যশোরের মণিরামপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিনের নামে ‘বীর নিবাস’ বাড়ি বরাদ্দ বাতিল হয়েছে। অবস্থাসম্পন্ন হওয়ার পরও সম্পদের তথ্য গোপন ও অস্বচ্ছতার কারণে এ বরাদ্দ বাতিল করা হয়।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বরাদ্দকৃত বাড়িটি বাতিল করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত তামান্না।
জানা গেছে, মণিরামপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আলাউদ্দিনের নিজস্ব ফ্ল্যাট রয়েছে রাজধানী ঢাকায়। এছাড়াও মণিরামপুর পৌর শহরের সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাশে নিজস্ব জমিতে রয়েছে প্রাচীর ঘেরা একটি একতলা বাড়ি। বর্তমানে তিনতলা বাড়ির নির্মাণ কাজ চলছে সেখানে। সম্মানী হিসেবে প্রতি মাসে পাচ্ছেন পেনশনের টাকা।
সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হিসেবে চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন আলাউদ্দিন। অবসরের পর মণিরামপুরের প্রয়াত সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা খান টিপু সুলতানের ঘনিষ্ঠজন হওয়ার সুবাদে ২০০৯ সালে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডারের দায়িত্ব পান। একটানা এ দায়িত্ব পালন করেন ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত।
গত ৩০ আগস্ট নবগঠিত উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ৭ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটিতে সদস্য সচিবের দায়িত্ব পান আলাউদ্দিন। সম্প্রতি মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সরকার মণিরামপুরে অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ৫ জনকে ‘বীর নিবাস’ প্রকল্পের আওতায় বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পরবর্তীতে অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্য থেকে ৫ জনের নামের একটি তালিকা চূড়ান্ত করে বাড়ি নির্মাণের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়।
উক্ত তালিকায় আলাউদ্দিনের নাম ছিলো চতুর্থ নম্বর সিরিয়ালে। চূড়ান্ত তালিকা অনুযায়ী আলাউদ্দিনের নামে বরাদ্দ হওয়া বাড়িটি নির্মাণ হওয়ার কথা ছিলো মণিরামপুরের ঝাঁপা ইউনিয়নের মল্লিকপুর গ্রামের তার পৈত্রিকভিটায়।
সম্পদের তথ্য গোপন করে ‘বীর নিবাস’ প্রকল্পের বাড়ি বরাদ্দ পাওয়ায় ঘটনায় বিগত সপ্তাহের বুধবার (১ অক্টোবর) সময়ের কন্ঠস্বরে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে এলাকায় তোড়পাড় শুরু হয়। প্রতিবেশীরা অসন্তোষ প্রকাশ করলে রীতিমতো সামাজিক চাপের মুখে পড়েন আলাউদ্দিন। যার প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন বাড়ি বরাদ্দের সিদ্ধান্ত বাতিল করে।
এই বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন জানান, ‘বীর নিবাসে বরাদ্দকৃত বাড়িটি নিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আবেদন করেছিলাম। ফলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বাড়ির বরাদ্দ বাতিল করেছেন।’
মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত তামান্না জানান, ‘অস্বচ্ছল দাবি করে বাড়ির জন্য আবেদন করেছিলেন আলাউদ্দিন। বাড়িটি তার নামে বরাদ্দ হয়েছিল। তাকে নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর প্রকৃত তথ্য জানতে পারি। আলাউদ্দিন বাড়ি নিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে লিখিত আবেদন করেছিলেন। মঙ্গলবার আলাউদ্দিনের বাড়ি বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে।’
এসএম