রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে পৃথক ঘটনায় মাদরাসা শিক্ষার্থীসহ দুজনের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতরা হলেন- হাফেজ শরিফুল ইসলাম (১৪) ও অটোরিকশা চালক হাছিব (২৭)।
মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে কামরাঙ্গীরচর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আশরাফুল হক।
এর আগে সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাতে মরদেহ দুটি উদ্ধারের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
স্থানীয়রা জানান, হাফেজ শরিফুল ইসলাম মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার হাজী আমির হোসেনের ছেলে। কামরাঙ্গীরচর পূর্ব রসুলপুর ৯ নম্বর গলির ৬/এ নম্বর ৯ তলা বাড়ির ষষ্ঠ তলায় পরিবারের সঙ্গে থাকতো সে। তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট শরিফুল।
মৃতের বড় ভাই শাহিন হাসান জানান, আলিনগরের জামিয়া নূরানীয়া ইসলামিয়া হাফিজিয়া মাদরাসায় পড়তো শরিফুল। গত শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সে হেফজ (পুরো কোরআর মুখস্থ) সম্পন্ন করে। ওই রাতেই সে বাড়িতে আসে। এরপর সব কিছু স্বাভাবিক চলছিলো। সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বাবা তাকে আবার মাদরাসায় যাওয়ার জন্য বললে, শরিফুল তাকে জানায়, আজ মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) মাদরাসায় যাবে। এরপর রাত ১০টার দিকে রুমের দরজা বন্ধ করে দেয় সে। অনেক সময় পেরিয়ে গেলেও দরজা না খোলায় তাদের সন্দেহ হলে ডাকাডাকি শুরু করেন। পরবর্তীতে রুমের দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে দেখেন, ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছে সে। তখন তারা তাকে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নিচে নামান।
তিনি আরও জানান, এর আগে মাদরাসার শিক্ষকরা তাকে মারধর করেছে বলে জানায় শরিফুল। এমনকি শিক্ষকরা তাকে মারধরের ঘটনাটি কাউকে জানাতে নিষেধ করেছিলেন বলেও জানায় সে।
উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আশরাফুল হক জানান, শরিফুল ইসলামের মলদ্বার অস্বাভাবিক দেখা গেছে। সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। বিষয়গুলো তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে সঠিক তথ্য জানা যাবে।
এদিকে, ঝাউচর 'আমরা টাওয়ার' গলির বদ্দার বাড়ির নিচ তলার বাসা থেকে সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে হাছিব নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান কামরাঙ্গীরচর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অনিরুদ্ধ রায়।
হাছিবের বাবার নাম সিরাজ মিয়া। তার বাবা-মা হাজারীবাগ এলাকায় থাকেন বলে জানা গেছে।
এসআই অনিরূদ্ধ জানান, ২-৩ মাস আগে ইভা নামে এক কিশোরীকে বিয়ে করেন অটোরিকশা চালক হাছিব। প্রেমের সম্পর্ক থেকে পরবর্তীতে পারিবারিকভাবেই বিয়ে হয় তাদের। ইভা স্থানীয় একটি কারখানায় কাজ করে। ঝাউচরের ওই বাসায় তারা একটি রুম নিয়ে ভাড়া থাকতেন। তবে কয়েকদিন ধরে তাদের মধ্যে ঝগড়া চলছিল। এরই জেরে সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) তার স্ত্রী রাগ করে বাবার বাসায় চলে যান। পরে দরজা বন্ধ করে ফ্যানের হুকের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দেন হাছিব।
খবর পেয়ে ওই বাসায় গিয়ে কাটার গ্যান্ডিং মেশিন দিয়ে দরজা কেটে রুমের ভেতর থেকে হাছিবের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয় বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
আরআই