এইমাত্র
  • তত্ত্বাবধায়ক সরকার যেন মঈন-ফখরুদ্দিনের মতো না হয়
  • আমাদের ভদ্রতাকে দুর্বলতা ভাববেন না: জামায়াত আমির
  • তিস্তা ইস্যুতে প্রয়োজনে সমাধানের পথ নিজেরাই খুঁজবো: তারেক রহমান
  • চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন কমিটি অবাঞ্চিত ঘোষণা
  • ইডেনে সার্টিফিকেট নিতে এসে আটক হলেন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেত্রী
  • বান্দরবানে বাস চাপায় শিক্ষার্থীর মৃত্যু, প্রতিবাদে বাসে আগুন
  • প্রাথমিকের ৬৫৩১ জনের ফল বাতিলের আপিল শুনানি ২ মার্চ
  • নোয়াখালীতে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর জেলা সমাবেশ অনুষ্ঠিত
  • খুলনায় আগুনে পুড়ল ৬ দোকান
  • প্রয়োজনে র‍্যাব নতুন করে গঠন করা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • আজ বুধবার, ৬ ফাল্গুন, ১৪৩১ | ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
    রাজধানী

    মীরপুর বাংলা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়

    রাজু আহমেদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা প্রকাশ: ৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৪৭ এএম
    রাজু আহমেদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা প্রকাশ: ৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৪৭ এএম

    মীরপুর বাংলা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়

    রাজু আহমেদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা প্রকাশ: ৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৪৭ এএম

    রাজধানীর মীরপুর বাংলা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোস্তফা কামাল খোশনবিশের বিরুদ্ধে নানাবিধ অপকর্ম, প্রতিষ্ঠানের অর্থ লুটপাট, নিয়োগ বাণিজ্যসহ বেশুমার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

    বুধবার (০৮ জানুয়ারি) অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেন একই প্রতিষ্ঠানের ইংরেজী বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক অভিযুক্ত ফায়জুল ইসলাম।

    জানা যায়, গত ৬ জানুয়ারি (সোমবার) সকাল ১১টা ১০ মিনিট থেকে ৪০ মিনিট পর্যন্ত শ্রেণীকক্ষে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে সদ্যবিদায়ী আওয়ামী সরকারের প্রশংসা করে 'জয় বাংলা শীর্ষক' লেকচার দেন বলে অভিযোগ ওঠে অভিযুক্ত শিক্ষক ফায়জুল ইসলামের বিরুদ্ধে।

    এর একদিন পর কয়েকজন শিক্ষার্থী তার বিচার দাবি ও স্বীয় পদ থেকে তাকে অপসারণের দাবি তুলে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে অধ্যক্ষের নেতৃত্বে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ঘটনাটি গোটা মিরপুরে 'টক অফ দ্যা টাউনে' এ পরিণত হয়।

    যদিও জয় বাংলা শ্লোগানের এ অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, মিথ্যা-বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সাজানো নাটক বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত শিক্ষক ফায়জুল ইসলাম।

    আত্মপক্ষ সমর্থন করে তিনি বলেন, এমন ন্যাক্কারজনক অভিযোগে আমি চরমভাবে বিব্রত ও মর্মাহত হয়েছি। এ ধরণের অভিযোগ তারা কোনোভাবেই প্রমাণ করতে পারবেন না। মূলত এর মাধ্যমে নিজেদের অনৈতিক স্বার্থসিদ্ধি, আমাকে হেয়প্রতিপন্ন, অন্যত্র বদলি, এমনকী চাকরিচ্যুত করার মতো জঘন্য অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির কিছু অসাধু শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমন্বয়ে সংঘবদ্ধ একটি শক্তিশালী কুচক্রীমহল।

    তিনি আরও বলেন, এ ঘটনাটি মুলত তাদের বেশুমার দুর্নীতি, অপকর্মের পাহাড়কে ঢাকার অপচেষ্টায় সাজানো নাটক এবং আমার বিরুদ্ধে সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের সুপরিকল্পিত অংশবিশেষ। যার নেতৃত্বে রয়েছেন খোদ প্রতিষ্ঠান প্রধান অধ্যক্ষ মোস্তফা কামাল খোশনবিশ।

    এসময় শিক্ষক ফায়জুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী পন্থী শিক্ষক আমি নই; বরং আওয়ামী পন্থী সংগঠন স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের (স্বাশিপ) সিনিয়র নেতা হিসেবে অধ্যক্ষ মোস্তফা কামাল খোশনবিশ দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া স্থানীয় ঢাকা-১৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে তার গভীর সখ্যতা রয়েছে। উল্টো এখন আমার বিরুদ্ধেই মিথ্যা অপবাদ দেয়া হচ্ছে। এ ঘটনার যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে সঠিক বিচার চেয়ে আমি শিগগিরই শিক্ষা উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে আবেদন করব।

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর এক সিনিয়র শিক্ষক বলেন, মোস্তফা কামাল খোশনবিশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদানের পর থেকেই প্রতিষ্ঠানটি নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের আতুরনিবাস ও দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়। তার অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় চরম মূল্য দিতে হয়েছে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনেককেই। অতীতেও নির্দিষ্ট কিছু শিক্ষার্থীদের টাকা পয়সা দিয়ে একাধিক শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগপত্র দায়ের করে নাটকীয় ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পড়ে তাদেরকে নানাবিধ নির্যাতন, হয়রানীর শিকার হতে হয়েছে। এমনকী একাধিক শিক্ষককে নানা অপবাদ দিয়ে প্রভাব খাটিয়ে অন্যত্র বদলিও করে দিয়েছেন এই অধ্যক্ষ।

    মীরপুর বাংলা স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাধিক শিক্ষক জানান, প্রকৃতপক্ষে অধ্যক্ষ মোস্তফা কামাল খোশনবিশ প্রতি সিজনে বিভিন্ন অবৈধ পন্থায় প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এর প্রতিবাদ করলেই তাদেরকে সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের জালে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়।

    তারা জানান, গত বছর কয়েক আগে প্রতিষ্ঠানের একজন নাইটগার্ড স্কুলের এক কিশোরী শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে চাকুরীচ্যুত হয়। অধ্যক্ষের দুর্নীতির বিষয়ে ওই নাইটগার্ড সম্পূর্ণরূপে অবগত হওয়ায় নিজের অপকর্ম ফাঁস হওয়ার ভয়ে তাকে চাকরিতে পুনরায় বহাল করেন। এমনকী অধ্যক্ষ মোস্তফা কামাল খোশনবিশের বিরুদ্ধেও স্কুলের এক আয়াকে জোরপূর্বক ধর্ষণের অভিযোগে মামলা রয়েছে।

    অভিযোগ রয়েছে, বর্তমানে অধ্যক্ষ ওই আয়াকে মামলা তুলে নিতে নানাভাবে চাপ দিচ্ছেন। যার ফলে প্রাণভয়ে কর্মস্থলে যোগদান করতে না পেরে উল্টো এখনো পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ভুক্তভোগী ওই নারী।

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মচারী বলেন, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতি ও সুনির্দিষ্ট অপরাধের বিষয়াবলি তুলে ধরে সংশ্লিষ্ট একাধিক দপ্তরে অভিযোগ করা হলেও অদৃশ্য কারণে সেগুলোর তদন্ত প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখেনি আজ পর্যন্ত।

    এসব বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে মীরপুর বাংলা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোস্তফা কামাল খোশনবিশ বলেন, ইংরেজি বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক ফায়জুল ইসলামের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের একটি লিখিত অভিযোগপত্র হাতে পেয়েছি। যা নিয়ে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত শেষের দোষী সাব্যস্ত হলে তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

    এসময় নিজের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

    এআই

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    Loading…