চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মেঘনা নদীতে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের মধ্যে প্রকাশ্য দিবালোকেই চলছে ইলিশ শিকার।
প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে প্রতিদিন নদীতে জাল ফেলছেন জেলেরা। নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির একেবারে পাশেই এমন চিত্র দেখা গেলেও নেই কোনো দৃশ্যমান অভিযান বা ব্যবস্থা।
এসব বিষয়ে স্থানীয় নৌ পুলিশ কর্মকর্তার খোঁজ করলে তাকে দু'দিনেও খুঁজে পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে নৌ পুলিশের চাঁদপুর অঞ্চলের এসপি সৈয়দ মুশফিকুর রহমানকে তার বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন, 'ফাড়ি ইনচার্জকে কেন খুঁজছেন? যা বলার আমাকে সরাসরি এসে বলুন।'
এরপর সরাসরি সাক্ষাতকারে ইলিশ শিকার ও বিক্রির বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি কেয়ারল্যাস ভঙ্গিতে বলেন, 'লিখে দেন। যা দেখছেন, যা ইচ্ছা লিখে দেন।'
এসব সম্পর্কে মতলব উত্তর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাসও নির্বিকার দায়সারা বক্তব্য দেন।
এর আগে গত ৩ অক্টোবর ষাটনালের বাবু বাজারে 'মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান' শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিনকে স্থানীয় এক জেলে সরাসরি অভিযোগ জানিয়ে বলেন, 'চাঁদপুর থেকে গজারিয়া পর্যন্ত মেহেন্দী আর কারেন্ট জালেরই রাজত্ব। কারেন্ট আর মেহেন্দী জাল কঠোরভাবে নিষিদ্ধ না করলে এই অভিযান করে লাভ নেই।'
তিনি আরও জানান, 'চার পুলিশ ফাড়িকে ঘুষ দিয়ে দিয়া নদীতে চলতে হয় জেলেদের। নৌকাপ্রতি টাকা দেয়া থাকলেই আর সমস্যা হয় না। আর মাঝে মাঝে অভিযানের নামে ধইরা ধরে ১০ জনেরে ধইরা টাকা খাইয়া ২ জনেরে চালান দেয়। তারা (পুলিশ) আইসা বলে, স্কুলে ভর্তি হইতে। তাদের ভাষায় স্কুল আর আমাদের ভাষায় ফাড়ি। এতো স্কুলে ভর্তি হইতে হইতে আর ফিস দিতে দিতে আমাগো ঘরে চাউল থাকে না। আর যে চাউল দেয় এইসব দিয়া কি হয়? কিস্তির টেনশনে দিন কাটানো লাগে।'
উল্লেখ্য, গত ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মা ইলিশ সংরক্ষণে চাঁদপুর জেলার ষাটনল থেকে হাইমচরের চরভৈরবী পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার নদী এলাকায় সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে মৎস্য অধিদপ্তর। এর মধ্যে মতলব উত্তরের ষাটনল থেকে আমিরাবাদ পর্যন্ত প্রায় ২৫ কিলোমিটার নদীতে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর রয়েছে।
এনআই