এইমাত্র
  • রাজধানীর আগারগাঁওয়ে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িতে আগুন
  • জয়ের চেয়েও বেশি আনন্দিত ভারতের বিপক্ষে জিতে: হামজা চৌধুরী
  • ২ কোটি টাকা পুরস্কার পাচ্ছেন ফুটবলাররা
  • ভারতের বিপক্ষে জয়ে ফুটবলারদের প্রশংসায় ভাসালেন তারেক রহমান
  • গত দেড় বছরে জামায়াতের নেতাকর্মীরা কোনো প্রতিশোধ নেয়নি: ডা. শফিকুর
  • ঢাবির ডেপুটি রেজিস্ট্রার লাভলু মোল্লাহ কারাগারে
  • ভারতকে হারাল বাংলাদেশ
  • রাজধানীতে ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৪ ইউনিট
  • কাশিমপুর কারাগারে বন্দি আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু
  • মোরছালিনের গোলে এগিয়ে বাংলাদেশ
  • আজ বুধবার, ৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ | ১৯ নভেম্বর, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    নিষেধাজ্ঞায় 'মা' ইলিশ শিকার

    তিন শতাধিক আড়তদারের অবৈধ আয় ১৬ কোটি টাকা

    মো. সাইফুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট (ভোলা) প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১০:০১ পিএম
    মো. সাইফুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট (ভোলা) প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১০:০১ পিএম

    তিন শতাধিক আড়তদারের অবৈধ আয় ১৬ কোটি টাকা

    মো. সাইফুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট (ভোলা) প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১০:০১ পিএম

    নিষেধাজ্ঞায় জেলেদের দিয়ে 'মা' ইলিশ শিকার করে প্রায় ১৬ কোটি টাকা আয় করেছেন ভোলার চরফ্যাশনের তিন শতাধিক আড়তদার। তাদের এই অনিয়মের নিয়ন্ত্রণ কারো হাতেই ছিল না। 'মা' ইলিশ রক্ষায় মৎস্য বিভাগের নামমাত্র অভিযান আমজনতাকে দেখালেও এ দৃশ্যের পেছনে ছিল 'সর্ষের মধ্যে ভূত'। নাম প্রকাশ না করা শর্তে এসব তথ্য জানিয়েছেন নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন গভীর সাগরে ইলিশ শিকার করা সামরাজ মৎস্যঘাটের একাধিক জেলে।

    ওই জেলেরা আরো জানিয়েছেন, তারা নিরুপায়, কারণ তারা আড়তদারদের দাদনভুক্ত। আড়তদারদের নির্দেশেই জেলেরা নিষেধাজ্ঞার মধ্যে দীর্ঘ ২২ দিন গভীর সাগরে অবস্থান করে ইলিশ শিকার করেছেন। যদিও মৎস্য বিভাগের দাবি তারা যথাযথ নিয়মে অভিযান পরিচালনা করছে।

    সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, শনিবার দিনগত রাত ১২টায় ইলিশ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার ছয় ঘণ্টা পরেই ইলিশ বোঝাই সাগরগামী শতাধিক মাছ ধরা ট্রলার চরফ্যাশন উপজেলার কয়েকটি মৎস্যঘাটে ফিরেছে। পরের চারদিন রবি, সোম, মঙ্গল ও বুধবার দুপুর পর্যন্ত শত শত টন পচা ইলিশ নিয়ে অর্ধশত ট্রলার মৎস্যঘাটে এসে নোঙর করেছে। এসব পঁচা ইলিশের ভাগাড় দেখে সাধারণ ক্রেতারা বিস্মিত হলেও আড়তদাররা ছিল আনন্দিত।

    অনুসন্ধানে জানা গেছে, ৪ অক্টোবর নিষেধাজ্ঞার খবর শুনে তার আগের দিনগত রাত এবং নিষেধাজ্ঞার মধ্যবর্তী সময়ে সামরাজ, নতুন স্লুইসগেট, খেজুরগাছিয়া, মাইনউদ্দি ঘাট, ঢালচর, বকসীরঘাট, ঘোষেরহাট, চরকচ্ছপিয়া, কুকরি মুকরি ও পাতিলা মৎস্যঘাটের অসাধু আড়তদারদের দাদনভুক্ত জেলেরা বরফ, জ্বালানি তেল ও খাদ্য সামগ্রী নিয়ে ইলিশ শিকারের জন্য গভীর সাগরে গিয়েছেন। তারা ২২ দিন নিষেধাজ্ঞার মধ্যে সাগরে ইলিশ শিকার করেছেন। ট্রলারে পর্যাপ্ত পরিমাণ বরফ না থাকায় দুই তৃতীয়াংশ ইলিশ মাছ পঁচে গেছে। এই জন্যই দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

    চরফ্যাশন উপজেলা মৎস্য কার্যালয়ের তথ্যমতে, চরফ্যাশনের এসব মৎস্যঘাটগুলোতে কাকডাকা ভোর থেকে প্রতিদিন প্রায় ১২ কোটি টাকার মাছ বিক্রি হয়। এই অঞ্চলে প্রায় ১২ হাজার ট্রলার ও নৌকা রয়েছে। এছাড়াও গভীর সমুদ্রগামী ৭ হাজার ট্রলার রয়েছে।

    ইলিশ কিনতে আসা এক ক্রেতা বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন, 'আড়তদাররা কমিশন বাণিজ্যের পাশাপাশি পঁচা ইলিশের দাম হাঁকিয়ে নানান অযুহাতে চড়া দামে বিক্রি করছেন। তারা তাদের ইচ্ছে মতো দাম হাঁকিয়ে ইলিশ মাছের ডাক তোলেন। এছাড়াও শতকরা সাত টাকা ইলিশে এবং শতকরা পনেরো টাকা অন্যান্য প্রজাতির মাছে কমিশন বাণিজ্য করেন আড়তদাররা। ক্রেতারা তো দাদন গ্রহণ করেননি, তাহলে কমিশন কেন দিবে? তাদের মনগড়া নিয়মে বাধ্য হয়েই ক্রেতারা মাছ কিনবে?'

    সামরাজ মৎস্যঘাটের আড়তদার অহিদ মাঝি বলেন, 'সামরাজ মৎস্যঘাটে ৯৮ জন মৎস্য আড়তদার রয়েছে। এসব আড়তদাররা প্রায় দেড়শ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে।'

    উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু জানান, 'আমরা মেঘনা ও তেতুলিয়া নদীতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। তবে গভীর সাগরে অভিযান পরিচালনা করেন কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী। নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন আড়তদারদের নির্দেশে জেলেরা সাগরে ইলিশ শিকার করেছে এমন তথ্য আমার জানা নেই।'

    ইলিশ শিকারে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষের চার দিন সাগরগামী শতাধিক ট্রলার পঁচা ইলিশ বোঝাই করে কোথা থেকে মৎস্যঘাটে এলো? এমন প্রশ্নের জবাবে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন কাছ থেকে কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।

    উল্লেখ্য, ইলিশের প্রজনন রক্ষায় গত ৩ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিনের জন্য দেশের সব নদী ও সমুদ্রে ইলিশ ধরা, বিক্রি, পরিবহন ও মজুত নিষিদ্ধ করেছিল সরকার।

    এফএস

    ট্যাগ :

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    চলতি সপ্তাহে সর্বাধিক পঠিত

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…