সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে 'পেট কাটা ষ'-এর দ্বিতীয় সিজন '২ষ'-এর চতুর্থ পর্ব 'বেসুরা'। এ সিরিজ দিয়ে ওটিটিতে প্রথমবার অভিনয় করেছেন অভিনেত্রী সুমাইয়া শিমু। এ পর্ব দিয়েই শেষ হলো সিরিজটির দ্বিতীয় সিজন। ওয়েব সিরিজটিতে অভিনয় ও নানা বিষয় নিয়ে তিনি কথা বলেছেন সময়ের কণ্ঠস্বরের সঙ্গে।
ওটিটিতে প্রথমবার পেট কাটা ষ-এর দ্বিতীয় সিজন ২ষ-এর চতুর্থ পর্ব বেসুরায় অভিনয় করে দর্শক সাড়া কেমন পাচ্ছেন?
যখন সিরিজটির ট্রেলার আসে, এর আগে কেউ জানত না যে এটিতে আমি আছি। যখনই সবাই জানতে পেরেছে, তখন থেকেই সবাই আগ্রহ প্রকাশ করছে। সিরিজটি যখন অন এয়ার হয়, তখনো দর্শকের অনেক প্রশংসা পেয়েছি। এছাড়া নুহাশের কাজ অন্য সবার থেকে একটু আলাদা। এটিও তার ব্যতিক্রম নয়। সে জায়গায় এ কাজকে যেমন সবাই ভালো বলছেন, তেমনি আমার অভিনয়েরও প্রশংসা পাচ্ছি সবার কাছ থেকে।
ওটিটিতে প্রথম কাজের অভিজ্ঞতা যদি শেয়ার করতেন।
ওটিটিতে প্রথম কাজ করার অভিজ্ঞতা খুবই ভালো ছিল। এটা বর্তমানে খুবই জনপ্রিয় একটা মাধ্যম। শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারা বিশ্বেই এটা খুব জনপ্রিয় মাধ্যম। এখানে আমরা বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট দেখি। আমি নিজেও দেখি। বাংলাদেশেও বেশ কয়েক বছর ধরে ওটিটি প্লাটফর্ম জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আমার আগ্রহ ছিল এখানে কাজ করা, যেহেতু আমি অভিনয় করি। যে ধরনের কাজ ওটিটিতে হয় এবং আমি যে ধরনের কাজ করি, সেগুলো এখন বেশি পরিমাণে হচ্ছে। আমার আগ্রহ, নুহাশের পরিচালনা ও আমার ওটিটির প্রথম যাত্রা, সব মিলিয়ে অভিজ্ঞতা বেশ ভালো ছিল।
নুহাশ হুমায়ূনের বেসুরায় আপনার সংযুক্তি কীভাবে হলো?
নুহাশের পক্ষ থেকেই কাজটির অফার এসেছিল। আমি স্ক্রিপ্টটি পড়লাম এবং নুহাশ আমার কাজ ও চরিত্র সম্পর্কে বিস্তারিত বলল। এদিকে 'ষ' সিজন বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। সে জায়গা থেকে যখন এটায় কাজ করার অফার পাই, আমি রাজি হই। সেভাবেই কাজটার সঙ্গে যুক্ত হই।
টিভি নাটক ও ওটিটির মধ্যে বড় পার্থক্যটা কী দেখেছেন?
সবার আগে আমার কাছে মনে হয়, বাজেট একটা বড় ব্যাপার। টেলিভিশন নাটকের বাজেট অনেক কম থাকে। যেহেতু বাজেট কম, সে কারণে টেলিভিশনে অনেক সীমাবদ্ধতা থাকে। একজন নির্মাতা যখন নাটক নির্মাণ করেন, অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্য দিয়ে তার কাজটি করতে হয়। চাইলেই তিনি ইচ্ছামতো কিছু করতে পারেন না। টেলিভিশন হচ্ছে ড্রয়িংরুম মিডিয়া। অনেক গল্প আসলে সেখানে বলা সম্ভব হয় না। পক্ষান্তরে ওটিটির কাজ একটু আলাদা। এখানে টেলিভিশন নাটকের তুলনায় বাজেট অনেক বেশি থাকে। অনেক ধরনের গল্প এখানে তুলে ধরা যায়। ভিন্ন ভিন্ন গল্প নিয়ে নির্মাতারা এখানে কাজ করতে পারেন। তাছাড়া বাজেট বেশি হওয়ার কারণে যেখানে যেটা প্রয়োজন, আর্টিস্ট থেকে শুরু করে সব জায়গায় সেটা ভালোভাবে করা যায়। একজন নির্মাতা টেলিভিশনে যেভাবে কাজ করছেন, দেখা যায় ওটিটিতে তিনি অন্যভাবে কাজ করছেন। এ জায়গাগুলোই আমার কাছে টেলিভিশন ও ওটিটির মধ্যকার পার্থক্য মনে হয়।
অভিনয়ের ক্ষেত্রে কোনো পার্থক্য আছে কিনা।
অভিনয় তো অবশ্যই একই। এটা তো আর আলাদা হয় না। এমন নয় যে আমি টেলিভিশনের জন্য কাজ করেছি, এজন্য একটু খারাপ বা একটু কম চেষ্টা করলাম। আবার ওটিটিতে কাজ করছি বলে এখানে আমি বেশি ভালো অভিনয় করব, এটা কখনো হয় না। একটা জিনিস হতে পারে, সেটা হলো টেলিভিশন নাটকে যখন কাজ করি, তখন হয়তো আমাকে অনেক কিছু মাথায় রেখে কাজ করতে হয়। ওটিটির ক্ষেত্রে যেহেতু প্রতিটা কাজের জন্য সব আলাদা আলাদা থাকে, সেহেতু এখানে আমাকে অনেক কিছু নিয়ে চিন্তা না করলেও চলে। ওটিটির চরিত্রকে ফুটিয়ে তুলতে বেশি সময় পাওয়া যায়। টেলিভিশনে এ কাজ করা একটু কষ্ট হয়, ওটিটির ক্ষেত্রে এটা সহজ হয়ে যায়।
আপনি অসংখ্য টিভি নাটকে কাজ করেছেন। নতুন একটা প্লাটফর্মে এসে নিজেকে কতটা মেলে ধরতে পেরেছেন?
আসলে ওটিটিতে আমার যাত্রা মাত্রই শুরু হলো। বাংলাদেশে বেশ কয়েক বছর ধরেই ওটিটিতে কাজ হচ্ছে। অনেক ভালো আর্টিস্ট এখানে কাজ করছেন। আমি তো কেবল শুরু করেছি। একটা কাজ দিয়ে তো নিজেকে মেলে ধরা যায় না। যখন আমি অনেকগুলো কাজ করব তখন আমার সাধ্য অনুযায়ী যতটুকু নিজেকে মেলে ধরা যায়, সে চেষ্টা করব। তখন আসলে নিজেকে মেলে ধরার সুযোগ আসবে।
দীর্ঘ সময় অসংখ্য কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন, এখন আপনার কাজ কম কেন?
প্রতিটা শিল্পীরই এমন হয় যে, এক সময় অনেক কাজ করেন, আবার এক সময় কাজের সংখ্যা কমে যায়। আগে যেমন মাসে ৩০ দিনের মধ্যে ২৫ দিন শুটিং করতাম, এর পর আস্তে আস্তে মাসে ১৫ দিন করেছি। এখন তো আর এমন ২৫ কিংবা ১৫ দিন কাজ আমার নিজের পক্ষেও সম্ভব নয়, আবার অনেক কাজ আছে, যেগুলোয় আমি চাইলেও আমাকে মানাবে না। প্রতিটা শিল্পীর ক্যারিয়ার গ্র্যাফটা এমনই হয়। এ কারণেই আসলে আগের মতো কাজ করা হচ্ছে না। একদম যে কাজ করছি না, তা নয়।