উপকূলীয় অঞ্চল বরগুনায় দিন দিন বেড়েই চলছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা এতে আতঙ্কে রয়েছে সাধারণ মানুষ। গত এক মাসের মধ্যে ভর্তি হয়েছে প্রায় অর্ধশতাধিক রোগী। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তথ্য অনুসারে রোগী ভর্তি রয়েছে ৪৬ জন।
জুলাই মাসের পরপরই বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা গেলেও বরগুনায় এ বছর গত আগস্ট মাসের মাঝামাঝি থেকে বেড়েছে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। এসব রোগীদের সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে ও রোগের বিস্তার ঠেকাতে হাসপাতালে চালু করা হয়েছে নারী ও পুরুষের জন্য আলাদা ২টি ইউনিট। তবে ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পেলেও বরগুনায় এখনো ওষুধ প্রয়োগসহ নেওয়া হয়নি মশক নিধনে কোনো প্রকার ব্যবস্থা।
সরেজমিনে বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের পরীক্ষায় ডেঙ্গু সনাক্ত হলেই ভর্তি করা হচ্ছে হাসপাতালে। তবে এসব ভর্তি রোগীদের অভিযোগ, হাসপাতালে ভর্তির পর প্রতিদিন দেখা মিলছে না চিকিৎসকের। এমনকি তিন-চার দিন পার হলেও অনেক সময় আসেন না কোনো চিকিৎসক। দায়িত্বরত নার্সদের পরামর্শেই চলছে আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবা।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২৪, নারী ১২ এবং শিশু রোগীর সংখ্যা ১০ জন। এছাড়া গত এক বছরে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন ৫২৪ জন। এর মধ্যে গত এক মাসেই ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন প্রায় ৩৫০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী।
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে পাথারঘাটার কাকচিড়া থেকে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত স্বামী অব্দুল করিমকে নিয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে ভর্তি আছেন বরগুনা হাসপাতালে। তিনি বলেন, আমার স্বামী জ্বরে আক্রান্ত হলে প্রথমে বাইরে থেকে পরীক্ষা করালে ডেঙ্গু সনাক্ত হয়। পরে তাকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। এখান থেকে আমরা প্রয়োজনীয় ওষুধসহ সব কিছু ঠিকভাবেই পেয়েছি। আমার স্বামী এখন আগের থেকে সুস্থ।
মো. মনির হোসেন নামের আরেকজন ভর্তি রোগী বলেন, আমি যখন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি তখন আমার রক্তে প্লাটিলেট ছিল ৬৮ হাজার। পরে ৪ দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত আসেনি কোনো চিকিৎসক। আজ (মঙ্গলবার) আবার পরীক্ষা করলে রক্তে প্লাটিলেট কমে দাঁড়িয়েছে ২৭ হাজার। এখন এ অবস্থায় আমি এখানে থাকব নাকি উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্য কোথাও যাব তা নিয়ে আমি ও আমার স্বজনরা চিন্তিত।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এ কে এম নজমূল আহসান বলেন, বর্তমানে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। হাসপাতালে মোট ৩৫৫ জন ভর্তি রোগী রয়েছে। এর মধ্যে নারী, পুরুষ ও শিশুসহ মোট ৪৬ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। গত বছরের তুলনায় এ বছর এখন পর্যন্ত বরগুনায় ডেঙ্গু রোগী কম থাকলেও এখন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার সময়। এ কারণে আমাদের চিকিৎসকদের প্রতি নির্দেশনা দেওয়া আছে। এ ছাড়া চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় সব কিছুই আমাদের রয়েছে। তারপরও আক্রান্ত কারো যদি অবস্থা বেশি খারাপ হয় তাহলে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করি।
এইচএ