আটলান্টিক মহাসাগরে সৃষ্ট শক্তিশালী হ্যারিকেন মেলিসা জ্যামাইকার ওপর তাণ্ডব চালিয়ে এবার কিউবায় আঘাত হেনেছে। ঘণ্টায় ১২০ মাইল (প্রায় ১৯৫ কি.মি.) বেগে প্রবল ঝড়ো বাতাস ও বৃষ্টি নিয়ে ঝড়টি দেশটিতে আঘাত হানে। কিউবায় আঘাত হানার পর ঝড়টি ধীরে ধীরে উত্তর–পূর্ব দিকে এগিয়ে বাহামা ও বারমুডা দ্বীপপুঞ্জের দিকে ধাবিত হবে বলে আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন। এসব অঞ্চলেও বিপজ্জনক ঢেউ ও বন্যার ঝুঁকি জোরালোভাবে বিদ্যমান।
এর আগে এটি জ্যামাইকায় (আধুনিক) ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসেবে আঘাত হেনেছিল। জ্যামাইকার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্ড্রু হোলনেস দেশটির প্রায় পুরো অংশকে 'দুর্যোগপূর্ণ ক্ষেত্র' ঘোষণা করেছেন।
তিনি সতর্ক করে জানিয়েছেন, ‘এটি জ্যামাইকার জন্য এক বিধ্বংসী অধ্যায় হতে যাচ্ছে।’ দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রাতে তাণ্ডব চালানোর কারণে ঠিক কতটা ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে তা এখনো স্পষ্ট নয়। ভোর না হওয়া পর্যন্ত পুরো পরিস্থিতি বোঝা কঠিন হবে। তবে ঘরবাড়ি, হাসপাতাল ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। খবর বিবিসির।
মোন্টেগো বে–এর মেয়র স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘প্রথমেই আমরা নিশ্চিত হতে চাই-সবাই বেঁচে আছে কিনা।’ রাজধানী কিংস্টনে থাকা সংবাদমাধ্যম বিবিসি–র সাংবাদিক জানিয়েছেন, তিনি বহু এলাকায় কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। কারণ ফোন ও বিদ্যুৎ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
হ্যারিকেন মেলিসা কয়েকদিন ধরেই ক্যারিবীয় অঞ্চলে তীব্র শক্তি সঞ্চয় করছিল। সমুদ্রের উষ্ণ পানি ও অনুকূল বায়ুপ্রবাহই এর শক্তি বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে আটলান্টিকে শক্তিশালী ঝড়ের সংখ্যা ও তীব্রতা বেড়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সমুদ্রের তাপমাত্রা যত বাড়বে, এমন বিধ্বংসী হ্যারিকেনের সংখ্যা ততই বৃদ্ধি পাবে।
জ্যামাইকার ইতিহাসে ১৯৮৮ সালের হ্যারিকেন গিলবার্টের আঘাত এবং ক্ষতচিহ্ন এখনো দগদগে। কিন্তু স্থানীয় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মেলিসার তীব্রতা গিলবার্টকেও ছাড়িয়ে গেছে।
এবি