ভালোবেসে, সখী, নিভৃতে যতনে, আমার নামটি লিখো-- তোমার মনের মন্দিরে। ভালোবাসা কী? এর ব্যাখ্যা একেকজনের কাছে একেকরকম। আমার কাছে, ভালোবাসা হলো পৃথিবীর বিশুদ্ধতম অনুভূতি, অন্যের জন্য নিজের জীবন বাজি রাখার প্রতিশ্রুতি। সেখানে মান-অভিমান সব আছে। আছে সুখ ও দুঃখ। তবে, বিরক্তি হয়তো নেই সেখানে। ভালোবাসা না স্পর্শ করা যায়, না দেখা যায়। এটি কেবলই অনুভবের বিষয়।
কাউকে ভালোবাসার পর মানুষের ভেতর তৈরি হয় অদ্ভুত এক ঘূর্ণন, যার কেন্দ্রে থাকে ভালোবাসার মানুষটি। কেন্দ্রমুখী বলের টানে সে তার কাছে ফিরে আসে বারবার। গোটা পৃথিবীর সব কোলাহল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে স্থির হয় প্রেমের কাছে। কিছুই আর আগের মতো থাকে না তার। জীবনের গতিপথ বদলে যায়। বদলে যায় চেনা জগৎ।
হুমায়ুন আজাদ তো কবেই বলেছেন,আমাকে ভালবাসার পর আর কিছুই আগের মত থাকবে না তোমার, যেমন হিরোশিমার পর আর কিছুই আগের মতো নেই’ সত্যিই তা–ই। যেন আর কোথাও কেউ নেই, কোথাও যাওয়ার নেই। তসলিমা নাসরিনের কবিতার মতো কেবলই মনে হয়, ‘কী হচ্ছে আমার এসব!/ যেন তুমি ছাড়া জগতে কোনো মানুষ নেই...।’
প্রেম এমনই। যে মানুষটি একবার নিজেকে প্রেমের কাছে সমর্পণ করেছে, কেবল তিনিই জানেন, সবার ওপরে প্রেম সত্য, তার ওপরে নাই। এই যে সবার আগে, সবকিছুর কেন্দ্রে ভালোবাসার মানুষকে স্থান দেওয়া, ইংরেজিতে একেই বলে ‘বিএই’ বা ‘বিফোর এনিওয়ান এলস’।
আজ ১০ জুন, বিফোর এনিওয়ান এলস ডে, সাদা বাংলায় ‘সবার আগে সে’ বা ‘সবার ওপরে তুমি’ দিবস। প্রেমিক বা প্রেমিকা, স্বামী বা স্ত্রী—অর্থাৎ প্রেমময় সম্পর্কে থাকা মানুষের জন্য আজকের এই দিন। একটি সূত্রমতে, লিলি পনস নামের যুক্তরাষ্ট্রের ব্রুকলিনের এক লেখক, শিল্পী দিবসটির প্রচলন করেন। সম্পর্কের গভীরতার যে স্বর্গীয় শক্তি, শৈল্পিক সৌন্দর্য এবং গুরুত্ব রয়েছে, সেটিকে উদযাপন করতে তিনি দিনটি চালু করেন। চাইলে আপনিও কিন্তু দিনটি পালন করতে পারেন। প্রিয় কিছু উপহার দেওয়া, বাইরে ঘুরতে যাওয়া, খেতে যাওয়া, সিনেমা দেখতে যাওয়া—যেকোনোভাবেই পালন করা যেতে পারে। তবে সবকিছু শেষে ভালোবাসার মানুষটিকে এই সত্যি বুঝিয়ে দেওয়া জরুরি—সর্বপ্রথম, সবার আগে, সবার ওপরে সে।
এবি