মাদারীপুরের কালকিনিতে কবিরাজের রুটি খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন প্রবাসীর স্ত্রী।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকাল ৯ টার দিকে তার নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী কুলসুম বেগম (৩৫) কালকিনি পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের পূর্ব মিনাজদী গ্রামের সৌদী প্রবাসী লোকমান হোসেনের স্ত্রী।
পুলিশ ও স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, এক মাস আগে কুলসুম বেগমের প্রতিবেশী নার্গিস আক্তারের স্বর্ণের অলংকার হারিয়ে যায়। অভিযুক্ত নার্গিস আক্তারের সঙ্গে কুলসুমের সম্পর্ক ভালো থাকায় তিনি তার বাড়িতে পূর্বে থেকেই যাতায়াত করতেন। অভিযুক্ত নার্গিস আক্তার ঐ এলাকার আলী হোসেন ব্যাপারীর স্ত্রী।
অভিযুক্ত নার্গিস আক্তারের বাড়ি থেকে এক মাস আগে স্বর্ণের জিনিস খুঁজে না পাওয়া গেলে তিনি প্রতিবেশী অনেককেই চোর সন্দেহ করেন। পরে একজন কবিরাজের দারস্থ হন এবং তার কাছ থেকে রুটি পড়া এনে চোর সন্দেহ থাকা সকলকেই ডেকে খাওয়ানো হয়। তবে বিপত্তি অন্য জায়গায়। ভুক্তভোগী কুলসুম বেগমকে না ডেকে তার বাড়িতে এসে থালার ভিতর থেকে অনেকগুলো রুটির মধ্য থেকে বিশেষভাবে রাখা একটি রুটি উজ্জ্বল ফকির ও মহিউদ্দিন বেপারীর সহযোগিতায় নার্গিস আক্তার জোর করে খাওয়ান কুলসুমকে। কিছুক্ষণ পরে ভুক্তভোগী কুলসুম বেগম অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা দেয়া হলে তাতে অবস্থার উন্নতি না হলে বিকাল ৫ টার দিকে তাকে অজ্ঞান অবস্থায় কালকিনি থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী কুলসুমের ননদ সাবানা বলেন, 'খবর পেয়েই তাড়াতাড়ি আমার ভাইয়ের বাড়িতে ছুটে যাই। গিয়ে দেখি ভাবি বিছানায় পড়ে আছেন। প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা দিলেও অবস্থার কোন উন্নতি হয়নি। পরে অজ্ঞান অবস্থায় কালকিনি হাসপাতালে নিয়ে আসি। আমরা এর বিচার চাই।'
ভুক্তভোগী কুলসুম বেগম বলেন, 'মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্ক থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তাই বলে কিছু হারিয়ে গেলে জোরপূর্বক থালায় থাকা কবিরাজের দেয়া বিশেষ একটা রুটি আমাকে খাওয়ানো হবে? আমি তো মারাও যেতে পারতাম। আমাকে যারা জোর করে কবিরাজের রুটি খাওয়ালেন, প্রশাসনের কাছে আমি এর বিচার চাই।'
তবে অভিযুক্ত নার্গিস আক্তারের মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন দিলে ফোনটি রিসিভ করেন তার চাচাতো ফোন জেয়াসমিন আক্তার। নার্গিস আক্তারের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন, 'নার্গিস আপা ফোন তার কাছে রেখে কোথায় চলে গেছে, আমি জানি না।'
এ বিষয়ে কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম সোহেল রানা জানান, 'গতকাল রাত্রেই আমরা এই বিষয়ে থানায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'
এসআর