যায় বলে জানা যায়।
অভিযানের বিষয়ে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, জনস্বার্থে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
অভিযানে সহযোগিতা করে ভূজপুর থানা পুলিশ, আনসার ও স্থানীয় জনসাধারণ।
পিএম
বন্ধুদের সাথে ইফতার পার্টিতে যোগ দিতে গিয়ে ট্রাক-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে এক প্রবাসী তরুণের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আরও এক মোটরসাইকেল আরোহী আহত হয়।
নিহত আনোয়ার হোসেন অনিক(২২) কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের ৬নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ জগদানন্দ গ্রামের মাজাহারুল হক মন্টু মিয়ার ছেলে।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টার দিকে ইফতারির পূর্ব মুহূর্তে নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদীর ব্যস্ততম স্থান টোকিও ফুডের পাশে হায়দার ইলেক্ট্রনিক্সের সামনের মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, দিনভর রোজা থেকে বিকেলের দিকে বন্ধুদের ইফতার পার্টিতে যোগ দিতে মোটরসাইকেল যোগে গ্রামের বাড়ি থেকে জেলা শহর মাইজদীতে আসে অনিক। সন্ধ্যা ৬টার দিকে জেলা শহর মাইজদীর টোকিও ফুডের পাশে হায়দার ইলেক্ট্রনিক্সের সামনে ট্রাক ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে অনিক গুরুত্বর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
নিহতের বাবা মন্টু মিয়া জানান, অনিক ২ মাস আগে বিয়ে করে। সে আবুধাবি প্রবাসী ছিল। ২মাস আগে সে দেশে ফিরে আসে। আসরের নামাজের পর সে বাড়ি থেকে বের হয়। আমাকে বলেছিল তাদের একটা ইফতার পার্টি আছে। ইফতার পার্টি শেষে বাড়ি ফেরার কথা। কিন্তু মাগরিবের আজান দিতে না দিতেই ইফতার হাতে নিতেই একটি নম্বর থেকে আমার মুঠোফোনে কল দিয়ে জানানো হয় অনিককে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। হাসপাতালে এসে পৌঁছাতেই জানতে পারি আমার ছেলে আর নেই। সন্তান হারানোর আর্তনাদে বাবার প্রলাপ "ছেলে আমার বাড়ি ঠিকই ফিরবে তবে পায়ে হেঁটে নয় বাবার কাঁধে চড়ে"
সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে। লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এফএস
পুকুরের পানিতে ডুবে নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার ৪নং কাদরা ইউনিয়নের তাহিরপুর গ্রামের মোহাম্মদ তাহসিন মাহমুদ (৪) নামে এক শিশু মাদ্রাসা ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ ) দুপুরের দিকে তাহিরপুর গ্রামের মিজি বাড়ীতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মোহাম্মদ তাহসিন মাহমুদ তাহিরপুর তামিরুল উম্মাত ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও ব্যবসায়ী হেদায়েত উল্যা মিয়াজীর ২য় সন্তান ও তাহিরপুর নূরানী তালিমুল কুরআন হাফেজি মাদ্রাসার প্রথম জামায়াতের ছাত্র।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুপুরে শিশু মোহাম্মদ তাহসিন মাহমুদের মা তাকে ঘরে রেখে ঘরের কাজে ব্যস্ত ছিলো। এসময় মায়ের অগোচরে সে বাড়ীর পাশে পুকুরের পানিতে পড়ে যায়। দীর্ঘ সময়েও তার সাড়া শব্দ না পেয়ে পরিবারের সদস্যরা উদ্বেগ উৎকণ্ঠ নিয়ে তাকে খোঁজাখুজি শুরু করে। কিন্তু কিছুতেই দেখা মিলছে না তাহসিনের এক পর্যায়ে দুপুর ২টার দিকে পুকুরে ভাসতে দেখে শোর চিৎকারে বাড়ির পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। দ্রুত পুকুর থেকে শিশুটিকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে সেনবাগ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। শিশুর মৃত্যুর খবরে পরিবারে নেমে আসে শোকের ছায়া ।
এ বিষয়ে সেনবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজিম উদ্দিন বলেন, পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যুর বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় বিষয়টি অবগত করা হয়নি।
এফএস
মুড়ি অতিথি আপ্যায়ন , নাস্তা অথবা অন্য কোন খাবারের সহযোগী হিসেবে বাঙালি ঐতিহ্যের সাথে মিশে আছে। গ্রামের নারীরা মুড়ি তৈরিতে বেশ পারদর্শী। কৃষক নতুন ধান ঘরে তুলেই উৎসবমুখর পরিবেশে মুড়ি প্রস্তুত শুরু করে দেয়। প্রতি বাড়িতেই চলে মুড়ি তৈরি ধুম; পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাকিটা বিক্রি করে দেয়। এতে বাড়তি আয় করে অনেক পরিবার। কিছু পরিবার পেশা হিসেবে নিয়েছে বহুকাল থেকে। একটা সময় ছিল মুড়ি তৈরি করে হাটে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কালের বিবর্তনে সাথে সাথে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে এই পেশাতেও। এতে করে উৎপাদন বেড়েছে কয়েক গুণ। সনাতন পদ্ধতিতে হাতে ভাজা মুড়ির স্বাদ ও গন্ধ নেই আগের মতো। হাতে ভাজা মুড়ি তৈরিতে রয়েছে নানা কলাকৌশল। এতে করে যেমন শ্রম ও অর্থ ব্যয় হয় মেশিনে তৈরিতে তুলনামূলক ভাবে দুটোই কম হয়। হাতে ভাজা মুড়ির খরচের পরিমাণ অনেক বেশি। বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে মুড়ি তৈরি পেশা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে অনেকেই।
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার ফুলবাড়ি ইউনিয়নের কম্বল পড়া, বাশাকৈর গ্রামের অধিকাংশ পরিবারের পত্রিক পেশা মুড়ি ভেজে বিক্রি করা। এখান কার মুড়ি স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে বিক্রি হতো দেশের বিভিন্ন হাটবাজারে। কয়েক বছর আগে গ্রামের মেঠো পথ ধরে হাঁটতেই নাকে ভেসে আসে গরম মুড়ির মিষ্টি গ্রান। বর্তমানে অতি চেনা মুড়ি ভাজা গ্রামের মানুষ গুলো পেশা বদল করছে। রমজান আসলেই আবার প্রান চঞ্চল ফিরে আসে এই গ্রামে। নতুন উদ্যমে মুড়ি ভাজার কারিগররা লেগে পরে তাদের পুরনো পেশায়। বাড়তি আয়ের টাকা দিয়ে ঈদ উদযাপন করতে পারে পরিবারের সদস্যরা।
কম্বল পড়া গ্রামের অর্ধশত বছর বয়সী রহিমা খাতুন জানান, এই গ্রামে নতুন বৌ হয়ে আসার পরদিন থেকেই মুড়ি ভাজার কাজে লেগে পরি। প্রথম দিকে ভালো মুড়ি ভাজতে পারতাম না। স্বাশুরির কাছ থেকে শিখেছি মুড়ির ধান প্রস্তুত সেখান থেকে মুড়ি ভাজার নানা কৌশল। প্রতিদিন গড়ে ৭ মন চালের মুড়ি ভেজে ছি। দেশের বিভিন্ন হাটবাজারে পাইকাররা মুড়ি কিনতে বাড়িতে আসতো। মুড়ির পাশাপাশি খই , চিড়া ও মুওয়া তৈরি করে বিক্রি করেছি। এ সব মুখরোচক শুকনো খাবার বিক্রি করে সংসার চালিয়েছি পাশাপাশি স্থায়ী সম্পদ করেছি অনেক। এসব এখন গল্পের মতো মনে হয়। বাজারে তাহলে মুড়ির চাহিদা কমে গেছে। অনেকের মুখে শুনি বাজার নাকি ছেয়ে গেছে মেশিনে ভাজা মুড়ির কারনে। সাদা রঙের অনেক বড় হয় হাতে চাপ দিলেই আটার মতো গুড়া হয়ে যায়। খেতে কোন স্বাদ লাগে না মুড়িতে নাই আগের মতো গ্রান। থাকবে কি করে এসব মুড়ি তৈরিতে ব্যাবহার হয় হাইব্রিড জাতের ধান; ভাজার সময় দেয়া হয় নানা ধরনের ওষুধ , হাতের স্পর্শে পায়না। আমরা মুড়ি ভাজার আগে ধান থেকে চাল; চাল থেকে মুড়ি কোথাও ব্যাবহার করিনি ওষুধ নিজেদের হাতে করেছি সব। ওই সব মুড়ির কারনে হাতে ভাজা মুড়ির কদর কমে গেছে। তাদের খরচ অনেক কম । আমাদের একদিকে খরচ বেশি অন্যদিকে আগুনের সাথে যুদ্ধ করে তপ্ত বালিতে ভাজতে হয় মুড়ি, ভালো মানের মুড়ি ভাজতে সময় লাগে অনেক। সবকিছু মিলিয়ে আমাদের আগের মতো দেশীয় মুড়ির চাহিদা নাই বলে জানালেন।
মুড়ি ভাজার কাজের মূল কারিগর গৃহিণীরা তাদের সঙ্গে এই কাজে যুক্ত হচ্ছেন তাদের পরিবারের ছোট ছোট সদস্যরাও বাদ পরছেনা তাদের স্বামীরা। স্বামী-স্ত্রী মিলেমিশে মুড়ি ভাজার দৃশ্য দেখা গেছে বিভিন্ন বাড়িতে।
মুড়ি ভাজার সাথে সহযোগী রেবেকার স্বামী সুলতানা মিয়া বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে বাড়িতে মুড়ি ভেজে বিক্রি করছি। মুড়ি বিক্রি করে কোন মতে সংসার চলে যায়। রমজান মাস এলে মুড়ির চাপ বেড়ে যায় অনেক। আমাদের গ্রামের হাতে ভাজা মুড়ির খ্যাতি রয়েছে দেশব্যাপী। এই মুড়িতে কোনো রাসায়নিক সার দেয়া হয় না। লবণ আর বালু দিয়ে ভাজা হয় মুড়ি। তাই সারা বছর ধরে আমাদের মুড়ির চাহিদা বেশিই থাকে। মুড়ি ভাজতে আমন,পুইকা,বি আর-১১ ব্যাবহার হয়। ১ মণ ধানে ২৭ কেজি চাল হয়।১মণ চালের মুড়ি ভাজলে ১৮ -২০ কেজি মুড়ি তৈরি হয়। রমজান মাসে সারাদিন মুড়ি ভাজালেও অন্য সময় আমরা এক বেলা মুড়ি ভাজার কাজ করি।
কদম আলী গ্রামে ঘুরে ঘুরে মুড়ি কিনতে আসা পাইকারের সাথে দেখা তিনি বলেন, আমি গ্রাম থেকে মুড়ি কিনে ঢাকা শহরের বড় বড় ব্যবসায়ীদের দোকানে পাঠিয়ে দেই। হাতে ভাজা মুড়ির চাহিদা সারা বছর থাকলেও রমজানে এর চাহিদা বাড়ে কয়েক গুণ। বর্তমানে হাতে ভাজা প্রতি কেজি মুড়ি বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকায়। মেশিনে তৈরি মুড়ি বিক্রি হয়৭০-৮০ টাকায়। হাতে ভাজা মুড়ি রাসায়নিক মুক্ত হাওয়ায় স্বাস্থ্য সচেতন লোকরা বেশি কিনে। রমজানের মাসজুড়ে হাতে ভাজা মুড়ি সাপ্তাহে ২০থেকে ২৫ মন করে কিনি। বছরের অন্যান্য দিনগুলোতে সাপ্তাহে ১০ থেকে ১২ মন কিনি। মেশিনের মুড়ির দাম কম থাকায় ওইসব মুড়ি বেশি চলে।
কালিয়াকৈর সদরের মুড়ির দোকান থেকে হাতে ভাজা মুড়ি কিনতে আসা ক্রেতা স্বপ্না বলেন, মেশিনের মুড়ির স্বাদ ভালো হয়না। কিন্তু হাতে ভাজা মুড়ি অনেক সুস্বাদু এবং খেয়েও তৃপ্তি পাওয়া যায়। তাই প্রতিবছর এখান থেকেই মুড়ি কিনে নিয়ে যাই। গত বছরের তুলানায় এ বছর মুড়ির দাম বেশি । যে মুড়ি আগে ৪৫-৬০টাকা কেজিতে কিনেছি এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৮০টাকায়। আর হাতে ভাজা মুড়ি বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকায়।
বহুদিনের পত্রিক পেশা অল্প পুঁজির এই ব্যবসা করে কালিয়াকৈর উপজেলার ফুলবাড়ি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের মানুষরা সুনাম কামিয়েছে। কোনো সরকারি বেসরকারি ব্যাংক এগিয়ে আসেনি তাদের পাশে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান গুলো স্বল্প সুদে এসব মুড়ি উৎপাদনকারীদের ঋণ সহায়তা দিলে ব্যবসার পরিধি বাড়ানো সম্ভব বলে মনে করছেন মুড়ি উৎপাদনকারীরা। তাদের দাবি, সরকার তাদের জন্য সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করলে তারা বেশী করে মুড়ি ভাজতে ও বিক্রি করতে পারবে।
কালিয়াকৈর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মিজানুর রহমান জানান, হাতে ভাজা মুড়ি খেতে অনেক সুস্বাদু। এই মুড়িতে কোন ধরনের রাসায়নিক না থাকায় স্বাস্থ্য ঝুঁকি থাকে না। মেশিনে ভাজা মুড়ি বিভিন্ন রাসায়নিক প্রক্রিয়া অবলম্বন করে । ওইসব মুড়ি খেলে বিভিন্ন ধরনের রোগের আক্রমণ হতে পারে। মুড়ি ভাজা এই শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্টদের সরকারিভাবে সহযোগিতা করার তেমন কিছু না থাকলেও দলগতভাবে তারা যদি আবেদন করে সেক্ষেত্রে সুদ বিহীন ঋণ বিতরণ করা যেতে পারে।
এফএস
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় গরু চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে দুই যুবক নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) রাত দুইটার দিকে কাপাসিয়ার উপজেলার সিংহশ্রী ইউনিয়নের নামিলা গ্রামের চান মিয়ার বাড়িতে একজন ও একই ইউনিয়নের বড়িবাড়ি গ্রামের ধানক্ষেত অপর একজন নিহত হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে নিহতের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।
এলাকাবাসী জানান , শুক্রবার (২৯ মার্চ) রাত ২টার দিকে কাপাসিয়া থানাধীন সিংহশ্রী ইউনিয়নের নামিলা গ্রামে মনির উদ্দিনের ছেলে মো: চান মিয়ার বাড়িতে অজ্ঞাত পরিচয়ের কিছু লোক গরু চুরির উদ্দেশ্যে ঢুকে। এসময় চান মিয়া গরু চুরির বিষয়টি টের পেয়ে ডাকাডাকি করে এলাকাবাসী জড়ো করেন। এসময় স্থানীয় এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে একজনকে ধরে ফেলে এবং গনপিটুনি দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। অপরজনকে স্থানীয়রা ধাওয়া দিলে পার্শ্ববর্তী বড়িবাড়ি গ্রামে ধানখেতের আড়ালে লুকায়। পরে উত্তেজিত এলাকাবাসী তাকে ধান খেতের আড়াল থেকে খুঁজে বের করে পিটুনি দিলে ঘটনাস্থলেই গরু চোর সন্দেহে অপরজন নিহত হয়।
সিংহশ্রী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার পারভেজ জানান, গরু চুরি রোধে এলাকায় গ্রামবাসী পাহাড়া বসিয়েছিলেন। শুক্রবার রাতে গাড়িতে করে একটি কৃষকের গরু চুরি করতে কয়েকজন। গ্রামবাসী গরুর চুরির বিষয়টি টের পেয়ে একজোট হয়ে দুইজনকে গণপিটুনি দেয়। এতে ঘটনাস্থলে নামিলা গ্রামে একজন ও পাশ্ববর্তী বড়িবাড়ি গ্রামের ধানক্ষেতে একজনসহ দুইজন নিহত হয়েছেন। আরো চার-পাঁচজন গরু চোর এখনো এলাকায় আছে, গ্রামবাসী তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।
এ বিষয়ে কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর মিয়া জানান, কাপাসিয়া উপজেলাধীন সিংহশ্রী ইউনিয়নের নামিলা গ্রামের মোসলেমের বাড়ীতে অজ্ঞাত লোকজন গরু চুরি করতে যায়। পরে এলাকাবাসী টের পেয়ে দু্জনকে আটক করে গণপিটুনি দেয়। পরে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনী ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
পিএম
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুরে স্বর্ণ ও নগদ টাকা লুটের চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দুর্বৃত্ত কারীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হয়েছেন বাবা ও ছেলে। ঘটনাস্থল থেকে একটি তাজা ককটেল উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ব্যবসায়ী মানিক তাঁর বাড়ির কাছে পৌঁছা মাত্রই ৪-৫ জনের একদল দূর্বৃত্ত তাদের উপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে স্বর্ণ ব্যবসায়ী মানিক মিয়ার কাছে থলেতে রাখা নগদ টাকা ও স্বর্ণ লুটের চেষ্টা করে। দূর্বৃত্তকারীরা দারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ী মানিক মিয়া (৫০) তার ছেলে সজিব হোসেনকে (১৭) কুপিয়ে জখম করে। এসময় ব্যবসায়ীদের চিৎকারে সড়কের দুই পাশের
অন্য ব্যবসায়ীরা দূর্বৃত্ত কারীদের ধাওয়া দিলে তারা প্রাইভেটকারে করে দ্রুত পালিয়ে যায়।
পরে স্থানীয়রা আহত বাবা ছেলেকে উদ্ধার করে শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন। খবর পেয়ে মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ীর একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে একটি তাজা ককটেল উদ্ধার করেছে।
কালিয়াকৈর থানাধীন মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ সাইফুল আলম জানান, সোনিয়া জুয়েলার্সের মালিক স্বর্ণ ব্যবসায়ী মো. মানিক মিয়ার উপরে হামলা করে স্বর্ণালংকার লুট করার চেষ্টা করেছে দুষ্কৃতকারীরা। তবে হামলাকারীরা লুটের ঘটনায় ব্যর্থ দ্রুত পালিয়ে গেছে। তাদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের অভিযান চালানো হচ্ছে।
পিএম
সোনারগাঁও প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার প্রেস কার্যালয়ে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রেস ক্লাবের সহ সভাপতি মোক্তার হোসেন মোল্লার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিকের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত।
বিশেষ অতিথি ছিলেন সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এডভোকেট শামসুল ইসলাম ভূঁইয়া, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম। সম্মানিত অতিথি ছিলেন, সনমান্দী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহিদ হাসান জিন্নাহ, বারদী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান বাবুল, উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক রফিকুল ইসলাম নান্নু, প্রচার সম্পাদক মোস্তফা কামাল নিলু, সহ-দফতর সম্পাদক রফিকুল হায়দার বাবু সাবেক সভাপতি গাজী মজিবুর রহমান, প্রেস ক্লাবের উপদেষ্টা মাহফুজুর রহমান, সাইফুল ইসলাম রিপন, সোনারগাঁ থানার উপ পরিদর্শক পঙ্কজ কান্তি সরকার, পৌর যুবলীগের সভাপতি আসাদুল ইসলাম আসাদ, উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য মোহাম্মদ হোসাইন, সাবেক উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কোহিনূর ইসলাম রুমা, উপজেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এডভোকেট নূরজাহান বেগম, প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি ফজলে রাব্বি, সাবেক সভাপতি অসিত কুমার দাস,সাবেক আহবায়ক মাসুদ শায়েম, প্রেম ক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল হোসেন,অর্থ সম্পাদক মিজানুর রহমান,সুবর্ণগ্রাম ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা কবি শাহেদ কায়েস, উদীচী শিল্পগোষ্ঠির সোনারগাঁ শাখার সভাপতি শংকর প্রকাশ, সোনারগাঁ প্রেস ইউনিটির সভাপতি ফরিদ হোসেন, পিরাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান রুনা আক্তার, সোনারগাঁও প্রেসক্লাবের সদস্য ইয়াকুব হোসেন, কমারুল ইসলাম পাপ্পু, সুমন মিয়া, সালাউদ্দিন, সজীব হোসেন, আসিফ রেজা প্রমূখ।
অনুষ্ঠানে ক্লাবের প্রয়াত সদস্য ও সদস্যদের প্রয়াত আত্মীয় স্বজনের রুহের মাগফেরাত এবং দেশ ও জাতির কল্যানে দোয়া করা হয়।
এফএস
মানিকগঞ্জ শহরের প্রবেশদ্বার নামে পরিচিত মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডের পৌরসভা মার্কেটের সামনের রাস্তা । যা সকলের কাছে অতি পরিচিত। আর সেই পৌরসভা মার্কেটের সামনের যানজটই এখন মানিকগঞ্জ বাসীর দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গ্রাম থেকে শহরের প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের আনাগোনা এই রাস্তায় অথচ এখানে পা ফেলার জায়গা থাকে না অবৈধ স্থাপনা ও দোকানের বধিত অংশে মালা মাল রাখার কারণে।
তাই যানজট নিরসন ও পথচারীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে মানিকগঞ্জ পৌরসভা কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মানিকগঞ্জ পৌরসভা কর্তৃপক্ষের উদ্যেগে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড ও পৌর সুপার মার্কেটের সামনের সড়ক ও ফুটপাত থেকে শতাধিক হকার ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জহিরুল আলম, পৌরসভার প্যানেল মেয়র তসলিম মিয়া ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর রাজিয়া সুলতানাসহ মানিকগঞ্জ থানা পুলিশ ও পৌরসভার কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
অথচ বিকেল ৫টায় অভিযান শেষ হওয়ার কিছু সময়ের মধ্যেই আবারও হকার ও ভাসমান দোকানিরা ফের ফুটপাত দখলে নিয়ে নতুন করে তাদের দোকানপাট বসিয়ে পড়ে ।
কার আগে কে নিজের অবৈধ স্থাপনা পুন:স্থাপন করবে সেটা নিয়ে শুরু হয় পাল্লাপাল্লি ।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড ও পৌর সুপার মার্কেটের সামনের সড়ক, হাসপাতাল গেটসহ আশপাশের ফুটপাত এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, উচ্ছেদ অভিযান শেষ হতেই হকাররা পাল্লা দিয়ে নিজেদের দোকানপাট বসানোর কাজ করছে।
কিছু কিছু হকার ভ্যান-ট্রলি নিয়ে নিজেদের ভাসমান দোকান বসিয়ে রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে বেচাকেনা শুরু করে দিয়েছে। বাসস্ট্যান্ড এলাকার হোটেল ব্যবসায়ীরা নিজেদের হোটেলের সামনের ফুটপাতে টেবিল, বড় পাতিলসহ অন্যান্য জিনিষপত্র বসিয়ে ফুটপাত দখল করে পথচারীদের যাতায়াতে বাধা সৃষ্টি করছে। অন্যান্য ভ্রাম্যমান ব্যবসায়ীরাও নিজের অস্থায়ী দোকানপাট বসিয়ে ফুটপাতকে পূর্বের অবস্থায় নিয়ে এসেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন হকার জানায়, রমজানের অর্ধেক শেষ হয়ে গেছে, কয়েক দিন পর ঈদ। রোজায় পরিবারের সদস্যদের খাবার, চিকিৎসা ও পোশাক, বাচ্চাদের পড়ালেখা ও অন্যান্য খরচসহ সব মিলিয়ে প্রচুর খরচ। ঈদে পরিবারের লোকজনকে কিছু হলেও কেনাকাটা করে দিতে হবে। এমন সময়ে তাদের উচ্ছেদ করার ফলে তারা একেবারে নি:স্ব হয়ে গেছেন। ফলে পরিবারের দিকে তাকিয়ে বাধ্য হয়ে ফের দোকানপাট বসিয়েছেন।
আরোও বলেন , তারা কাজ করে খেতে চায়, কিন্ত তাদের জন্য স্থায়ী কোন ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়েই ফুটপাতে বসেন। স্থায়ী কাজের সুযোগ বা স্থায়ীভাবে কোথাও ব্যবসা করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধও জানান হকাররা।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ পৌরসভা কর্তৃপক্ষ বলেন, অভিযানের পর হকাররা পুনরায় ফুটপাত দখল করলে দুয়েক দিনের মধ্যে আবারও অভিযান পারিচালনা করা হবে। এছাড়া, হকার নিয়ন্ত্রণে শীঘ্রই আমাদের একটি পেট্রোল টীম চালু করা হবে।
এফএস
ভোলায় পৃথক দুর্ঘটনায় নারী ও শিশুসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন বজ্রপাতে, একজন পানিতে ডুবে এবং আরেকজন আত্মহত্যা করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিকালে ও রাতে পৃথক তিনটি ঘটনায় তাদের মৃত্যু হয়। সংশ্লিষ্ট থানার কর্তৃপক্ষ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে বৃহস্পতিবার বিকালে ‘রাকিব ব্রিকস ফিল্ডে’ বজ্রপাতে বাহাদুর নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৪ জন। তাদের বরিশাল শেরেবাংলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
একই সময়ে সদর উপজেলার ভেলুমিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের একটি খাল থেকে হাসনাইন নামের এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। হাসনাইন ওই ওয়ার্ডের মো. আলাউদ্দিন মিয়ার ছেলে।
এছাড়াও রাত সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার ৩ নম্বর পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ঝর্ণা আক্তার (২০) নামে এক নারীর গলায় ফাঁস দেওয়া ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার হয়েছে। ঝর্ণা ওই ওয়ার্ডের মো. রিয়াজ হোসেনের স্ত্রী ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে মৃতদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
পিএম
বরগুনার পাথরঘাটায় বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে কোস্ট গার্ড প্রায় ৬ কোটি টাকার হাঙ্গর ও অবৈধ জাল জব্দ করেছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার বলেশ্বর ও বিষখালী নদীর পাথরঘাটা লঞ্চঘাট, তালতলা, চরদুয়ানি, টেংরা, হাজির খাল, রুহিতা, পদ্মা ও তৎসংলগ্ন এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। এসময় ১ হাজার কেজি হাঙ্গর, নিষিদ্ধ চরঘেরা ৩ লাখ ৫০ হাজার মিটার ও ৪ পিস বেহন্দি জাল জব্দ করে।
জব্দকৃত আলামতের আনুমানিক বাজার মূল্য ৫ কোটি ৭২ লাখ টাকা। অভিযান কালে হাঙ্গর শীকারী ও অবৈধ জাল ব্যবহারকারীরা কোস্ট গার্ডের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে কাউকে আটক করতে পারেনি কোস্ট গার্ড ।
পাথরঘাটা কন্টিনজেন্ট কমান্ডার এম জাহিদুল ইসলাম বলেন, জব্দকৃত হাঙ্গর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাথরঘাটা বন বিভাগের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। জব্দকৃত অবৈধ জাল পাথরঘাটা মেরিন ফিশারিজ অফিসার মো. রিয়াজ হোসেনের সাথে সমন্বয় করে আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস কর হয়েছে।
বরগুনার পাথরঘাটায় ১৭ রমজান ঐতিহাসিক বদর দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) জোহরের পর থেকে ছারছীনা দরবার শরীফ কর্তৃক পরিচালিত অরাজনৈতিক দ্বীনি সংগঠন বাংলাদেশ জমইয়াতে হিজবুল্লাহর আয়োজনে পাথরঘাটা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে দেড় হাজারের মতো নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পাথরঘাটা উপজেলার জমইয়াতে হিজবুল্লাহর সভাপতি আলহাজ্ব মোহাম্মদ তোহা কাজী এর সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ছারছীনা জামেয়ায়ে দ্বীনিয়া মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা সফিউল্লাহ আল মামুন।
আলোচনা করেন উপজেলা সাধারণ সম্পাদক সেলিম আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক হাফেজ মাওলানা গোলাম কিবরিয়া, মাওলানা আবু সালেহ নেছারি, মাওলানা সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
পটুয়াখালী কলাপাড়া উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও লতাচাপলি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনসার উদ্দিন মোল্লার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জেলার মহিপুর থানা শ্রমিকলীগের সভাপতি আবুল কালাম ফরাজী।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুর ১২টায় কুয়াকাটা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় মো. আবুল কালাম ফরাজী লিখিত বক্তব্য বলেন, আমি জাতীয় শ্রমিক লীগ মহিপুর থানা শাখার সভাপতি হিসেবে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করছি। আমার সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে কোন অপরাধনীতি করি নাই। কিন্তু আপনারা জানেন, লতাচাপলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক যিনি উপজেলা আওয়ামী লীগ কর্তৃক বহিষ্কারের সুপারিশ প্রাপ্ত এবং লতাচাপলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জনাব আনসার উদ্দিন মোল্লা গত ২৫ মার্চ আলিপুরস্থ বাসভবনে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও মনগড়া তথ্য উপস্থাপন করেছেন। ২৪ মার্চ গভীর রাতে তার বাসভবনে হামলা হয়েছে এমন দাবি করে আমি ও আমার লোকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করেছেন। আমি যতটুকু খোঁজখবর নিয়ে জেনেছি যে তার বাসভবনের হামলার ঘটনা সম্পূর্ণ সাজানো নাটক। আমি ও আমার লোকজনকে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা করার চক্রান্তে এমন নাটক সাজানো হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, গত ২৭ মার্চ মহিপুর থানায় জিআর ৩৪/২৪ নং একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলার বাদী জোলেখা বেগম ও তার পরিবারের সদস্যরা যারা আনছার উদ্দিন মোল্লা সকল অপকর্মের সহযোগী ও অনুসারী। দায়েরকৃত মামলায় আমাকে সহ আমার রাজনৈতিক সহকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দায়ের করেছে। দায়েরকৃত মিথ্যা মামলাটি সুষ্ঠু তদন্তের মধ্য দিয়ে প্রত্যাহারের দাবি করছি।
আবুল কালাম ফরাজী বলেন, মামলার এজাহারে উল্লিখিত ঘটনার সাথে আমিও আমার লোকজনের কোন সম্পৃক্ততা নাই। আমি ও আমার লোকজন প্রত্যাক্ষ ও পরোক্ষ সম্পৃক্ততা ছিল না মর্মে দূঢ়ভাবে আপনাদের মাধ্যমে জানাতে চাই।
আনসার উদ্দিন মোল্লা ইউনিয়নের অপরাধনীতির মূল হোতা এবং মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে মামলা-মোকদ্দমা দায়ের করতে পারদর্শী বলেও মন্তব্য করেন।
ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলায় নিখোঁজের ২ দিন পর সন্ধ্যা নদী থেকে মামুন হোসেন (২৫) নামে এক অটোচালকের ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুরে সাতুরিয়া ইউনিয়নের সাতুরিয়া গ্রামের ইদুরবাড়ি এলাকার সন্ধ্যা নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মামুন উপজেলার পশ্চিম সাতুরিয়া গ্রামের চেয়ারম্যান বাড়ি সংলগ্ন এলাকার মোকসেদ আলীর ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, অটোগাড়ি চালাতো মামুন। গত ২ দিন ধরে সে নিখোঁজ ছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে নদীতে মরদেহ ভাসতে দেখে পুলিশ খবর দেয় স্থানীয়রা।
রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে পাঠানো হবে, পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ময়মনসিংহের ত্রিশালের উজানপাড়ায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বাসচাপায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বেলা ১১টার এদিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও চারজন।
নিহতরা হলেন- উপজেলার বৈলর ইউনিয়নের রুদ্রগ্রামের এনামুল হকের মেয়ে রুবাইরা তাজনিম (২), চিকনা মনোহর এলাকার মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে সিএনজিচালক শরিফুল ইসলাম (৩৪) ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের শিক্ষার্থী (থিসিস) সালমান আজাদী (২৮)।
আহতরা হলেন- উপজেলার রুদ্র গ্রামের জালাল উদ্দিনের স্ত্রী মনি আক্তার (৪৫) ও একই গ্রামের শামীম আহমেদের স্ত্রী সাহিদা আক্তার (৪৫)। বাকি তিনজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন বলেন, সকালে মাদানি সিএনজি পাম্প সংলগ্ন উজানপাড়ায় শেরপুরগামী সোনার ময়না পরিবহনের একটি বাস ইউটার্ন নিচ্ছিল। এ সময় সময় সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে চাপা দেয়।
এতে ঘটনাস্থলে এনামুল হকের দুই বছর বয়সী মেয়ে রুবাইরা এবং ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে সিএনজিচালক শরিফুল ইসলাম মারা যান। এ ঘটনায় নিহত অপরজনের নাম জানা যায়নি।
এআই
জামালপুরের বকশীগঞ্জে নিজ কার্যালয়ে প্রায় দেড় ঘন্টা অবরুদ্ধ ছিলেন সাব-রেজিস্টার আবদুর রহমান মুহাম্মদ তামীম। নানা অনিয়ম, স্বেচ্ছচারিতা, দলিল লেখক ও জমির দাতা গ্রহীতাদের সাথে অসাদাচরনের অভিযোগে দলিল লেখকরা তাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। তার অপসারনের দাবিতে বিক্ষোভ করেন তারা। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
বুধবার (২৭ মার্চ) বিকালে সাব-রেজিস্টি অফিসে এই ঘটনা ঘটে। তবে তার বিরুদ্ধে দলিল লেখকদের সকল অভিযোগ অস্বীকার করে সাব্-রেজিস্টার বলেন দলিল লেখকদের অনৈতিক আবদার না মানার কারনেই তারা তার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে। এই ঘটনায় তিনি আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান।
দলিল লেখকরা জানান, গত বছরের ১৫ অক্টোরব বকশীগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে যোগদান করেন আবদুর রহমান মুহাম্মদ তামীম। এর আগে তিনি লক্ষীপুর জেলার রামগতি সাব-রেজিস্ট্রার ছিলেন। তিনি যোগদানের পর থেকেই দলিল লেখকসহ জমির দাতা গ্রহীতাদের সাথে অসাধাচরন করে আসছেন। কথায় কথায় তিনি দলিল লেখকদের সনদ বাতিলের হুমকি দেন। সকাল বেলার দলিল তিনি রাতে পাশ করেন। মনগড়া ভাবে চালাচ্ছিলেন সরকারি অফিস। সকল দলিল লেখকরা তার কাছে জিম্মি হয়ে পড়েন। দিন দিন তার হয়রানি বেড়েই চলছিল।
বুধববার রেহেনা বেগম নামে এক নারী তারই সহোদর বোন রুবিনা আক্তারকে ৫৮ শতাংশ জমি হেবা মুলে দলিল করে দিতে যান। ওই দলিল নিয়ে সাব-রেজিস্টারের কামরায় যান দলিল লেখক শহিদুল্লাহ। এ সময় সাব-রেজিস্টার জমির দাতার কাছে জানতে চান কেনো তিনি তার বোনকে হেবা মুলে জমির দলিল করে দিচ্ছেন। কত টাকা নিয়েছেন।
তার এমন পশ্নে এক পর্যায়ে জমির দাতা বলেন তার বোন তাকে কিছু টাকা দিয়েছেন তাই দলিল করে দিচ্ছেন। এই কথা শোনেই সাব-রেজিস্টার রেগে যান এবং দলিলটি সম্পাদন না করেই ফিরিয়ে দেন। বিষয়টি জানতে দলিল লেখক সমিতির সাবেক সভাপতি আলী আহসান খোকা সাব-রেজিস্টারের কাছে যান। এ সময় সাব-রেজিস্টার আলী আহসান খোকা ও শহিদুল্লাহর সাথে অসাদাচরন করেন এবং তাদের দুজনকেই সাসপেন্ড করেন। মুহুর্তেই এই ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে অন্যন্যা দলিল লেখকদের মাঝেও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তারা তাৎক্ষনিক বিক্ষোভ করে সাব-রেজিস্টারের অপসারন দাবি করেন। এক পর্যায়ে সাব-রেজিস্টারকে অবরুদ্ধ করে রাখেন দলিল লেখকরা। সেই সাথে সাব-রেজিস্টারের অপসারন না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতীর ঘোষনা দেন। ফলে বেকায়দায় পড়ে যায় দাতা গ্রহীতারা।
বকশীগঞ্জ দলিল লেখক সমিতির সাবেক সভাপতি আলী আহসান খোকা বলেন, সাব-রেজিস্টার কোন মানুষকে মানুষ মনে করেন না। অনিয়মকে তিনি নিয়মে পরিনত করেছেন। কথায় কথায় দলিল লেখকদের সনদ বাতিলের হুমকি দেন। আজ বৈধ এক দলিল না করে তিনি ফিরিয়ে দিয়েছেন। জানতে চাইলে তিনি আমিসহ একাধিক দলিল লেখকের সাথে খারাপ আচর করেন এবং আমিসহ দুইজনকে সাসপেন্ড করেন। আমরা দলিল লেখকরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি তার অপসারনের দাবিতে।
দলিল লেখক সমিতির সভাপতি ফিরোজ মিয়া বলেন, বকশীগঞ্জের কোন দলিল লেখক সাব-রেজিস্টারকে এই অফিসে দেখতে চাইনা। তার আচরনে সবাই অতিষ্ট। কোন কারন ছাড়াই দলিল লেখকসহ জমির দাতা গ্রহীতাদের সাথে তিনি খারাপ আচরন করেন। মনগড়া ভাবেই চলছে সাব-রেজিস্ট্রি অফিস। আমরা তার অপসারন চাই। সাব-রেজিস্টারের অপসারন না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতী চলবে বলে জানান তিনি। কোন দলিল লেখক যদি সাব-রেজিস্টারের পক্ষ নিয়ে কোন দলিল সম্পাদন করার চেষ্টা করে তার বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেন তিনি।
বগারচর এলাকার আল আমিন বলেন, ঢাকার কর্মস্থল থেকে একদিনের ছুটি নিয়ে জমি রেজিস্ট্রি করতে এসেছিলেন তিনি। ব্যাংক চালানসহ সকল কাজই সম্পন্ন করেন। হঠাৎ করেই সাবরেজিস্টার ও দলিল লেখকদের দ্বন্ধে তিনি আর দলিলটি করতে পারেননি। পুনরায় আবার ছুটি নিয়ে তাকে আসতে হবে বলে হতাশা প্রকাশ করেন।
এব্যাপারে সাব-রেজিস্ট্রার আবদুর রহমান মুহাম্মদ তামীম বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই কিছু দলিল লেখক তার কাছ থেকে অনৈতিক আবদার করে আসছিলেন। তাদের কথামত কাজ না করায় তারা আমার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, কাউকে সাসপেন্ড করার সূযোগ আমার নেই, তাদের শোকজ করেছি মাত্র। তারা সরকারি সম্পদ বিনষ্টের চেষ্টা এবং কিছু বিনষ্ট করেছে। বিষয়টি আমি উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে অবহিত করেছি। পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করেছে। দলিল লেখকরা আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে। এই ঘটনায় তিনি মামলা করবেন বলে জানান।
বকশীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল আহাদ খান জানান,এ বিষয়ে লিখিতভাবে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০২৩ সালের ১১ নভেম্বর থেকে টানা ৭ দিন সাব-রেজিস্টার আবদুর রহমান মুহাম্মদ তামীম এর অপসারন দাবিতে আন্দোলন ও কর্মবিরতী পালন করেছিলেন দলিল লেখকরা। বুধবার ২য় বারের মত সাবরেজিস্টারের অপসারন দাবিতে আন্দোলনে নামলের দলিল লেখকরা।
এআই
ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ভাংনামারী ইউনিয়ন পরিষদের পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. সাবিকুর রহমানের (শফিক মাস্টার) টর্চার সেল থেকে মঙ্গলবার রাত ৯ টায় আরও এক যুবককে উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মো. সাবিকুর রহমানের ভাই শাহজাহানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় বুধবার (২৭ মার্চ) গৌরীপুর থানায় মামলা হয়েছে।
‘পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রতারণার জন্য’ ব্রহ্মপুত্র নদের পাড় ঘেঁষে বন-জঙ্গলে ঘেরা উপজেলার ভাংনামারী ইউনিয়নের সুতিরপাড়া মুন্সিবাড়ি এলাকায় চার ভাইয়ের নেতৃত্বে গড়ে তোলে এই টর্চার সেল। এই টর্চার সেলে এবার নির্যাতনের শিকার হন খুলনার কয়রা উপজেলার হাবিবুর রহমানের পুত্র মাকসিদুল গাজী।
মাকসিদুল গাজী বলেন, অনার্স-মাস্টার্স করে বেকার হয়ে ঘুরছিলাম। একটি জাতীয় দৈনিক ও চাকরির খবর পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখে ওয়ার্ল্ডভিশনে সেকশন অফিসার পদে চাকরির আবেদন করেন তিনি। এ চাকরির জন্য সোমবার ইন্টারভিউ দিতে আসেন। তাকে নান্দাইল এলাকা থেকে প্রতারকচক্রটি নিয়ে আসে এ টর্চার সেলে। সেখানে অন্ধকার কক্ষে আটক রেখে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরিবার থেকে টাকা না দেওয়ায় চোখ-মুখ বেঁধে নির্যাতন চালানো হয়। টাকা না দিলে শরীরের কিডনি খুলে বিক্রি করে দেবে বলেও ভয় দেখায়। দফায় দফায় ওরা অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছে।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে মোটরসাইকেলযোগে আমাকে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছিল। গ্রেফতারকৃত শাহজাহান মোটরসাইকেল ড্রাইভিং করছিলেন। আর পেছনে আরেকজন ডেগার (ছুরি) ধরে রাখে। নাপ্তের আলগীর আজিজের মোড় এলাকায় লোকজন দেখে আমি চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে লাফিয়ে পড়ি। এ সময় জনতা মোটরসাইকেল চালককে আটক ও আমাকে রক্ষা করেন। এ সময় অন্যজন পালিয়ে যান।
তিনি আরও বলেন, টর্চারসেলের ভেতরে আরও ৪ জন ছিলেন বলে ওরা আমাকে জানিয়েছে। এছাড়াও এ টর্চার সেলের ভিতরে শত শত চাকরি প্রার্থীর আবেদনপত্র পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গৌরীপুর থানার এসআই বাহারুল ইসলাম জানান, মাকসিদুল গাজীকে নান্দাইলের খুররম খান কলেজের সামনে থেকে প্রতারকচক্র রিসিভ করে। এরপর গৌরীপুরের ভাংনামারী ইউনিয়নের সুতিরপাড় এলাকার এ টর্চার সেলে নিয়ে আসে। মামলায় শাহজাহান, সবুজ মিয়া ও শফিকুল ইসলামসহ ৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।
গৌরীপুর থানার ওসি সুমন চন্দ্র রায় জানায়, এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃত শাহজাহানকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। তাদের অপকর্ম জানতে তদন্ত ও এই চক্রের বিস্তারিত জানাতে পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করতে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।
এলাকাবাসী সূত্র জানায়, এ জঙ্গলবাড়িতে একটি মাত্র বাতি (বাল্ব) রয়েছে। নির্যাতনের জন্য প্রত্যেকটি রুম একেকটি টর্চারসেল। তিন কক্ষের সমন্বয়ে ভিতরে এক গোপন কক্ষ নির্মাণ করা হয়েছে। যেখানে অপহৃত ব্যক্তিদের আটকিয়ে রাখলেও বাহির থেকে দেখা যায় না। বিভিন্ন চাকরি প্রার্থীদের আবেদনপত্র, বায়োডাটা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে রুমে রুমে। প্রত্যেক রুমে রয়েছে নির্যাতনে ব্যবহৃত বস্তা, লাঠিসহ নানা সরঞ্জাম।
এদিকে নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, মো. সাবিকুর রহমান অটোরিকশা প্রতীক নিয়ে ভাংনামারী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে ১০টি কেন্দ্রে ১৫ হাজার ৮৫৮ ভোটের মধ্যে এই প্রার্থী মাত্র ১০৯ ভোট পান। কাঙ্ক্ষিত ভোট না পাওয়ায় জামানতের অর্থও বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে মো. নেজামুল হক ৫ হাজার ৯২৭ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
এমআর
নেত্রকোনার মদনে ইট ভাঙ্গার মেশিন উল্টে এক শ্রমিক নিহত হয়েছে এবং তিনজন আহত হয়েছে।
আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে গেছে।
বুধবার (২৭ মার্চ) সকালে মদন থেকে জগন্নাথপুর যাওয়ার সময় উপজেলার উচিতপুর এলাকায় বালই সেতু তে উঠতে গিয়ে মেশিন উল্টে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওয়াসিম মিয়া (৩০) নামের এক শ্রমিক নিহত হয়েছে।
নিহত ওয়াসিম উপজেলার সদর ইউনিয়নের ফেকনি গ্রামের মৃত খায়রুল ইলামের ছেলে।
নিহতের পরিবারের বরাত দিয়ে মদন থানার এসআই মো. শাহ জাহান মিয়া বলেন, ওয়াসিম দীর্ঘদিন ধরে কয়েকজনকে নিয়ে দল গঠন করে ইট ভাঙ্গার কাজ করে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার সকালে ইট ভাঙ্গার মেশিন নিয়ে মদন থেকে খালিয়াজুরী উপজেলার জগন্নাথপুর যাচ্ছিল। বালই নদীর কাছে যাওয়ার পর সেতুতে উঠার সময় সড়কের একটি ভাঙ্গার মধ্যে পড়ে গিয়ে মেশিন উল্টে যায়। এসময় ওয়াসিমসহ সাথে থাকা তিনজন সামান্য আহত হয়। পরে তারা ওয়াসিমকে নিয়ে মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ইট ভাঙ্গা মেশিনের চালক সিদ্দিক মিয়া বলেন, ওয়াসিমসহ আমরা মেশিন নিয়ে জগন্নাথপুর যাচ্ছিলাম। বালই সেতুতে উঠার আগে সড়কে একটি খন্দক আছে। ওই খন্দকে চাকা পড়ে গেলে মেশিনটি আর নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি। পরে উল্টে গিয়ে খায়রুলসহ আমরা তিনজন আহত হই। হাসপাতালে আসলে ডাক্তার ওয়াসিমকে মৃত ঘোষণা করেন।
মদন থানার ওসি তদন্ত মো. জাহাঙ্গীর আলম খান জানান, ওয়াসিম নামের এক ইট ভাঙ্গার শ্রমিক নিহত হয়েছে। সুরতহালের রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে। পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এআইনেত্রকোনার পুর্বধলায় স্বাধীনতা দিবসে শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে যাওয়ার হামলার শিকার হয়েছেন ছাত্রলীগের উপজেলা সভাপতিসহ চারজন। তাদের উপর অতর্কিতে হামলা চালালে রক্তাক্ত জখম হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
মঙ্গলবার(২৬ মার্চ) উপজেলা পরিষদ চত্বরে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে স্লোগান দিয়ে বেরিয়ে যাবার সময় অতর্কিত এই হামলার ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন, পুর্বধলা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সেলায়মান হোসেন হাসিব, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রনি বেপারি, দপ্তর সম্পাদক সালমান হাসান ও কর্মী রুহুল আমীন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্বাধীনতা দিবসের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর কর্মসূচী সকালেই শেষ হলেওে যারা বিছিন্ন ভাবে আসছেন তারা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। দুপুরে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সেলায়মান হোসেন হাসিব সহ কয়েকজন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে তারা চলে যাচ্ছিলো। এসময় জয়বাংলা স্লোগান দিয়ে বের হওয়ার পথে অতর্কিতে ছাত্রলীগের আরেকটি অংশের ২০ থেকে ২৫ জনের একটি দল অতর্কিতভাবে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হলে তাদের মধ্যে গুরুতর চারজনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
হামলাকারীদের মধ্যে এমপির এপিএস আল আমিন হোসেনের ছেলে সাব্বির আহমদের নেতৃত্বে উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি জাহিদুল আলম প্রভাত, কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নাঈম খানসহ বেশ কজন হামলা চালায়। এব্যাপারে কথা বলতে সাব্বির আহমদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোনটি কেটে দেন।
পুর্বলধলা থানার ওসি মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ফুল দেয়ার কাজ সকালেই শেষ হয়ে গেলে এসিল্যান্ড সহ সকলেই উপস্থিত ছিলেন। পরে দুপুরের দিকে হাসিব তার নেতৃত্বে ফুল দিয়ে স্লোগান দিয়ে চলে যাচ্ছিলেন। এসময় অতর্কিতে এই হামলা চালায়। দেশিয় অস্ত্রসহ। এতে বুঝা যায় পূর্ব পরিবল্পিত। আহতরা চিকিৎসা নিয়েছে। তবে কোন অভিযোগ এখনো দেয়নি। অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য গত সংসদ নির্বাচনে আহত ছাত্রলীগের সভাপতি স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল (বীর প্রতকি) এর ভাই জাবির সাবেক ভিসি অধ্যাপক ডক্টর আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর নির্বাচনে কাজ করেছিলেন।
এমআর
কুড়িগ্রামের প্রস্তাবিত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘুরে দেখলেন ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুক। বাংলাদেশ ও ভুটানের যৌথ বিনিয়োগে অঞ্চলটি গড়ে উঠবে। রাজার এই পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে কুড়িগ্রামবাসী আশায় বুক বেঁধেছেন।
কুড়িগ্রাম-ভুরুঙ্গামারী সড়কের পাশে ভোগডাঙা ইউনিয়নের মাধবরামে ২১১ একর জায়গাজুড়ে অর্থনৈতিক অঞ্চলটি প্রতিষ্ঠা করা হবে। বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা সদরের ধরলা নদীর পাড়ের এই এলাকা পরিদর্শন করেন রাজা। তিনি ১৫ মিনিট ধরে জায়গাটি ঘুরে দেখেন।
এর আগে ১৪ সদস্যের সফরসঙ্গী নিয়ে সকালে নীলফামারীর সৈয়দপুর বিমানবন্দরে অবতরণ করেন রাজা। এর পর সড়কপথে রংপুর হয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছে দুপুরে মধ্যাহ্নভোজ সারেন। তাঁকে কুড়িগ্রামের স্থানীয় খাবার পরিবেশন করা হয়। অন্যান্য খাবারের মধ্যে তাঁকে ক্ষিরমোহন, রসমঞ্জুরি, বিশেষ স্যুপ, মিষ্টি পরিবেশন করা হয়। স্থানীয় খাবারের প্রশংসা করেছেন তিনি।
ভুটানের রাজাকে একনজর দেখার জন্য কয়েক হাজার মানুষ ভিড় জমান ধরলার পাড়ে।
২০১৫ সালে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠে এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছিলেন এ জেলায় তিনি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলে জেলাবাসীর মঙ্গা আর দারিদ্র্যের কালিমা চিরতরে দূর করবেন। সেই কথা রাখতেই গত বছরের মে মাসে প্রধানমন্ত্রী লন্ডনে এক সভায় ভুটানের রাজার কাছে কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করার প্রস্তাব দেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব অনুসারে কুড়িগ্রামে বাংলাদেশ ও ভুটান সরকারের যৌথ উদ্যোগে তৈরি হতে যাচ্ছে বিশেষ এই অর্থনৈতিক অঞ্চল। আশা করা হচ্ছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে তা জেলার দারিদ্র্য, মঙ্গা আর বেকারত্ব ঘোচাতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, প্রাথমিকভাবে অর্থনৈতিক অঞ্চলটিতে উৎপাদিত পণ্য জেলার ভুরুঙ্গামারী উপজেলার সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে সড়কপথে ভারত হয়ে ভুটানের রাজধানী থিম্পুতে পণ্য পরিবহন করা হবে। পরে ধরলা নদীর ওপর দিয়ে রেল যোগাযোগ গড়ে তোলা হবে। এখান থেকে ভুটানের দূরত্ব ১৫০ কিলোমিটার। অন্যদিকে জেলার নদীপথকে কাজে লাগিয়ে চিলমারী নৌবন্দর হয়ে পণ্য পরিবহনের পরিকল্পনা রয়েছে।
বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চলটিতে অবকাঠামোগত ভিত্তি দাঁড় করাতে তিন বছর সময় লাগবে। এখানে ভুটানের কাঁচামাল ও ভারি শিল্পের পণ্য উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে। এর মধ্যে কৃষিজাত পণ্য কমলার জুস ও মেলামাইনকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। এতে জেলার প্রায় ১০ হাজার মানুষ কাজ করার সুযোগ পাবে।
কুড়িগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য ডা. হামিদুল হক খন্দকার বলেন, ‘কুড়িগ্রামের মতো দারিদ্র্যপ্রবণ জেলায় জিটুজি-ভিত্তিক এই বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের আজ স্বপ্নের দরজা খুলে গেল। ভুটানের রাজা কুড়িগ্রামে আসায় আমরা খুব খুশি। কুড়িগ্রামের স্থানীয় খাবারের তিনি প্রশংসা করেছেন। অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাজ শুরু হলে তিনি আবার আসবেন বলেছেন।’
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, কুড়িগ্রামের সঙ্গে ভারত ও ভুটানের কানেক্টিভিটি বেশ ভালো। কুড়িগ্রামের দুটি স্থলবন্দর ও চিলমারী নৌ-বন্দরের সঙ্গে ভুটানে যোগাযোগ সুবিধা রয়েছে। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলটির জন্য ধরলা পাড়ে আরও ৮৬ একর ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি অধিগ্রহণের প্রস্তুতি চলছে। এখানে মোট ২১১ একর জমিতে অর্থনৈতিক অঞ্চলটি গড়ে উঠবে।
এদিকে অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন শেষে ভুটানের রাজা জেলার ভুরুঙ্গামারী সোনাহাট স্থলবন্দর হয়ে ভুটানের উদ্দেশে রওনা করেন। এ সময় তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সংসদ সদস্য ডা. হামিদুল হক খন্দকার, বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন প্রমুখ তাঁকে বিদায় জানান।
এফএস
ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুরে কুড়িগ্রাম ধরলা সেতুর পূর্ব প্রান্তে ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের মাধবরাম এলাকায় ভুটানিজ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করেন।
পরে তিনি সড়ক পথে ভুরুঙ্গামারী উপজেলার সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে ভারত হয়ে ভুটানের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ত্যাগ করেন।
ভুটানের রাজা ১৪ সদস্যের সফর সঙ্গী নিয়ে সকালে সৈয়দপুর বিমান বন্দরে অবতন করেন। পরে সড়ক পথে দুপুর পৌনে ১২টায় কুড়িগ্রাম সার্কিট হাউজে পৌছেন। সেখানে মধ্যান্য ভোজ শেষে দুপুর দেড়টায় অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করেন।
এ সময় তথ্যমন্ত্রী এম,এ আরাফাত, নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সংসদ সদস্য ডাঃ হামিদুল হক খন্দকার, সংসদ সদস্য বিপ্লব হাসান পলাশ, বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ ও পুলিশ সুপার আল আসাদ মোঃ মাহফুজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। এদিকে ভুটানের রাজার কুড়িগ্রাম সফরের বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন স্থানীয় ও ব্যবসায়ীরা।
আর ভুটানের রাজার আগমনকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তাসহ সকল প্রকার প্রস্তুতি গ্রহণ করেন স্থানীয় প্রশাসন। ধরলা নদীর পুর্ব পাড়ে ২১৯ একর জমির উপর গড়ে তোলা হবে জিটুজি ভিত্তিতে এ বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল।
২০১৫ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠে এক জনসভায় এ জেলায় একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। ভুটানের রাজার ৪ দিনের ঢাকা সফরের দ্বিতীয় দিন ২৫ মার্চ সোমবার ঢাকায় কুড়িগ্রামে ভুটানিজ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও ভুটান সরকারের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
এআইদিনাজপুরের বিরামপুর মর্ডান ক্লিনিকে তছলিমা বেগম (২৫) নামে এক গৃহবধূ এক সঙ্গে জমজ সন্তান জন্ম দিয়েছেন। কিন্তু দুই’জনের একজন জন্ম নিয়েছেন এক’পা ও নেই কোনো প্রস্রাব ও পায়ুপথ। একজন সুস্থ আছেন।
বুধবার (২৭ র্মাচ) বিকেলে বিরামপুর মডার্ণ ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে তার জমজ সন্তানের জন্ম হয়। তখন থেকে শহরে এ নিয়ে চলছে আলোচনার ঝড়।
জানাযায়, পার্শ্ববর্তী নবাবগঞ্জ উপজেলার শালখুরিয়া গ্রামের মাহফুজুর ইসলামের গর্ভবতী স্ত্রী তছলিমা বেগম কে বিরামপুর মডার্ণ ক্লিনিকে নেয়া হয়। পরর্বীততে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে তার জমজ সন্তানের জন্ম হয়। তাদের মধ্যে একটি মেয়ে সন্তান এবং অপরটি প্রস্রাব ও পায়ুপথ বিহীন এক পা বিশিষ্ট্য সন্তান। এই এক পা বিশিষ্ট্য সন্তান জন্ম নেয়ার খবরে অনেকে শিশুটিকে দেখার জন্য ক্লিনিকে ভিড় করেন। ঐ দম্পতির ৮ বছরের একটি ছেলে এবং ৫ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে।
জন্ম নেওয়া নবজাতকের বাবা মাহফুজুর ইসলাম জানান, তার স্ত্রী এর আগেও দুই সন্তানের জন্ম দিয়েছেন, তারা সুস্থ ও স্বাভাবিক ভাবে জন্মগ্রহন করেন। তাদের পরিবারে প্রথম বারের মতই এমন সন্তানের জন্ম হয়েছে। তিনি পেশায় একজন ভ্যানচালক। উন্নত চিকিৎসা করার মত নেই কোনো সার্মাথ। উন্নত চিকিৎসার জন্য সহযোগিতা চান সমাজের বিত্তবান ব্যক্তি ও সরকারের কাছে।
সিজারিয়ান অপারেশন কারী চিকিৎসক ডাক্তার তাহেরা বেগম জানান, জেনেটিক্যাল সমস্যার কারণে জন্মগত ভাবে শিশুটির ত্রুটি দেখা দিয়েছে। শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার্ড করা হয়েছে। অপারেশনের মাধ্যমে তার প্রস্রাব ও পায়ুপথ বের করা না গেলে তার বেঁচে থাকা সংকটের মধ্যে পড়তে পারে।
এআই
দিনাজপুরের বিরামপুরে নকল’জুস, চকলেট ও পাউডার’জুস সরবরাহ করার সময় দুই ব্যবসায়ীকে এক মাস করে কারাদন্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৮ র্মাচ) দুপুর আড়াই টার দিকে পৌরশহরের ঢাকামোড় নাবিল কাউন্টার এর সামনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জনাব মুরাদ হোসেন।
দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- উপজেলার দিওড় ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের মশিউর রহমানের ছেলে লিটন ইসলাম(২৬), ও একই এলাকার সুরেন্দ্রনাথ মন্ডল এর ছেলে গৌতম কুমার (২৫)।
জানা যায়, ঢাকা থেকে নকল বোতলজাত জুস চকলেট ও পাউডার’জুস সরবারহ করে করছিল। এমন সংবাদ পেয়ে পৌরশহরের ঢাকা মোড় নাবিল কাউন্টারের সামনে অভিযান চালিয়ে দুই’জনকে আটক করা হয়। জব্দ ও ধ্বংস করা হয়েছে চার হাজার ১শ' ৫০টি বোতলজাত নকল জুস, দুই কার্টুন পাউডার জুস ও দুই কার্টুন চকলেট।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুরাদ হোসেন জানান, নকল পণ্য সরবারহের সময় দুই’জনকে ১ মাস করে ভ্রাম্যমাণ আদালত কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে।
এআই"কৃষ্ণস্ত ভগবান স্বয়ম বিশ্বশান্তি কল্পে" কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ষোল প্রহর ব্যাপী শ্রী শ্রী তারকব্রহ্ম মহানাম অনুষ্ঠানে এক ধর্মীয়ান আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (২৭ মার্চ) রাত ৯টায় রাবাইতারী সার্বজনীন দোল মন্দির প্রাঙ্গণে বর্ণাঢ্য আয়োজনে সার্বজনীন দোল মন্দিরের সভাপতি রবিন্দ্রনাথ মোহন্তের সভাপতিত্বে ও ভাঙ্গামোড় ইউনিয়ন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক বিপুল চন্দ্র সরকারের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা গোলাম রব্বানী সরকার, প্রধান ধর্মীয় আলোচক উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি কার্ত্তিক চন্দ্র সরকার, নাগেশ্বরী উপজেলার ঘরজেয়াটার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রতিকান্ত রায়, উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অনীল চন্দ্র রায়, রাবাইতারী সার্বজনীন দোল মন্দিরে সাধারণ সম্পাদক রমাকান্ত রায়, সদস্য প্রধান শিক্ষক বিপুল চন্দ্র রায় ও শ্যামল চন্দ্র কর প্রমূখ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাবাইতারী ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মুকুল আলী, রাবাইতারী বসুনিয়াটারী ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শুধাংশু চন্দ্র রায়সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা সুধীজন।
প্রধান দুই ব্যক্তির ধর্মীয় আলোচনা শেষে অতিথি শিল্পীদের নিয়ে এক জমকালো ভজন কীর্তন চলে রাত ১টা পর্যন্ত। এরপর অধিবাসের মধ্য দিয়ে ষোল প্রহর ব্যাপী নাম সংকীর্ত্তন অনুষ্ঠানের শুভ উদ্ধোধন অনুষ্ঠিত হয়। শনিবার বিকালে ভোগরাগ ও মোহন্ত বিদায়ের মধ্য দিয়ে চারদিন ব্যাপী অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
এআই
নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার বিল চলন শহীদ সামসুজ্জোহা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে উৎকোচ না দেওয়ায় ছয় শিক্ষকের বেতন বন্ধ রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কলেজটির অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. একরামুল হক শিক্ষকদের বেতনের চাহিদা পত্র সময়মত না পাঠানোর কারণে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন তাঁরা। বেতন না পাওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে অতিকষ্টে দিনাতিপাত করছেন তারা। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা সচিব এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর আবেদন করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষকরা।
অভিযোগকারী ও ভুক্তভোগী চার শিক্ষক জানান, ২০১৬ সালে কলেজটি সরকারিকরণের পর ২০১৯ সাল থেকে কর্মরতরা বেতন ভাতা পাওয়া শুরু করেন। তবে বিষয় অধিভুক্ত না হওয়ায় অনার্সের ৭ জন শিক্ষক তখন বেতন পাননি। পরবর্তীতে গত বছরের ২৭শে জুলাই সরকারি প্রজ্ঞাপন দিয়ে দিয়ে তাদেরকে বেতনের আওতায় আনা হয়। এর মধ্যে গণিতের প্রভাষক প্রশান্ত কুমার বেতন পেলেও বাকী ৬জন বেতন পাননি। ৬জনের মধ্যে ৪জন অভিযোগকারী মনোবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক আব্দুল্লাহ আল মাওদুদ, প্রভাষক শামসুল আলম, ভূগোল বিভাগের প্রভাষক আনোয়ার হোসেন এবং বাংলা বিভাগের প্রভাষক শাহীন আলম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. একরামুল হকের বিরুদ্ধে বেতন-ভাতা চালু করতে উৎকোচ দাবি করাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ করেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষকদের অভিযোগ, শিক্ষকদের বেতনের চাহিদা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানোর বিপরীতে কলেজের অধ্যক্ষ শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলা বিভাগের প্রধান মো. আব্দুর রশিদের মাধ্যমে উৎকোচ দাবি করেন। এখন তারা বেতন-ভাতা বঞ্চিত রয়েছেন। বেতন বঞ্চিত বাকী দুইজন শিক্ষক ওই অধ্যক্ষের সাথে আতাত করেছেন। তাঁরা আরো অভিযোগ করেন, বিষয়টি গণমাধ্যম কর্মীদের দৃষ্টিগোচর হওয়ায় ওই অধ্যক্ষ তাদেরকে অন্যায়ভাবে শোকজ করেছেন।
অভিযোগকারী চার শিক্ষকের পক্ষে মনোবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক আব্দুল্লাহ আল মাওদুদ জানান, উৎকোচ না দেওয়ার কারণে অধ্যক্ষ আমাদের বেতন-ভাতার চাহিদা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠাননি। যার কারণে বেতন না পেয়ে আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি। এছাড়া অভিযোগ করায় আমাদের নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।
কলেজের শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলা বিভাগের প্রধান মো. আব্দুর রশিদ জানান, অধ্যক্ষ কোন উৎকোচ দাবি করেননি। অডিও কলরেকর্ডের বিষয়ে তিনি বলেন, এটা অডিওর খন্ডিত অংশ মাত্র।
অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. একরামুল হক জানান, আমার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ অসত্য, ভিত্তিহীন। তিনি সময়মত চাহিদাপত্র পাঠিয়েছেন। যেকোন সময় তারা বেতন পাবেন বলেও জানান তিনি। এছাড়া বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি পরিস্কার করবেন বলেও জানান ওই অধ্যক্ষ।
পিএম
নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের সংসদ সদস্য মো. আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, ‘এটুকু অন্যায় করবো, আর করবো না। নির্বাচনে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা আমি খরচ করেছি, এটা তুলবো। এটা আমি তুলবো, যেভাবেই হোক এটা আমি তুলবো।
গত মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) লালপুর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজিত স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। তার বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে জেলাজুড়ে নানা আলোচনা–সমালোচনা হচ্ছে।
সংসদ সদস্য আবুল কালাম বলেন, ‘আপনার টাকা আমার প্রকল্প থেকে দিয়েছি। আমি তো বাড়ির জমি বিক্রি করে দেইনি। আমার বেতন-ভাতার টাকাটাও দেইনি। আমার ৫ বছরের বেতন-ভাতার ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা ছাড়া আমার কোনো সম্পদ ছিল না। আগামীতেও থাকবে না। তবে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা আমি খরচ করেছি, এটা তুলবো। এটা আমি তুলবো, যেভাবেই হোক এটা আমি তুলবো। এইটুক অন্যায় করবো, আর করবো না।’
তিনি বলেন, ‘২৫ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা দিয়েছি। ট্যাক্স-ফ্রি গাড়ি কিনেছিলাম ২৭ লাখ টাকা দিয়ে। আমি চাইলে ১ কোটি টাকা দিয়ে কিনতে পারতাম। যেহেতু আমার টাকা নাই, আমি ২৭ লাখ টাকা দিয়ে কিনেছিলাম। এবার আমি কিনব, ওই টাকা দিয়ে কিনব। ওই টাকা, আমি তুলে নেবো এবার। নিয়ে আর কিছু করবো না। খালি এই এক কোটি ২৬ লাখ টাকা তুলব। আমার প্রকল্প থেকে আগে সাইকেল দিছি, দরকার হলে মোটরসাইকেল দেবো অসুবিধা নাই। আমি অন্যায় করবো না। যার টাকা তাকে দেবো।
এ বিষয়ে লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমিন আখতারকে একাধিবার কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি।
এ বিষয়ে সংসদ সদস্য মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমি তো তা বলিনি। আমি বলেছি, মানুষের তো নির্বাচনে খরচ হয়। সেই খরচের কথা এমনিতে যুক্তি হিসেবে বলেছি।
এফএস
জয়পুরহাট সদর উপজেলার রাঘবপুর সড়কের পাশের ১৭ থেকে ২০টি সরকারি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। সরকারি টেন্ডার ছাড়াই স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান সামছুল আলম সামুনের নির্দেশে এ গাছগুলো কাটা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ‘বৃহত্তর পাবনা ও বগুড়া জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় দোগাছী ইউনিয়নের রাঘবপুর এলাকায় ৩৫০ মিটার সড়ক পাকাকরণ কাজ করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)। ওই রাস্তার দুইপাশে ঔষধি গাছ অর্জুন, জাম গাছ লাগানো আছে। পাকাকরণের ওই অংশে প্রয়োজন না থাকলেও ১৭ থেকে ২০টি গাছ কাটা হয়েছে।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, শ্রমিকেরা বুধবার ও বৃহস্পতিবার দুইদিনে গাছগুলো কেটে ফেলেছেন। কাটার পরপরই তারা সেগুলো দ্রুত সরিয়ে ফেলেন। দোগাছী গজনাইপুর ইউপির চেয়ারম্যান সামছুল আলম সুমনের নির্দেশে গাছগুলো কাটা হয়। কিন্তু রাস্তার কাজে গাছ কাটার কোন প্রয়োজন ছিল না। তবুও ক্ষমতা দেখিয়ে চেয়ারম্যান এসব করেছে।
দোগাছী ইউপি চেয়ারম্যান সামছুল আলম সুমন বলেন, রাস্তাটি পরিষদের, তাই গাছও পরিষদের। সেখানে ১৭টির মতো গাছ ছিল। ঔষধি অর্জুন গাছ বেশি ছিল। তেমন দাম না থাকায় ১৭ হাজার টাকা দিয়ে বিক্রি করা হয়েছে। এরমধ্যে আমার (পরিষদের) ফাণ্ডে ১০ হাজার টাকা ঢুকেছে।
জয়পুরহাট সদর উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ সামিন শারার ফুয়াদ বলেন, রাস্তার মধ্যে যদি দু-একটি গাছ পড়ে সেগুলো কাট হয়। কিন্তু এরকমভাবে গাছ এলজিইডি থেকে অনুমতি ছাড়া কাটা হয় না।
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার অ্যাব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এ বিষয়ে আমার জানা নেই। খোঁজ নিতে হবে।
বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহারে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে স্বপন হোসেন বাবু (৩৫) নামে এক পথচারী যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুর একটার দিকে বগুড়া-নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়কের আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার পৌর শহরের কোমল দোগাছী এলাকায় নিলুফা ইয়াসমিন রাইস মিলের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত বাবু একই এলাকার বাছের আলী মন্ডল বাচ্চুর ছেলে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, দুপুর একটার দিকে কোমল দোগাছী এলাকায় নিহত বাবুর বাবার মালিকানাধীন ‘ভাই ভাই ট্রেডার্স’ নামের গুড়া চালনি মিল থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় নওগাঁ থেকে বগুড়াগামী অজ্ঞাত একটি দ্রুতগামী খালি ট্রাক বেপরোয়া গতিতে চালিয়ে যাওয়ার সময় চাকায় পিষ্ট হয় বাবু। স্থানীয়রা আদমদীঘি ফায়ার সার্ভিসে ফোন দিলে তারা দ্রুত এসে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয় তাকে। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে আদমদীঘি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজেশ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ঘাতক ট্রাকটি আটক করা সম্ভব হয়নি। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার দৃষ্টিনন্দন মসজিদ নজর কাড়ছে দর্শনার্থীদের। রমজান মাসে এটি দেখার জন্য দূরদূরান্ত থেকে প্রতিদিন দর্শনার্থী উপস্থিত হয়।
২০২৩ সালের শেষের দিকে উদ্বোধন করা হয় উল্লাপাড়া উপজেলা পরিষদ চত্বরে প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদ। ১৯৮৩ সালে ইটের দেয়াল ও ছাদে নির্মিত হয় মসজিদটি।
নতুন এই মসজিদ নির্মাণ নিয়ে কথা হয় মসজিদ কমিটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক গোলাম মোস্তফার সাথে। তিনি জানান, পুরাতন মসজিদের জরাজীর্ণ অবস্থা এবং মুসল্লীদের জায়গা সংকট হওয়ায় তৎকালীন ইউএনও মো. উজ্জল হোসেনের কাছে জানানো হয়। এবং একটি নতুন মসজিদ নির্মাণের কথা বলা হয়। পরে ইউএনও মোঃ উজ্জল হোসেন উদ্যোগী হয়ে পেশাজীবি, ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় বাসিন্দাদের অর্থায়নে দৃষ্টিনন্দন মসজিদ তৈরী করেন। প্রায় ১ বছর ইট, পাথরে বিভিন্ন কারুকার্য করে ৩ তলা বিশিষ্ট মসজিদের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। ৪ হাজার স্কয়ারফিট মসজিদের দেয়ালে কার্লিওগ্রাফী যেন সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে।
মসজিদটির অসাধারণ নির্মাণ শৈলী, এর রং ও লাইটিং দূর থেকেই কাছে টানছে দর্শনার্থীদের। নির্মাণের পর থেকেই প্রতিদিন মসজিদটি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে আসছেন হাজারো দর্শনার্থীরা।
অসাধারণ লাইটিং ও মসজিদের মোহনীয় সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা। মসজিদ দেখা শেষে মুগ্ধতার আবেশ নিয়ে বাড়ি ফিরছেন ধর্মপ্রাণ মুসলিম ও দর্শনার্থীরা। দিনের আলো, সন্ধ্যার ঠিক আগ মুহুর্ত ও রাতের অন্ধকার, তিন সময়ে ভিন্নরকম সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদ। তবে সন্ধ্যার পর মসজিদের লাইট জ্বালানো হলে ফুটে ওঠে এর দূতি ছড়ানো সৌন্দর্য। এর সামনেই রয়েছে বাহারী ফুলের বাগান, ফুলের সৌন্দর্য আর সুঘ্রাণ মুগ্ধ করছে সবাই কে। এসি ব্যবহার করা হয়নি তবে আধুনিক ব্যবস্থাপনায় নির্মিত মসজিদে গ্রীষ্মকালে সারাক্ষণ থাকে ঠান্ডা আবহাওয়া এবং শীতকালে গরম আবহাওয়া বিরাজমান। মসজিদটিতে রয়েছে ১ হাজার মুসল্লীর একসাথে নামাজের ব্যবস্থা এছাড়াও নারীদের জন্য আলাদা নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে। মসজিদের নিচতলায় রয়েছে ইসলামিক লাইব্রেরি, আরাবি ভাষা চর্চা কেন্দ্র।
মসজিদ পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে উল্লাপাড়া উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয়রা। মসজিদে নামাজের জন্য একজন ইমাম, একজন মুয়াজ্জিন ও ১ জন খাদেম নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
মসজিদের খাদেম নুরুজ্জামান জানান, পুরাতন মসজিদে মুসল্লীদের নামাজ পড়তে অনেক কষ্ট হতো। কিন্তু বর্তমানে এই নতুন মসজিদ যেমনটা নান্দনিক তেমনটি নামাজের জন্য আরামদায়ক। দূরদূরান্ত থেকে দর্শনার্থী আসে মসজিদ দেখার জন্য। রমজান মাসে এখানে কুরআন তেলওয়াত হয়।
উল্লাপাড়া উপজেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সুপারভাইজার মো. হাসান আলী জানান, উল্লাপাড়া উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের এরকম সৌন্দর্য আমি কখনও দেখিনি। এখানে নামাজ পড়ে মনে অনেক প্রশান্তি পাই। এখান থেকে ঘরে ফিরে যেতে ইচ্ছে করে না।
মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ যিনি নিয়েছিলেন তৎকালীন ইউএনও মো. উজ্জল হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি জানান, পুরাতন মসজিদে মুসল্লীদের নামাজ পড়তে অনেক কষ্ট হতো জায়গা সংকট ছিল। উল্লাপাড়ার স্থানীয় মুসল্লীদের অনুরোধে নতুন মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করি। দীর্ঘ এক বছর নির্মাণ কাজ করে সম্পুর্ণ করা হয়েছে। এটির নঁকশা ইউএনও নিজেই করেছেন বলে জানান তিনি।
হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার বদলপুর ইউনিয়নের মামুদপুর গ্রামের মৃত সুপেন্দ্র চন্দ্র দাসের স্ত্রী নির্মলা দাস (৬৭)। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার যুদ্ধের বছর বারো কী তের বছর বয়সে কিশোরী অবস্থায় বিয়ে হয়েছিল তার। স্বামী আর দুই পুত্র সন্তান নিয়ে সুখের সংসার ছিল নির্মলার। কিন্তু জন্মের কয়েক বছরের মধ্যে দুই পুত্র সন্তান অসুস্থ হয়ে মারা যায় তার।
এরপর বিয়ের মাত্র বছর ছয়েক না যেতেই নির্মলার স্বামী সুপেন্দ্র দাসও মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। তারপরই নির্মলার জীবনে যেন নেমে আসে ঘোর অমাবস্যা। আগে কাজর্কম করে জীবন কোনো রকম চালাতে পারলেও এখন বৃদ্ধ বয়সে এসে ক্ষুধা নিবারণসহ জীবন চালনার জন্য পাড়া প্রতিবেশীর দয়ার ওপরই একমাত্র ভরসা অসহায় নির্মলা দাসের।
জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করার সময় সঠিকভাবে জন্ম তারিখ বলতে না পারায় জাতীয় পরিচয়পত্রে নির্মলার বয়স এখন ৫৬ বছর। স্বামী মারা যাওয়ার চার দশকের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও অসহায় নির্মলার ভাগ্যে এখনও জোটেনি সরকারি বিধবা কিংবা বয়স্ক ভাতা। কিছুদিন আগে বয়স্ক ভাতার একটি কার্ড পেলেও বয়স না হওয়ার অজুহাতে স্থানীয় ইউপি সদস্য সেই কার্ড নিয়ে গেছেন বিধবা ভাতা পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাসে।
সরেজমিনে মাহমুদপুর গ্রামে নির্মলার দাসের বসত ঘরে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির উঠোনে মাটির চুলোয় রান্না করছেন নির্মলা দাস। চাল ফুটানো শেষে তেল পেঁয়াজ ও মরিচ ছাড়া শুধু লবণ দিয়ে কচুশাক সেদ্ধ করছেন খাওয়ার জন্য। বসতঘরে প্রবেশ করতেই চোখে পড়লো নির্মলার মানবেতর জীবন কাটে জরাজীর্ণ এই কুঁড়ে ঘরে। ভাঙা ঘরে নেই প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র। বসবাস অযোগ্য বসতঘরের ভেতরটাও।
আলাপকালে নির্মলা দাস জানান, স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকেই জীবনের সঙ্গে প্রতিনিয়তই যুদ্ধ করে বেঁচে আছেন তিনি। বৃষ্টির দিনে ঘরের চালার বিভিন্ন ফুটো দিয়ে পানি পড়ে। তখন মাথায় পলিথিন দিয়ে ঘরের এক কোণে বসে থাকতে হয়। বয়স হয়েছে তেমন কাজও করতে পারেন না এখন। প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় এখন খেয়ে পড়ে কোনো রকমে দিন কাটে তার।
ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় একটি এনজিও থেকে কয়েক হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ঝুপড়ি ঘরের মধ্যে বিস্কুট, চানাচুর, চিপসসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র তোলে একটি দোকান বসিয়েছেন। কিন্তু ঠিকমতো বিক্রি না হওয়ায় ঋণের কিস্তি শোধ করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে তার।
তিনি আরও জানান, বয়স্ক ভাতা পাওয়ার একটি বই পেয়েছিলেন। কিন্তু বয়স হয়নি বলে মেম্বার সেই বই নিয়ে গেছেন। আশ্বাস দিয়ে গেছেন বিধবা ভাতার ব্যবস্থা করে দেবেন। এ ছাড়া আর কোনো সরকারি সহায়তা জোটেনি তার।
ইউপি সদস্য অরুণ কুমার তালুকদার বলেন, বয়স কম হওয়াতে বয়স্ক ভাতার তালিকা থেকে নির্মলা দাসের নাম বাদ পড়েছে। উনাকে বিধবা ভাতাভোগীদের তালিকায় যুক্ত করা হবে।বদলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুসেনজিৎ চৌধুরী বলেন, বিষয়টি আমি অবগত নই। খোঁজ নিয়ে উনাকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জুয়েল ভৌমিক বলেন, উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে যোগাযোগ করে নির্মলা দাসের বিধবা ভাতার ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়াও উনাকে প্রয়োজনীয় সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।
এআই
মৌলভীবাজার জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) বিশেষ অভিযানে বিকাশ প্রতারক চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বুধবার (২৭ মার্চ) দুপুরে মৌলভীবাজার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে পুলিশ সুপার মো. মনজুর রহমান বিপিএম, পিপিএম (বার) প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গতকাল ২৬ মার্চ বিকেলে মৌলভীবাজার ডিবির অফিসার ইনচার্জ এর নেতৃত্বে মৌলভীবাজার পৌরসভার সৈয়ারপুর এলাকার লন্ডনী হারুন মিয়ার মালিকাধীন হারুন মঞ্জিলের ৬ তলার ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. টিটুল মোল্লা টিটু (৩৬), পিতা- মৃত রতন মোল্লা, রুবেল শেখ (৩১), পিতা- বিদ্যুত শেখ সবুজ হাওলাদার (২৯), পিতা-আইয়ুব হাওলাদার, হৃদয় শেখ (২০), পিতা- শেখ ইমফাজ, সাজ্জাদ হোসেন (২৫), পিতা- নওশাদ আহমেদ, সর্ব থানা- ভাঙ্গা, হাসান খালাশি (২১), পিতা- সামছু খালাশি, থানা- সদরপুর, জেলা- ফরিদপুর।
গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে বিকাশ প্রতারণা কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের স্মার্টফোনসহ মোট ২১টি সচল মোবাইল সেট এবং নগদ ৬,৩৯০ টাকা জব্দ করা হয়েছে।
এছাড়া তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন স্কুল কলেজের উপবৃত্তিভোগী শিক্ষার্থী এবং বয়স্কভাতা ভোগীদের মোবাইল নম্বরসহ ১২ পাতার একটি তালিকা জব্দ করা হয়েছে। যে তালিকা থেকে তারা ভিকটিমদের কল দিয়ে প্রতারণা করতো।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা বিকাশ একাউন্ট হ্যাক করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কথা স্বীকার করেছে। এই চক্র অনলাইনে সরকারি ওয়েবসাইট থেকে অবৈধভাবে দেশের বিভিন্ন এলাকার বয়স্কভাতা ভোগী, বিভিন্ন স্কুল-কলেজের উপবৃত্তি ভাতাভোগী শিক্ষার্থীদের তালিকা ডাউনলোড করে সেখান থেকে বিকাশ নম্বর সংগ্রহ করত। পরবর্তীতে নিজেদেরকে বিকাশের হেড অফিসের স্টাফ পরিচয় দিয়ে শুদ্ধ বাংলায় কথা বলে কৌশলে তাদের কাছ থেকে OTP (ONE TIME PASSWORD) নিয়ে বিকাশ একাউন্ট হ্যাক করে বিকাশ একাউন্টে থাকা টাকা আত্মসাৎ করত।
তারা এই কাজের সাথে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত এবং এই কাজকে তারা পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে। গ্রেফতারকৃত সবাই ফরিদপুর জেলার স্থায়ী বাসিন্দা। মামলা ও গ্রেফতারের ভয়ে অথবা তাদের কাজের সুবিধার্থে তারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করে এই প্রতারনা করে আসছিল।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন। তাদের আরো সহযোগী আছে। আমরা তাদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) সুদর্শন কুমার রায় (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মোহাম্মদ সারোআর আলম, জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ মো. আশরাফুল ইসলাম প্রমুখ।
হবিগঞ্জে লাখাই উপজেলায় গণধোলাইয়ে এক ডাকাত সর্দার নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) দিবাগত মধ্যরাতে উপজেলার মাদনা রোডের জন্দ্রনিয়া ব্রীজের পাশে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ডাকাত সর্দার হিরাজ মিয়া (৪৫) সদর উপজেলার ধল গ্রামের জজ মিয়ার ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে লাখাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবুল খায়ের জানান, রাত অনুমান ১২টার দিকে ওই স্থানে কয়েকজন ডাকাত মোটর সাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন থামিয়ে ডাকাতি করছিল। এ সময় কয়েকটি গ্রামের মানুষ ধাওয়া দিয়ে হিরাজ মিয়াকে গণপিটুনি দেয়। এসময় আরেক ডাকাতকে আটক করে।
ওসি আরও জানান, খবরর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে গুরুতর আহত অবস্থায় হিরাজ মিয়াকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে তার মৃত্যু হয়েছে।
তিনি জানান, নিহত ডাকাত সর্দার হিরাজ মিয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১২টি ডাকাতির মামলা রয়েছে।
এআই
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার চৌমুহনী-ধর্মঘর সড়কের পাশে চৌমুহনী বাজারে প্রতিষ্ঠিত চৌমুহনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুরা ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে রয়েছে। ১৯৫১ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যালয়টির সীমানা প্রাচীর (বাউন্ডারি) নির্মাণের জন্য বরাদ্দকৃত ১২ লক্ষ ৩৩ হাজার ৩২২ পিডিবি-৪ প্রকল্প থেকে বরাদ্দ হয় গত ১৪ জুন ২০২৩ সালে।
মেসার্স রনি ট্রেডার্স নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২৮ আগস্ট ২০২৩ সালে কাজের টেন্ডার লাভ করে। ভূমি সীমানা জটিলতার কারণে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের টাকা ফেরত যাওয়ার পথে বলে জানায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এর আগেও একই জটিলতায় একাধিকবার বিদ্যালয়টির সীমানা প্রাচীর নির্মাণের বরাদ্দের টাকা ফেরত গেছে বলে জানা যায়।
চৌমুহনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহি উদ্দিন জানান, ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে স্কুলটি এখানে খাস খতিয়ানভুক্ত জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়। বিগত ভূমি জরিপে স্কুলটির নামে আলাবক্সপুর মৌজার ৩৪০,৩৪১ ও ৩৪২ দাগে ৩০ শতাংশ জমি পর্চা (মাঠ জরিপ) হয়েছে। বিদ্যালয়ের নিজস্ব নামে কোনো জায়গা নেই। বর্তমানে এখানে বিদ্যালয়ের মাঠে ৩য় তলা ভবন নির্মাণ কাজ চলছে। এই ভবন বরাদ্দ পাওয়ার পর আমি গত ১৯ অক্টোবর ২০২২ সালে ৩০ শতক ভূমি পুনরুদ্ধার করে সীমানা চিহ্নিত করার জন্যে মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত আবেদন করি। স্থানীয় সার্ভেয়ার দ্বারা পরিমাপ করে এই দাগে বিদ্যালয়ের নামে পর্চাকৃত ৩০ শতক ভূমি পাওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, স্থানীয় সার্ভেয়ারের পরিমাপে দেখা যায় বিদ্যালয়ের পিছনে স্থানীয়দের দখলে বিদ্যালয়ের জায়গা রয়েছে। স্থানীয় দখলদাররা বিদ্যালয়ের জায়গাতে দোকান ঘর নির্মাণ করে রেখেছে। বিদ্যালয়টির সীমানা প্রাচীর (বাউন্ডারি) নির্মাণের জন্যে বরাদ্দ পাওয়ার পর আমি আবার গত ২৮ আগস্ট ২০২৩ সালে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাধবপুরের বরাবর বিদ্যালয়টির ভূমি সীমানা চিহ্নিত করে দেওয়ার জন্যে আবেদন করি। আজ পর্যন্ত ওনারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। বাউন্ডারি নির্মাণের জন্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান একাধিক বার এসেছে, আমরা তাদের বিদ্যালয়ের সীমানা নির্ধারণ করে দিতে পারিনি।
তিনি আরও বলেন, এখানে শিশুদের নিরাপত্তায় সীমানা প্রাচীর অতি জরুরি। কারণ প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ের সামনে সাপ্তাহিক হাট বসে। প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে মাধবপুর শিক্ষা অফিস বিদ্যালয়টির সীমানা প্রাচীরের প্রস্তাব পাঠায়। একাধিকবার যথারীতি প্রস্তাবটি পাস হয়ে সীমানা প্রাচীরের জন্য বরাদ্দও আসে কিন্তু জমির মালিকানা নিয়ে পার্শ্ববর্তী জমির মালিকদের সঙ্গে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় সে বরাদ্দ ফেরত গেছে। কয়েক দফা চেষ্টা করেও সীমানা প্রাচীরের কাজ করাতে পারেননি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
এ ব্যাপারে চৌমুহনী ইউ/পি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান সোহাগ বলেন, সীমানা নির্ধারণের জন্যে আমি একাধিকবার উপজেলা মাসিক সমন্বয় সভায় কথা বলেছি। শুধু বিদ্যালয়ের জমি না সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত জমির সীমানা নির্ধারণ করার জন্যে দাবি করছি। চৌমুহনী-ধর্মঘর সড়কের পাশে চৌমুহনী বাজারের মধ্যখানে চৌমুহনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবস্থান এটি উন্মুক্ত থাকায় শিশুরা চরম ঝুঁকির মধ্যে থাকে। বিশেষ করে ছুটির সময় শিশুরা দল বেঁধে দৌড়ে সড়কের মধ্যে চলে যায়।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এম জাকিরুল হাসান বলেন, সীমানা জটিলতার কারণে চলতি অর্থবছরে এই বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ না হলে টাকা ফেরত চলে যাবে। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সীমানা প্রাচীরটা নির্মাণ করতে চেষ্টা করে যাচ্ছি।
উপজেলা প্রকৌশলী জাকির হোসেন জানান, সীমানা জটিলতার কারণে বিদ্যালয়টির নিরাপত্তা দেয়াল নির্মাণের কাজ করতে পারছে না ঠিকাদার। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ না হলে বরাদ্দের টাকা ফেরত চলে যাবে। বিষয়টি দুঃখজনক। এ বিষয়গুলো নিয়ে সংশ্লিষ্টদের আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখা দরকার।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাহাত বিন কুতুব বলেন, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আমরা দেখছি। জমিটি জেলা প্রশাসক নামীয় ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত। বিদ্যালয়ের নামে কোন রের্কডভুক্ত ভূমি নেই। যেহেতু বিদ্যালয়ের নামে রেকর্ড নেই এবং খাস খতিয়ানভুক্ত জমি বিধায় বিদ্যালয়কে সীমানা নির্ধারণ করে জায়গা বুঝিয়ে দেওয়ার বিধি মোতাবেক কোন সুযোগ নেই। ইতিমধ্যে সার্ভেয়ার ও স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাসহ এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে এবং বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদেরকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বিদ্যালয়ের নামে যেন জমি বন্দোবস্ত পাওয়া যায় সে জন্যে যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করার।
মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম ফয়সাল বলেন, বিষয়টি আমি গুরুত্ব সহকারে দেখছি। জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সাথে এই বিষয় কথা হয়েছে। বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদেরকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বিদ্যালয়ের নামে জমি বন্দোবস্তের জন্যে যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করার।
এআই
মৌলভীবাজারে হাওরে মাছ ধরতে গিয়ে এক জেলের পায়ুপথ দিয়ে ঢুকে গিয়েছিল একটি কুঁচিয়া। পরে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জেলের পেট থেকে ২৫ ইঞ্চির জীবিত কুঁচিয়াটি বের করা হয়।
জানা যায়, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের রহিমপুর ইউনিয়নের মিরতিঙ্গা চা–বাগানের জেলে সম্রা মুণ্ডা (৫৫) স্থানীয় হাওরে মাছ ধরতে গিয়ে কোমর সমান কাদায় আটকে যান। তখন তার হাতে থাকা দুটি কুঁচিয়া কাদায় পড়ে যায়।
হঠাৎ অনুভব করেন পায়ুপথ দিয়ে কি যেন তার পেটে ঢুকছে। তবে বিষয়টি গুরুত্ব না দিয়ে বাড়িতে চলে আসেন তিনি। বাড়িতে আসার পর থেকে পেটে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করেন।
পেটের ব্যথা নিবারণে রবিবার (২৪ মার্চ) কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
সেখানে চিকিৎসকরা মুণ্ডার কথা শুনে পরীক্ষা (এক্স-রে) করান। পরীক্ষায় ধরা পড়ে পেটের ভেতর লম্বা আকৃতির একটি বস্তু রয়েছে। পরে অপারেশনের সিদ্ধান্ত হয়। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সন্ধ্যায় মুণ্ডাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়।
সেখানে প্রফেসর জানে আলমের নেতৃত্বে ৪ জন চিকিৎসক প্রায় দুই ঘণ্টার অপারেশনে পেটের ভেতর থেকে একটি জীবন্ত কুঁচিয়া বের করেন। এ ঘটনায় ডাক্তাররা বিস্মিত হন।
সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী বলেন, হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে এক জেলের পেট থেকে ২৫ ইঞ্চির জীবিত কুঁচিয়া বের করা হয়েছে। বর্তমানে সম্রা মুণ্ডা নামের ওই জেলে হাসপাতালের ১১নং ওয়ার্ডে শঙ্কামুক্ত অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন।
এআই