কোটা সংস্কার দাবিতে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে পুরো দেশে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের এই কোটা সংস্কার আন্দোলনে সমর্থন জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার সাধারণ মানুষ। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে এই ইস্যুতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের মতামত প্রকাশ করেছেন।
বুধবার (১৭ জুলাই) নিজের ফেসবুক পোস্টে জাতীয় দলের সিনিয়র ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম লেখেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র হিসেবে, আমি আমার ভাই-বোনদের উপর আর কোনো সহিংসতা দেখতে চাই না। আমার শিক্ষকরা যাঁরা অতুলনীয় সাহস দেখিয়ে তাঁদের ছাত্র-ছাত্রীদের রক্ষা করতে গিয়ে আহত হয়েছেল তাঁদের প্রতি অতল শ্রদ্ধা। এটা মেনে নেয়া কঠিন কোন ছাত্রের জন্য যে তাঁর শিক্ষক হেনেস্তা হয়েছেন। যা খুবই নিন্দনীয় বলে আমি বিশ্বাস করি। যে কোন উপায়েই হোক এই রক্তপাত বন্ধ হোক। শান্তি আসুক।’
মুশফিক আরো লেখেন, ‘সংশ্লিষ্টরা সমাধানের শান্তিপূর্ণ রাস্তা বের করবেন এটাই অনুরোধ। আল্লাহ আমাদের ঠিক পথে পরিচালিত হওয়ার তৌফিক দান করুন। আমিন।’
জাতীয় দলের ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম বলেন, ‘টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া কোন রাজপথ আর আমার ভাই-বোনের রক্তে রঞ্জিত না হোক। সঠিক পদক্ষেপ ও যৌক্তিকতা বজায়ে রেখে সবকিছুর সমাধান হোক।’
আফিফ হোসেন লিখেছেন, ‘দেশটা আমাদের সবার। আমরা শান্তিতে বিশ্বাসী, অশান্তিতে নয়। আমার কোনো ভাই-বোনের র*ক্ত আর না ঝরুক। যৌক্তিকভাবে চলমান সংকট নিরসন হোক। চলমান পরিস্থিতি দ্রুতই শান্তিতে রুপ নিবে। স্বাভাবিক হয়ে যাবে সবকিছু, এমনটাই আশা রাখি।’
জাতীয় দলেরই আরেক ওপেনার নাঈম শেখ লিখেছেন, ‘ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের লাল সবুজের পতাকা আমার ভাই-বোনদের রক্তে আর রক্তিম না হোক। যৌক্তিক সমাধানের মাধ্যমে চলমান সংকট নিরসন হোক, তারুণ্য তার প্রাণ ও উদ্যম ফিরে পাক।’
অনুর্ধ্ব যুব বিশ্বকাপজয়ী দলের অধিনায়ক আকবর আলি ইন্সটাগ্রামে লিখেছেন কিছু না, ঘৃণা। সাবেক স্পিনার ইলিয়াস সানী লিখেছেন, ‘ও আল্লাহ তুমি গজব নাজিল করো আল্লাহ।’
এছাড়া পদকজয়ী আর্চার রোমান সানা তার ফেসবুক ওয়ালে মোনাজাতের ইমোজি দিয়ে একটি ছবি পোস্ট করেছেন।
প্রসঙ্গত, রবিবার চীন সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কোটা সংস্কার আন্দোলন প্রসঙ্গে করা এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন ‘মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতিপুতিরা কিছুই পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিপুতিরা সব পাবে?’
প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা বা নাতিপুতি’ বলা হয়েছে অভিযোগ করে রবিবার রাত থেকে প্রতিবাদ শুরু করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ধীরে ধীরে তা ছড়িয়ে পড়ে পুরো বাংলাদেশের সকল ক্যাম্পাসে।
আরইউ