কিশোরগঞ্জ জেলার ১৩ উপজেলার অন্যতম চিকিৎসাকেন্দ্র কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল। যেখানে প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ১ হাজার ৫০০ রোগী বহির্বিভাগে ও আন্তঃবিভাগে চিকিৎসা নিয়ে আসে। এদিকে টানা দুইদিন ধরে পানি মিলছেনা। পানি না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে হাসপাতালের রোগীরা।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগী থেকে শুরু করে রোগীর সাথে আসা স্বজনরাও সমস্যায় পড়েছে। পানির অভাবে হাসপাতালে দুর্গন্ধ আর গুমোট ভাব তৈরি হয়েছে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পানির মটর বিকল হয়ে যাওয়ায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তবে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।
রবিবার (১৯ জানুয়ারি) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ড ও কেবিনের ট্যাপ থেকে পানি পড়ছে না। পানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় অনেক রোগী হাসপাতাল ছেড়ে চলে গেছেন। এদিকে রোগী ও তাদের স্বজনরা বাইরে থেকে পানি আনতে ব্যস্ত।
পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি মাহমুদ মিয়া নামের এক রুগী জানান, ঠাণ্ডাজনিত বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে ৫ দিন ধরে সেখানে ভর্তি আছেন। ভর্তি হওয়ার পর থেকেই দেখছি পানি নেই। বাথরুমে যেতে পারি না। দুর্গন্ধ পুরো রুমে চড়িয়ে পড়েছে। নিজের সিটে বসে থাকাটাও মুশকিল। পানি না থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাকে। শিগগিরই চলে যাবেন বলেও জানান তিনি।
গত তিনদিন আগে রোগী নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন এক রুগীর স্বজন আতিকুল ইসলাম জানান, বাথরুমে পানি নেই। ময়লা আর দুর্গন্ধে আশেপাশেও থাকা যাচ্ছে না। রোগী বা সঙ্গের কারো বাথরুমে যেতে হলে নিচতলায় মসজিদের পাম্প থেকে পানি আনতে হচ্ছে। এ অবস্থায় রোগীকে সময় দিব নাকি পানি আনতে দৌড়াবেন।
কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার কাশোরারচর গ্রামের বাসিন্দা আবদুল কাদির বলেন, একটা মানুষ জরুরী প্রয়োজনে বাথরুমে গিয়ে যখন দেখেন পানি নেই, তখন কোন ধরণের সমস্যায় পড়েন, সেটা তো বুঝতেই পারছেন। এই সমস্যাটা কিছুক্ষণের জন্য হলে হতেই পারে। কিন্তু টানা দুদিন ধরে এই হাসপাতালে পানি নেই, অথচ কর্তৃপক্ষের কোন মাথাব্যথা নেই।
হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরা জানান, পানি সরবরাহ না থাকায় নিচতলায় মসজিদের পাম্প থেকে পানি আনতে হচ্ছে। পর্যাপ্ত পানি ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না। হাসপাতালের মেঝে পরিষ্কার এবং রোগীদের বিছানার চাদর ও অন্যান্য কাপড়ও পরিষ্কার করা কষ্টকর হচ্ছে। বহির্বিভাগের চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা প্রয়োজনে পানি ব্যবহার করতে পারছেন না। হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরাও দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের (ভারপ্রাপ্ত) তত্ত্বাবধায়ক ডা. নূর মোহাম্মদ শামসুল আলমের সঙ্গে ফোনে কথা হলে তিনি জানান, ছয়তলায় ১০ ঘোড়ার একটি বড় মটর রয়েছে। ২০২০ সালে লাগানো এই মটরটি প্রায়ই সমস্যা করে। কিন্তু এবার একেবারে বিকল হয়ে যাওয়ায় পানির সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এমআর